বাংলাদেশে হেযবুত তওহীদের সদস্যদের উপর উগ্রপন্থীদের হামলা থেকে সুরক্ষা প্রদানের দাবিতে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে কোলকাতায় মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করেছে হেযবুত তওহীদ। শনিবার (২৬ অক্টোবর) বেলা আড়াইটায় হেযবুত তওহীদ ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ভারতের কলকাতা প্রেসক্লাবের সামনে প্রথমে মানববন্ধন ও পরে প্রেসক্লাবে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আবুল খায়ের মল্লিকের পরিচালনায় মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন হেযবুত তওহীদ ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশনের সভাপতি কাজী আব্দুল হক।
বক্তব্যে তিনি বলেন, সম্প্রতি গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আওয়ামী সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। মব, ধর্মীয় উন্মাদনা ও গণহিংস্রতা সৃষ্টি করে ভিন্ন ধর্মের বা ভিন্ন মতের মানুষকে উচ্ছেদ উৎখাতের ষড়যন্ত্র চলছে। উত্তেজিত বে-আইনী জনতার বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তেমন কোনো শক্তিশালী ভূমিকা নিতে পারছে না। এমন পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে অরাজনৈতিক আন্দোলন হেযবুত তওহীদের উপরও হামলা চালিয়ে যাচ্ছে এবং হত্যাযজ্ঞ চালানোর ষড়যন্ত্র করছে একটি কট্টরপন্থী, উগ্রবাদী গোষ্ঠী।
তিনি আরো বলেন, গত ৭ সেপ্টেম্বর চিহ্নিত এই উগ্রবাদী ধর্মান্ধ গোষ্ঠীটি সোনাইমুড়ী থানার সামনে চৌরাস্তায় বেআইনি সমাবেশ করে। সমাবেশে তারা আলটিমেটাম দিয়েছে হেযবুত তওহীদকে যদি নোয়াখালী থেকে উচ্ছেদ করা না হয় তাহলে তারা হামলা করবে, আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিবে এবং জানমালেন ক্ষতি করবে। সেখানে হেযবুত তওহীদের সহস্রাধিক সদস্য, শিশু, নারী, বৃদ্ধ বসবাস করেন। সেখানেই হেযবুত তওহীদের মাননীয় ইমাম জনাব হোসাইন মোহাম্মদ সেলিমের বাড়ি, মসজিদ, স্কুল, গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি, লেদার ফ্যাক্টরি, গরু ও মৎস্য খামারসহ অর্ধ শতাধিক উন্নয়ন প্রকল্প। এসবের উপর হামলা করাও তাদের অন্যতম লক্ষ্য।
মানববন্ধন থেকে আন্তুর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাসহ জাতিসংঘের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ৪ দফা দাবি পেশ করা হয়। দাবিসমূহ হলো- ১. যারা বেআইনি সমাবেশে একত্রিত হয়ে হামলার হুমকি ও উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়েছে তাদেরকে দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে। ২. উগ্রবাদীদের অনুসারী, যারা ফেসবুকে হামলার হুমকি দিয়েছে তাদেরকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। ৩. ঢাকার উত্তরাতে অবস্থিত আমাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়েও হামলার হুমকি গত একমাস থেকে দেওয়া হচ্ছে এবং উগ্রবাদীরা স্থানীয়ভাবে অপপ্রচার ও উস্কানি অব্যাহত রেখেছে। তাদের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ৪. সাম্প্রতিক সময়ে নোয়াখালীসহ সারা বাংলাদেশে আমাদের উপর হওয়া হামলার তদন্ত করে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে হবে।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন প্রখ্যাত বুদ্ধিজীবী আনিস উদ্দিন, নজরুল গবেষক ও সঙ্গীত শিল্পী ড. দীপা দাস প্রমুখ। মানববন্ধন শেষে প্রেসক্লাবে একটি প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে এমন ষড়যন্ত্রের তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়। এ ব্যাপারে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন নেতাকর্মীরা।
উল্লেখ্য, একইভাবে ২০১৬ সালে মিথ্যা গুজব রটিয়ে বর্বরোচিত হামলা চালানো হয়। সেসময় নির্মাণাধীন একটি মসজিদ ধ্বংস, বাড়ি-ঘর লুটপাট, অগ্নিসংযোগ এবং হেযবুত তওহীদের দুই সদস্যকে জবাই করে হত্যা করা হয়, আজও যার কোনো বিচার হয়নি।