যাদের দুনিয়া অসুন্দর, তাদের আখেরাত সুন্দর হতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন হেযবুত তওহীদের এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম। গত ২৫ মে ২০১৮ তারিখ রাজধানীর উত্তরার ফ্রেন্ডস ক্লাব মিলনায়তনে হেযবুত তওহীদের ঢাকা মহানগর উত্তর শাখা কর্তৃক আয়োজিত ইফতার মাহফিলে মুখ্য আলোচক হিসেবে ভাষণ দানকালে তিনি এ কথা বলেন। তিনি একটি হাদিস উল্লেখ করে বলেন, ‘আল্লাহর রসুল বলেছেন- দুনিয়া আখেরাতের শস্যক্ষেত্র। এর মানে হচ্ছে দুনিয়া আগে পরকাল পরে। দুনিয়া যেমন হবে পরকালও তেমন হবে। দুনিয়ার জীবনে যদি অন্যায়, অবিচার, অশান্তিতে ডুবে থাকেন তাহলে পরকালে জান্নাতপ্রাপ্তি হবে না। সেখানেও যন্ত্রণাদায়ক জাহান্নামই প্রাপ্ত হবে।’
হেযবুত তওহীদের উত্তরা শাখা সভাপতি শেখ মনিরুজ্জামান মুন্নার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- হেযবুত তওহীদের সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ অনলাইন টেলিভিশন এসোসিয়েশনের সভাপতি ও জেটিভি অনলাইন’র চেয়ারম্যান মো. মশিউর রহমান, হেযবুত তওহীদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা মহানগরের সভাপতি মো. আলী হোসেন, হেযবুত তওহীদের প্রচার সম্পাদক ও দৈনিক বজ্রশক্তির প্রকাশক ও সম্পাদক এস এম সামসুল হুদা, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজ সেবক নূরে আলম, ঢাকা মহানগর উত্তর শাখা হেযবুত তওহীদের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান টিটু, রামপুরা শাখা সভাপতি ফরিদ উদ্দিন রব্বানী।
মুখ্য আলোচক তার বক্তব্যে আরও বলেন, ‘ওহে মানুষ, তোমার দুনিয়াকে সুন্দর কর। তেমন সুন্দর- যেমনটা হলে সরলের উপর ধূর্তের প্রতারণা থাকবে না। দরিদ্রের উপর ধনীর বঞ্চনা থাকবে না। শাসিতের উপর শাসকের অবিচার থাকবে না। দুর্বলের উপর সবলের অত্যাচার থাকবে না। সেই দুনিয়া প্রতিষ্ঠার জন্যই রসুলাল্লাহর আগমন হয়েছিল। একজন কোটিপতি হবে, আরেকজন না খেয়ে থাকবে- তা যেন না হয়, সবাই যেন তাদের অধিকার বুঝে পায় সেজন্যই আল্লাহ কেতাব পাঠিয়েছেন। কিতাবের প্রয়োগ ঘটানোর জন্য নবী পাঠিয়েছেন। নবীজী একটি জাতি গঠন করেছেন। ওই জাতির লক্ষ্য স্থির করে দিয়েছেন সমস্ত পৃথিবীতে আল্লাহর হুকুম প্রতিষ্ঠা করে শান্তি আনার জন্য। আজ সেই কাজটিই যখন ভুলে যাওয়া হয়েছে, তখন বাকি সমস্ত আমলের কী মূল্য রয়েছে?’ তিনি বলেন, ‘যেই কিতাব এসেছে শান্তির জন্য, যেই জাতিকে বানানো হয়েছে শান্তির প্রতিষ্ঠার জন্য, তারা আজ নিজেরাই অশান্তিতে ভুগছে। যেই জাতিকে বানানো হয়েছে মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য তারা নিজেরাই আজ অনৈক্য-সংঘাতে লেগে আছে। এদের জন্য জান্নাত নয়। জান্নাত মো’মেনের জন্য, উম্মতে মোহাম্মদীর জন্য।’
হেযবুত তওহীদের এমাম আরও বলেন, ‘প্রকৃত ইসলাম ছিল তাওহীদভিত্তিক। কিন্তু বর্তমানে বানানো হয়েছে নামাজভিত্তিক। শুধু নামাজ নামাজ আর নামাজ। হ্যা, নামাজ পড়তে হবে, কিন্তু নামাজ কার জন্য? নামাজ হচ্ছে মো’মেনের জন্য। যারা তওহীদে আসলো তাদের জন্য নামাজ। জাতি তো তওহীদেই নেই, কলেমা বোঝে না, জাতিগতভাবে কলেমার চুক্তি ভঙ্গ করেছে বহু শতাব্দী আগেই, তাদের নামাজ, রোজায় কী মূল্য রয়েছে? এই অবস্থা হবে দেখেই আল্লাহর রসুল ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, এমন সময় আসবে মানুষ রোজা রাখবে কিন্তু তা হবে শুধু না খেয়ে থাকা, তাহাজ্জুদ পড়বে কিন্তু তা হবে কেবল ঘুম নষ্ট করা।’
তিনি বলেন, ‘একটা কথা চালু করে দেওয়া হয়েছে যে, ‘নামাজ বেহেশতের চাবি। ব্যস, নামাজ পড়েই বেহেশতে চলে যাব। কিন্তু আল্লাহর রসুল বলেছেন, ‘তওহীদ জান্নাতের চাবি।’ তাওহীদ অর্থাৎ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহর ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ হলেই কেবল বেহেশত। কিন্তু আমি বহু শিক্ষিত মানুষকে জিজ্ঞেস করেছি, বলুন তো, ইসলামের বুনিয়াদ কয়টি? তারা বলেন পাঁচটি। কিন্তু যখন সেগুলো বলতে বলি, তখন তওহীদ থেকে শুরু না করে নামাজ দিয়ে শুরু করেন। বলেন- নামাজ, রোজা, হজ্ব, যাকাত। তাহলে আরেকটা কোথায়? তারা খুঁজে পান না। তারা বলেন, ভাই আরেকটা ভুলে গেছি। আসলে ভুলে যাননি, তওহীদের কথা তাদেরকে ভুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখানেই ইবলিসের সার্থকতা।’