হেযবুত তওহীদ

মানবতার কল্যাণে নিবেদিত

ধর্মব্যবসার ফাঁদ থেকে মানুষকে মুক্ত করতে হবে

রুফায়দাহ পন্নী

আজকে যারা বিশ্ব পরিস্থিতি নিয়ে একটুও ভাবেন তারাই এ বিষয়ে একমত না হয়ে পারবেন না যে, ধর্ম ও ধর্মবিদ্বেষই এখন বিশ্ব রাজনীতির প্রধান ইস্যু। আজকে সারা দুনিয়ায়, কি ইউরোপে কি আমেরিকায়, কি পূর্বে কি পশ্চিমে – ধর্ম নিয়ে রক্তপাত চলছে। বর্তমানে পৃথিবীতে যতগুলো জায়গায় যুদ্ধ, দাঙ্গা, জাতিগত নিধন চলছে সবখানেই মুসলিম নামক জনগোষ্ঠীটি আক্রান্ত। এ মুহূর্তে বিশ্বে সাড়ে ছয় কোটি মুসলমান উদ্বাস্তু। যারা ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতি করেন তারাও ধর্মকে ব্যবহার করেই ক্ষমতায় যাওয়ার কোশেশ করছেন।

যে কোনো দর্শনই কালের আঘাতে বিকৃত হয়, শত সহস্র বছরের কাল পরিক্রমায় প্রতিটি ধর্মের শিক্ষাই বিকৃত হয়ে গেছে। ধর্মগ্রন্থের বাণীগুলো আজ কেবল গ্রন্থের পাতায় মুদ্রিত কালো হরফে পরিণত হয়েছে। এ কথাটিই শেষ নবী (সা.) বলে গেছেন যে, এমন সময় আসবে যখন ইসলাম শুধু নাম থাকবে, কোর’আন শুধু অক্ষর থাকবে, মসজিদ সমূহ হবে জাঁকজমকপূর্ণ ও লোকে লোকারণ্য কিন্তু সেখানে সঠিক পথনির্দেশ (হেদায়াহ) থাকবে না। তখন আমার উম্মাহর আলেমরা হবে আসমানের নিচে নিকৃষ্টতম জীব। তাদের সৃষ্ট ফেতনা তাদের দিকেই ধাবিত হবে (আলী রা. থেকে বায়হাকি, মেশকাত)।

এটা সাধারণ কোনো ভবিষ্যদ্বাণী নয়, এটি হচ্ছে মুসলিম জাতির সত্যদীন থেকে বিচ্যুত হওয়ার পরিণাম। কেবল ইসলাম নয়, সবগুলো ধর্মই এখন ধর্মব্যবসায়ী শ্রেণির পকেটে। একে তারা নিজেদের স্বার্থ হাসিলে ব্যবহার করছে। তারা মানুষের ঈমানকে ভুল খাতে প্রবাহিত করে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বাধাচ্ছে, যে কোনো ইস্যু নিয়ে লক্ষ লক্ষ তওহীদী জনতাকে উন্মত্ত করে হুজুগ সৃষ্টি করছে। সকল ধর্মের ধ্বজাধারীরাই ধর্মকে আশ্রয় করে অপরাজনীতি, সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ড থেকে শুরু করে জাতিগত নিধনযজ্ঞও পরিচালনা করে যাচ্ছে যা কোনো ধর্ম কোনো কালেই বৈধতা দেয় না।

ধর্মের এই নিদারুণ বিকৃত ঘটার নেপথ্য কারণ ধর্মব্যবসা। এজন্যই যুগে যুগে মহান স্রষ্টার পক্ষ থেকে যত ধর্ম এসেছে সবগুলোতেই ধর্মকে পার্থিব স্বার্থোদ্ধার ও রোজগারের মাধ্যমে পরিণত করাকে হারাম করা হয়েছে। অথচ কালক্রমে প্রতিটি ধর্মের মধ্যেই ধর্মজীবী শ্রেণির উদ্ভব ঘটেছে যারা একে এমনভাবে বৈধতা দিয়েছে যে অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় ধর্মের কাজ করে বিনিময় গ্রহণ করাটা রীতিমত সওয়াবের কাজ ও এর উপর তাদের হক আছে। যারা ধর্মজীবীদের অর্থ দিচ্ছেন তারাও ধর্মের কাজ মনে করেই দিচ্ছেন। এখন অনিবার্য হয়ে ওঠা ধ্বংসযজ্ঞের হাত থেকে বিশ্বকে রক্ষা করতে হলে অবশ্যই ধর্মের প্রকৃত শিক্ষার উন্মেষ ঘটাতে হবে। এজন্য মানুষকে অবশ্যই ধর্মব্যবসার কবল থেকে সমাজকে মুক্ত করতে হবে।

লেখাটি শেয়ার করুন আপনার প্রিয়জনের সাথে

Email
Facebook
Twitter
Skype
WhatsApp
সার্চ করুন

যুক্ত হোন আমাদের ফেসবুক পেজের সাথে...