হেযবুত তওহীদ

মানবতার কল্যাণে নিবেদিত

গল্প নয়, সত্যি- ঝাণ্ডা মেরা উচা রহে

মুস’আব ইবনে উমায়র-ধনী ঘরের সন্তান। সে আমলে মক্কা ও তার আশেপাশে মুস’আবের মতো শৌখীন বিলাসী যুবক আর একটিও ছিল না। সেই মুস’আব একদিন সহসা ইসলাম গ্রহণ করলেন। এ কথা তার মাতাপিতার কানে গেল। তারা তাঁর হাত-পা বেঁধে তাঁকে অন্ধকার কারাগারে নিক্ষেপ করলেন।
কিছুদিন পরে মুস’আব (রা.) কারাগার হতে পলায়ন করলেন। তখন অত্যাচারের জ্বালায় নও-মুসলিমদের মক্কায় অবস্থান করা কঠিন ছিল। আবিসিনিয়ায় গিয়ে আশ্রয় নিতে মহানবী (স.) কয়েকজনকে অনুমতি দিলেন। মুস’আব (রা.) তাঁদের অন্যতম।
সময় মতো তাঁরা মদীনায় ফিরে আসলেন, এ সময় নিদারুণ দারিদ্রের মধ্যে মুস’আব (রা.) এর দিন কাটতে লাগল। একদিন মুস’আব রসুলাল্লাহ (স.)-এর সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন। রসুলাল্লাহ (স.) দেখলেন তাঁর গায়ে একটি শতছিন্ন বসন, তাও হাঁটুর নীচে নামতে নারাজএত ছোট। তাঁর চোখের কোণ ভিজে উঠল।
ওহুদের লড়াইয়ে মুস’আব (রা.) এর হাতেই দিলেন মহানবী (স.) নবরাষ্ট্রের ঝাণ্ডা। মুস’আব (রা.)-এর ডান হাতে ধরা ঝান্ডার উপর শত্রুদল অস্ত্রাঘাত করলে; মুস’আব (রা.) বাম হাতে ঝাণ্ডা ধারণ করলেন। আর একজন শত্র“র আঘাতে তাঁর বাঁম হাতটিও কাটা পড়ল।
মুস’আব (রা.) তখন কাটা হাতদ্বয়ের বাকী অংশ দিয়ে পতাকার বাঁট বুকে চেপে ধরলেন, বললেন, “ঝণ্ডা মেরা উঁচা রহে।”
আর একজন শত্র“ তীর মেরে মুস’আব (রা.)-এর বুক ফুেঁড় দিল। তিনি ময়দানে পড়ে গেলেন, কিন্তু তখনও তার দীর্ণ বুকের উপর দাঁড়িয়ে ইসলামের হেলালী ঝাণ্ডা।

-জাকারীয়া

শিক্ষা: রসুলাল্লাহর কাছ থেকে যারা ইসলাম শিখেছেন তারা তাদের জীবনের সবকিছু মানুষের কল্যাণে, শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য বিলিয়ে দিয়ে গেছেন। এমনকি শেষ পর্যন্ত তাদের জীবনটাও দিয়ে গেছেন তবুও সত্যের ঝাণ্ডা মাটিতে পড়তে দেননি। তারা নিজেদের সুখের কথা চিন্তাও করেননি। কিন্তু বর্তমানের বিকৃত ইসলাম মানুষকে করেছে আত্মকেন্দ্রিক, লেবাসধারী। ত্যাগের বদলে ইসলামের নামে চলে ভোগের পাল্লা। ধর্ম আজ শান্তি প্রতিষ্ঠার পরিবর্তে স্বার্থসিদ্ধির হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে। ধর্মের কাজ যা করা হয় তা কেবল ইহকাল ও পরকালে নিজ শান্তি তথা ব্যক্তিস্বার্থের চিন্তায়। কিন্তু আল্লাহ মানুষকে প্রেরণ করেছেন তার খলিফা রূপে দুনিয়াব্যাপী শান্তি প্রতিষ্ঠা করার জন্য। মানুষের কল্যাণ সাধন করার নামই হচ্ছে ধর্ম আর নিজ স্বার্থ চিন্তা করার নামই হচ্ছে অধর্ম।

-তাহের মারুফ

সার্চ করুন

যুক্ত হোন আমাদের ফেসবুক পেজের সাথে...