রুফায়দাহ পন্নী, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক:
মোফাজ্জল হোসেন খান টোকন:
নেত্রকোনায় দৈনিক দেশেরপত্রের ব্যুরো কার্যালয় উদ্বোধন অনুষ্ঠান উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় দেশেরপত্রের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক রুফায়দাহ পন্নী দেশেরপত্রের কাজ কী তা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, ‘মানবতার কল্যাণে, মানবজাতির মুক্তির লক্ষ্যে সম্পূর্ণ নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে যাচ্ছে দেশেরপত্র। এ জন্য যা সত্য তা প্রকাশ করাই দেশেরপত্রের কাজ।’ তিনি বলেন, ‘আর সত্যের পথে কাজ কোরতে গেলে কারো দেখানো পথে কিংবা কাউকে না কাউকে আদর্শ মেনে পথ চলতেই হয়। আমাদের আদর্শ হচ্ছেন আমার প্রাণপ্রিয় পিতা মহামান্য এমামুয্যামান জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নী। তিনি আমাদের আদর্শ এই জন্য যে আল্লাহ তাঁকে হারিয়ে যাওয়া প্রকৃত এসলামের জ্ঞান দান কোরেছেন। তিনি নিজে ছিলেন সত্যের মূর্ত প্রতীক। তাঁর কথা ও কাজকে দুয়ারে দুয়ারে পৌঁছে দেওয়াই আমাদের কাজ। আজকে সারা দুনিয়ায় যে অন্যায়, অবিচার বিরাজ কোরছে এর পেছনে একমাত্র কারণ হচ্ছে মানবজাতি আজ আল্লাহর তওহীদভিত্তিক দীন অর্থাৎ এসলাম থেকে দূরে সরে গেছে। এমতাস্থায় মাননীয় এমামুযযামান মানব জাতির সামনে তুলে ধরেছেন কোন জীবন ব্যবস্থা প্রয়োগ কোরলে মানুষ কাক্সিক্ষত সেই শান্তি ফিরে পাবে। তিনি মানুষকে সেই সত্য ইসলামের দিকে আহ্বান কোরলেন। তিনি বই লিখে, বক্তব্য প্রকাশ কোরে এবং যুক্তির মাধ্যমে মানুষের সামনে উপস্থাপন করলেন যে, আল্লাহর দেওয়া ইসলামে এত অশান্তি, এত দলাদলি, এত ভাগাভাগি, এত অনৈক্য ছিল না। এমনকি তারা জনত না ধর্মব্যবসা কি এবং ধর্মকে পুঁজি করে তারা ব্যবসা করার কথা কল্পনাও করতে পারতেন না। সেই সাথে তিনি এও তুলে ধরলেন যে, কোন এসলাম পালন কোরলে আমরা আবার অন্যায়, অবিচার ও শোষণহীন এক শান্তিময় পৃথিবীতে বসবাস কোরতে পারব।’
তিনি অন্যায়ের বিরুদ্ধে যামানার এমাম ও তাঁর অনুসারীদের সুদৃঢ় অবস্থানের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘যারা ব্যক্তিস্বার্থে ধর্মকে ব্যবহার করে মানবজাতির অপূরণীয় ক্ষতি সাধন করছে আমার বাবা যামানার এমাম জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নী তাদের মুখোস উন্মোচন করে দিয়েছেন। এজন্য তাঁর বিরুদ্ধে ধর্মজীবীরা বহু মিথ্যাচার করেছে, তাঁকে অপবাদের বন্যায় ভাসিয়ে দিতে চেয়েছে। তার বিরুদ্ধে বহু মিটিং মিছিল মিথ্যা মামলাও করেছে, কিন্তু তিনি এক মুহূর্তের জন্যও সত্যপথের এই সংগ্রাম থেকে বিরত হন নি। সত্য এসলামকে তুলে ধোরতে হলে বিকৃত এসলামের স্বরূপ চিহ্নিত না করে উপায় নেই। তিনি অসীম সাহসিকতার সঙ্গে ধর্মজীবীদের হাতে কুক্ষীগত বিকৃত এসলামের স্বরূপ তাঁর লেখায়, বক্তব্যে তুলে ধোরেছেন।’ ধর্মব্যবসায়ীদের অভিশাপ থেকে দেশ ও জাতিকে মুক্ত করার ক্ষেত্রে দেশেপত্রের ভূমিকা তুলে ধরে বলেন, ‘প্রকৃত এসলাম পৃথিবীর যে অংশে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল সেখানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল অনাবিল শান্তি, মানুষের জীবন এবং সম্পদের পূর্ণ নিরাপত্তা। সেই এসলাম আর আজকে ধর্মব্যবসায়ী মোল্লা-ধর্মজীবীদের কাছে যে এসলাম আছে এ দু’টি কি এক এসলাম? নিশ্চয় নয়, ফলেই তার প্রমাণ। আর আজকের বিকৃত এসলাম থেকেই ধর্মজীবীরা জঙ্গিবাদ নামক সন্ত্রাসকে বৈধতা দান করছে। কোর’আন হাদীসের ভুল ব্যাখ্যা করে জঙ্গিবাদ নামকে অসত্যের সৃষ্টি করেছে। তারা সাধারণ মানুষের ধর্মীয় সেন্টিমেন্টকে নিয়ে সুচতুরভাবে খেলছে আর নিজেরা স্বার্থ হাসিল করছে। তাদের এই স্বার্থোদ্ধারে বিপরীতেই আমাদের অবস্থান।’
তিনি সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘১৬ কোটি মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করার মত এতবড় কাজ আমরা ব্যক্তিগত পর্যায়ে, দলগত পর্যায়ে থেকেও করে যাচ্ছি। কিন্তু আমরা মনে কোরি এতবড় কাজ আমাদের একার প্রচেষ্টায় সম্ভব নয়। এত বড় কাজ করার জন্য প্রয়োজন রাষ্ট্রশক্তি। রাষ্ট্রশক্তিকে এই কথা বুঝতে হবে যে, এই সমস্যা জাতীয় সমস্যা। ধর্মব্যবসায়ীদের ক্রমাগত অপপ্রচারের কারণে রাষ্ট্রও আজ বিব্রত। যারা সাধারণ মানুষ, যাদেরকে ভুল বোঝানো হয়েছে তাদেরকে সেই ভুল ভাঙানোর জন্য আমাদের সেই প্রমাণই যথেষ্ট হবে। এখন সম্পূর্ণ রাষ্ট্রশক্তি যদি আমাদের পক্ষে না থাকে তাহলে এতবড় কাজ করা আমাদের জন্য কঠিন হবে। অসম্ভব বোলব না, তবে কঠিন হবে এবং প্রচুর সময় লাগবে। এনশা’আল্লাহ আল্লাহর সিদ্ধান্ত হয়েছে এই অন্যায় দূর হবে, অশান্তি দূর হবে, শান্তি আসবে, শান্ত আসছে।’