সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, ধর্মব্যবসা, ধর্ম নিয়ে অপ-রাজনীতি, সাম্প্রদায়িকতাসহ সকল প্রকার অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে দেশের মানুষকে সচেতন করার লক্ষ্যে দেশব্যাপী জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে মানবতার কল্যাণে নিবেদিত আন্দোলন হেযবুত তওহীদ। এরই ধারাবাহিকতায় গত ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ রো মঙ্গলবার কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার খাস মথুরাপুরে এক কর্মী সভার আয়োজন করা হয়। সভায় হেযবুত তওহীদের কুষ্টিয়া জেলার সদস্য-সদস্যাগণ ছাড়াও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও সাধারণ জনতার বিপুল সমাবেশ ঘটে।
‘সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে আমাদের করণীয়’ শীর্ষক এ কর্মী সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন হেযবুত তওহীদের এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হেযবুত তওহীদের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মো. নিজাম উদ্দীন, হেযবুত তওহীদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. তানভীর আহমেদ প্রমুখ।
সভায় প্রধান বক্তা হেযবুত তওহীদের এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম তার বক্তব্যের শুরুতেই মানবজাতির সামনে আসন্ন সঙ্কট, মুসলিম জাতির বর্তমান করুণ অবস্থা ও এর থেকে পরিত্রাণের জন্য হেযবুত তওহীদের সংগ্রামী পথচলার ইতিবৃত্ত তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আজ আমরা সকলেই এক ভয়ানক পরিস্থিতির সম্মুখীন। গত কয়েক দশকে আমরা ইরাক, আফগানিস্তান, সিরিয়া, লিবিয়া, মিশর ইত্যাদি মুসলিম দেশগুলোর পরিণতি প্রত্যক্ষ করেছি। সা¤্রাজ্যবাদীরা এখন আমাদের দেশকে নিয়েও নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তারা আমাদের দেশে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদকে উস্কে দিয়ে তাদের হীন স্বার্থ হাসিলের পায়তারা করছে। তারা একে অপরের উপর প্রভাব বিস্তারের প্রচেষ্টায় ভয়ানক সব মারণাস্ত্র বানিয়ে রেখেছে। এসব মারণাস্ত্র যদি কখনও তারা ব্যবহার করে তখন পুরো মানবজাতিই ধংস হয়ে যেতে পারে বলে সচেতন মহল মনে করছে। তিনি আরও বলেন, অপরদিকে একদল স্বার্থান্বেষী ধর্মব্যবসায়ী দেশের মানুষের ধর্ম বিশ্বাস নিয়ে হীন খেলায় মেতে উঠেছে। দেশ ও জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা না করে বরং নিজেদের মধ্যে নানা রকম বিভেদ সৃষ্টি করছে। তাদের এই বিভেদের কুপ্রভাব আমাদের সমাজেও বিস্তৃত হচ্ছে। আজ আমরা নিজেরাও ধর্মীয় ও রাজনৈতিকভাবে নানা দল-উপদলে বিভক্ত হয়ে আছি। হেযবুত তওহীদের এমাম বলেন, কিন্তু এখন সময় এসেছে সচেতন হওয়ার। আমাদেরকে খেয়াল রাখতে হবে কেউ যেন আমাদের ধর্মবিশ্বাসকে ভুল খাতে প্রবাহিত করতে না পারে। কেউ যেন ধর্মের হুজুগ তুলে আমাদের মধ্যে সাম্প্রদায়িকতার সৃষ্টি না করতে পারে। আমাদের মধ্যে যেন তুচ্ছ বিষয় নিয়ে বিভেদের সৃষ্টি না হয়। তিনি আরও বলেন, আমরা যে ধর্ম-বর্ণেরই হই না কেন আমরা মানবজাতি সবাই ভাই ভাই। আমরা এক পিতা-মাতা আদম হাওয়ার সন্তান। আমরা এতদিন আমাদের সমাজে বিদ্যমান বিভিন্ন সমস্যার সমাধানকল্পে নানা ধরনের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বানিয়েছি। বিভিন্ন প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে আমরা চেষ্টা করেছি আইনকে কঠোর থেকে কঠোরতর করতে। কিন্তু অন্যায়-অশান্তি একটুও কমেনি বরং বেড়েছে। আমাদের এই সভ্যতা মানুষকে পৃথিবীতেই মুক্তি দিতে পারে নি, কাজেই পরকালেও এটি আমাদেরকে মুক্তি দিতে পারবে না। তিনি বলেন, যদি সত্যিই আমরা মুক্তি চাই তাহলে আজই সিদ্ধান্ত নিতে হবে- আমরা সবাই এক পিতা-মাতার সন্তান, এক জাতি। সিদ্ধান্ত নিতে হবে আমরা আল্লাহর হুকুম ছাড়া কারো হুকুম মানব না।
তিনি হেযবুত তওহীদের দেশব্যাপী চলমান কার্যক্রমের সাথে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সহযোগিতা করার আহŸান জানান। তিনি বলেন, জাতির সঙ্কটকালে আমরা নিজেদের জীবন বাজি রেখে, নিজেদের সম্পদ কোরবান করে মানুষকে সকল প্রকার অন্যায়ের বিরুদ্ধে সচেতন করার চেষ্টা করছি। আমরা সমাজের সকল পর্যায়ের মানুষের কাছে ধর্মের প্রকৃত শিক্ষা তুলে ধরছি। কিন্তু এ কাজ একা হেযবুত তওহীদের কাজ নয়। একাজে সকলকে সামিল হতে হবে। এদিন সন্ধ্যায় পবিত্র কোর’আন তেলাওয়াতের মাধ্যমে সভা শুরু হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন দৌলতপুর উপজেলা হেযবুত তওহীদের সভাপতি মো. মহ্ররম বিশ্বাস, সঞ্চালনায় ছিলেন কুষ্টিয়া জেলা হেযবুত তওহীদের দপ্তর সম্পাদক মো. লতিফ উল ইসলাম মিলন।