হেযবুত তওহীদের প্রতিষ্ঠাতা এমামুয্যামান জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নী’র ৭ম ওফাত দিবস উপলক্ষে রাজধানীতে হেযবুত তওহীদের উদ্যোগে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বিকেলে ঢাকার উত্তরা ফ্রেন্ডস ক্লাবে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় এ মহামানবের জীবন, কর্ম ও তাঁর রেখে যাওয়া মহান আদর্শের উপর গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা ও স্মৃতিচারণ করেন হেযবুত তওহীদের এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম, অন্যান্য নেতৃবৃন্দ ও পরিবারের সদস্যগণ।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, হেযবুত তওহীদের সাধারণ সম্পাদক মো. মশিউর রহমান, প্রধান উপদেষ্টা ও মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নী’র সহধর্মীনী খাদিজা খাতুন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আলী হোসেন, নারী বিষয়ক সম্পাদক ও এমামুয্যামানের কনিষ্ঠ কন্যা রুফায়দাহ পন্নী, হেযবুত তওহীদের উপদেষ্টা ও জ্যেষ্ঠ কন্যা উম্মুত তিজান মাখদুমা পন্নী এবং সাহিত্য সম্পাদক মো. রিয়াদুল হাসান। এছাড়াও অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা হেযবুত তওহীদের সদস্যগণ অংশগ্রহণ করেন। মানবতার কল্যাণে নিবেদিতপ্রাণ হেযবুত তওহীদের প্রতিজন সদস্য তাদের আত্মার পিতাকে এদিন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন।
হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম তার বক্তব্যে বলেন, অনেকে জানতে চান এমামুয্যামানকে আমরা মহামানব বলি কেন? তাদেরকে বলবো- আপনারা এমামুয্যামানকে জানুন। তিনি কী করেছেন সারাজীবন, কেমন মানুষ ছিলেন, সেটা জানার চেষ্টা করুন। এমামুয্যামান ছিলেন অনন্য, অসাধারণ। তাঁর মতো মানুষ আমি এক জীবনে দ্বিতীয়টি দেখিনি। তিনি যেই বই লিখেছেন ‘এ ইসলাম ইসলামই নয়’ এটা এক বারুদ। এই বারুদের শক্তি ইনশা’আল্লাহ সবাই দেখবে। আজও সেই বই পড়ে আল্লাহর দ্বীনের জন্য নিবেদিতপ্রাণ, জীবন-সম্পদ উৎসর্গকারী মো’মেন তৈরি হচ্ছে, মোজাহেদ তৈরি হচ্ছে। তাহলে যার বই পড়ে মোজাহেদ তৈরি হয় তিনি মহামানব হবেন না তো কে মহামানব হবেন?
২০১২ সালে এমামুয্যামানের ইন্তেকালের পর যখন হেযবুত তওহীদের সদস্যরা হতবিহ্বল হয়ে পড়েন, দিশেহারা হয়ে পড়েন, তখন এক শ্রেণির মোনাফেক হেযবুত তওহীদকে ধ্বংস করার জন্য উঠে-পড়ে লেগেছিল। কিন্তু হেযবুত তওহীদকে পরিচালনা করেন আল্লাহ। যারা হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে আঙ্গুল উঠিয়েছে আল্লাহ তাদের আঙ্গুল ভেঙে দিয়েছেন। সেদিন ওই মোনাফেকদের ষড়যন্ত্র থেকে যেই আল্লাহ তাঁর আন্দোলনকে হেফাজত করেছেন, আজও ধর্মব্যবসায়ীদের ষড়যন্ত্র থেকে তিনি হেযবুত তওহীদকে হেফাজত করবেন, বিজয়ী করবেন ইনশা’আল্লাহ।
জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নীর কন্যা উম্মুত তিজান মাখদুমা পন্নী বলেন, মনে হয় যেন এক জীবন পাড়ি দিয়েছি ‘বাবা’ বালে না ডেকে, কিন্তু এই পৃথিবীর সময় হিসেব করলে দেখা যায় মাত্র ক’টি বছর পার হয়েছে সেদিন থেকে যেদিন বাবা আমাদের চোখের আড়াল হলেন। যার জীবনের প্রথম স্মৃতিই বাবাকে ঘিরে, তার জন্য বাবা ছাড়া জীবনটা চিন্তা করাই ছিল কেবল দুরূহ নয়, অত্যন্ত দুর্বিসহ। আর এখন তো চিন্তা নয় বরং বাবা ছাড়া আমাদের জীবন বাস্তবেই অতিবাহিত হচ্ছে। যাঁর ¯েœহের ছায়ায় সারাজীবন কেটেছে, তাঁর অবর্তমানে সারাক্ষণ যেন প্রখর রৌদ্রের তাপ আমাদের মাথার উপর বিদ্যমান।
বক্তাগণ বলেন, এমামুয্যামান আমাদের মধ্যে নেই কিন্তু তার রেখে যাওয়া আদর্শ আমাদের সামনেই রয়েছে। এমামুয্যামান তার সারা জীবন মানবজাতির কল্যাণের জন্য ব্যপৃত করেছেন। অন্যায়, অবিচার, দুঃখ-দুর্দশাগ্রস্ত শতধা বিভক্ত বিচ্ছিন্ন এই জাতির সামনে তিনি ধর্মের সঠিক রূপটি তুলে ধরেছেন। প্রায় ১৪০০ বছরে আগে স্রষ্টা তার শেষ রসুলের মাধ্যমে যে সত্যদীন প্রেরণ করেছিলেন সেই সত্যদীনের দিকে তিনি মানবজাতিকে আহ্বান করেছেন। সুতরাং তার অনুসারী হিসেবে আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত এমামুয্যামানের নির্দেশিত এই কার্যক্রমকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। কোনো রকম পার্থিব বিনিময়ের আশা না করে মানবতার কল্যাণার্থে নিজের জীবন ও সম্পদ উৎসর্গ করা।