আতাহার হোসেন
আল্লাহ প্রেরিত সর্বশেষ আসমানী কিতাব হচ্ছে আল কোর’আন। আল কোর’আনে আল্লাহ একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান প্রেরণ করেছেন। কোর’আনে ইতিহাস রয়েছে, বিজ্ঞান রয়েছে, ব্যবসায়িক নীতি রয়েছে, আত্মিক উন্নতি এবং দণ্ডবিধিও রয়েছে। কিন্তু এককভাবে কোর’আন নির্দিষ্ট কোনো বিষয়ের উপর লিপিবদ্ধ গ্রন্থ নয়। আজকে আমরা শেষ বিষয়টি অর্থাৎ কোর’আন যে দণ্ডবিধির বই নয় সে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব। অনেকের মনেই এ বিষয়টি সন্দেহের সৃষ্টি করতে পারে কিন্তু বিষয়টি একেবারেই সরল। কোর’আন ঘেঁটে দেখবেন সেখানে তেমন কোন দণ্ডবিধি দেয়া নেই। চুরি, যিনা-ব্যভিচার, হত্যা, সন্ত্রাস ইত্যাদি কয়েকটি অপরাধের দণ্ড দেয়া রয়েছে এবং সেগুলোর বেশিরভাগই এসেছে পূর্ববর্তী বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থের সূত্র উল্লেখ করে। ঢালাও ভাবে সকল অপরাধের দণ্ড সেখানে দেয়া নেই।
কোর’আন ইতিহাসের বই নয়, বিজ্ঞানের বই নয়, ব্যবসা-বাণিজ্যের বই নয় তাহলে কোর’আন কী সে বিষয়টি আমাদের বোঝা দরকার। কোর’আন হচ্ছে একটি মূলনীতি, উপদেশগ্রন্থ, সত্য-মিথ্যার প্রভেদকারী পথনির্দেশক সূত্র (Guide Line)। আল্লাহ পবিত্র কোর’আনে বলেছেন, ‘হুদাল্লিল মুত্তাকিন’ অর্থাৎ মুত্তাকীদের জন্য পথ নির্দেশক। কোর’আন সেই মূলনীতি যাকে অনুসরণ করে বিজ্ঞান চলবে, আইন চলবে, ব্যবসা চলবে। ধরুন কোর’আনে দেয়া রয়েছে যে চুরি করার শাস্তি হচ্ছে হাত কেটে দেয়া। এখন একজন সামান্য কলম চুরি করল ও অন্যজন ব্যাংক থেকে কোটি কোটি টাকা চুরি করল। তাহলে দুই জনের শাস্তিই কী একই হবে? দুইজনের শাস্তিই যদি হয় হাত কেটে দেয়া তবে কী তা যুক্তিযুক্ত হবে? যে ব্যক্তি কোটি কোটি টাকা ব্যাংক থেকে চুরি করেছে তার সমান শাস্তি যদি কলম চুরি করেছে যে তাকে দেয়া হয় তবে সেটা জুলুম হয়ে যাবে। সন্দেশ ও গুড়ের একদর হয়ে যাবে। তাহলে এখন করণীয় কী? এখন করণীয় হচ্ছে আল্লাহর কথা স্মরণ রেখে চোরকে তার অপরাধ অনুযায়ী শাস্তি দেওয়া বা জরিমানা আদায় করা। বিচারক সমস্ত দায়ভার নিয়ে তার জন্য যা উপযুক্ত সে দণ্ড দিবেন। তিনি মন থেকে সৎ থাকবেন ও তিনি সর্বদা ¯্রষ্টার নীতিকে মাথায় রেখে এরপর রায় প্রদান করবেন। বিচারকের ঘাড়ে এতবড় দায়িত্ব থাকার ফলে, তার সম্মান যেমন বেশি তেমনি তিনিই যদি বিচারে গাফেলতি করেন তবে বড় জালেম হিসেবে পরিগণিত হবেন। কাকে কী শাস্তি দেয়া হবে তা সবসময় একই ধ্রুব (Constant) হবে না। পরিবেশ-পরিস্থিতি, অপরাধের দায় ইত্যাদি বিবেচনা করে একেক জনের জন্য দণ্ডের বিধান একেক রকম হবে। একজন সৎ, নিষ্ঠাবান কাজীর (বিচারক) উপর সকল দায়িত্ব নির্ভর করবে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে মাত্র গুটিকয়েক দণ্ডবিধি কোর’আনে থাকার পরও কিভাবে ইমাম-ফকিহগণ হাজার হাজার মাসলা মাসায়েল তৈরি করলেন? প্রতিটি সময়ে শত শত ফকিহগণ যে মাসলা মাসায়েল লিপিবদ্ধ করেছেন তা পাহাড়সম। আমাদের বিবেচনায় আনতে হবে যে মাসলা মাসায়েলগুলো কোর’আনকে মূলনীতি হিসেবে ধরে বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে তৈরি করা হয়েছিল। সবার জন্য সেগুলো প্রয়োগযোগ্যও ছিল না। সর্বযুগের জন্য সেই মাসলা মাসায়েলগুলো মোটেও ধ্রুব নয়। কোর’আন ও সুন্নাহকে মানদণ্ড ধরে মাসলা মাসায়েল নির্ধারণ করা সমসাময়িক বিচারকের কাজ। পূর্বে কাকে কী কাজের জন্য কী দণ্ড দেয়া হয়েছিল তাও গবেষণা করার কাজও ঐ বিচারকের। যে বিচারক নয় তার জন্য সেগুলো কোন গুরুত্ব বহন করে না। যারা আইন সংক্রান্ত কাজের সাথে জড়িত তাদের জন্যই সেগুলো গুরুত্বপূর্ণ।
বর্তমানে আমরা যাদেরকে আদালতে রায় দিতে দেখি তারা কি যুক্তি, ন্যায়-নীতি, পরিবেশ পরিস্থিতি বিবেচনা করে সঠিক রায় দেন না? হ্যাঁ দেন। তবুও কোর’আনে আল্লাহ তাদের জালেম বলেছেন কারণ তারা আল্লাহর হুকুম অনুযায়ী ফয়সালা করেন না (সুরা মায়েদা ৪৪, ৪৫, ৪৭)। তারা সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক হিসেবে আল্লাহকে মনে করেন না। তারা ¯্রষ্টার দেয়া মূলনীতিগুলোকে মাথায় রেখে বিচার প্রদান করেন না। তারা হত্যার বদলে ফাঁসি দেন (হত্যার পরিবর্তে হত্যা), চুরির অপরাধে জেলে পাঠান, সন্ত্রাসের উপযুক্ত দণ্ড প্রদান করেন। তাদের সবই ঠিক আছে কিন্তু যদি তারা ¯্রষ্টাকে মাথায় রেখে এরপর বিচার করতেন তবে তাদের ষোলকলাই পূর্ণ হত। বিষয়টা অনেকেটাই এমন ধরুন আপনি বিয়ে বহির্ভূতভাবে একজন নারী বা পুরুষের সাথে শারীরিক সম্পর্ক করলেন। আপনি ব্যাভিচার করলেন। এটা সাংঘাতিক অপরাধ। অপরদিকে আপনি একই কাজ যদি বিয়ের পর করলেন তাহলে আপনার কোন দোষ হবে না। কাজ একই অথচ দুটোকে গ্রহণ করা হচ্ছে একেবারে বিপরীতভাবে। কারণ হচ্ছে স্বীকৃতি। ¯্রষ্টার স্বীকৃতি। আপনি যদি বিচার করেন, ব্যবসা করেন ¯্রষ্টার কথা মাথায় রেখে তাহলে কোন সমস্যা নেই। আপনার প্রতিটি কাজ ইবাদত বলে গণ্য হবে। কিন্তু যখনই আপনি ¯্রষ্টার মূলনীতি ভুলে গিয়ে কাজ করবেন তখন আপনার সব কিছু অবৈধ বলে ঘোষিত হবে। আপনার সবকিছু বরবাদ হয়ে যাবে। আমাদের রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে ইসলামকে গ্রহণ করা হয়েছে। এখন সৃষ্টিকর্তার আদেশ-নিষেধকে মূলনীতি ধরে বিচার করুক, দণ্ড দিক, ব্যবসা করুক, আইন রচনা করুক, জনকল্যাণে কাজ করুক তবেই সব ঠিক হয়ে যাবে। সবকিছুতেই আমূল পরিবর্তন আসবে যদি স্রষ্টার দেয়া মূলনীতিকে গ্রহণ করা যায়। সেটা না করে কেবল কাগজে কলমে থাকলে কোনো ফায়দা হবে না।
আমাদের পূর্ববর্তী ফকিহগণ যে পাহাড়সম মাসলা মাসায়েলের বই লিপিবদ্ধ করেছিলেন সে পাহাড় তৈরি করা কী আদৌ প্রয়োজন ছিল? একটু পিছিয়ে দেখা যাক। যারা ফিকহ শাস্ত্র প্রণয়ন করেছেন ও এর উপর বুৎপত্তি অর্জন করেছেন তাদের জন্ম রসুলের ওফাতের ৮০-৩০০ বছর পর। এই ফিকাহর জন্ম হওয়ার আগে যে মুসলিমগণ ছিলেন তারা কী মাসলা মাসায়েল জানতেন না? তাদের বিচারকার্য কী সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হত না? খলিফারা, শাসকরা কী কোথাও ফিকাহর অভাববোধ করেছিলেন? অবশ্যই না। তাদের হাতে এখনকার মত কোর’আনের কপি ছিল না, যে যতটুক জানতেন ততটুকুই পালন করতেন। এত বাড়াবাড়ি পর্যায়ের জ্ঞান তাদের ছিল না। রসুলের সময় এমন অনেক সাহাবী ছিল যারা দূর-দূরান্ত থেকে এসে ইসলাম গ্রহণ করতেন। তখন রসুল থেকে যে সামান্য শিখে যেতেন তাই আমল করতেন। তারা এত ফিকাহর প্রয়োজনীয়তা কখনই অনুভব করেন নি কিন্তু সকলেই ছিলেন উত্তম মুসলিম।
ফিকাহ শাস্ত্রের উৎপত্তির পর ইসলাম পালন সহজ হয়েছিল নাকি জটিল হয়েছিল সেই হিসাব করতে বসলে দেখা যাবে যে ফিকাহর আগেই সহজ ছিল। তার প্রমাণ আমরা ইতিহাস থেকেই পেতে পারি। ঈমানদারদের মধ্যে একতা ছিল, ভ্রাতৃত্ব ছিল। তাদের মধ্যে পরবর্তী যুগের মত দলাদলি, ফেরকা মাজহাবে বিভক্তি, অনৈক্য ছিল না। ইসলামের মৌলিক যে উন্নতি হয়েছিল তা হয়েছিল ফিকাহশাস্ত্র প্রণয়নের আগে। খলিফা ওমর (রা.) এর সময়ে অর্ধ দুনিয়া মুসলিমদের করতলগত ছিল। তখন মুসলিমরা সংখ্যা কত ছিল? পাঁচ লাখ মাত্র। সেই পাঁচ লাখের তোপের মুখে তৎকালীন দুই পরাশক্তি রোমান ও পারস্য তুলার মত উড়ে গিয়েছিল। আর আজ সংখ্যায় ১৬০ কোটি হয়েও তারা উড়ে যাচ্ছে, ভেসে যাচ্ছে, মরে যাচ্ছে, পুড়ে যাচ্ছে।
বিষয়টি কিন্তু যত সহজে লিখে ফেলা গেল তত সহজ নয়। একজন রোমান ১০ জন আরব সৈন্যের সমতুল্য এমন অনুপাতই প্রতিষ্ঠিত ছিল এবং তাদের এই ধারণা মোটেও ভুল ছিল না। আল্লাহর রসুল যখন মদিনার প্রধান তখন তার সাথে কোরাইশদের বেশ কয়েকটি যুদ্ধ সংগঠিত হয়। তখন পারস্যের অধীন ইয়েমেনের আঞ্চলিক প্রশাসক সে কথা জানতে পেরে আল্লাহর রসুলকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়ার জন্য দুইজন পেয়াদা প্রেরণ করেন। কতটা অবজ্ঞাভরে তারা আরবদের দেখত তা এই ঘটনা থেকেই প্রমাণ হয়ে যায়। সেই উপেক্ষিত, অজ্ঞাত, অখ্যাত জাতি মাত্র আটাশ বছরের ব্যবধানে দু-দুটো সুপার পাওয়ারকে একেবারে গুড়িয়ে দিল। অর্ধেক দুনিয়ায় ইসলামের সুশীতল ছায়ায় শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হল। কিন্তু এরপর ইসলামের পরিধি আর কতটুকু বেড়েছে? এত বিদ্যা অর্জন করে, হাজার হাজার মাসলা মাসায়েল লিপিবদ্ধ করে, প্রত্যেকের হাতে কোর’আনে কপি পৌঁছে দিয়ে কতটুকু অগ্রগতি সম্ভব হয়েছে?
অগ্রগতি তো হয়ই নি বরং ঐ মাসলা মাসায়েলকে কেন্দ্র করে জাতি অনেকগুলো ভাগে বিভক্ত হয়ে গিয়েছে। আমরা আর পূর্বের ন্যায় ঐক্যবদ্ধ নেই। নিজেরা নিজেরা দল-উপদলে বিভক্ত হয়ে দ্বন্দ সংঘাত করে শক্তিহীন হয়ে গিয়েছি। সংখ্যায় ১৬০ কোটি হলেও আমাদের অবস্থা জলে ভেসে যাওয়া আবর্জনার মতো। ৫৫ টির মতো ভৌগলিক রাষ্ট্রে আজ আমরা বিভক্ত। নিজেদের মধ্যে একক কোন কর্তৃপক্ষ নেই। অপরাপর জাতির কাছে আমরা ঘৃণিত, উপেক্ষিত ও হাস্যরসের উপাদান। বর্তমান জাতির বেশ কয়েকটি দেশের নাগরিকরা আজ উদ্বাস্তু হয়ে ইউরোপের পথে পথে ঘুরে বেড়াচ্ছে। সাগড়ে ডুবে মরছে হাজার হাজার। একদা দুনিয়া শাসনকরা জাতিটি আজ অন্যের দয়া ভিক্ষা করে শরণার্থী শিবিরে জায়গা করে নেয়। শিশু ও বৃদ্ধরাও রেহাই পাচ্ছে না। একের পর এক ভ‚খণ্ডকে ধ্বংস করে দিচ্ছে সাম্রাজ্যবাদী শক্তিরা।
খেজুর পাতার মসজিদে বসে, হাতে লেখা কয়েক কপি কোর’আন দিয়ে তৎকালীন শাসকরা যখন সমগ্র পৃথিবীতে ন্যায় ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছিল তখন কোটি কোটি কোর’আনের কপি, লাখ লাখ হাফেজ ও হাজার হাজার তাফসীরের গ্রন্থ দিয়ে জাতির কী উপকার হল? আমাদের ছাত্ররা কষ্ট করে দিন রাত পরিশ্রম করে এ ফিকাহ শাস্ত্র পড়ছে ও এর উপর বুৎপত্তি অর্জন করার স্বপ্ন দেখছে কিন্তু যে ফিকাহ তারা পড়ছে তার কোথাও কার্যকারিতা নেই, কোথাও সে বিধান প্রতিষ্ঠিত নেই। যদি কার্যকর থাকতো তবুও তাদের এই কঠোর পরিশ্রমের একটি সার্থকতা পাওয়া যেত।
এখানে একটা কথা পরিষ্কার করা দরকার। আমি ফিকাহ বা ফকিহদের বিরুদ্ধে বলছি না। কারণ কোর’আন ও হাদিস থেকে জীবন বিধানের নির্দেশগুলো একত্র ও বিন্যাস করলে যা দাঁড়ায় তাই ফিকাহ- অর্থাৎ ফিকাহ ছাড়া কোনো মুসলিমের জীবনব্যবস্থা অনুসরণ অসম্ভব। আমার বক্তব্য ঐ ফিকাহর অতি বিশ্লেষণ, সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম বিশ্লেষণ যা আল্লাহ ও তাঁর রসুল (সা.) কঠোরভাবে নিষেধ করে দিয়েছেন। আমাদের ফকিহরা যদি কোর’আন-হাদিসের মৌলিক আদেশ নিষেধগুলোকে সুন্দরভাবে শ্রেণি বিন্যাস করেই ক্ষান্ত হতেন এবং লিখতেন যে এই-ই যথেষ্ট- এরপর আর অতিরিক্ত বিশ্লেষণে যেও না, কারণ আল্লাহ বলেছেন দীন নিয়ে বাড়াবাড়ি করো না এবং রসুলাল্লাহও (সা.) নিষেধ করেছেন, তাহলে তাদের কাজ হতো অতি সুন্দর। ইসলামকে প্রকৃতভাবে সেবা করা হতো এবং আল্লাহর কাছ থেকে তারা পেতেন প্রচুর পুরস্কার। কিন্তু দুর্ভাগ্য হচ্ছে তারা তা করেন নি। তারা আজীবন কঠিন পরিশ্রম করে আল্লাহর আদেশ-নিষেধগুলো ও বিশ্বনবীর (সা.) কাজ ও কথাগুলোকে সূক্ষ্ম থেকে সূক্ষ্মতম বিশ্লেষণ করতে করতে এমন পর্যায়ে নিয়ে গেছেন যে, সাধারণ মানুষের পক্ষে তা পূর্ণভাবে পালন করা প্রায় অসম্ভব এবং কেউ চেষ্টা করলে তার জীবনে অন্য আর কোনো কাজ করা সম্ভব হবে না, এ দীনকে পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের তো প্রশ্নই আসে না। কারণ ফকিহরা তাদের ক্ষুরধার প্রতিভাকে কাজে লাগিয়ে প্রত্যেকে হাজার হাজার মাসলা-মাসায়েল সৃষ্টি করেছেন। প্রধান প্রধান গণের এক এক জনের সিদ্ধান্তের সংখ্যা কয়েক লক্ষ। জাতি ঐ মাসলা-মাসায়েলের মাকড়সার জালে জড়িয়ে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে গেছে, স্থবির হয়ে গেছে।