উগ্রবাদের বিরুদ্ধে বজ্রকঠিন শপথ সর্বশ্রেণির মানুষের
.
গত দুইদিন ধরে চলা সমস্ত ষড়যন্ত্র, মিথ্যা প্রোপাগাণ্ডা, বাধা উপেক্ষা করে ঝিনাইদহে হেযবুত তওহীদের সফল কর্মীসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বছরের শুরুতেই জেলা কমিটিগুলোকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন জেলা সফর করার কর্মসূচি নিয়েছেন হেযবুত তওহীদের এমাম। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল ঝিনাইদহে হেযবুত তওহীদের কর্মীসভার আয়োজন করা হয়। তবে বরিশাল ও নরসিংদীর মত ঝিনাইদহেও নানা অপপ্রচার ও অপতৎপরতা করেছে চরমোনাই গোষ্ঠী ও উগ্রবাদীরা। তারা অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত জনপ্রতিনিধি ও বিশেষ অতিথিবৃন্দের কাছে হেযবুত তওহীদের নামে মিথ্যা অপপ্রচার করে অনুষ্ঠান বান্চাল করার চেষ্টা করেছে, যথারীতি অনুষ্ঠানস্থলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার হুমকি-ধামকিও প্রশাসনকে দিয়েছে। জনগণের কাছে মিথ্যাচার করেছে। তবে হেযবুত তওহীদের নেতাকর্মীরা পিছপা হয়নি, তারা সব বাধা উপেক্ষা করে হেযবুত তওহীদের সমাবেশ সফল করেছে।
.
সকাল ১০টার দিকে ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলায় জেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে এ কর্মীসভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা হেযবুত তওহীদের সভাপতি মোহাম্মদ নুহুর সভাপতিত্বে কর্মীসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন হেযবুত তওহীদের এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম।
.
তিনি বলেন, আজকে সারা পৃথিবীময় রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে অর্থনৈতিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এই সঙ্কটের ধাক্কা বা প্রভাব দরিদ্র দেশগুলোর মধ্যে পড়েছে। যে কারণে বাংলাদেশেও অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক বিপর্যয় ও অশান্তি সৃষ্টি হয়েছে। চলমান এই সঙ্কট থেকে বাঁচার জন্য যত ধরনের আইন তৈরি করা হোক, বিধি-ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক, সবকিছু ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে। কারণ আল্লাহ মানুষকে সৃষ্টি করেছেন তাঁর খলিফা বা প্রতিনিধি হিসেবে। কোন পথে মানুষের কল্যাণ, সুখ-শান্তি, অধিকার, নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে সেটা তিনি জানেন। আর কোন পথে মানুষ অশান্তির মধ্যে পড়বে সেটাও আল্লাহ জানেন। মানুষ যেন ন্যায়-সুবিচারের মধ্যে থাকতে পারে, এজন্য আল্লাহ একটি দীন অর্থাৎ জীবনব্যবস্থা দিলেন। কিন্তু মানবজাতি আল্লাহর দেওয়া সেই দীন বা জীবনব্যবস্থা প্রত্যাখ্যান করে নিজেরা জীবনব্যবস্থা তৈরি করে নিয়েছে। ফলে মানবজাতি পতিত হয়েছে সীমাহীন অন্যায়-অশান্তির মধ্যে। হেযবুত তওহীদের কথা হচ্ছে, সমগ্র পৃথিবীর মানুষ যদি আল্লাহর দেওয়া দীন গ্রহণ করে নেয়, জাতীয়, রাষ্ট্রীয়, সামাজিক, অর্থনৈতিক জীবনে আল্লাহর দেওয়া ব্যবস্থা গ্রহণ করে নেয়, সর্ব অঙ্গনে প্রয়োগ তথা কার্যকরী করে তাহলে যাবতীয় অন্যায়, অবিচার, অশান্তি দূর হবে এবং শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে। এজন্যই হেযবুত তওহীদ মানবজাতিকে প্রকৃত ইসলামের দিকে আহ্বান করে যাচ্ছে।
.
তিনি আরো বলেন, আজকে ধর্মব্যবসায়ী একটি গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে সারাদেশে বিভিন্ন মিথ্যা অপপ্রচার করে সাধারণ মানুষের মনে হেযবুত তওহীদ সম্পর্কে একটা নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টি করে দিচ্ছে। তাদের মিথ্যাচারে কেউ কান দিবেন না। আগে হেযবুত তওহীদ সম্পর্কে ভালো করে জানুন। যারা হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধাচরণ করছে তাদের মুখোস আল্লাহ খুলে দিবেন। তাদের মিথ্যাচারে হেযবুত তওহীদ কখনো ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।
.
হেযবুত তওহীদের কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি আরো বলেন, হেযবুত তওহীদের দাঁড়িয়েছে মানবতার কল্যাণে, মানুষের মুক্তির জন্য, পথহারা মানুষদেরকে পথের দিশা দেওয়ার জন্য। কাজেই কোনো সদস্য কখনও কোনো অন্যায় করতে পারবে না, দেশের প্রচলিত আইন ভঙ্গ করতে পারবে না, কোনো মাদকের সাথে সম্পৃক্ত হতে পারবে না, হুজুগ ও গুজব সৃষ্টি করতে পারবে না, অন্য ধর্ম ও উপাসনালয়, ধর্মগ্রন্থ, অবতারদের অশ্রদ্ধা করতে পারবে না। প্রত্যেক সদস্য-সদস্যা নিজেদের জীবনকে, সম্পদকে মানবতার কল্যাণে ব্যয় করার দৃঢ়সংকল্পব্ধ হবেন। এমন কিছু করতে পারবে না যা আল্লাহর নীতি পরিপন্থী, আদর্শবহির্ভূত। তিনি বলেন, যদি হেযবুত তওহীদ ঐক্যবদ্ধ হয়ে সমস্ত স্বার্থকে ত্যাগ করে মানুষের কল্যাণে, মানবতার কল্যাণে উৎসর্গ করতে পারে তবে সাম্রাজ্যবাদীদের আগ্রসন থেকে প্রিয় বাংলাদেশকে নিরাপদ রাখতে পারবে, যাবতীয় অন্যায়, অবিচার, অশান্তির হাত থেকে দেশের মানুষ রক্ষা পাবে। অভাব, দারিদ্র্য ও দুর্ভিক্ষের হাত থেকে রক্ষা পাবে।
.
ঝিনাইদহ জেলা হেযবুত তওহীদের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান মিলনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন হেযবুত তওহীদের চট্টগ্রাম বিভাগীয় আমির মো. নিজাম উদ্দিন, খুলনা-১ বিভাগীয় আমির মো. শামসুজ্জামান মিলন, যশোর জেলা সভাপতি জহির রায়হান, মাগুরা জেলা সভাপতি বিএম শামীম আশরাফ প্রমুখ।