রাজধানীতে গত ২০ এপ্রিল ২০১৮ শুক্রবার বিকেলে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী এক জনসচেতনতামূলক আলোচনা সভা করেছে মানবতার কল্যাণে নিবেদিত আন্দোলন হেযবুত তওহীদ। এদিন ঢাকার উত্তরার ৩নং সেক্টরের ফ্রেন্ডস ক্লাব ভবনের ৩য় তলায় এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। উত্তরা থানা হেযবুত তওহীদের উদ্যোগে আয়োজিত এ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন হেযবুত তওহীদের এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, হেযবুত তওহীদের সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ অনলাইন টেলিভিশন এসোসিয়েশনের সভাপতি ও জেটিভি অনলাইন’র চেয়ারম্যান মো. মশিউর রহমান, হেযবুত তওহীদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা মহানগরীর সভাপতি মো. আলী হোসেন, প্রচার সম্পাদক এস এম সামসুল হুদা, সাহিত্য সম্পাদক রিয়াদুল হাসান, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান টিটু, মিরপুর থানা সভাপতি আবদুল হক বাবুল প্রমুখ। সভায় সভাপতিত্ব করেন উত্তরা থানা হেযবুত তওহীদের সভাপতি মনিরুজ্জামান মুন্না এবং সঞ্চালনায় ছিলেন রামপুরা থানা সভাপতি মো. ফরিদ উদ্দিন রব্বানী।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, সারা পৃথিবী আজ জাহেলিয়াতে নিমজ্জিত হয়ে আছে। আইয়্যামে জাহেলিয়াতের অন্ধকার বিদীর্ণ করে সূর্যের উদয় ঘটাতে এসেছিলেন আল্লাহর শেষ রসুল মোহাম্মদ (সা.)। আল্লাহ কোর’আনে আমাদেরকে দোয়া করতে শিখিয়েছেন, হে আল্লাহ, আমাদের দুনিয়ার জীবনকে সুন্দর করে দাও এবং আখেরাতের জীবনকেও সুন্দর করে দাও। আল্লাহর রসুল বলেছেন, দুনিয়া আখেরাতের শস্যক্ষেত্র। এরপরও আমরা কীভাবে দুনিয়াকে অবজ্ঞা করে, দুনিয়াকে সুন্দর না করেই সুন্দর পরকাল আশা করি?
তিনি মুসলমানদেরকে দুনিয়াবিমুখতা ত্যাগ করার আহবান জানিয়ে বলেন, ‘হে মুসলমান, দুনিয়াকে কুৎসিত করে রেখে সুন্দর পরকাল তোমরা কখনওই পাবে না। দুনিয়াকে আগে সুন্দর কর। কেমন সুন্দর? অন্যায় নেই অবিচার নেই, দুর্নীতি নেই, রক্তপাত নেই, খুন নেই, শোষণ নেই, বঞ্ছনা নেই- এরকম সুন্দর কর। আজকে আমাদের দুনিয়া সুন্দর নয়, অসুন্দর। হাসান নয়, আইয়ামে জাহেলিয়াত। এই জাহেলিয়াত থেকে মানুষকে মুক্তি দিতে আপনারা নিজেদেরকে উৎসর্গ করুন। তবেই হবেন মো’মেন। আসবে আল্লাহর সাহায্য।’
হেযবুত তওহীদের এমাম মুসলমানদের দুর্দশার চিত্র তুলে ধরে আরও বলেন, ‘আল্লাহর রসুল বলেছিলেন আখেরী জামানায় এমন সময় আসবে মানুষ যেভাবে খাবার খাওয়ার জন্য একে অপরকে ডাকে সেভাবে অন্যান্য জাতি একে অপরকে ডাকবে মুসলমানদের ধ্বংস করার জন্য। আজ আমরা দেখতে পাচ্ছি সিরিয়া, ইরাকে, আফগানিস্তানে, লিবিয়ায়, ইয়েমেনে কী হচ্ছে। সিরিয়া আজ গণকবর। একজন হামলা চালায় আরেকজন জবাব দেয়। আমেরিকাও জবাব দেয়, রাশিয়াও জবাব দেয়, ব্রিটেনও জবাব দেয়, ফ্রান্সও জবাব দেয়, সিরিয়ার সরকারও জবাব দেয়। তিনি বলেন, কিন্তু কথা হচ্ছে- বোমাটা পড়ে কোথায়? মুসলমানদের বুকে। দেশ ধ্বংস হয় কার? মুসলমানের। উদ্বাস্তু হয় কারা? মুসলমান। আল্লাহর রসুল যখন ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন তখন সাহাবীরা তাঁকে প্রশ্ন করলেন, এই অবস্থা কেন হবে? আমরা কি সংখ্যায় এতই কমে যাব? আল্লাহর রসুল বললেন, সংখ্যায় তোমরা হবে অসংখ্য, কিন্তু তোমাদের অবস্থা হবে স্রোতে ভেসে যাওয়া আবর্জনার মত। আল্লাহর রসুল যাদেরকে ¯্রােতে ভেসে যাওয়া আবর্জনা বলেন তারা কি মো’মেন হতে পারে? কখনই না। আজকের এই অবস্থাই প্রমাণ করে আমরা এখন মো’মেন নেই। আল্লাহ আমাদেরকে মো’মেন হিসেবে কবুল করছেন না। আমাদের সমস্ত আমল নিষ্ফল হচ্ছে। এখন একমাত্র উপায় মো’মেন হওয়া। আল্লাহর হুকুম ছাড়া কারো হুকুম মানব না- এই কথার ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ হওয়া। হেযবুত তওহীদের এটাই আহবান।’