রিয়াদুল হাসান:
মহান আল্লাহ পরিষ্কার ভাষায় বলেছেন, (১) নিঃসন্দেহে মানুষের জীবনবিধান হিসেবে আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য একমাত্র দীন বা ধর্ম হচ্ছে ‘ইসলাম’ (সুরা ইমরান-১৯)। (২) কেউ ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো দীন গ্রহণ করতে চাইলে তা কখনো কবুল করা হবে না (সুরা ইমরান ৮৫)। (৩) আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দীনকে পরিপূর্ণ করলাম এবং তোমাদের উপর আমার নেয়ামতকে সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের দীনরূপে মনোনীত করলাম (সুরা মায়েদা ৩)।
মানুষের ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র এক কথায় সর্বব্যাপী জীবনে একটা জীবনব্যবস্থা বা সিস্টেম লাগবেই। সেটা দুই ধরনের হতে পারে। ক. আল্লাহর দেয়া। খ. মানুষের নিজেদের তৈরি করা। কোনটা সে গ্রহণ করবে এ স্বাধীনতা মানুষকে দেয়া হয়েছে। এর উপরেই তার শাস্তি ও পুরস্কার নিহিত। আল্লাহর বক্তব্য হলো তোমাদের সীমিত জ্ঞানে (সুরা বনী ইসরাইল ৮৫) তোমরা যে দীন রচনা করেছ তা তোমাদের শান্তি দিতে পারবে না। আমি আমার নবী-রসুলের মাধ্যমে যে পথ নির্দেশনা, হেদায়াহ পাঠিয়েছি তাই তোমাদের শান্তি দিতে পারবে। যারা এর অনুসরণ করবে তাদের কোনো ভয় নেই, তারা দুঃখিতও হবে না (সুরা বাকারা ৩৮)। এ জন্যই এই দীনের নাম ইসলাম। আক্ষরিক অর্থেই শান্তি।
এখন সমগ্র মানবজাতির কথা বাদই দিলাম, যে মুসলমান জাতির উপর দায়িত্ব ছিল নিজেরা আল্লাহর দেওয়া দীনের অধীনে বাস করে শান্তিতে থাকবে এবং বাকি মানবজাতিকেও এই শান্তির আস্বাদ দিয়ে নবীর রেখে যাওয়া দায়িত্ব পালন করবে সেখানে এই মুসলমানরাই আল্লাহর দেওয়া দীনুল হক ত্যাগ করে ইহুদি-খ্রিষ্টানদের তৈরি করা জীবনব্যবস্থা গ্রহণ করে নিয়েছে। পরিণামে দুনিয়াময় অশান্তি।
কেউ হয়ত বলবেন, আমরা তো নামাজ পড়ি, নিখুঁতভাবে অজু করি, কেউ কেউ গভীর রাতে অতি কষ্ট করে উঠে তাহাজ্জুদ পড়ি, রোজা রাখি, হজ্ব করি, কোর’আন খতম করি। আমরা বলি, হ্যাঁ তা করছেন। কিছু আমল করছেন। কিন্তু ইসলাম তো একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। সেখানে ব্যক্তিগত জীবনের পাশাপাশি অর্থনীতি, রাষ্ট্রনীতি, বিচারব্যবস্থা ইত্যাদি সর্ব অঙ্গনের বিধানই রয়েছে। সেগুলো কি মানা হচ্ছে? সার্বভৌমত্ব বা চূড়ান্ত সিদ্ধান্তদাতা কি আল্লাহকে মানতে পারছেন? সেখানে মানতে হচ্ছে ইহুদি-খ্রিষ্টানদের সার্বভৌমত্ব ও তাদের তৈরি অর্থব্যবস্থা, শাসনব্যবস্থা, বিচারব্যবস্থা ইত্যাদি সবকিছু। আল্লাহর বিধানের আংশিক মানা আর আংশিক প্রত্যাখ্যান করা কি শেরক নয়? আল্লাহ বলেন, “তবে কি তোমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছ যে আল্লাহ কেতাবের আংশিক মান্য করবে আর আংশিক প্রত্যাখ্যান করবে? এমন যারা করবে তাদের শাস্তি তো পার্থিব জীবনে লাঞ্ছনা আর আখেরাতে তাদেরকে ভয়াবহ শাস্তির দিকে ঠেলে নিয়ে যাওয়া হবে।” (সুরা বাকারা ৮৫)।
আমরা জানি, ইসলামের বুনিয়াদ পাঁচটি – তওহীদ, সালাত, যাকাত, হজ্ব, সওম। এখানে প্রথমটি হচ্ছে ঈমান আর বাকি চারটি হচ্ছে আমল। তওহীদ হচ্ছে আল্লাহর সাথে বান্দার একটি চুক্তি যেখানে আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া আর কাউকে আমরা আমাদের জীবনে ইলাহ বা হুকুমদাতা হিসাবে মানবো না। আল্লাহর নবী বলেছেন- বান্দাদের সাথে আল্লাহর চুক্তি হচ্ছে যে তারা আল্লাহ ছাড়া আর কাউকে মানবে না, তাহলেই আল্লাহ তাদের কোন শাস্তি দেবেন না (জান্নাতে প্রবেশ করাবেন)। [মুয়াজ ইবনে জাবাল (রা.) থেকে বোখারী, মুসলিম] এটা বর্তমানে আমরা কি এই চুক্তিতে আছি? আমরা আমাদের সামগ্রিক জীবনে পাশ্চাত্যের জীবনব্যবস্থা গ্রহণ করে নিয়েছি, আল্লাহর বদলে মানুষকেই ইলাহ বা বিধাতার আসনে বসিয়ে রেখেছি। এই চুক্তি ভঙ্গের পরে আর আমলের কোনো মূল্যই থাকে না।
এখন মুসলিম জাহানের অবস্থা কী? আসুন বাস্তবতার দিকে একবার দৃষ্টি নিক্ষেপ করি। ১৬০ কোটির এই জাতির আজ কী অবস্থা আর যখন তারা সংখ্যায় মাত্র ৫ লক্ষ তখন তারা কী অবস্থায় ছিল? দুইটি পরাশক্তি তাদের হাতে বিধ্বস্ত হয়ে গিয়েছিল। তখন হাতে লেখা কয়েক কপি কোর’আন ছিল যা ঐ জাতির অধিকাংশ মানুষ জীবনে চোখেও দেখে নি, এত হাদিস, তফসির, ব্যাখ্যার তো প্রশ্নই আসে না। পক্ষান্তরে এখন ঘরে ঘরে কোর’আন, হাদিস, তাফসির, মাসলা মাসায়েলের বই। তথাপি পৃথিবীতে প্রধান যে কয়টা জাতি আছে সবার কাছে আমরা মার খাচ্ছি, আমরা আজকে লাঞ্ছিত, নিগৃহীত হয়ে ইউরোপের রাস্তায় রাস্তায় ভিক্ষা করে বেড়াচ্ছি একটু খাদ্য ও আশ্রয়ের আশায়। যে ভূখণ্ডগুলো রসুলাল্লাহর (সা.) আসহাবগণ রক্তের বিনিময়ে জয় করেছিলেন, সেই ভূখণ্ডগুলো আজ একটা একটা করে ধ্বংস করে দিচ্ছে, দখল করে নিচ্ছে পশ্চিমা পরাশক্তিগুলো। আমরা তাদেরকে ঠেকাতে পারছি না। প্রকৃতপক্ষে তাদের বন্দুকের নিশানা তারা তাক করেছে ইসলামের দিকে। তারা পৃথিবী থেকে ইসলাম নামক এই দীনকেই কার্যত বিলুপ্ত করে দিতে চায়।
পশ্চিমা পরাশক্তিগুলো গত শতকে দুই দুইটি বিশ্ব যুদ্ধ করার পর তাদের অধীন উপনিবেশগুলোকে আপাত স্বাধীনতা দিয়ে চলে যায়। এরপর তারা প্রধানত দুটো ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। একদিকে ব্রিটেন আমেরিকার নেতৃত্বে গণতান্ত্রিক পুঁজিবাদী ব্লক, অন্যদিকে রাশিয়ার নেতৃত্বে সমাজতান্ত্রিক ব্লক। এই দুটো পক্ষ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকেই ঠাণ্ডা যুদ্ধ চালিয়ে আসছিল যার অবসান হয় নব্বই দশকে। রাশিয়া ’৭৯ সালে আফগানিস্তানে আক্রমণ করলে রাশিয়ার বিরুদ্ধে আফগানিস্তানকে সহযোগিতা করে আমেরিকা। আফগান রণাঙ্গনে তুখোড় আফগান মুসলমানদের জেহাদী চেতনার সামনে পরাজিত হয় রাশিয়া। অনেক বিশ্লেষক মনে করেন, এখানে সৌদি আরবকে কাজে লাগিয়ে মুসলিমদের ধর্মীয় চেতনাকে প্রবলভাবে আমেরিকার পক্ষে ব্যবহার করা হয়েছে।
যাহোক, সমাজতন্ত্রের পতনের পর পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদী পরাশক্তিগুলো দেখলো তাদের সামনে এখন আর একটা শক্তি আছে- মুসলমান; যারা মৃতপ্রায় হলেও, নিজেরা নিজেরা হানাহানি দ্বন্দ্বে লিপ্ত থাকলেও সংখ্যায় ১৬০ কোটি। তাদের অধিকাংশের মধ্যে একটি ঈমানী চেতনা আছে, তাদের হাতে অবিকৃত ঐশিগ্রন্থ কোর’আন আছে। যদি কোনো সূত্র ধরে আবার এই জাতিটি ঐক্যবদ্ধ হয়ে যায় তবে তো বিশ্বের আধিপত্য মুসলিমদের হাতে চলে যাবে। তাছাড়া ঔপনিবেশিক দাসত্বের যুগ শেষ হওয়ার পর থেকেই সমগ্র মুসলিম বিশ্বে একটি নবজাগরণের ¯পন্দন অনুভ‚ত হচ্ছিল। মুসলিম উম্মাহর সেই হারানো গৌরবের ইতিহাসকে ফিরিয়ে আনার জন্য অনেক আন্দোলন সক্রিয় হয়ে উঠেছিল। তাই এবার পশ্চিমারা তাদের বন্দুকের নিশানা তাক করলো ইসলামের দিকে।
প্রথমে তারা অনুগত মিডিয়াগুলো ব্যবহার করে মুসলিমরা জঙ্গি, সন্ত্রাসী, ইসলামকে সন্ত্রাস, অন্ধত্ব, কূপমণ্ডূকতা, গোড়ামির ধর্ম বলে অপপ্রচার চালাতে লাগল। একটি মিথ্যা একশ বার প্রচার করলে মানুষ সেটাকেই সত্য বলে মনে করে। এভাবে শুধু পাশ্চাত্যে নয়, সারা পৃথিবীতেই ইসলাম সম্পর্কে একটি নেতিবাচক ধারণা তারা সৃষ্টি করে দিতে সক্ষম হয়েছে। এরপর তাদের পক্ষে একটার পর একটা দেশে নানা মিথ্যা অসিলায় আক্রমণ করে দখল করে নেওয়া জায়েজ হয়ে গেছে। আর এর ক্ষেত অভ্যন্তরীণ ধর্মীয় ও রাজনৈতিক হানাহানি, দাঙ্গা ইত্যাদির মাধ্যমে পূর্ব থেকেই তৈরি করা হয়। আমাদের প্রিয় জন্মভ‚মি বাংলাদেশ নিয়েও গভীর ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। তারা এখানেও ঐরকম একটা সঙ্কটময় পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারলে আমাদের অবস্থা কী হবে সেটা আমাদের আলেম সমাজকে অবশ্যই হৃদয় দিয়ে উপলব্ধি করতে হবে।
এমতাবস্থায় আমাদের বক্তব্য হল, আমাদের এখন ঐক্যবদ্ধ হওয়া ছাড়া আর কোনো পথ নেই। আমরা তো কওমি-আলিয়া, আহলে হাদিস, আহলে সুন্নাত, শিয়া, সুন্নী, কাদেরিয়া, নকশবন্দিয়া, মোজাদ্দেদিয়া, গণতন্ত্রী, সমাজতন্ত্রী ইত্যাদি হাজারো ভাগে বিভক্ত হয়ে গিয়েছি। আমাদের সবার মধ্যে আকিদা ও আমলের বিস্তর ব্যবধান রচিত হয়েছে। এখন আমাদের ঐক্যের উপায় কি? কে আমাদের ঐক্যবদ্ধ করে দিবে? নবী-রসুল তো আর আসবেন না। আজকে ইসলামের নামে একেকজন একেক দিকে ডাকছে। কেউ ধর্মভিত্তিক রাজনীতির পথে, কেউ জঙ্গিবাদের পথে, কেউ বিভিন্ন তরিকার পীর-বুজুর্গের পথে, কেউ বা ব্যক্তিগতভাবে নামাজ রোজা করেই জান্নাতের পথনির্দেশ করছে। এই বহুরকম মতবাদের ভিড়ে বিভ্রান্ত মুসলিম জাতি ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কোনো সাধারণ সূত্র খুঁজে পাচ্ছে না।
এই ঐক্যেরই ডাক দিয়েছেন টাঙ্গাইলের ঐতিহ্যবাহী পন্নী পরিবারের সন্তান এমামুয্যামান জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নী। তিনি বললেন, আল্লাহর রসুল তাঁর সময়ের মানুষকে যেভাবে তওহীদের ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন সেই একই চিরন্তন সত্য কলেমা তওহীদের উপর ঐক্যবদ্ধ করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। কারণ সব মাজহাব ফেরকার মুসলিমরাই এই কলেমার সাক্ষ্য দেয়। আমরা যে জায়গা থেকে সরে গিয়েছিলাম অর্থাৎ আল্লাহর হুকুম ছাড়া আর কারো হুকুম মানবো না এই কলেমা তওহীদের চুক্তিতে আমাদের ফিরে আসতে হবে। পাশ্চাত্য সভ্যতার সার্বভৌমত্ব প্রত্যাখ্যান করে আল্লাহর সার্বভৌমত্বভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আল্লাহর সার্বভৌমত্বই হচ্ছে চ‚ড়ান্ত সত্য। যে সমাজে আল্লাহর সার্বভৌমত্ব নেই, তাঁর হুকুম চলে না সেখানে অন্য কোনো আমলের মূল্য থাকে না, কারণ সে সমস্ত আমল দিয়ে ইসলামের মূল উদ্দেশ্য যে শান্তি প্রতিষ্ঠা সেটা পূরণ হবে না। এজন্য আমাদের আন্দোলনের নাম হেযবুত তওহীদ অর্থাৎ আল্লাহর সার্বভৌমত্বের দল। তিনি বলেছেন, আমি নবী-রসুল, পীর-ফকির কিছুই না, আমি শেষ নবীর একজন উম্মত হিসাবে জাতির এই দুরবস্থার কারণ ও তা থেকে পরিত্রাণের পথ তুলে ধরার চেষ্টা করছি। এই কাজ নিঃসন্দেহে প্রত্যেক উম্মতে মোহাম্মদীর কর্তব্য।
বিগত শতাব্দীতে ইসলামকে জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠা করার জন্য বহু সংগঠন, বহু দল হয়েছে। তারা তাদের কর্মীদের অতুলনীয় ত্যাগ, কোরবানি সত্ত্বেও কাক্সিক্ষত গন্তব্যে পৌঁছতে পারে নি। এর একটি বড় কারণ হলো, পথ ভুল। বিচ্ছিন্ন বিক্ষিপ্ত থেকে একেকজন একেকরকম কর্মসূচি বানিয়ে নিয়ে কখনোই জাতীয় জীবনে দীন প্রতিষ্ঠা করা যাবে না। নবী করিম (সা.) তো বহু পথে দীন প্রতিষ্ঠা করেন নি, তিনি নির্দিষ্ট একটি পথে করেছেন। আমাদেরকেও সেই পথটি অবলম্বন করতে হবে। তা হলো সবাইকে এক কলেমা তওহীদে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। ইসলামের অনেক কিছু নিয়ে মতভেদ থাকলেও ১৬০ কোটি মুসলিম আজও এক কলেমার উপরে বিশ্বাসী। এই কলেমার ভিত্তিতেই জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে, অন্যান্য মাজহাবগত মতভেদপূর্ণ বিষয়গুলোকে বৃহত্তর স্বার্থে আপাতত দূরে সরিয়ে রাখতে হবে। তারপর সত্যদীন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আল্লাহ বলেছেন, তোমরা দীনকে প্রতিষ্ঠা করো এবং তাতে অনৈক্য সৃষ্টি করো না (সুরা শুরা ৩)। আর দীন প্রতিষ্ঠার কর্মসূচি তো স্বয়ং রসুলাল্লাহ (সা.) বিশদভাবে বলেই গেছেন।
তিনি বলেছেন, আল্লাহ আমাকে পাঁচটি কাজের আদেশ করেছেন। আমি তোমাদেরকে সেই পাঁচটি কাজের দায়িত্ব অর্পণ করছি।
(১) তোমরা ঐক্যবদ্ধ হবে
(২) (তোমাদের মধ্যবর্তী আদেশকারীর কথা) শুনবে
(৩) (আদেশকারীর হুকুম) মান্য করবে
(৪) (আল্লাহর হুকুম পরিপন্থী কার্যক্রম থেকে) হেজরত করবে
(৫) আল্লাহর রাস্তায় জীবন-সম্পদ দিয়ে জেহাদ (সংগ্রাম) করবে।
যারা এই ঐক্যবন্ধনী থেকে এক বিঘত পরিমাণও দূরে সরে যাবে, তার গলদেশ থেকে ইসলামের বন্ধন খুলে যাবে যদি না সে তওবা করে ফিরে আসে। আর যে জাহেলিয়াতের কোনো কিছুর দিকে আহŸান করে তাহলে সে জাহান্নামের জ্বালানি পাথরে পরিণত হবে, যদিও সে নামাজ পড়ে, রোজা রাখে এমন কি নিজেকে মুসলিম বলে বিশ্বাসও করে [হারিস আল আশয়ারী (রা.) থেকে আহমদ, তিরমিজি, বাব-উল-ইমারত, মেশকাত]।
আল্লাহপ্রদত্ত এই কর্মসূচি রসুলাল্লাহ (সা.) তাঁর উম্মাহকে দান করেছেন, সেই কর্মসূচি মোতাবেক উম্মতে মোহাম্মদী সংগ্রাম করে গেছেন। এখন হেযবুত তওহীদও আল্লাহ প্রদত্ত সেই কর্মসূচি মোতাবেক সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে।
আমরা ইসলামকে একটি চূড়ান্ত ভারসাম্যপূর্ণ, আধুনিক, যুগোপযোগী, সময়ের বিবর্তনেও অম্লান, অত্যন্ত যুক্তিগ্রাহ্য ও যুক্তিপূর্ণ, প্রাকৃতিক নিয়মের সঙ্গে পূর্ণ সঙ্গতিশীল, ব্যক্তিগত, সামাজিক ও জাতীয় জীবনে প্রয়োগযোগ্য, পৃথিবীর প্রতিটি ভৌগোলিক পরিবেশে আচরণযোগ্য, নারী-পুরুষ সকলের মর্যাদা ও মানবাধিকার রক্ষাকারী সকলের বোধগম্যরূপে তুলে ধরছি। এটি সর্বমহলে তুলে ধরা গেলে ইসলামবিদ্বেষী শ্রেণিটি ইসলামের ত্রুটি সন্ধান করতে পারবে না, ঘৃণা বিস্তারের সুযোগ পাবে না ইনশা’আল্লাহ। এই সংগ্রামে আপনাদের সকলের সহযোগিতা আমরা কামনা করি।