রিয়াদুল হাসান:
সকল অন্যায় অশান্তি থেকে মানবজাতিকে মুক্তি দেওয়ার জন্যই আল্লাহ যুগে যুগে ধর্ম প্রেরণ করেছেন। সেই ধর্ম ও ধর্মগ্রন্থগুলোকে সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে নিয়ে গেছে একটি শ্রেণি, তারা হলো ধর্মব্যবসায়ী। তাদের কথা হচ্ছে, ধর্ম শিখতে হবে তাদের কাছ থেকে, তারা ধর্মের মালিক। ধর্মগ্রন্থ খুব কঠিন, ওটা সাধারণ মানুষ বুঝবে না। সেই শ্রেণিটি ধর্ম সম্পর্কে যে ব্যাখ্যা দেবে সেটাই শিরোধার্য করতে হবে, নয়তো ফতোয়া দিয়ে প্রয়োজনে কাফের, নাস্তিক, মুরতাদ বানিয়ে দেওয়া হবে। এমন এক সময় ছিল যখন সাধারণ হিন্দুদের কাছে তাদের শাস্ত্র ছিল অস্পৃশ্য। ক্ষত্রিয়, বৈশ্যের যদিওবা বেদ শোনার অধিকার ছিল, কিন্তু শুদ্র বেদ শুনলে তার কানে গরম সীসা ঢেলে দেওয়ার কুপ্রথা প্রচলিত ছিল। ব্রাহ্মণ ধর্মব্যবসায়ীরা ধর্মের নামে এই পাশবিক প্রথা বা উপধর্ম চালু করেছিল। মানুষ ভুলে গিয়েছিল যে, স্রষ্টা কেবল উপাসনালয়ে থাকেন না তিনি থাকেন আর্ত-পীড়িত, নির্যাতিত মানুষের কাছে। আজও সনাতন ধর্মের পুরোহিত গোষ্ঠী অর্থ উপার্জনের জন্য ধর্মকে উপাসনা, পূজা প্রার্থনার বস্তুতে পরিণত করে ধর্মগুলোকে উপাসনালয়ের চার দেওয়ালের বন্দী করে রেখেছেন যদিও অন্য সকল ধর্মের মতো সনাতন ধর্মেও ধর্মব্যবসা নিষিদ্ধ। মনুসংহিতায় বলা হয়েছে:
যজ্ঞার্থমথং ভিক্ষিত্বা যো ন সর্বং প্রয্চ্ছতি
স যাতি ভাসতাং বিপ্রঃ কাকতাং বা শতং সমাঃ।
(মনুসংহিতা, একাদশ অধ্যায়, শ্লোক ২৫।)
অর্থাৎ যে ব্রাহ্মণ যজ্ঞের জন্য অর্থ ভিক্ষা করে তার সমস্তটা ঐ কাজে ব্যয় করে না, সে শত বৎসর শকুনি অথবা কাক হয়ে থাকে।
একই নীতি মন্দির-মসজিদ নির্মাণের বেলাতেও প্রযোজ্য। আমাদেরকে বুঝতে হবে যে, নামাজ, রোজা, উপবাস, পূজা অর্চনা ধর্মের চূড়ান্ত লক্ষ্য নয়। ইসলামের চূড়ান্ত লক্ষ্য একজন বে-নামাজিকে নামাজি বানানো নয়, বরং মানবসমাজে নিরাপত্তা, ন্যায়, সুবিচার এক কথায় শান্তি স্থাপন করা। ওঙ্কার শান্তির প্রতীক, ইসলাম শব্দটিও এসেছে ‘সালাম’ থেকে যার অর্থ শান্তি। পৃথিবী যখন অশান্তির অগ্নিকুণ্ড হয়ে আছে, মানুষের মুখে ভাত নেই, মসজিদ-মন্দির থেকে জুতা চুরি হয়, যে সমাজে দুই বছরের শিশু ধর্ষিত হয় সেখানে নির্বিরোধী আত্মকেন্দ্রিক মানুষগুলো মসজিদে গিয়ে মনে করেন ইবাদত করছেন, মন্দিরে গিয়ে দুধ-কলা দিয়ে মনে করেন খুব উপাসনা হচ্ছে, মক্কা-গয়া-কাশিতে গিয়ে মনে করেন দেবতারা স্বর্গ থেকে পুষ্পবর্ষণ করছেন, তারা ভ্রান্তির মধ্যে আছেন। সমাজের অন্যায় অবিচার অশান্তি দূর না করে কেবল আনুষ্ঠানিক উপাসনা ও আমলের গুরুত্ব প্রদানই সবচেয়ে বড় ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি করেছে। ধর্মের মোড়কে এই অন্ধত্ব দূর করার জন্যই আল্লাহ কালান্তরে নতুন রসুল বা অবতার পাঠিয়েছেন। মানুষ যেন ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতায় লিপ্ত হয়ে ধর্মের মূল লক্ষ্য অর্থাৎ ন্যায়-শান্তি-সুবিচার ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার কথা ভুলে না যায় সেজন্য আল্লাহ তাঁর নাজেলকৃত শেষ কেতাবে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন, “পূর্ব এবং পশ্চিম দিকে তোমাদের মুখ ফিরানোতে কোনো পুণ্য নেই। বরং পুণ্য আছে কেউ স্রষ্টার উপর, মহাপ্রলয়ের উপর, মালায়েকদের উপর এবং সমস্ত নবী-রসুলগণের উপর ঈমান আনবে, আর স্রষ্টাকে ভালোবেসে সম্পদ ব্যয় করবে আত্মীয়-স্বজন, এতিম-মিসকিন, মুসাফির-ভিক্ষুক ও দাসমুক্তির জন্যে।” (সুরা বাকারা ১৭৭)
নবী-রসুলগণ মানুষকে শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ দেখাতে এসেছে যে শান্তি ও সমৃদ্ধি প্রতিটি মানুষের কাছে কাম্য। তবুও নবী-রসুলদের জীবনপথ এত কণ্টকাকীর্ণ ছিল কেন? কারা তাঁদেরকে সীমাহীন নির্যাতন নিপীড়নের মুখে ঠেলে দিয়েছিল? সে ইতিহাস সকলের ই জানা। পূর্ব থেকে সেই সমাজে যে ধর্মটি প্রচলিত ছিল সেই ধর্মের ধারক-বাহক পুরোহিত শ্রেণিটিই নবী-রসুলদের সামনে সবচেয়ে বড় বাধার প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তারাই সমাজের ক্ষমতাশালী শাসক শ্রেণিটিকে নবী-রসুলদের বিরুদ্ধে উস্কে দিয়েছিল। এ জন্য হাজারো মিথ্যা অপবাদ তারা রচনা করেছিল, রটনা করেছিল। তারা চেয়েছিল তাদের ধর্মব্যবসা টিকিয়ে রাখতে। নবীদের প্রচারিত সত্য যদি জনগণ গ্রহণ করে নেয় তাহলে ধর্মব্যবসার কবর হয়ে যাবে, প্রভাব, সম্মান আর জীবিকা হারানোর অনিবার্য পরিণতিই ছিল তাদের আতঙ্কের কারণ।
ধর্মব্যবসায়ী গোষ্ঠী সব সময় নবী-রসুলদেরকে বলেছেন, “তুমি যদি নবী হও তাহলে মো’জেজা প্রদর্শন করো। আমরা তোমার উপর ঈমান আনব।” নবী-রসুলগণ মো’জেজা দেখিয়েছেন কিন্তু এই গোষ্ঠীটি কখনো ঈমান আনে নি। উল্টো নবীদেরকে জাদুকর বলে গালিগালাজ করেছে। অনুসারীরাও নবীদেরকে পিড়াপিড়ি করতেন কাফেরদেরকে আল্লাহর নিদর্শন দেখানোর জন্য। তারা ভাবতেন যে, মো’জেজা দেখলে কাফেররা ঈমান না এনে পারবে না। কিন্তু আল্লাহ বলেন, “আমি যদি তাদের কাছে মালায়েকদেরকে অবতরণ করতাম এবং তাদের সাথে মৃতরা কথাবার্তা বলত এবং আমি সব বস্তুকে তাদের সামনে জীবিত করে দিতাম, তথাপি তারা কখনও বিশ্বাস স্থাপনকারী নয়; কিন্তু যদি আল্লাহ চান তবে ভিন্ন কথা। কিন্তু তাদের অধিকাংশই মূর্খ।” (সুরা আন’আম ১১১)
মুসা (আ.)-এর কওম তাঁর কাছে দাবি জানিয়েছিল আল্লাহকে প্রকাশ্যে দেখানোর: “যখন তোমরা বলেছিলে, “হে মুসা! আমরা আল্লাহকে সরাসরি না দেখা পর্যন্ত ঈমান আনবো না” তখন বজ্র তাদেরকে পাকড়াও করেছিল।” (সুরা বাকারাহ ৫৫, সুরা নিসা ১৫৩)
সামুদ জাতি সালেহ (আ.) কাছে দাবি করেছিল যে, ‘হে সালেহ! যদি তুমি বাস্তবিকই আল্লাহর প্রেরিত রসুল হও, তবে কোনো নিদর্শন দেখাও যাতে আমরা তোমার কথা বিশ্বাস করতে পারি।’ সালেহ (আ.) বললেন, ‘এমন যেন না হয় যে, নিদর্শন আসার পরও তোমরা অবিশ্বাসের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকো।’ জাতির সর্দারগণ দৃঢ়তার সাথে ওয়াদা করল যে, নিদর্শন আসলে আমরা সঙ্গে সঙ্গে ঈমান আনব। তখন সালেহ (আ.) তাদেরকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘তোমরা কী প্রকার নিদর্শন চাও?’ তারা দাবি করল, “সামনের পাহাড় হতে অথবা এই বড় পাথরটি হতে এমন একটি উষ্ট্রী প্রকাশ করো যা গর্ভবতী হয় এবং সাথে সাথে বাচ্চা প্রসব করে।”
সালেহ (আ.) আল্লাহ পাকের দরবারে দোয়া করলেন। সাথে সাথে ঐ নির্দিষ্ট পাথরটির মধ্য থেকে সকলের সামনে একটি গর্ভবতী উষ্ট্রী প্রকাশিত হলো এবং সাথে সাথে বাচ্চা প্রসব করল। এ ঘটনা দেখে নেতৃবৃন্দের মধ্য থেকে যিনি সর্বপ্রধান, জোদ্দো ইবনে আমর তখনই নবীর উপর ঈমান আনলেন। তার দেখাদেখি অন্যান্য সর্দারেরাও নবীর উপর ঈমান আনার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন। কিন্তু মন্দিরগুলোর প্রধান পুরোহিত বা মোহান্ত জাওয়ার ইবনে আমর, দ্বিতীয় ধর্মনেতা (কাহেন) রোবাব ইবনে ছেফর তাদেরকে এ কাজ হতে বিরত রাখল। এভাবে তারা অন্য সকলকেও নবীর উপর ঈমান আনা থেকে বিরত রাখল। (সূত্র: কোর’আনে বর্ণিত পঁচিশ জন নবী ও রাসূল, লেখক: মাওলানা মুহাম্মদ রেজাউল করিম।) আল্লাহর আয়াত (নিদর্শন) অমান্য করে ঐসব ধর্মব্যবসায়ীদের কথা মান্য করার কী করুণ পরিণতি হয়েছিল সেটা সকলেরই জানা। সামুদ জাতি আল্লাহর গজবের শিকার হয়ে চিরতরে ধরাপৃষ্ঠ থেকে বিলীন হয়ে যায়।
এভাবে আমরা যদি নবী-রসুলদের জীবনী পর্যালোচনা করি, দেখব এই একই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি, তাদের প্রায় সকলকেই পূর্ববর্তী বিকৃত ধর্মের পুরোহিত আলেম শ্রেণির দ্বারা প্রবল বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে। চিরকাল এরাই ছিল সত্যের প্রকাশ্য শত্রু। যে নবী এই ধর্মব্যবসায়ীদের প্রতিষ্ঠা করে রাখা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করতে পারেন নি, তাদের হয় ঐ ধর্মব্যবসায়ীদের হাতে প্রাণ হারাতে হয়েছে, নয়তো ঐ দেশ ছেড়ে চলে যেতে হয়েছে। আল্লাহ ঐ জনপদ ও সম্প্রদায়কে সমূলে বিনাশ করে দিয়েছেন। ইয়াকুব (আ.) এর সর্বাধিক বিরোধিতা করেছিল ঐ ‘ইশতার’ দেবতার মন্দিরের পুরোহিতরা যারা সত্যের বিরুদ্ধে টিকতে পারে নি। ইউসুফ (আ.) এর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছিল মিশরের ‘আমন’ দেবতার খেদমতকারী পুরোহিতরা। ঈসা (আ.) এর প্রবল বিরোধিতা করেছিল তওরাতের ধারক-বাহক আলেম ওলামা তথা রাব্বাই, সাদ্দুসাই, ফরিসিরা। তারা নিজেদের কপালে তাবিজ বানিয়ে তওরাত কেতাবের নির্দেশসমূহ বেঁধে রাখত। ঈসা (আ.) ইহুদি জনগণের সামনে তাদের ধর্মনেতাদের ধর্মব্যবসার মুখোস খুলে দিয়েছিলেন। তিনি যে তিন বছর নব্যুয়তির দায়িত্ব পালন করেন তার প্রায় পুরোটাই কাটে ধর্মব্যবসায়ী গোষ্ঠীর বিরোধিতা, ষড়যন্ত্র, হুমকি আর সেসবের বিরুদ্ধে আল্লাহর প্রেরিত সত্যদীনের শিক্ষা প্রচারের মধ্য দিয়ে। তিনি যত মো’জেজা প্রদর্শন করেন সেগুলো এই ধর্মব্যবসায়ী গোষ্ঠীর দাবি পূরণ করণার্থেই করেছিলেন। তিনি ইহুদি আলেমদের লক্ষ্য করে বায়তুল মোকাদ্দসে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, “শরিয়ত শিক্ষা দেবার ব্যাপারে আলেমরা ও ফরিসিরা মুসা (আ.) এর জায়াগায় আছেন। সুতরাং এরা যা কিছু করতে আদেশ করেন তোমরা তা পালন করো। কিন্তু তারা যা করেন সেটা তোমরা অনুসরণ করো না, কারণ তারা মুখে যা বলেন কাজে তা করেন না।
তারা ভারি ভারি বোঝা বেঁধে মানুষের কাঁধে চাপিয়ে দেন, কিন্তু সেগুলো সরাবার জন্য নিজেরা একটা আঙ্গুলও নাড়াতে চান না। সব কাজই তারা করে থাকেন কেবল লোক দেখানোর জন্য। দাওয়াত খাওয়ার সময় তারা সম্মানের জায়গায় এবং সিনাগগেও প্রধান প্রধান আসনে তারা বসতে ভালোবাসেন।
তারা হাটে-বাজারে সম্মান খুঁজে বেড়ান আর চান যেন লোকেরা ‘আমাদের প্রভু’ বা রাব্বাই বলে ডাকে। কিন্তু কেউ তোমাদেরকে প্রভু বলে ডাকুক তা তোমরা চেয়ো না, কারণ তোমাদের প্রভু বলতে কেবল একজনই আছেন। আর তোমরা সবাই ভাই ভাই।
ভণ্ড আলেম ও ফরিসিরা, কী নিকৃষ্ট আপনারা! আপনারা মানুষের সামনে জান্নাতে প্রবেশের দরজা বন্ধ করে রাখেন। তাতে নিজেরাও ঢোকেন না আর যারা ঢুকতে চেষ্টা করছে তাদেরও ঢুকতে দেন না। একদিকে আপনারা লোকদের দেখাবার জন্য লম্বা লম্বা মোনাজাত করেন, অন্য দিকে বিধবাদের সম্পত্তি দখল করেন।
ভণ্ড আলেম ও ফরিসিরা, কী ঘৃণ্য আপনারা! আপনারা পুদিনা, মৌরি আর জিরার দশ ভাগের এক ভাগ আল্লাহকে ঠিকঠাক দিয়ে থাকেন; কিন্তু আপনারা মুসা (আ.) এর শরীয়তের অনেক বেশি প্রয়োজনীয় বিষয়গুলোকে বাদ দিয়েছেন। যেমন সুবিচার, দয়া এবং সততা। আপনাদের উচিত আগে এইগুলো পালন করা এবং অন্য বিধানগুলোকেও বাদ না দেওয়া। আপনারা নিজেরা অন্ধ অথচ অন্যদের পথ দেখান। একটা ছোট মাছিও আপনার ছাঁকেন অথচ উট গিলে ফেলেন।
ভণ্ড আলেম ও ফরিসিরা, ঘৃণ্য আপনারা। আপনারা খাওয়ার পাত্রের বাইরের দিকটা পরিষ্কার করে থাকেন, কিন্তু পাত্রের ভিতরে আছে কেবল সেই নোংরা জিনিস যা মানুষের উপর জুলুম আর স্বার্থপরতা দ্বারা আপনারা লাভ করেছেন। অন্ধ ফরিসিরা, আগে পাত্রের ভিতরের ময়লাগুলো পরিষ্কার করুন, তাহলে বাইরের দিকটাও পরিষ্কার হবে।
ভণ্ড আলেম ও ফরিসিরা, কী ভয়াবহ আপনারা! আপনারা সাদা ঝকঝকে রং করা কবরের মতো, যার বাইরে থেকে দেখতে খুবই সুন্দর কিন্তু তার ভেতরে আছে মরা মানুষের হাড়-গোড় ও পঁচা গলা লাশ। ঠিক সেইভাবে, বাইরে আপনারা লোকদের চোখে ধার্মিক কিন্তু ভিতরে মোনফেকী আর পাপে পরিপূর্ণ।
হে সাপের দল আর সাপের বংশধরেরা! কিভাবে আপনারা জাহান্নামের শাস্তি থেকে রক্ষা পাবেন? (বাইবেল, নিউ টেস্টামেন্ট: ম্যাথু ২৩ : ১-৩৪)।
শেষ পর্যন্ত এই ধর্মনেতারাই রোমান গভর্নর পন্টিয়াস পিলাতের কাছে মিথ্যা অভিযোগ পেশ করে ঈসাকে (আ.) ক্রুশবিদ্ধ করে হত্যার সমস্ত আয়োজন সম্পন্ন করে।
একইভাবে শেষ নবী মোহাম্মদ (সা.) কেও বহুবার হত্যার চেষ্টা করেছে এই ধর্মজীবী শ্রেণি। কোরাইশ বংশের লোকেরা ছিল কাবার মোতোয়াল্লী। তাদের আসল ব্যবসাই ছিল ধর্মব্যবসা। আরবের বিভিন্ন এলাকা থেকে বিভিন্ন দেব দেবীর উপাসকেরা এই পবিত্র তীর্থকেন্দ্রে হজ্ব, তাওয়াফ করতে আসত। এটাই ছিল তাদের গোত্রের আয়ের মূল উৎস। রসুলাল্লাহ যখন তওহীদের আহ্বান জানালেন, মূর্তিপূজাকে শেরক বলে ঘোষণা করলেন তখন গোত্রপতি সেবায়েতদের মাথায় বাজ পড়ল। এই ভণ্ডামি আর সামাজিক আধিপত্য টিকিয়ে রাখার জন্য সেই কাবাকেন্দ্রিক ধর্মব্যবসায়ীরা এতগুলো বছর সত্যের বিরুদ্ধে প্রাণপণ লড়াই চালিয়ে গেছে।
[লেখক: সাহিত্য সম্পাদক, দৈনিক বজ্রশক্তি, ইমেইল: mdriayulhsn@gmail.com]