হেযবুত তওহীদ

মানবতার কল্যাণে নিবেদিত

যে শিক্ষা জাতিকে বাঁচাতে পারে

রিয়াদুল হাসান:
সৃষ্টির সূচনালগ্ন থেকে বিশ্বজগতে ও মানবজাতিতে যে প্রাকৃতিক নিয়মগুলি বিরাজ করছে, মানুষ যখনই সেগুলির ব্যতিক্রম করার চেষ্টা করেছে, তখনই সে বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছে। আজ আমাদের সমাজে যে অন্যায়, অরাজকতা, দুর্নীতি, অনৈক্য, অবিচার, বিশৃঙ্খলা বিরাজ করছে সেগুলি সবই প্রাকৃতিক নিয়মগুলিকে অস্বীকার করে জোর করে মানুষের মনগড়া বিধি-বিধান প্রয়োগ করার ফল। একজন শিক্ষিত মানুষ কখনোই প্রাকৃতিক নিয়মগুলির বাইরে যেতে চাইবে না। সে জানবে মানুষের জীবনে সঙ্কটগুলো কী কী, সেই সঙ্কট থেকে উত্তরণের উপায়গুলো কী কী। সে তার জ্ঞানকে নিঃস্বার্থভাবে মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দেবে। এভাবে জ্ঞানের স্রোতধারা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে চলতে থাকবে।
পাশ্চাত্য সভ্যতার সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের আগে পর্যন্ত আমাদের সমাজে স্রষ্টার দেওয়া মূল্যবোধ কিছুটা টিকে ইসলামের উদ্দেশ্য শান্তি। অথচ আজ ইসলামের নামে সমাজে অশান্তির জন্ম দেওয়া হচ্ছে। জেহাদের নামে মানুষ হত্যা, মানুষের সহায় সম্বল ধ্বংস করা হচ্ছে। আল্লাহ কোর’আনে বললেন সীসাঢালা প্রাচীরের মত ঐক্যবদ্ধ থাকতে, কিন্তু বর্তমানে এই জাতি হাজারো ফেরকা-মাজহাবে বিভক্ত হয়ে আছে। মুসলিমদের ঈমানী শক্তিকে দেশের উন্নতির কাজে না লাগিয়ে ক্ষতি সাধন করা হচ্ছে, ধর্মীয় সেন্টিমেন্ট ব্যবহার করে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক নানা স্বার্থ হাসিল করা হচ্ছে।
এভাবে আমাদের সামনে ইসলামের যে রূপটি দাঁড়িয়ে গেছে তা আর আল্লাহ-রসুলের প্রকৃত ইসলাম নেই। আল্লাহ হক (সত্য), তিনি সমস্তকিছু সৃষ্টি করেছেন, আমাদেরকেও সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ যুগে যুগে নবী-রসুল পাঠিয়েছেন মানুষকে সঠিক পথ (হেদায়াহ) প্রদর্শনের জন্য, সত্য-মিথ্যা, বৈধ-অবৈধ নির্ণয়ের জন্য। আখেরি নবী মোহাম্মদ (সা.) যে উম্মতে মোহাম্মদী গঠন করেছিলেন সেটাও ছিল হকের ধারক অর্থাৎ সত্যনিষ্ঠ জাতি। আল্লাহ হক, রসুল (স.) হক, কেতাব হক, রসুলের রেখে যাওয়া উম্মাহ হক। ফলে সেটা মানুষকে অনাবিল শান্তি আর নিরাপত্তা দিয়েছিল। সত্যের ফল সবসময়ই শান্তিময় ও সুখের হয়।
অন্যদিকে আজকের এই ইসলাম যে বিশ্বনবীর প্রকৃত ইসলাম নয়, দ্বীনুল হক্ব নয় তার পরিচয় আমরা ফল দেখেই বুঝতে পারি। প্রকৃত ইসালামের ফল ছিল সুমিষ্ট আর প্রচলিত বিকৃত ইসলামের ফল এত তিক্ত যে মানুষের নাভিশ্বাস উঠে যাচ্ছে। সুতরাং ফল দেখেই বোঝা যায় যে উভয় বৃক্ষ এক নয়। প্রকৃত ইসলামের স্বরূপ কেমন ছিল তা ইতিহাস হয়ে আছে। শেষ নবী মোহাম্মদ (স.) যে ইসলাম প্রচার করেছেন তা গ্রহণ করে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুটি বিষয় নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক উন্নতির চরম শেখরে পৌঁছে গিয়েছিল তৎকালীন জাতিটি। এমন নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল যে মানুষ রাতে ঘুমানোর সময় ঘরের দরজা বন্ধ করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করত না, রাস্তায় ধনসম্পদ ফেলে রাখলেও তা পরে যেয়ে যথাস্থানে পাওয়া যেত, চুরি, ডাকাতি, হত্যা, রাহাজানি প্রায় নির্মূল হয়ে গিয়েছিল, আদালতে মাসের পর মাস কোন অপরাধ সংক্রান্ত মামলা আসতো না। কেউ অপরাধ করলেও অনুতপ্ত হয়ে নিজেই এসে বিচার প্রার্থনা করত। আর অর্থনৈতিক দিক থেকে প্রতিটি মানুষ এমন স্বচ্ছল হয়েছিল যে, তারা যাকাত ও সদকা দেওয়ার জন্য টাকা পয়সা নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াতো কিন্তু সেই টাকা গ্রহণ করার মত লোক পাওয়া যেত না। জঙ্গিদের ইসলাম আর আল্লাহ-রসুলের ইসলাম যে এক নয় তা বোঝার জন্য রসুলের জীবনী থেকে দুইটি ঘটনাই যথেষ্ট। ঘটনা দুইটি হলো-
একদিন আল্লাহর রসুল (সা.) ক্বাবা ঘরের দেওয়ালে হেলান দিয়ে বসে আছেন। মুসলমানদের বিরুদ্ধে কাফেরদের নির্যাতন-অত্যাচার, যুলুম তখন চরম সীমায় পৌঁছেছে। এক সাহাবী এসে অত্যন্ত কাতরকণ্ঠে রসুলকে বললেন, ইয়া রসুলাল্লাহ, আপনি দোয়া করুন যাতে এই মোশরেকরা ধ্বংস হয়ে যায়। হাদীসে এসেছে ওই সাহাবীর এই ধ্বংসকামনা শুনে তিনি হেলান অবস্থা থেকে সোজা হয়ে বসলেন। রিপুজয়ী মহামানব, মানবজাতির মুকুটমনি তাঁর জীবনে খুম কম সময়ই রাগান্বিত হয়েছেন। যে অল্প কয়েকটি ঘটনায় তাঁকে রাগতে দেখা গেছে তার মধ্যে এই ঘটনা একটি। সাহাবীর কথা শুনে রসুল (সা.) অনেক রেগে গিয়েছেলেন এবং বলেছিলেন- শিগগিরই এমন সময় আসছে যখন একটি মেয়ে লোক একা সানা থেকে হাদরামাউত পর্যন্ত ভ্রমণ করতে পারবে, তার মনে এক আল্লাহ এবং বন্য পশু ছাড়া আর কিছুরই ভয় থাকবে না।
বিশ্বনবীর (সা.) এই কথাটির ভেতরে প্রবেশ করুন। ইসলামের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য পরিষ্কার হয়ে যায় একটি কথাতেই। তিনি কি বললেন? তিনি মূলত ইঙ্গিত দিলেন- এত বাধা, এত অত্যাচার সত্ত্বেও তিনি সফল হবেন এবং যাদের ধ্বংস করার জন্য ঐ সাহাবা দোয়া করতে বলছেন তারাই এমন বদলে যাবে এবং তাদের দিয়েই এমন একটি রাষ্ট্র ও সমাজ প্রতিষ্ঠিত হবে যেখানে একা একটা মেয়ে মানুষ কয়েক শ’মাইল পথ নির্ভয়ে চলে যেতে পারবে। এতে দুইটি বিষয় পরিষ্কার হয়। এক- ইসলামের উদ্দেশ্য হচ্ছে সমাজে নিরাপত্তা ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করা, দুই- আল্লাহর রসুল এত অত্যাচারের মুহূর্তেও চান নি অত্যাচারী মোশরেকরা ধ্বংস বা বিনাশ হয়ে যাক। এর দ্বারা তিনি তাঁর উম্মতের জন্য শিক্ষনীয় দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন যে, মানুষের বিনাশ নয়, মানুষের কল্যাণ সাধন করাই মুক্তির পথ, জান্নাতের পথ।
আরেকটি ঘটনা তায়েফের। মক্কায় বছরের পর বছর সত্যের আহ্বান করেও যখন অধিকাংশ লোকের পক্ষ থেকে নির্যাতন, নিপীড়ন আর অপমান ছাড়া কিছুই পেলেন না, তখন আল্লাহ রসুল (সা.) তায়েফের ব্যাপারে কিছুটা আশাবাদী হলেন। সেখানকার গোত্রপতিদের সাথে রসুলাল্লাহর নিজ গোত্রের সুসম্পর্ক ছিল। তাই আশা করেছিলেন দাওয়াত প্রত্যাখ্যান করলেও অন্তত অসৌজন্যমূলক আচরণ কেউ করবে না। কিন্তু বাস্তবে সেখানে তাঁকে আরও নির্মমভাবে প্রত্যাখ্যাত হতে হয়। তায়েফের নেতৃস্থানীয়রা অত্যন্ত অবজ্ঞার সাথে ইসলামকে প্রত্যাখ্যান করেই ক্ষান্ত হয় নি, তারা এলাকার বখাটে, গুন্ডা ও শিশু-কিশোরদের লেলিয়ে দেয় রসুলকে শারীরিক নির্যাতন করতে। তারা পাথর নিক্ষেপ করতে করতে রসুলের সারা শরীর রক্তাক্ত করে ফেলে। হাদীসের বর্ণনায় পাওয়া যায়, সেদিন আল্লাহর পক্ষ থেকে মালায়েক এসে রসুলকে বলেছিল- ‘হে মুহাম্মদ (সা.), আপনি আদেশ করুন আমি তাদের উপর মক্কার দু’দিকের পাহাড় একত্র করে চাপিয়ে দেই।’ কিন্তু সেই রিপুজয়ী মহামানব বললেন- ‘না না, আমি আশা করি তাদের ভবিষ্যৎ বংশধর সত্য গ্রহণ করবে।’ রসুলাল্লাহ সেদিন তায়েফবাসীর মুর্খতার জন্য নিজে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়েছিলেন। বলেছিলেন- হে আল্লাহ, তারা অজ্ঞতাবশত এই কাজ করেছে, তাদেরকে পাকড়াও কর না। এই অতুলনীয় ক্ষমা ও উদারতার মাধ্যমে সেদিন পৃথিবীর ইতিহাসের বিস্ময়কর ওই মহামানব দেখিয়ে দিয়েছিলেন যে, ইসলাম ‘ধ্বংস’ নয়, শান্তির বার্তাবাহক।
জঙ্গিবাদের সূচনা করেছে কারা তা সচেতন মানুষমাত্রই জানেন। কারা এর স্রষ্টা, কারা এর ইন্ধনদাতা ও কারা এর লাভের ফসল ঘরে তোলে তা এখন পরিষ্কার। এই জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করেছে পশ্চিমা পরাশক্তিধর দেশগুলো। আফগান যুদ্ধের সময় আমেরিকা মুসলমানদেরকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করার জন্য ইসলামের অপব্যাখ্যা দিয়ে জঙ্গিবাদের সূচনা ঘটায়। তখন পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে ঈমানদার মুসলিম জনসাধারণকে উদ্দীপ্ত করে আফগানিস্তানের ভূমিতে নিয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করানো হয়। তাদেরকে অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ দেয় আমেরিকা ও পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা। পরবর্তীতে এই জঙ্গিবাদকে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিয়ে অস্ত্রব্যবসার ক্ষেত্র তৈরি করে পশ্চিমা পরাশক্তিগুলো। আফগানের ওই যুদ্ধ মোটেও জেহাদ ছিল না। সেটা ছিল আমেরিকা-রাশিয়ার স্বার্থের দ্বন্দ্ব। আর সেই দ্বন্দ্বের খেসারত দিতে হয়েছে মুসলিমদেরকে। ওখান থেকে জঙ্গিবাদকে সমস্ত পৃথিবীতে ছড়িয়ে দেওয়ার কাজটাও পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদীরা করেছে যা তাদের জমজমাট অস্ত্রব্যবসার বাজার তৈরির জন্য খুবই প্রয়োজন ছিল। আজ সেই সাম্রাজ্যবাদীরাই তাদের নিজেদের তৈরি করা জঙ্গিবাদকে ইসলামের ঘাড়ে চাপাতে চাইছে। আমরা যদি এখনও সজাগ না হই, সচেতন না হই, সাম্রাজ্যবাদীদের এইসব ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ না হই তাহলে তারা কখনোই এ ধরনের অপপ্রচার বন্ধ করবে না। তারা সফল হয়ে যাবে। আর ইসলামকে মানুষ ঘৃণা করবে সন্ত্রাসী ধর্ম অভিযোগ দিয়ে। জঙ্গি সংগঠনের হয়ে যারা কাজ করে তারা বিভিন্ন কৌশলে মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের নিজেদের দলে ভেড়ায়। আর তাদের মেধা ভুল লক্ষ্যে প্রবাহিত করে। একইভাবে ইসলাম প্রতিষ্ঠার নামে সরকারের বিরুদ্ধে, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে তরুণ তরুণীদের জেহাদের নামে উজ্জীবিত করে। বিভিন্ন দেশে মুসলিমদের করুণ পরিনতির কথা বলে ধর্মীয় আবেদন সৃষ্টি করে বিভিন্ন দেশে জঙ্গি প্রেরণ করে
আমাদের সমাজে নানা রকম অসংগতি রয়েছে। আমরা সবাই এর প্রতিকার চাই। সমাজের সকল বিরাজমান বাস্তব সমস্যার বিরুদ্ধে কাজ করাই আমাদের ঈমানী কর্তব্য, তেমনি সামাজিক দায়বদ্ধতা। কিন্তু ঐ সকল সংগঠনের লোকেরা সমাজের সমস্ত সমস্যার জন্য বিশেষ কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে দায়ী করে এবং তাদের আক্রমণ করতে উদ্বুদ্ধ করে। আইন নিজের হাতে তুলে নিতে প্রলুব্ধ করে। এটা জেহাদ নয় বরং এটা সন্ত্রাস, দেশপ্রেমহীন কা-জ্ঞানহীন অনাচার। এতে করে দেশ অস্থিতিশীল হয়, বহির্বশ্বে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়, দেশের উন্নতি ব্যাহত হয়, সাম্রাজ্যবাদীরা দেশ আক্রমণ করার সুযোগ পায়, ইসলাম কলঙ্কিত হয়।। মনে রাখতে হবে যে ইসলামের নামে যুদ্ধ করতে পারে কেবল রাষ্ট্র। কোন ব্যক্তির বা দলের অস্ত্র ধারণ হল সন্ত্রাস। আর সন্ত্রাস তথা ফিতনা হত্যার চেয়েও জঘন্য। যেহেতু ইসলামের ভুল ব্যাখ্যা থেকে জঙ্গিবাদ সৃষ্টি তাই ইসলামের ঠিক আদর্শকে ধারণ করতে হবে এবং ব্যাপকভাবে প্রচার করতে হবে। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আদর্শিক লড়াই চালাতে হবে। পাশাপাশি পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদীদের ষড়যন্ত্রের ব্যাপারেও সতক
আজকে দেশ ও জাতি যে সঙ্কটে পতিত হয়েছে এ সঙ্কট থেকে জাতিকে রক্ষা করতে হলে আমাদের সকলকে উদ্যোগী হতে হবে, আমাদেরকে ইসপাতকঠিন ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এটি একদিকে আমাদের ঈমানী দায়িত্ব অপরদিকে আমাদের সামাজিক কর্তব্য। আমরা যারা ধর্মে বিশ্বাস করি তাদেরকে বুঝতে হবে মানুষের শান্তির জন্য কাজ করাই হলো প্রধান ইবাদত, কাজেই মানুষ যখন কষ্টে থাকে, সমাজ যখন অন্যায়-অবিচারে পূর্ণ হয়ে যায় তখন প্রধান ঈমানী দায়িত্বই হয়ে পড়ে মানুষের কষ্ট দূর করা ও সমাজ থেকে অন্যায়-অবিচার দূর করা। অপরদিকে এই সমাজে বসবাসকারী প্রত্যেকের সামাজিক কর্তব্য হলো সমাজের শান্তি নিশ্চিত করা। কেননা সমাজ ধ্বংস হয়ে গেলে আমরা কেউই বাঁচব না, আমাদের কোনো অস্তিত্বই থাকবে না। সুতরাং মানবজাতির এই ক্রান্তিকালে, দেশ মাটি ও মানুষের এই ঘোর সঙ্কটকালে আমাদের ১৬ কোটি মানুষকে যাবতীয় অন্যায় ও অসত্যের বিরুদ্ধে এবং ন্যায় ও সত্যের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে, তবেই তাদের এ দুর্দশা কাটবে।

লেখাটি শেয়ার করুন আপনার প্রিয়জনের সাথে

Email
Facebook
Twitter
Skype
WhatsApp
সার্চ করুন

যুক্ত হোন আমাদের ফেসবুক পেজের সাথে...