হেযবুত তওহীদ
যে কোন আমলের পূর্বশর্ত হচ্ছে ঈমান। অর্থাৎ সকল আমলই মুমিনদের জন্য। একজন কাফের, মোশরেক ঈমান আনয়নের পূর্বে যতই আমল করুক এতে তার কোনো পুণ্য হয় না। যেমন- আবু জেহেল, আবু লাহাবরাও অনেক ভালো কাজ করেছে কিন্তু তাদের কোনো আমলই কি কাজে আসবে?
এখন এই মুমিন কারা? যারা সত্যকে ধারণ করে এবং সেই সত্যকে মানবজীবনে প্রতিষ্ঠা করার জন্য ব্যক্তিস্বার্থকে কোরবান করে দেয় তারাই হলো মুমিন, আর যারা সত্য অস্বীকার করে, ক্ষুদ্র ব্যক্তিস্বার্থে সত্যকে প্রত্যাখ্যান করে, মিথ্যাকে ধারণ করে, সমাজে মিথ্যাকে প্রতিষ্ঠা করে রাখে তারাই মূলত কাফের। অর্থাৎ যারা সত্যের পক্ষে তারাই হলো মুমিন আর যারা মিথ্যার পক্ষে তারাই হলো কাফের।
সত্যের উৎস হচ্ছেন আল্লাহ। আল্লাহর আদেশ, নিষেধ, তাঁর দেওয়া মানদণ্ড ও রসুলাল্লাহর জীবনাদর্শই হলো সত্যের চূড়ান্ত রূপ। ব্যক্তিজীবন থেকে শুরু করে জাতীয়, আন্তর্জাতিক এক কথায় জীবনের সর্ব অঙ্গনে সত্যকে স্বীকার করতে হবে। আর স্বীকৃতির পরবর্তী কাজ হলো জীবন ও সম্পদ দিয়ে এই সত্য বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা, সর্বাত্মক প্রচেষ্টা বা সংগ্রাম। এটিই হলো সর্বপ্রথম এবং প্রধান আমল। এটি ছাড়া মুমিন হওয়া যায় না। (সুরা হুজরাত-১৫)। যখন জাতীয়, আন্তর্জাতিক জীবনে আল্লাহর হুকুম তথা চূড়ান্ত সত্য প্রত্যাখ্যান করে পাশ্চাত্য ‘সভ্যতা’ দাজ্জালের দেওয়া হুকুম বিধান প্রতিষ্ঠিত এবং ফলশ্র“তিতে সমাজ অন্যায়, অবিচারে পরিপূর্ণ তখন সার্বিক জীবনে সত্য প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সমাজ থেকে সকল প্রকার অন্যায় অবিচার দূর করে শান্তি প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম বাদ দিয়ে যত আমলই করা হোক তা নিরর্থক হবে। কিন্তু আজ এই নিরর্থক আমলই করা হচ্ছে সর্বত্র। সমগ্র মুসলিম বিশ্বে আজ পাশ্চাত্য ‘সভ্যতা’ দাজ্জালের হুকুম বিধান প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু আমরা একটা দৃশ্য সর্বত্র দেখতে পাই, শহর-গ্রাম, পাড়া-মহল্লাসহ সব জায়গাতেই মানুষ টুপি-পাঞ্জাবী পরে টাখনুর উপর পাজামা তুলে মসজিদে নামাজ পড়তে যাচ্ছে, কোরবানি করছে, হজ্ব করে আসছে, ওয়াজ-মাহফিল শুনছে, কোর’আন তেলাওয়াত করছে, যিকির-আসগর করছে। অর্থাৎ আমরা বুঝাতে চাইছি আমরা পাক্কা মুসলমান। কিন্তু কিভাবে? এই যে নামাজ পড়ছি, কোর’আন পড়ছি, টুপি পাঞ্জাবী পরছি, কেউ কেউ হজ্ব করে আসছি। আমাদেরকে কে বলে দেবে এই জাতি আল্লাহর হুকুম, বিধান বাদ দেওয়ার কারণে এরা মুমিনই না মুসলিমই না? এই সরল প্রশ্নের উত্তর কে দেবে যে, তাদেরকে আল্লাহ মুমিন, মুসলিম এর খাতা থেকে বাদ দিয়েছেন বহু আগে। বর্তমানে সম্পূর্ণরূপে সত্য প্রত্যাখ্যান করে এই জাতি কার্যত কাফের, জালেম, ফাসেক হয়ে গিয়েছে। (সুরা মায়েদা- ৪৪,৪৫,৪৭)
কাজেই এখন আগে চূড়ান্ত সত্য আল্লাহর তওহীদ অর্থাৎ আল্লাহর সার্বভৌমত্বের স্বীকৃতি দিয়ে মুমিন হওয়া জরুরি। তারপরে যত পারা যায় ঐসব আমল। আমরা মুখে দাবি করি মুসলমান, আইন-বিধান, হুকুম মানি এবং অনুসরণ করি পাশ্চাত্য সভ্যতা দাজ্জালের। এজন্য আল্লাহ এই জাতির উপর লানৎ দিয়েছেন। এখন এই লানৎ, শাস্তি থেকে পরিত্রাণের একটাই পথ আল্লাহর দেওয়া জীবনব্যবস্থায় ফিরে যাওয়া। সেই প্রকৃত, অনাবিল, শান্তিদায়ক, নিখুঁত, ভারসাম্যপূর্ণ জীবনব্যবস্থা কোথায় পাওয়া যাবে?
সেটা আল্লাহ হেযবুত তওহীদকে দান করেছেন। আজ সারা পৃথিবীতে যে ইসলামটি চর্চা করা হচ্ছে, মসজিদ, মাদ্রাসা, মক্তবে, খানকায় যে ইসলামটা শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে সেটা আল্লাহর দেওয়া প্রকৃত ইসলাম নয়। এই ইসলাম ১৬০ কোটির এই জনসংখ্যাকে শান্তি দিতে পারে নি, অন্য জাতির গোলামি থেকে রক্ষাও করতে পারে নি। আমরা এমন এক ইসলামের কথা বলছি, যে ইসলাম সমস্ত মানবজাতিকে পরিপূর্ণ শান্তি ও নিরাপত্তা দিতে পারবে, সমস্ত মানবজাতিকে একটি পরিবারে পরিণত করবে, ইনশা’ল্লাহ।