[মোতালেব খান]
আমরা এই যে বলে আসছি সমস্ত পৃথিবীব্যাপী ইসলামের নামে যে ধর্মটি চলছে তা আল্লাহ ও তাঁর রসুলের দেওয়া প্রকৃত ইসলাম নয় এবং এই জাতিও মুমিন, মুসলিম ও উম্মতে মোহাম্মদী তো নয়ই এর আরও একটি কারণ আছে। প্রত্যেক জাতির নেতাও সেই সেই জাতির অন্তর্ভুক্ত। সে হিসাবে বিশ্বনবী (দ:) এই জাতির অন্তর্ভুক্ত। তাহলে বলতে হয় আল্লাহ নবীদের নেতা, মানব জাতির শ্রেষ্ঠতম মানুষ, স্রষ্টার প্রিয় বন্ধু- তারপরই যার স্থান, তিনি ইউরোপীয়ান খ্রিস্টানদের ঘৃণিত দাসজাতির নেতা? এ অসম্ভব। পৃথিবীর যে কেউ বলতে পারে বলুক, আমরা অন্তত বলি না। কেন বলতে পারি না এর একমাত্র উত্তর হচ্ছে তিনি ঐ দাস জাতির নেতা নন এবং ঐ দাস জাতি তার জাতিও নয়।
বিশ্বনবীর (দ:) সঙ্গী (আসহাব) অবস্থায় ও বিশ্বনবীর (দ:) পর সংখ্যায় সামান্য হয়েও, সর্বদিক দিয়ে নগণ্য হয়েও তাদের চেযে সংখ্যায়, অস্ত্রে, সামরিক শিক্ষায় শ্রেষ্ঠ বহু শত্র“র বিরুদ্ধে যুদ্ধে প্রতিবার জয়ী জাতিটি ছিলো তার (দ:) উম্মাহ। তারপর যখন জাতিটি আয়তনে বিরাট হল, সংখ্যায়, অস্ত্রশস্ত্রে, সম্পদে অতুলনীয় হওয়া সত্ত্বেও তাদের চেয়ে অনেক ছোট ছোট শত্র“র কাছে পরাজিত হয়ে তাদের ক্রীতদাসে পরিণত হল, তখন আর সেটা তার (দ:) উম্মাহও নেই মুসলিমও নেই। তাই সেই ঘৃণিত দাস জাতির সঙ্গে একই সাথে চিহ্নিত না হওয়ার জন্য তিনি (দ:) বলছেন তারা আমার নয়, আমিও তাদের নই। কিন্তু তিনি (দ:) অস্বীকার করলে কি হবে, ঐ দাস জাতির অতি মুসল্লী ও ফকীহ, মুফাস্সির, মুহাদ্দিস, মুফতি, পীর, মাশায়েখ, ইউরোপীয়ান খ্রিস্টানদের গোলাম অবস্থায় থেকেই তাকে (দ:) তাদের নেতা বলে পরিচয় দিয়ে তাকে (দ:) অসম্মান, অপমান করে আসছে কয়েক শতাব্দী ধরে। আল্লাহ তাঁর প্রিয় হাবিবকে এইভাবে অপমানের প্রতিশোধ নিতে ছাড়েন নি। এই জাতি এই উম্মাহর জন্য আল্লাহ ও তার রসুল (দ:) যে উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন সেই লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হওয়ার শাস্তি কী ভয়াবহ হল। এই যুদ্ধগুলিতে ইউরোপীয়ান খ্রিস্টানরা লক্ষ লক্ষ পুরুষ-নারী, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা শিশুকে গুলি কোরে, ট্যাংকের তলায় পিষে, আগুনে পুড়িয়ে এমনকি জীবন্ত কবর দিয়ে হত্যা করেছে, লাইন করে দাঁড় করিয়ে মেশিনগান দিয়ে গুলি করেছে, আল্লাহ কি এসব দেখেন নি? নিশ্চয়ই দেখেছেন, কিন্তু একটি আংগুল তুলেও সাহায্য করেন নি। কারণ তিনি প্রতিশ্র“তিবদ্ধ শুধু মো’মেনকে, উম্মাতে মোহাম্মদীকে সাহায্য করার। এই জাতিটি যে তখনও মুসলিম তিনি তাও পরোওয়া করলেন না। এই উম্মাহকে পরাজিত করে দাসত্বের শৃঙ্খলে আবদ্ধ করার পর ইউরোপীয়ান জাতিগুলি তাদের যার যার দখল করা এলাকায় তাদের নিজেদের তৈরী আইন ও শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তন করলো। সেই থেকে এই জাতি আর মুসলিমও রোইল না, কার্যতঃ কাফের ও মুশরিকে পরিণত হল।