রিয়াদুল হাসান:
আদম (আ.) থেকে শুরু করে শেষ নবী মোহাম্মদ (সা.) পর্যন্ত ইসলামের অর্থাৎ দীনুল কাইয়্যিমার মর্মবাণী তওহীদ- এক আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো তৈরি জীবন-বিধান মানি না, স্বীকার করি না। এই সিরাতুল মুস্তাকীম, সহজ-সরল পথ ছেড়ে মহাপণ্ডিতরা দীনের চুলচেরা বিশ্লেষণ করে এই করলেন যে, সহজ-সরল পথটি হয়ে গেল একটি অত্যন্ত দুর্বোধ্য জীবন-ব্যবস্থা, খুঁটিনাটি মসলা-মাসায়েলের জটিল জাল। এই জটিল জালে আটকা পড়ে সমস্ত জাতিটাই মাকড়সার জালে আটকা পড়া মাছির মত অসহায়, স্থবির হয়ে গেল। ঐ স্থবিরতার অবশ্যম্ভাবী ফল হয়েছে শত্রুর ঘৃণিত গোলামি ও বর্তমান অবস্থা; যেখানে অজ্ঞানতায়, অশিক্ষায়, কুশিক্ষায় ইসলামের আগের জাহেলিয়াতের অবস্থাকেও ছাড়িয়ে গেছে। এই জাতির ধর্মব্যবসায়ী আলেম সমাজ আজ কুয়োর ব্যাঙ। দুনিয়ার খবর যারা রাখেন তাদের চোখে এরা অবজ্ঞার পাত্র, হাসির খোরাক। আসমানের মত বিরাট উদাত্ত দীনকে এরা তাদের লম্বা কোর্তার পকেটে পুরে মিলাদ পড়ে, বাড়ি বাড়ি দাওয়াত খেয়ে আর সুর করে ওয়াজ করে বেড়ান। তবু যদি তাদের ওয়াজের মধ্যে অন্তত কিছু সার কথা থাকত! তাও নেই, কারণ দীনের মর্মকথা, এর উদ্দেশ্য, প্রক্রিয়া এ সবের কিছুই তাদের জানা নেই। আসল দিক অর্থাৎ জাতীয় জীবনের দিকটাকে সম্পূর্ণভাবে ছেড়ে দিয়ে ব্যক্তি দিকটার সামান্য যে বাহ্যিক অংশকে এরা আকড়ে ধরে আছেন তা পর্যন্ত ভুল। যে দাড়ি রাখাকে এরা দীনের অতি প্রয়োজনীয় কর্তব্য বলে মনে করেন, প্রতি ওয়াজে প্রতি উপদেশে যারা দাড়ির প্রয়োজনীয়তার উপর অনেক সময় নষ্ট করেন সেই দাড়িকেই ধরুন। এদের মধ্যে বেশির ভাগ লোকই দাড়িকে তার নিজের ইচ্ছার উপর ছেড়ে দিয়েছেন, যেটা বাড়তে বাড়তে সারা বুক ছেয়ে যায়। এই দাড়ি এই দীনের দাড়ি নয়। এ দাড়ি ইহুদিদের দাড়ি এবং এ রকম দাড়ি রাখা যে মহনবীর (সা.) নিষেধ তা তারা জানেন না। তাঁর (সা.) নির্দেশিত দাড়ি নিচের ঠোঁটের নিচ থেকে, অর্থাৎ যেখান থেকে দাড়ি গজায় সেখান থেকে একমুষ্ঠি মাত্র, এর বেশি হলেই তা ছেটে ফেলার নিয়ম। ফকীহদেরও অধিকাংশের মত হচ্ছে চার আঙ্গুল লম্বা দাড়ি হচ্ছে শরিয়াহ অনুযায়ী। ইহুদিদের রাব্বাইরা লম্বা আলখেল্লা পড়েন ও মাথায় লম্বা টুপি লাগান, লম্বা দাড়ি তো প্রত্যেকেরই আছে। কাজেই একদল রাব্বাইদের মধ্যে আমাদের একদল ‘ধর্মীয়’ নেতাদের দাঁড় করিয়ে দিলে তাদের আলাদা করে চেনা যাবে না। এই উড়ন্ত দাঁড়ির সঙ্গে তারা যোগ করেন ন্যাড়া মাথা। তারা বলেন, আল্লাহর রসুলকে (সা.) মাথা ন্যাড়া অবস্থায় দেখা গেছে বলে হাদিসে আছে, কাজেই ন্যাড়া করাও সুন্নাহ। এ সিদ্ধান্তও ভুল। মহানবী (সা.) সব সময়ই লম্বা চুল অর্থাৎ আমরা যাকে বাবরী বলি তাই রাখতেন এবং তা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন লোকে বিভিন্ন দৈর্ঘ্যে দেখেছেন স্বভাবতঃই। আম্মা আয়েশা (রা:) বর্ণনা করেছেন, “পবিত্র কানের নিচ থেকে কাঁধ পর্যন্ত” অর্থাৎ সময়ে লম্বা হয়ে পবিত্র কাঁধ পর্যন্ত এসেছে এবং তখন ছেটে ফেললে আবার কানের নিচ পর্যন্ত ছোট হয়েছে। যারা তাকে মাথা কামানো অবস্থায় দেখেছেন, তারা দেখেছেন হজ্বের সময়- যখন সবাইকে মাথার চুল কামিয়ে ফেলতে হয় হজ্বের আরকান হিসাবে। যেহেতু হজ্বের সময়ই একত্রে বহু সংখ্যক লোক তাকে মাথা কামানো অবস্থায় দেখেছেন এবং পরে বর্ণনা করেছেন যে, “আমি রসুলাল্লাহকে (সা.) মাথা কামানো অবস্থায় দেখেছি,” তাই তার মাথা কামানো অবস্থার কথা হাদীসে এবং সীরাতে স্থান পেয়েছে। কিন্তু এটা তার স্বাভাবিক অবস্থায় সুন্নাহ নয়, হজ্বে তো সবাইকে মাথা কামাতে হবে। কিন্তু ঐ বর্ণনা গুলিকে ভিত্তি করে এরা একদিকে মাথা কামিয়ে, অন্যদিকে হাওয়ায় উড়ন্ত বিশাল ইহুদি দাড়ি রেখে এক ভয়াবহ চেহারা সৃষ্টি করেন।
এই দীনের প্রকৃত উদ্দেশ্যকে এরা যেমন উল্টো করে ফেলেছেন তেমনি এর বাহ্যিক দিকটাও এরা এদের অপরিসীম অজ্ঞতায় উল্টে ফেলেছেন। দাড়ি রাখা, বাহ্যিক পোষাক-পরিচ্ছদ ইত্যাদি এই দীনের বুনিয়াদী কোন ব্যাপার নয় এবং বুনিয়াদী নয় বলেই কোর’আনে আল্লাহ কোথাও দাড়ি বা কাপড়-চোপড় সম্বন্ধে কোন নির্দেশ দেন নি। বরং বলেছেন- আমি মানুষের কাপড়-চোপড়, পোশাক-পরিচ্ছদ দেখি না, আমি দেখি মানুষের অন্তর । আসলে এই শেষ দীনে কোন নির্দিষ্ট পোষাক হতে পারে না, কারণ এটা এসেছে সমস্ত পৃথিবীর মানুষের জন্য। পৃথিবীর মানুষ প্রচণ্ড গরমের দেশে, প্রচণ্ড শীতের দেশে, নাতিশীতোষ্ণ দেশে, অর্থাৎ সর্বরকম আবহাওয়ায় বাস করে, এদের সবার জন্য এক রকম পোষাক নির্দেশ করা অসম্ভব। তা করলে এ দীন সমস্ত মানব জাতির জন্য প্রযোজ্য হতে পারতো না, সীমিত হয়ে যেতো। তাই আল্লাহ ও তার রসুল (সা.) তা করেনও নি। বিশ্বনবীর (সা.) সময়ে তার নিজের এবং সাহাবাদের পোষাক-পরিচ্ছদ ও তখনকার আরবের মুশরিক ও কাফেরদের পরিচ্ছদ একই ছিল। বর্তমানেও আরবে মুসলিম আরব, খ্রিষ্টান আরব ও ইহুদি আরবদের একই পোষাক-পরিচ্ছদ। দেখলে বলা যাবে না কে মুসলিম, কে খ্রিষ্টান আর কে ইহুদি।
কোন সন্দেহ নেই, বিশ্বনবী (সা.) তার অনুসারীদের একটা নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্যরে দাড়ি রাখতে বলেছেন। কেন বলেছেন? এই জন্য বলেছেন যে, তিনি যে জাতিটি, উম্মাহ সৃষ্টি করলেন তা যেমন পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ জাতি তেমনি বাইরে থেকে দেখতেও যেন এই উম্মাহর মানুষগুলি সুন্দর হয়। আদিকাল থেকে দাড়ি মানুষের পৌরুষ ও সৌন্দর্যের প্রতীক হয়ে আছে। সিংহের যেমন কেশর, ময়ূরের যেমন লেজ, হাতির যেমন দাঁত, হরিণের যেমন শিং, তেমনি দাড়ি মানুষের প্রাকৃতিক পৌরুষ সৌন্দর্য। এই সৌন্দর্য নষ্ট না করার উদ্দেশ্যেই দাড়ি রাখার নির্দেশ। আরও একটা প্রয়োজনীয় উদ্দেশ্য আছে দাড়ি রাখার নির্দেশের। পূর্ববর্তী ধর্ম, দীন, জীবন-বিধানগুলি বিকৃত হয়ে ভারসাম্য হারিয়ে ফেলার ফলে যখন সেগুলির মধ্যে একপেশে আধ্যাত্মবাদ, সন্ন্যাসবাদ ইত্যাদি প্রবল হয়ে দাঁড়ালো তখন তারা মাথার চুল, দাড়ি মোছ ইত্যাদি কামিয়ে ফেলে কৌপীন পড়ে সংসার ত্যাগ করল। অর্থাৎ দাড়ি-মোছ ইত্যাদি কামিয়ে ফেলা হলো বৈরাগ্যের চিহ্ন, সংসার থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবার চিহ্ন। কিন্তু মহানবী (সা.) যে উম্মাহ সৃষ্টি করলেন তার উদ্দেশ্য হলো সংগ্রামের মাধ্যমে সমস্ত পৃথিবীকে এই দীনের মধ্যে এনে সুবিচার, ন্যায় ও শান্তি প্রতিষ্ঠা। তাহলে স্বভাবতঃই এই উম্মাহর সমস্ত কর্মপ্রবাহ সংগ্রামী, প্রকাশ্য ও বহির্মূখী হতে বাধ্য এ কথা সাধারণ জ্ঞানেই বোঝা যায়। সুতরাং এই উম্মাহর লোকজনের চেহারাও অবশ্যই সংসার বৈরাগী সন্ন্যাসীর ছাপ থাকবে না এবং ছাপ না রাখার জন্য দাড়ি রেখে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কাপড় পড়ে এই পৃথিবীরই সংসারী লোকজনের মত দেখাবার নির্দেশ। মহানবীর (সা.) সময়ে খ্রিষ্টান সন্ন্যাসীরা (রাহেব) এক দল দাড়ি-মোচ চুলে কাচি লাগাতো না, ওগুলো ইচ্ছামত বাড়তো, আরেক দল সব কামিয়ে ফেলতো, ইহুদিরা বিরাট বিরাট দাড়ি রাখতো আর বৌদ্ধরা সব কামিয়ে ফেলতো। সবগুলোই ছিল বৈরাগ্য, সংসার ত্যাগের বাহ্যিক প্রকাশ রূপে। এই বৈরাগ্যের মানসিকতার বিরোধিতা করে বিশ্বনবী (সা.) তার নিজের জাতিকে নির্দেশ দিলেন- আমার এই দীনে সন্ন্যাস, বৈরাগ্য নেই (লা রোহবানীয়াতা ফিল ইসলাম)। তোমরা ঐ সব সংসার ত্যাগী সন্ন্যাসীদের বিপরীত করবে অর্থাৎ দাড়ি ও মোচ রাখবে এবং ইহুদিদের বিপরীত করবে অর্থাৎ দাড়ি ও মোচ ছেটে ছোট করে রাখবে। উদ্দেশ্য হলো ঐ কাজ করে তারা দেখাবে যে তারা সন্ন্যাসী নয়, সংসার বিমুখ নয় বরং ঘোর সংসারী, এই সংসারে এই পৃথিবীতে মানব জীবনে স্রষ্টার দেয়া রাজনৈতিক, আর্থ-সামাজিক আইন, দণ্ডবিধি চালু করে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য প্রাণ উৎসর্গকারী সংগ্রামী জাতি তারা। জাতিকে সুন্দর দেখানো শেখানোর জন্য মহানবী (সা.) নিজে পরিষ্কার সুন্দর কাপড় পড়তেন, দাড়ি-মোচ সুন্দর করে ছেটে রাখতেন। তিনি সফরে গেলেও তার সঙ্গে কাচি, চিরুনি ও আয়না থাকত। একদিন মসজিদে একজন উস্কো-খুস্কো চুলওয়ালা লোককে দেখে তিনি তখনই তাকে নির্দেশ দিলেন মাথার চুল চিরুনী করে সুবিন্যস্ত করার জন্য । বয়স হলে মাথার চুল যখন পেকে যায় সেটাকে রং করা, অর্থাৎ কম বয়সের দেখানো চেষ্টা করা দুনিয়াদারীর মানসিকতা, না বৈরাগ্যের, ধার্মিকতার মানসিকতা? মক্কা জয়ের পর পরই আবু বকর (রা:) তার অতি বৃদ্ধ বাবাকে- যিনি তখনও মুশরিক ছিলেন, সুতরাং মক্কাতেই ছিলেন- মহানবীর (সা.) কাছে নিয়ে এলেন। বাবা তখন এত বৃদ্ধ যে তিনি চোখেও দেখতে পাননা। আবু বকরের (রা:) বাবা বিশ্ব নবীর (সা.) হাতে ইসলাম গ্রহণের পর রসুলাল্লাহ (সা.) তখনই হুকুম দিলেন তার শুভ্র চুল দাড়ি মেহেদী দিয়ে রং করে দিতে এবং তখনই তা করে দেওয়া হলো । একটি অন্ধ, অতি বৃদ্ধের চুল দাড়ি রং করা এবং আজকের ‘ধার্মিক’ মুসলিমদের নানাভাবে বৈরাগ্য প্রকাশ করার মধ্যে রয়েছে সত্যিকার ও পথভ্রষ্ট ইসলামের আকিদার তফাৎ- দু’টি বিপরীতমুখী আকিদা। আজ বিকৃত আকিদার ‘ধার্মিক’রা অনিয়ন্ত্রিত উলোঝুলো দাড়ি উড়িয়ে, মাথা ন্যাড়া করে বিশ্রী কাপড় পড়ে দেখাতে চান যে তাদ
ের মন দুনিয়া বিমুখ হয়ে আল্লাহর দিকে গেছে- ঠিক যেমন করে ঐ খ্রিষ্টান, হিন্দু, বৌদ্ধ সন্ন্যাসীরা বোঝায়। অর্থাৎ মহানবী (সা.) যে উদ্দেশ্যে দাড়ি মোচ সুন্দর করে ছেটে রাখতে বলেছেন, অর্থাৎ সুন্দর দেখাতে, তার ঠিক বিপরীত উদ্দেশ্যে।
মানব জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ আদর্শ বিশ্বনবীর (সা.) যে দৈহিক বিবরণ হাদীসে ও ইতিহাসে পাওয়া যায় তা লক্ষ্য করলে আমরা পাই একটি মানুষ- অতি পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন কাপড় পড়া, তাতে সুগন্ধ, খোশবু, আতর লাগানো (সুগন্ধি ও ফুল তার অতি প্রিয় ছিল) যতœ নেয়া মাথার চুল, ঠিক মাথার মাঝখান থেকে সিঁথির দু’পাশ দিয়ে নেমে এসেছে কানের নিচে, কাঁধের একটু উপর পর্যন্ত, সুন্দর করে দাড়ি-মোচ ছাটা, সুন্দর দেখাবার জন্য চোখে সুরমা দেওয়া, মাঝে মাঝে গায়ে ইয়ামেনের প্রসিদ্ধ জোব্বা (Robe)। সব মিলিয়ে যাকে পাচ্ছি, তাকে যারা দেখেছেন তারা প্রভাতে উদিয়মান সূর্যের সাথে, পূর্ণ চন্দ্রের সাথে তুলনা করেছেন, তাকে কি কোনভাবেই একটি দুনিয়া বিমুখ, সংসার বিমুখ বৈরাগী বলা চলে? মোটেই না। কিন্তু বর্তমানের ‘ধার্মিক’দের মানসিকতা তাই- একেবার উল্টো। এদের বাইরেও উল্টো, ভেতরেও উল্টো। ভেতরে উল্টো এই জন্য যে, ঐ বিশ্ব নবীর (সা.) মাধ্যমে আল্লাহর দেয়া রাজনৈতিক, আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থা, বিচার ও দণ্ডবিধিকে বাদ দিয়ে অর্থাৎ আল্লাহর সার্বভৌমত্বকে অস্বীকার করে মানুষের তৈরি এই সব ব্যবস্থার মধ্যে বাস করে কার্যতঃ মুশরিক হয়ে মাথা ন্যাড়া করে, মোছ কামিয়ে, টুপি পাগড়ী মাথায় দিয়ে কাঁধে চেক রুমাল ফেলে, টাখনুর উপর পাজামা পড়ে আর পাঁচবার মসজিদে দৌড়ে এরা আত্মপ্রসাদ লাভ করছেন এই ভেবে যে, তারা শুধু উম্মতে মোহাম্মদী নন, একেবারে নায়েবে নবী। তুচ্ছ মসলা-মাসায়েল নিয়ে সীমাহীন তর্কাতর্কি বাদানুবাদ করে করে এরা এই জাতির ঐক্য টুকরো টুকরো করে দিয়েছেন, যে ঐক্য ছাড়া একটা জাতি ধ্বংস হয়ে যায়, এমন কি দুর্বল শত্রুর হাতেও পরাজিত হয়ে যায়। আর তাই গিয়েছিলও। কিন্তু তাতেও বোধোদয় হয় নি, অসীম অজ্ঞতায় তারা আজও ঐ খুঁটিনাটি মসলা নিয়ে নিজেদের মধ্যে মারামারি করতে ব্যস্ত।