শেখ মনিরুল ইসলাম, মুখপাত্র, হেযবুত তওহীদ
আমাদের দেশের অধিকাংশ জনগণ ধর্মভীরু এবং তারা ধর্মীয় বিষয়গুলির ব্যাপারে ধর্মব্যবসায়ী আলেম মোল্লা শ্রেণির উপর নির্ভরশীল। এই আলেম মোল্লাদের যে কোন প্রচারে সাধারণ মানুষ সাংঘাতিকভাবে প্রভাবিত হয়, অতীতে এটা বার বার দেখা গেছে। অথচ এই ধর্মজীবীরাই নিজেদের হীনস্বার্থে ধর্মকে ব্যবহার করে, সত্যকে বিকৃত করে এবং মিথ্যার প্রসার ঘটায়। তাদের করা ধর্মের অপব্যাখ্যার দ্বারা সাধারণ মানুষ বহু অধর্মকে ধর্ম হিসাবে বিশ্বাস করে এবং ঘোরতর অন্যায় কাজে লিপ্ত হয়, যার প্রকৃষ্ট উদাহরণ জঙ্গিবাদ ও ধর্ম নিয়ে অপরাজনীতি। এমন অবস্থায় যদি সাধারণ মানুষকে বোঝানো যায় যে এই মোল্লারা ধর্ম নিয়ে ব্যবসা কোরছে, রাজনীতি কোরছে, শুধু তাই নয়, তারা যে ইসলামটাকে বিক্রি কোরে জীবিকা নির্বাহ কোরছে বা রাজনীতি কোরছে সেটা আল্লাহ-রসুলের প্রকৃত ইসলামই নয়, সেটা একটি বিকৃত বিপরীতমুখী ইসলাম, তাহোলে সাধারণ মানুষ আর তাদের কথায় প্রতারিত হবে না। ধর্মব্যবসাকে আল্লাহ হারাম কোরেছেন এবং ধর্মজীবী আলেমরা যেটাকে ইসলাম হিসাবে সমাজে কায়েম কোরে রেখেছে সেটাও যে প্রকৃত ইসলাম নয় তা কোর’আন ও হাদিসের ভিত্তিতে প্রমাণ কোরেছেন হেযবুত তওহীদের প্রতিষ্ঠাতা, এ যামানার এমাম, টাঙ্গাইলের প্রখ্যাত পন্নী পরিবারের সদস্য জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নী। তিনি আরও প্রমাণ দিয়েছেন যে, ইসলামে কারও অন্ধ অনুকরণের, অন্ধ বিশ্বাসের কোন স্থান নেই, যুক্তিজ্ঞানহীন কোন আমলের প্রতিদান আল্লাহ দিবেন না। অথচ ধর্মব্যবসায়ীরা সর্বদাই ধর্মীয় উন্মাদনা সৃষ্টি কোরে মানুষকে অন্ধ অনুকরণে এবং যুক্তিজ্ঞানহীন আচরণে প্ররোচিত করে। সত্য প্রকাশের স্বার্থে এবং মানুষকে ধর্মের নামে প্রতারণা করার হাত থেকে রক্ষার করার উদ্দেশ্যে সেই তথ্য-প্রমাণগুলি আমরা গত ১৮ বছর ধোরে সাধ্যমত প্রচার কোরে যাচ্ছি। যারা আমাদের বক্তব্য পড়েছেন বা জেনেছেন তারা বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন, তারা নিজেদেরকে ধর্মব্যবসায়ী মোল্লাদের প্রচারিত মিথ্যা থেকে মুক্ত কোরতে সক্ষম হোয়েছেন। আমরা গভীরভাবে বিশ্বাস কোরি, ধর্মব্যবসায়ীদের প্রকৃত রূপ এবং তাদের প্রচারিত ইসলামটি কিভাবে বিকৃত তা যদি আরও ব্যাপকভাবে মানুষের কাছে তুলে ধরা যায়, তবে আমাদের দেশ থেকে ধর্মীয় অন্ধত্ব, কু-সংস্কার, জঙ্গিবাদ, ধর্মীয় সন্ত্রাস, ধর্মব্যবসা, ধর্ম নিয়ে অপরাজনীতি- এক কথায় ধর্মের যত প্রকার অপব্যবহার সমাজে প্রচলিত আছে সেগুলি সব একেবারে নির্মূল হোয়ে যাবে। তখন আর ধর্মজীবী মোল্লারা ধর্মের নামে সাধারণ মানুষের মধ্যে কোন হুজুগ বা উন্মাদনা সৃষ্টি কোরে সহিংস ঘটনা সংঘটন কোরে নিজেদের স্বার্থ হাসিল কোরতে পারবে না। মনে রাখতে হবে, ধর্মের নামে উন্মাদনা, সাম্প্রদায়িকতা যুগে যুগে অশান্তির একটি মূল কারণ। সাম্প্রতিককালে আফগানিস্তান, পাকিস্তান, মিশর, সিরিয়া ইত্যাদি দেশগুলিতে লক্ষ লক্ষ মানুষের মৃত্যুর পিছনেও মূল অনুঘটক ছিলো ধর্মের অপব্যাখ্যা এবং একটি স্বার্থান্বেষী মহল কর্তৃক ধর্মীয় উন্মাদনা সৃষ্টি। এটা সন্দেহাতীত যে, মহান আল্লাহর নিকট থেকে ধর্ম এসেছে মানবতার কল্যাণে, মানুষকে শান্তি দেওয়ার জন্য, মুক্তি দেওয়ার জন্য। ধর্ম কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর স্বার্থ হাসিলের হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহৃত হওয়ার জন্য আসে নি, মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করাও ধর্মের কাজ নয়। ব্যবসায়ীরা যেমন অধিক মুনাফার জন্য নিজেদের মধ্যে সিন্ডিকেট তৈরি করে, সুযোগ বুঝে স্বার্থোদ্ধার করে, তেমনি ধর্মব্যবসায়ীরাও নিজেদের মধ্যে সিন্ডিকেট বা জোট সৃষ্টি কোরে ধর্মকে নিজেদের কুক্ষীগত কোরে রেখেছে। মানুষ যেহেতু ধর্মের প্রতি গভীর বিশ্বাস ও ভালোবাসা পোষণ করে, তাই মোল্লারা নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য “ধর্ম গেল – ধর্ম গেল” জিকির তুলে সেই ধর্মীয় অনুভূতিকে ব্যবহার কোরে থাকে। আর সাধারণ কোন ব
িষয় নিয়ে হুজুগ সৃষ্টি আর আল্লাহ-রসুলের নাম নিয়ে হুজুগ সৃষ্টি করার মধ্যে আসমান জমিন ফারাক, বর্তমান দুনিয়ার প্রেক্ষাপটে এ কথা বিশেষ ব্যাখ্যার প্রয়োজন পড়ে না। তাই ধর্মজীবী মোল্লা ও ধর্মভিত্তিক সন্ত্রাসবাদীরা যেন কোনরূপ অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি কোরে না পারে এবং জনগণকে তাদের হীন স্বার্থে ব্যবহার কোরতে না পারে সেজন্য সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি অপরিহার্য।