হেযবুত তওহীদ

মানবতার কল্যাণে নিবেদিত

সালাত উম্মাহর বাস্তব জীবনের নকশা

আসাদ আলী:
সালাত বা নামাজ হলো ইসলামের পাঁচটি বুনিয়াদী বিধানের দ্বিতীয়টি। আল্লাহর সার্বভৌমত্বের (তওহীদ) উপর ঈমানের পরেই সালাতের স্থান। সালাতকেই ইসলামের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমল হিসাবে ধরে নিয়ে বিশ্বজুড়ে লক্ষ লক্ষ মসজিদ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। সালাত যাতে সহিহ-শুদ্ধ হয়, আল্লাহর কাছে কবুল হয়, এ উদ্দেশ্যে নিখুঁতভাবে ওজু-দোয়া-দরুদ ইত্যাদি করার জন্য অগণিত বই লেখা হয়েছে। এমনকি শুধু নিয়মিত নামাজ পড়ার উপদেশ দেওয়ার জন্যই গড়ে উঠেছে বহু সংস্থা, সংগঠন, দল-উপদল। কিন্তু এত কিছুর পরও দুর্ভাগ্যজনক বিষয় এই যে, আল্লাহ কেন নামাজের বিধান দিয়েছেন, নামাজের উদ্দেশ্য কী, নামাজ আমাদেরকে কী শিক্ষা দেয় সেই আকিদাটাই আমাদের মধ্য থেকে হারিয়ে গেছে।

যে কোনো কিছুরই সৃষ্টির উদ্দেশ্য আছে। আসমান-জমিনসহ কোনো বস্তুই আল্লাহ উদ্দেশ্যহীনভাবে সৃষ্টি করেননি। তেমনি ইসলামেরও একটি উদ্দেশ্য আছে। সংক্ষেপে বলতে গেলে- মানবজাতির জীবনের যাবতীয় অন্যায়, অবিচার, অশান্তি দূর করে ন্যায় ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করাই ইসলামের উদ্দেশ্য। একইভাবে দীনের যেসব আমলের নির্দেশ আল্লাহ দিয়েছেন, সেগুলোরও উদ্দেশ্য আছে। তাহলে সালাতের মত একটি গুরুত্বপূর্ণ বিধান, যাকে আল্লাহ কোর’আনে বিরাশি বারেরও বেশি উল্লেখ করলেন তা কি বিনা উদ্দেশ্যে হতে পারে? অবশ্যই তার একটি উদ্দেশ্য আছে। সেটা কী?

নামাজের উদ্দেশ্য কী?
এ প্রশ্নের জবাব পাওয়া যায় মহানবীর একটি হাদিসে। রসুল (সা.) একটি চমৎকার উপমা দিয়ে বলেন, “ইসলাম একটি ঘর, নামাজ তার খুঁটি, আর জিহাদ হলো ছাদ।” (তিরমিজি, ইবনে মাজাহ, মুসনাদে আহমদ) একটি ঘরে খুঁটির কাজ কী ও ছাদের কাজ কী? ঘরের প্রধান যে উদ্দেশ্য রোদ বৃষ্টি থেকে রক্ষা পাওয়া, সেটা সম্ভব হয় ছাদের কারণে। আর ছাদকে উপরে ধরে রাখার জন্য দরকার হয় খুঁটি। যদি কোনো ঘরে ছাদ না থাকে তাহলে খুঁটির কোনো দরকার নেই। আবার যদি খুঁটি না থাকে তাহলে ছাদ দেওয়া অসম্ভব। রসুল (সা.) জেহাদকে ছাদের সঙ্গে তুলনা করে বোঝালেন ইসলামের মহাগুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো জেহাদ। আর খুঁটির সাথে নামাজের তুলনা করে বোঝালেন- নামাজের উদ্দেশ্য হলো জেহাদকে সমুন্নত রাখা। সেটা সালাত কীভাবে করে? সালাত মো’মেনদেরকে মানসিক, আধ্যাত্মিক ও শারীরিকভাবে প্রশিক্ষিত করে গড়ে তোলে, যেন সে নিজেকে মানবতার কল্যাণে নিয়োজিত করার চারিত্রিক গুণ (অঃঃৎরনঁঃব) ও আত্মিক শক্তি লাভ করে যাবতীয় লোভ-লালসার ঊর্ধ্বে উঠে সুশৃঙ্খল জীবনযাপনে উদ্বুদ্ধ হয়। যেমন-

ঐক্য, ভ্রাতৃত্ব সৃষ্টি:
সালাত জাতিকে ‘ঐক্য’ শিক্ষা দেয়। লক্ষ্যের ঐক্য, উদ্দেশ্যের ঐক্য। একেকজন একেক স্থান থেকে এসে একটি নির্দিষ্ট সময়ে একটি নির্দিষ্ট স্থানে কাতারবদ্ধ হয়ে একটি নির্দিষ্ট দিকে অর্থাৎ কাবার দিকে মুখ ফিরিয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে দাঁড়ানোর মাধ্যমে মো’মেনদের মধ্যে একদিকে লক্ষ্যের ঐক্য তৈরি হয়, অন্যদিকে পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ববোধ জাগ্রত হয়। তারা মনে করে- আমার পাশে দাঁড়ানো ব্যক্তিটি আমারই ভাই। আমরা একই প্রভুর সৃষ্টি। নিজেদের মধ্যে যতই বিভেদের কৃত্রিম আবহ তৈরি করে রাখি না কেন, আল্লাহর সামনে আমাদের অবস্থান একই সারিতে। আমাদের যাত্রাও একই অভিমুখে, সত্য ও ন্যায় তথা আল্লাহর অভিমুখে। আমার পাশে দাঁড়ানো ব্যক্তিটি শিক্ষিত নাকি নিরক্ষর, দরিদ্র নাকি ধনী, সাদা নাকি কালো তা আমি দেখব না।

নামাজের কাতারকে বলা হয় ‘সফ’। কেন সফ বলা হয় তার উত্তর আল্লাহ সুরা সফেই দিয়েছেন। আল্লাহ বলেছেন- আল্লাহ তাদেরকে ভালবাসেন যারা সীসা গলানো প্রাচীরের মত ‘সারিবদ্ধভাবে’ তাঁর পথে সংগ্রাম করে (সুরা সফ ৬১:৪)। অর্থাৎ সালাতের এই সফ কেবল সালাতের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, এই সফ আসলে মো’মেনদের বাস্তব জীবনের ঐক্যের প্রতীক। সুতরাং যারা সালাত কায়েম করবে তারা সর্বদা মনে রাখবে আমরা সজাগ-সচেতন থাকব যাতে আমাদের জাতির মধ্যে কেউ ঐক্য নষ্ট করতে না পারে, ভ্রাতৃত্বে ফাটল ধরাতে না পারে। ঐক্য নষ্ট হয় এমন কথা বলব না, এমন কাজ করব না। শিরক, কুফর, অন্যায়, অবিচারের বিরুদ্ধে সমস্ত জাতি ঐক্যবদ্ধ থাকব। দৈনিক পাঁচবার ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের এই অনুপম শিক্ষা দেয় সালাত। এ কারণে সালাত এত গুরুত্বপূর্ণ।

শৃঙ্খলাবোধ সৃষ্টি:
কীভাবে ওজু করব, কীভাবে দাঁড়াবো, কীভাবে পোশাক-পরিচ্ছেদ পরব, কীভাবে ওঠা-বসা করব, কীভাবে রুকু করব, কীভাবে সেজদা করব ইত্যাদি প্রায় শতাধিক নিয়ম-শৃঙ্খলা মাথায় রেখে সালাত কায়েম করতে হয়। নির্দিষ্ট সময়ে সালাতে সামিল হতে হয়, কাতার ধনুকের ছিলার মত সোজা করতে হয়, এক পায়ে দাঁড়ানো যাবে না, এদিক ওদিক তাকানো যাবে না, চোখ বন্ধ রাখা যাবে না, রুকুতে পিঠ কুঁজো হওয়া যাবে না, ঢিলেঢালাভাবে সালাত করা যাবে না, মেরুদণ্ড সোজা রাখতে হবে, ইমামের তকবিরের আগে বা পরে যাওয়া যাবে না, হুকুমের সঙ্গে সঙ্গে আনুগত্য করতে হবে, নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট সুরা-কেরাত-তাসবিহ পাঠ করতে হবে- এভাবে বলতে গেলে সালাতের নিয়ম শৃঙ্খলা অসংখ্য। এই সবগুলো নিয়ম-শৃঙ্খলা মাথায় রেখে সালাত কায়েম করার ফলে মো’মেনদের চরিত্রে অসাধারণ শৃঙ্খলাবোধ তৈরি হয়। তাদের প্রত্যেকটি কাজ হয় শৃঙ্খলামাফিক। যার যেমন খুশি তেমন না করে তারা জাতিগতভাবে সুশৃঙ্খলাবদ্ধ হয়ে জাতীয় যে কোনো সমস্যার মোকাবেলা করে। যাবতীয় অন্যায়, অবিচার, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের মত যে কোনো অন্যায় দূর করার জন্য এমন শৃঙ্খলাবদ্ধ জাতির কোনো বিকল্প নেই।

আনুগত্যবোধ সৃষ্টি:
জামাতে ফরজ সালাতে ইমামের কোনো বিকল্প নেই। ইমামের তকবিরের সাথে সাথে মুসল্লিরা রুকু করবে, সেজদা করবে, সালাম ফেরাবে ইত্যাদি। অর্থাৎ ইমামের হুকুম পালন করতে হবে। কেউ ইমামের আনুগত্যের বাইরে গেলে সালাত হয় না। প্রতিদিন একজন লোক ১৭ রাকাত ফরজ সালাতে ইমামের আনুগত্য করে। ইমাম রুকুতে গেলে সে রুকুতে যায়, ইমাম সেজদায় গেলে সে সেজদায় যায়। এক মুহূর্তের জন্যও সে ইমাম সাহেবের কমান্ডের বাইরে যেতে পারে না। এভাবে তার চরিত্রে আনুগত্যবোধ তৈরি হয়।

আজকে মুসলিম বিশ্বের একক কোনো আদেশদাতা নাই। সরকারগুলো যত ভালো নির্দেশই দিক দেখা যায় সে নির্দেশ মানার চেয়ে না মানার দিকেই জনসাধারণের ঝোঁক থাকে বেশি। জাতির মধ্যে কোনো আনুগত্যবোধ নেই। কারণ নামাজের যে প্রকৃত শিক্ষা তা তারা জানেও না, বোঝেও না, তাই চরিত্রে ধারণ করতেও পারে না। নামাজের কয়েক মিনিট ছাড়া মসজিদের বাইরে ইমাম সাহেবের মতামতেরও কোনো মূল্য দেওয়া হয় না। ইমাম সাহেব যতই সুদ, ঘুষ, অন্যায়, অবিচার, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে কথা বলুক, মানুষ শোনে না। তাকে ভাবা হয় নামাজের ইমাম, কেবল নামাজের সময়েই যার নির্দেশ মানার যোগ্য; সমাজ নিয়ে, বাস্তব দুনিয়া নিয়ে তার কথা বলার অধিকারই নেই। অথচ নামাজের প্রকৃত আকিদা জানা থাকলে এমনটা হবার কথা ছিল না। নামাজ মো’মেনদের মধ্যে আনুগত্যবোধ তৈরি করত। যে কোনো ন্যায়সঙ্গত নির্দেশ-উপদেশ, তা সরকারের পক্ষ থেকেই আসুক বা ইমাম সাহেবের পক্ষ থেকেই আসুক, তা শর্তহীন-প্রশ্নহীনভাবে মান্য করার দায়বদ্ধতা তৈরি হত।

শারীরিক সক্ষমতা অর্জন:
আধ্যাত্মিক উন্নতি ও মানসিক সুস্থতার পাশাপাশি সালাত মুসল্লিদের শারীরিক সুস্থতা নিশ্চিতেও সহায়ক ভূমিকা পালন করে। সালাতের যে উঠা-বসা, রুকু, সেজদা ইত্যাদির নিয়ম-কানুন, এসব যদি ঢিলেঢালা বা দায়সারাভাবে না করে রসুলের হাদীস মোতাবেক সঠিকভাবে করা হয়, অর্থাৎ পিঠ, ঘাড়, কোমর, পায়ের পাতা, আঙ্গুল, হাতের তালু, হাঁটু, নাক, কপাল ইত্যাদি অঙ্গসমূহ হাদীসে যেভাবে সঞ্চালন করতে বলা হয়েছে সেভাবে যদি করা হয় এবং এভাবে দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ সালাতসহ নফল, সুন্নত কায়েম করা হয় তাহলে তা ব্যায়ামের মতই কার্যকরী হবে। শারীরিক সুস্থতা নিশ্চিতে সালাত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে সক্ষম। কিন্তু বর্তমানে যেভাবে যুবুথুবু হয়ে সালাত কায়েম করা হয় তা মুসল্লিদের শারীরিক সুস্থতা নিশ্চিতে কোনো ভূমিকা রাখতে পারছে না। আল্লাহ কোর’আনে সুরা নিসার ১৪১-১৪২ নং আয়াতে মুনাফিকদের সালাতের কথা বলতে গিয়ে বলেছেন- মুনাফিকরা শৈথিল্যের সাথে সালাতে দাড়ায়। আল্লাহ শব্দ ব্যবহার করেছেন ‘কুসালা’ যার অর্থ সাহস হারিয়ে ফেলা, অলসতা, ঢিলাঢালা ভাবে। বর্তমান বিশ্বের মুসলিম জাতির সালাতের দিকে তাকালে কুসালা শব্দের অর্থ বুঝতে কারও কষ্ট হবে না।

সালাতের আত্মিক ভাগ:
এতক্ষণ আলোচনা করেছি সালাতের মানসিক ও শারীরিক প্রশিক্ষণ নিয়ে। কিন্তু একটি কথা ভুলে গেলে চলবে না- মানুষ যেমন দেহ-আত্মার সমন্বয়ে সৃষ্ট জীব, তেমন দীনুল হক্বকেও আল্লাহ দেহ ও আত্মা উভয়ের জন্যই উপযোগী ও ভারসাম্যপূর্ণ করে তৈরি করেছেন। ইসলামের অন্যান্য বিধানের মতই সালাতও তাই কেবল জাতির বাহ্যিক, মানসিক বা শারীরিক প্রশিক্ষণেই সীমাবদ্ধ নয়, এর আত্মিক ভাগও যথেষ্ট প্রবল।

মো’মেন যখন সালাতে দাঁড়াবে তখন সে মনে মনে ভাববে- হে আল্লাহ, তুমি তোমার নবীর মাধ্যমে আমাদের প্রতি যে মহাদায়িত্ব অর্পণ করেছ (পৃথিবীতে ন্যায় ও শান্তি স্থাপন করা), সেই দায়িত্ব পালন করার জন্য যে চরিত্র দরকার, সেই চরিত্র সৃষ্টির প্রশিক্ষণ নিতে তোমার সামনে দাঁড়িয়েছি। তুমি দয়া করে আমাদেরকে সেই চরিত্র, আত্মিক শক্তি দান কর যাতে আমরা মানবজীবনে ন্যায় ও শান্তি প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে অটল থাকতে পারি, আমাদের জীবন-সম্পদ, পুত্র-পরিজন মানবতার কল্যাণে উৎসর্গ করতে পারি।

সালাতে দাঁড়িয়ে মো’মেনরা সর্বদা মনে রাখবে- আল্লাহ সূক্ষ্মদর্শী, তিনি সবার মনের খবর জানেন। যখন একজন মো’মেন রুকুতে যায় তখন সে কার্যত আল্লাহর বিশালত্বের সামনে বিনীত ও বিনয়নম্র হয়, আত্মসমর্পিত ভঙ্গিতে আল্লাহর মহীমা ঘোষণা করে। তারপর যখন সেজদায় যায় তখন সে কার্যত ত্রুটিহীন (সোবহান) প্রভুর সামনে তার দেহমনসহ সমস্ত সত্তাকে সমর্পণ করে। সে মুখে আল্লাহর বিশালত্ব ও অসীম উচ্চতার ঘোষণা দেয় এবং মাথা মাটিতে ঠেকানোর মাধ্যমে নিজের সীমাবদ্ধতা ও ক্ষুদ্রতা স্বীকার করে নেয়। একজন মো’মেন যখন সর্বাবস্থায় মহান স্রষ্টার তুলনায় নিজের এই ক্ষুদ্রতার কথা স্মরণ রাখে, তখন সে আর উদ্ধত, অহংকারী ও স্বৈরাচারী হতে পারে না। বাস্তব জীবনে সে আল্লাহর প্রতিটি হুকুম মেনে চলে। মানুষের সাথে বিনীত ও মার্জিত আচরণ করে। শয়তানের প্ররোচনায় কখনও গাফেল হয়ে গেলে, লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হয়ে গেলে, ঐক্য নষ্ট করলে, অপর কোনো মো’মেন ভাইয়ের সাথে খারাপ আচরণ করলে, পরবর্তী ওয়াক্তে সালাতে দাঁড়িয়েই সে লজ্জিত হবে, অনুতপ্ত হবে এবং নিজেকে সংশোধন করবে। এজন্যই সালাতের আক্ষরিক অর্থ হচ্ছে সংস্কার। সালাত বা সালাহ শব্দটি এসেছে আসলাহা থেকে। পবিত্র কোর’আনে আল্লাহ এ শব্দটি ব্যবহার করেছেন ‘সংশোধন’ বোঝাতে (সুরা আন’আম ৬:৪৮)।

যাবতীয় অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্রেরণা (জেহাদ):
অর্থাৎ বোঝা গেল- সালাত বা নামাজের সামগ্রিক উদ্দেশ্য হচ্ছে জাতিকে ঐক্য, ভ্রাতৃত্ব, শৃঙ্খলা, আনুগত্য, সময়ানুবর্তিতা, পরিচ্ছন্নতা ইত্যাদি শিক্ষা দেওয়া এবং জীবন-সম্পদকে উৎসর্গ করার আত্মিক দৃঢ়তা দান করা, পাশপাশি যাবতীয় অন্যায়, অবিচার, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সংগ্রামে বিজয়ী হবার উপযোগী চরিত্র তৈরি করা। নামাজ অন্যায়-অসত্যের বিরুদ্ধে সংগ্রামী চরিত্র তৈরি করে বলেই আল্লাহ বলেছেন- নিশ্চয়ই নামাজ মানুষকে অন্যায় ও অশ্লীল কাজ থেকে বিরত রাখে। (সুরা আনকাবুত ২৯:৪৫)।

সুতরাং আজ দেশ ও জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে যখন বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ, সাম্রাজ্যবাদ, অন্যায়, অবিচার, হানাহানি, রক্তপাত চরম আকার ধারণ করেছে, আমাদের দেশ নিয়েও ষড়যন্ত্র মাথাচাড়া দিয়েছে এবং এমতাবস্থায় দেশের ১৭ কোটি মানুষকে ন্যায় ও সত্যের পক্ষে যাবতীয় অন্যায়ের বিরুদ্ধে সীসাঢালা প্রাচীরের মত ঐক্যবদ্ধ হবার বাধ্যবাধকতা তৈরি হয়েছে, তখন জাতির ধর্মবিশ্বাস বিরাট এক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে। নামাজসহ ইসলামের যাবতীয় বিধানের সঠিক আকিদা প্রচার করা গেলে সাধারণ মানুষ তাদের ঈমানী চেতনা থেকে নিজেরাই দেশবিরোধী অপশক্তি ও অন্যায়-অসত্যের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে- এ বিষয়ে আমরা দৃঢ় প্রত্যয়ী।

[লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট; ইমেইল: hezbuttawheed.official@gmail.com যোগাযোগ: ০১৭১১০০৫০২৫, ০১৭১১৫৭১৫৮১, ০১৭১১২৩০৯৭৫]

সার্চ করুন

যুক্ত হোন আমাদের ফেসবুক পেজের সাথে...