হেযবুত তওহীদ

মানবতার কল্যাণে নিবেদিত

পীরগাছায় হেযবুত তওহীদের উপর বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

রংপুরের পীরগাছায় মিথ্যা গুজব ছড়িয়ে পরিকল্পিতভাবে হেযবুত তওহীদের সদস্যদের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সংগঠনটি। এই বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে রংপুরের তারাগঞ্জ সদরে সংবাদ সম্মেলন করেছে হেযবুত তওহীদের রংপুর জেলা শাখা। সংবাদ সম্মেলনে মিথ্যা গুজব রটিয়ে এবং মাইকে ঘোষণা দিয়ে হেযবুত তওহীদ সদস্যদের বাড়িঘরে হামলায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন হেযবুত তওহীদের রংপুর জেলা শাখার আমির আবুল কালাম আজাদ রুবেল। তিনি বলেন, “একটি উগ্রবাদী গোষ্ঠী মিথ্যা তথ্য ও গুজব ছড়িয়ে সাধারণ জনগণকে বিভ্রান্ত করেছে এবং তাদের উসকে দিয়ে হেযবুত তওহীদের সদস্যদের উপর পরিকল্পিতভাবে এই নির্মম হামলা চালিয়েছে। হামলায় কোটি টাকার সম্পত্তি ধ্বংস হয়েছে, বহু মানুষ আহত হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “সোমবার সকাল ১০টার দিকে পীরগাছার ২নং পারুল ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড নাগদহ ছিদাম বাজার সংলগ্ন হেযবুত তওহীদের বিভাগীয় সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস শামীমের বাড়িতে এই হামলা হয়। স্থানীয় একটি উগ্রবাদী গোষ্ঠী কয়েকদিন ধরে মিথ্যা প্রচারণা চালিয়ে হেযবুত তওহীদের সদস্যদের বিরুদ্ধে ‘হিন্দু’, ‘কাফের’ ও ‘বিধর্মী’ বলে অপপ্রচার চালায়। এরপর মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে লোকজন জড়ো করে এবং পূর্বপরিকল্পিতভাবে এই হামলা পরিচালনা করে।”

“হামলাকারীরা প্রথমে ৫টি বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। হামলার সময় তারা লাঠি, রড, রামদা ও কিরিচসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আক্রমণ চালায়। হামলার শিকার বাড়িগুলোর মূল্যবান আসবাবপত্র, গবাদিপশু ও অর্থ লুট করা হয়।”

“হামলায় অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ৭ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আহতদের মধ্যে রয়েছেন- ডা. আজিজ, সুজন আলী, ওবায়দুল হক, মনিরুজ্জামান বাবু, মনির হোসেন, আলমগীর হোসেন, জাফর, ভুট্টু, মুইন উদ্দীন, ইমরান রানা, গফুর আলী, আবিয়াজ রহমান সাগর ও এমদাদ। আহতদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।” -বলেন আবুল কালাম আজাদ।

সংবাদ সম্মেলনে হেযবুত তওহীদের নেতারা বলেন, “আমরা আগেই প্রশাসনকে এই হামলার সম্ভাবনার কথা জানিয়ে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু প্রশাসন কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি। বরং হামলার সময় পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক ও হতাশাজনক।”

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, প্রথম দফায় হামলার পর উগ্রবাদীরা মসজিদের মাইকে ঘোষণা দেয়, “নাগদহ ছিদাম বাজার এলাকায় হিন্দুরা মুসলমানদের উপর হামলা চালিয়েছে। আপনারা হিন্দুদের প্রতিহত করতে এগিয়ে আসুন।” এই মিথ্যা প্রচারণার মাধ্যমে আরও বেশি মানুষকে উত্তেজিত করা হয় এবং বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত একাধিক দফায় হামলা চালানো হয়। হামলার একপর্যায়ে পুলিশের সামনেই বাড়িগুলো ও বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

গণমাধ্যমের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “আমরা গণমাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানাই, তারা যেন প্রকৃত ঘটনা তুলে ধরে এবং বিভ্রান্তিমূলক তথ্য প্রচার করে হামলাকারীদের আড়াল না করে। হেযবুত তওহীদ কখনো ধর্মবিরোধী কোনো কাজ করেনি, বরং ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা প্রচারের জন্য কাজ করছে। অথচ আমাদের বিরুদ্ধে ধারাবাহিকভাবে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।”

সংবাদ সম্মেলনে তিনি দায়ীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানান। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারি দেন তিনি।

সার্চ করুন

যুক্ত হোন আমাদের ফেসবুক পেজের সাথে...