হেযবুত তওহীদ

মানবতার কল্যাণে নিবেদিত

ইসলামের সঠিক শিক্ষা বিস্তারে অংশ নিন

হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম

আমাদের সংক্ষিপ্ত আহ্বান
যারা এই মুহূর্তে আমার কথাগুলো পড়ছেন তাদের সবাইকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা। মানুষের জীবন হাজারো সমস্যায় জর্জারিত। ব্যক্তি থেকে বিশ্ব সর্ব অঙ্গনে ভয়াবহ সংকট নিয়ে আমরা এই জীবন অতিবাহিত করছি। এই মুহূর্তে পৃথিবীর অন্তত পয়ষট্টিটি দেশে চলছে রক্তক্ষীয় যুদ্ধ, গৃহযুদ্ধ, সন্ত্রাসবাদী হামলা, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, সংখ্যালঘু নির্যাতন, আন্তর্জাতিক অপরাধী চক্রের বিরুদ্ধে লড়াই ইত্যাদি। ইউক্রেন, রাশিয়া, ইসরাইল, যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর মত পরাশক্তিধর দেশগুলো পরস্পরের বিরুদ্ধে জোট বেঁধে যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে। প্রতিদিন বিশ্বযুড়ে হতাহত, বাস্তুচ্যুত হচ্ছে হচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ বেঁধে যাওয়ার বেশি দেরি নেই। আর এদিকে আমাদের অভ্যন্তরীন জীবনে রাজনৈতিক অস্থিরতা, সামাজিক অপরাধ, দুর্নীতি, নারী নির্যাতন, খুন-খারাপি, ধর্ষণ, পারিবারিক সহিংসতা, মাদক ইত্যাদি যাবতীয় অপরাধ অতীতের সমস্ত রেকর্ড ভেঙে ফেলেছে। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতির ফলে নাভিশ্বাস উঠেছে খেটে খাওয়া মানুষের। এমন একটি সংকটময় সময়ে দাঁড়িয়ে চিন্তাশীল মানুষ দিশেহারা। মানুষ ধরেই নিয়েছে যে এই পরিস্থিতি আমাদের নিয়তি। এর কোনো সমাধান নেই। সুদিন আর আসবে না। এখন শুধু চূড়ান্ত ধ্বংসের প্রহর গোনা।
এমন একটি সময়ে দাঁড়িয়ে আমরা হেযবুত তওহীদ বলছি যে, এখনও সময় ফুরিয়ে যায়নি। এখনও সম্ভব ধ্বংসের দ্বারপ্রান্ত থেকে ফিরে আসা। কিন্তু সেজন্য একটি সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আর তা হল, যিনি এই বিশ্বজাহানের স্রষ্টা, মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন মানবজাতির জন্য যে শেষ জীবন বিধান পাঠিয়েছেন তা আমাদের সামগ্রিক জীবনের জন্য কবুল করে নেওয়া। আমাদের আজকের যে পরিস্থিতি তার মূল কারণ, আমরা আল্লাহর দেওয়া সেই জীবনবিধানকে প্রত্যাখ্যান করে মানুষের তৈরি করা, পশ্চিমা সভ্যতার তৈরি করা জীবনবিধান দিয়ে আমাদের সামাজিক, রাজনৈতিক, প্রশাসনিক, বিচারিক, জাতীয়, রাষ্ট্রীয় জীবন পরিচালিত করছি। যাবতীয় অশান্তি ও রক্তপাতের মূল কারণ এই ভুল জীবনব্যবস্থার অনুসরণ।
আল্লাহর দেওয়া জীবনব্যবস্থা সম্পর্কে আজ আমাদের মুসলিম জনগোষ্ঠীর মধ্যে হাজারো মতবিরোধ, ফেরকা ও মাজহাবের বিভক্তি। ফলে ইসলামের কোনো অভিন্ন রূপরেখা পাওয়া যায় না। ইসলাম দিয়ে যে মানুষের সামগ্রিক জীবন পরিচালিত হতে পারে, মানবজীবনের যাবতীয় সংকট এর মাধ্যমে দূর করা সম্ভব- এমন ধারণা অধিকাংশ মুসলিমই রাখেন না। তাদের কাছে ইসলাম বলতে বোঝায় নামাজ রোজা, আরবীয় পোশাক আশাক, কিছু ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা ইত্যাদি। এসবের দ্বারা তারা আল্লাহর সন্তুষ্টি হাসিল করতে চান যেন পরকালে তারা জান্নাতে যেতে পারেন। অন্য সকল ধর্মের মতই ইসলাম ধর্মটিও একটি পুরোহিত শ্রেণির হাতে কুক্ষিগত হয়ে আছে। তারা ইসলামের উদ্দেশ্যমূলক, স্বার্থবাদী, সাম্প্রদায়িক, উগ্রবাদী ব্যাখ্যা প্রদান করছে। যার অনুসরণ করে মুসলিম জাতির একটি বড় অংশ ধর্মীয় উন্মত্ততা, গুজব, হুজুগ, জঙ্গিবাদ, সাম্প্রদায়িকতা, ধর্ম নিয়ে অপরাজনীতি ও উগ্রবাদে জড়িয়ে আছে। তাদের অন্ধত্ব, কূপমণ্ডূকতা, অসহিষ্ণুতা, উগ্র ও সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসী আচার আচরণ দেখে ইসলামের উপর বীতশ্রদ্ধ হয়ে গেছেন বহু মানুষ। তারাও জন্মসূত্রে মুসলমান। পাশাপাশি তারা আন্তর্জাতিক বিশ্বের ইসলামবিরোধী প্রোপাগান্ডার দ্বারা প্রভাবিত। তারা তালেবান, আল কায়েদা, আই এস, বোকো হারাম ইত্যাদি উগ্রবাদী গোষ্ঠীর দ্বারা ইসলামের নামে নারীবিদ্বেষী, অযৌক্তিক চিন্তাভাবনা, আচার আচরণ ও বর্বরতার ঘটনা জেনে ইসলামকেই এর জন্য দায়ী মনে করছেন।
আমাদের সরকারগুলো চেষ্টা করে যাচ্ছে ধর্মের নামে সন্ত্রাস সৃষ্টিকারীদেরকে বল প্রয়োগের মাধ্যমে, আইনকে কঠোর থেকে কঠোরতর করে দমন করার জন্য। কিন্তু ধর্মবিশ্বাস দ্বারা অনুপ্রাণিত ব্যক্তিদের উপর যতই কঠোর আচরণ ও আইন প্রয়োগ করা হোক, তাদের নিজ মতবাদের প্রতি দৃঢ়তাই বৃদ্ধি পায়। তাই আমাদের এই মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে প্রয়োজন ইসলামের সঠিক শিক্ষার প্রচার, সঠিক আদর্শ ও ইতিহাসকে তুলে ধরা। তাহলেই মানুষের ধর্মীয় আবেগকে আর কেউ ছিনতাই করে হীন স্বার্থে বা সন্ত্রাস সৃষ্টিতে ব্যবহার করতে পারবে না। ধর্মবিশ্বাসকে তখন গঠনমূলক কাজে ব্যবহার করা যাবে।
ইসলামের এই সঠিক রূপটি হেযবুত তওহীদের কাছে আছে। আমরা সেটা আমাদের বইপত্রে, প্রচারপত্রে, সোশ্যাল মিডিয়ায়, দৈনিক পত্রিকায় তুলে ধরছি। আপনাদের প্রতি আমার অনুরোধ, আমাদের বক্তব্য শুনুন। মানুষের কাছে ছড়িয়ে দিন। শিক্ষা কেবল স্কুল কলেজেই হয় না, জীবনের বৃহৎ অঙ্গন থেকেই আমরা অধিকাংশ শিক্ষা লাভ করে থাকি। মানুষ যখন ইসলামের সঠিক শিক্ষা লাভ করবে, তখন তারা ধর্মান্ধতা, ধর্মব্যবসায়ীদের সৃষ্ট সাম্প্রদায়িকতা, জটিল দুর্বোধ্য মাসলা-মাসায়েলের জাল থেকে মুক্ত হতে পারবে। তারা বুঝতে সক্ষম হবে যে, আল্লাহর দেওয়া জীবনব্যবস্থাই পারে আমাদের জীবনে পরিপূর্ণ শান্তি, সমৃদ্ধি, ন্যায় ও সুবিচার প্রদান করতে। সেটা কোন ইসলাম? সেই ইসলাম আজকে পৃথিবী থেকে হারিয়ে গেছে। আমরা অনলাইন ও অফলাইনে আপনার কাছেই আছি। আমাদের বক্তব্য শুনুন। ইনশাল্লাহ তাহলেই আপনার সামনে উদ্ভাসিত হবে স্রষ্টার প্রেরিত সেই অনাবিল দীন, যা সমগ্র পৃথিবীর অন্ধকার দূর করে নিয়ে আসবে মুক্তির নতুন সভ্যতা। যে সভ্যতার আলোয় পৃথিবীর সকল মানুষ আলোকিত হবে।

লেখাটি শেয়ার করুন আপনার প্রিয়জনের সাথে

Email
Facebook
Twitter
Skype
WhatsApp
সার্চ করুন

যুক্ত হোন আমাদের ফেসবুক পেজের সাথে...