ব্রিটিশরা এই জাতিকে পদানত করার পর এরা যেন কোনো দিন আর মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে এজন্য একটি শয়তানি ফন্দি আঁটে। তারা এ জাতির মানুষের মন ও মগজকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার জন্য দু’টি সমান্তরাল শিক্ষাব্যবস্থা প্রচলন করে, যথা: মাদ্রাসা শিক্ষা ও সাধারণ শিক্ষা। তাদের অধিকৃত সকল উপনিবেশেই তারা মুসলমানদেরকে ইসলাম শিক্ষা দেওয়ার নাম করে মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করে এবং সেখানে তারা নিজেদের মনগড়া একটি বিকৃত-বিপরীতমুখী ইসলাম শিক্ষা দেয়। মাদ্রাসাগুলোর অধ্যক্ষপদ তারা নিজেদের হাতে রেখে দীর্ঘ ১৪৬ বছর এই উপমহাদেশের মুসলমানদেরকে তাদের তৈরি ‘ইসলাম’ শিক্ষা দিয়েছে। এখানে অংক, ভূগোল, বিজ্ঞান, অর্থনীতি, প্রযুক্তি ও কারিগরি শিক্ষা ইত্যাদির কোনো কিছুই রাখা হলো না, যেন মাদ্রাসা থেকে বেরিয়ে এসে আলেমদের রুজি-রোজগার করে খেয়ে বেঁচে থাকার জন্য এই কথিত ইসলাম বিক্রী করে রোজগার করা ছাড়া আর কোনো পথ না থাকে। খ্রিষ্টানরা এটা এই উদ্দেশ্যে করল যে তাদের মাদ্রাসায় শিক্ষিত এই মানুষগুলো যাতে বাধ্য হয় দীন বিক্রী করে উপার্জন করতে এবং তাদের ওয়াজ নসিহতের মাধ্যমে বিকৃত ইসলামটা এই জনগোষ্ঠীর মন-মগজে স্থায়িভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়; এ উপমহাদেশসহ ব্রিটিশ খ্রিস্টানরা তাদের অধিকৃত সমস্ত মুসলিম দেশগুলোতে এই একই নীতি কার্যকর করেছে এবং সর্বত্র তারা একশ’ ভাগ সফল হয়েছে।
ধর্মহীন সাধারণ শিক্ষাব্যবস্থাটি তারা চালু করল স্কুল কলেজের মাধ্যমে। এ ভাগটা তারা করল এই জন্য যে, এ বিরাট এলাকা শাসন করতে যে জনশক্তি প্রয়োজন তা এদেশের মানুষ ছাড়া সম্ভব ছিল না; সামরিক ও বেসামরিক প্রশাসনের কেরাণীর কাজে অংশ নিতে যে শিক্ষা প্রয়োজন তা দেওয়ার জন্য তারা এতে ইংরেজি ভাষা, সুদভিত্তিক অংক, বিজ্ঞানের বিভিন্ন দিক, ইতিহাস (প্রধানতঃ ইংল্যান্ড ও ইউরোপের রাজা-রাণীদের ইতিহাস), ভূগোল, প্রযুক্তিবিদ্যা অর্থাৎ পার্থিব জীবনে যা যা প্রয়োজন হয় তা শেখানোর বন্দোবস্ত রাখল; সেখানে আল্লাহ, রসুল, আখেরাত ও দীন সম্বন্ধে বলতে গেলে কিছুই রাখা হলো না। সেই সঙ্গে নৈতিকতা, মানবতা, আদর্শ, দেশপ্রেম ইত্যাদি শিক্ষাও সেখানে স্থান পেল না। তাদেরকে এমনভাবে শিক্ষা দেওয়া হলো যাতে তাদের মন শাসকদের প্রতি হীনম্মন্যতায় আপ্লুত থাকে এবং পাশাপাশি তাদের মন-মগজে, আল্লাহ, রসুল, দীন সম্বন্ধে অপরিসীম অজ্ঞতাপ্রসূত বিদ্বেষ (A hostile attitude) সৃষ্টি হয়। বিশ্ব-রাজনৈতিক কারণে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলো তাদের উপনিবেশগুলোকে বাহ্যিক স্বাধীনতা দিয়ে চলে যায়। যাওয়ার সময় তারা ক্ষমতা দিয়ে যায় এই সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত শ্রেণিটির উপর যারা চরিত্রে ও আত্মায় ব্রিটিশদের দাস। ব্রিটিশদের রেখে যাওয়া সেই শিক্ষাব্যবস্থা আজও চালু আছে। এখানে একটা কথা মনে রাখতে হবে যে, ব্রিটিশ শাসক গোষ্ঠী নামে খ্রিষ্টান হলেও তারা প্রকৃতপক্ষে ঈসা (আ.) এর অনুসারী ছিল না। ঈসা (আ.) এর শিক্ষাকে বহু পূর্বেই তারা বাদ দিয়ে ধর্মকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করেছে।
মুসলমানরা পৃথিবীর সর্বত্র শত শত বছর ধরে নির্মমভাবে নির্যাতিত হচ্ছে, জাতিগত সহিংসতার শিকার হচ্ছে, তাদেরকে মেরে-কেটে জন্মভূমি থেকে উৎখাত করে দেওয়া হচ্ছে। তাদের নারীদেরকে ধর্ষণ করা হচ্ছে, তাদের দেশগুলো একটার পর একটা গুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। কোটি কোটি মুসলমান উদ্বাস্তু-শিবিরে বাস করছে, তাদের শিশুরা সাগরে ডুবে মরছে। এগুলো সবই হচ্ছে আল্লাহর দেওয়া দায়িত্ব পালন না করার শাস্তিস্বরূপ। যতদিন না তারা তাদের সেই দায়িত্বকে পুনরায় কাঁধে তুলে নেবে, ততদিন তাদের মুক্তির কোনো সম্ভাবনা নেই।
এই নিকৃষ্ট পরিণতি থেকে মুক্তির একটি সুযোগ আল্লাহ মানবজাতির সামনে উপস্থাপন করেছেন, এমামুয্যামান জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নীর মাধ্যমে। এমামুয্যামান তাঁর শৈশবকাল থেকেই ভাবতে থাকেন কী করে, কোন পথে মানুষের মুক্তি সম্ভব? আল্লাহ তাঁকে পথ দেখালেন। তিনি বুঝতে পারলেন যে, তওহীদ, আল্লাহর সার্বভৌমত্বই হচ্ছে মানুষের ইহকালীন ও পরকালীন মুক্তির একমাত্র পথ। সেই তওহীদ হচ্ছে, আল্লাহকে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের মালিক বলে গ্রহণ করা। বর্তমানে মুসলিমসহ সমগ্র মানবজাতি এই তওহীদ থেকে বিচ্যুত। যেদিন তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে তাদের জাতীয় জীবনের সর্বক্ষেত্রে তথা সামাজিক, আইন-কানুন, অর্থনীতি, দণ্ডবিধি কোথাও আল্লাহর হুকুম মানবে না, আল্লাহর হুকুমের পরিপন্থী বিধান নিজেদের মন মতো তৈরি করে তা দিয়ে জীবন চালাবে সেদিনই তারা বর্তমান বিশ্বে চলমান অশান্তির বিষবৃক্ষের বীজ রোপণ করল। আজকে সেই বৃক্ষের শাখা-প্রশাখা গজিয়েছে এবং এখন তার কুফল ভোগ করছে মানুষ।
মানুষের একজন স্রষ্টা আছে। সেই স্রষ্টাকে যখন বাস্তব জীবন থেকে বাদ দেয়া হলো তখন যাবতীয় সত্য, ন্যায় ও নৈতিকতার উৎসের সঙ্গে মানুষের যোগসূত্র বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল। মানুষ অতি মহান একটি সৃষ্টি থেকে দুরাচারী, স্বৈরাচারী, মানবেতর জীবে পরিণত হলো। এখন এ পরিস্থিতি থেকে মানুষের মুক্তির উপায় কী? সেই উপায় হচ্ছে মানবজাতিকে আবার তার প্রকৃত পরিচয় স্মরণ করা। এটা স্মরণ করা যে প্রতিটি মানুষ একই জাতিভুক্ত, একই বাবা-মায়ের সন্তান। তারা একজন আরেকজনকে হত্যা করতে পারে না, বিনাশ করতে পারে না, একজন আরেকজনকে বিষ খাওয়াতে পারে না। এখন যেকোন মূল্যে তাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। কিন্তু ঐক্যবদ্ধ হতে প্রয়োজন একটি সাধারণ ঐক্যসূত্র, একটি পথ। সেই পথটি হচ্ছে তাদেরকে আবার প্রত্যাবর্তন করতে হবে সেই সনাতন চিরন্তন শাশ্বত সত্যের উপরে। সবাই মিলে বলতে হবে এক আল্লাহর হুকুম ছাড়া আমরা কারো হুকুম মানব না, যাবতীয় অন্যায়ের বিরুদ্ধে অসত্যের বিরুদ্ধে আমরা হব ঐক্যবদ্ধ। এ লক্ষ্যেই মাননীয় এমামুয্যামান ১৯৯৫ সালে হেযবুত তওহীদ আন্দোলন প্রতিষ্ঠা করেন।
হেযবুত তওহীদ আল্লাহর সৃষ্ট আন্দোলন, কারণ এর প্রতিটি পদক্ষেপ আল্লাহর সিদ্ধান্ত মোতাবেক গৃহীত হয়। এই পবিত্র আন্দোলন আল্লাহর অশেষ রহমতে ১৯৯৫ সাল থেকে পথ চলছে। আল্লাহ তাঁর অপরিসীম সাহায্য হেযবুত তওহীদের উপরে ঢেলে দিয়েছেন। হেযবুত তওহীদের কর্মসূচি কী হবে তা আন্দোলন প্রতিষ্ঠার প্রথম দিনেই আল্লাহ একটি সহীহ হাদীস থেকে বুঝিয়ে দেন। এই আন্দোলনের কর্মসূচিটি তাই কোনো মানবীয় চিন্তাপ্রসূত কর্মসূচি নয়, এটি প্রণয়ন করেছেন এই সৃষ্টিজগতের স্রষ্টা ও প্রভু স্বয়ং আল্লাহ। সেই কর্মসূচির উপর ভিত্তি করে হেযবুত তওহীদ এতদিন চলেছে। কিন্তু আন্দোলনের কার্যক্রম ব্যাপকভাবে শুরু করতেই এক শ্রেণির স্বার্থান্বেষী ধর্মব্যবসায়ী আমাদের বিরুদ্ধে ভীষণ অপপ্রচার চালিয়েছে। হেযবুত তওহীদের বিষয়ে মানুষের মনে একটি নেতিবাচক ধারণা তৈরি করে দিয়েছে, এর প্রভাব পড়েছে সাধারণ জনগণ থেকে শুরু করে প্রশাসন, গণমাধ্যম সর্বত্র। বিশ্বজুড়ে ইসলামবিদ্বেষী প্রচারণার প্রত্যক্ষ প্রভাবে অনেক গণমাধ্যমকর্মী না জেনে হেযবুত তওহীদকে নিষিদ্ধ, জঙ্গি, গোপন আন্দোলন আখ্যা দিয়ে পত্রিকা ও টিভিতে প্রচার চালিয়েছে। যার ফলশ্রুতিতে হেযবুত তওহীদকে প্রচণ্ড সামাজিক ও প্রশাসনিক হয়রানির শিকার হতে হয়েছে। পাঁচ শতাধিকবার আমাদের সদস্যদেরকে গ্রেফতার করে হাজতে পাঠানো হয়েছে, কিন্তু গোপন ও প্রকাশ্য তদন্তে একটি ক্ষেত্রেও একজন সদস্যেরও কোনো অপরাধ বা আইনভঙ্গের প্রমাণ পায় নি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তবু এই গ্রেফতারের প্রতিটি ঘটনা গণমাধ্যমগুলো ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে এমনভাবে প্রচার করেছে যে এই সত্যনিষ্ঠ, আইনমান্যকারী আন্দোলন সম্পর্কে দেশবাসী সম্পূর্ণ ভ্রান্ত ধারণায় নিমজ্জিত হয়ে গেছে। কিন্তু আমরা নিশ্চিতভাবে জানি, যে মহাসত্য আল্লাহ হেযবুত তওহীদকে দান করেছেন তার বিজয় অবশ্যম্ভাবী। তাই আমরা দমে না গিয়ে সর্বাত্মকভাবে মানুষের কাছে তাদের মুক্তির একমাত্র পথটি তুলে ধরার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। কারণ আমরা জানি, মানুষ দীর্ঘদিন থেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নিজেদের মস্তিষ্কপ্রসূত বিভিন্ন জীবনব্যবস্থা নিজেদের জীবনে কার্যকরী করে দেখেছে যেগুলো মানবজাতিকে শান্তি দিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। এখন তাদের সামনে রক্ষা পাওয়ার জন্য একটি মাত্র পথ খোলা আছে, তা হলো আল্লাহর দেওয়া ভারসাম্যপূর্ণ সত্যদীন প্রতিষ্ঠা করা যা একাধারে মানুষের বৈষয়িক জীবনের সকল ক্ষেত্রের প্রগতি ঘটাবে, অপরদিকে মানুষের নৈতিক গুণাবলীকে চরম উৎকর্ষে নিয়ে যাবে।
১৯৪৭ সনে দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ভারত ভেঙে যখন মুসলমানদের জন্য পৃথক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা হলো তখন বলা হয়েছিল যে এটি ইসলামের নীতি মোতাবেক পরিচালিত হবে। নাম রাখা হয়েছিল ইসলামিক রিপাবলিক অব পাকিস্তান। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি ছিল নিছক প্রতারণামূলক রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি। ব্রিটিশ আমলে গজিয়ে ওঠা বুর্জোয়া মুসলিম পরিবারগুলোর সন্তানেরা পাকিস্তানের রাজনৈতিক ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ লাভ করলেন এবং তারা তাদের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে পাকিস্তানকে পাশ্চাত্যের সাম্রাজ্যবাদী প্রভুদের অনুকরণেই পরিচালিত করলেন। কিন্তু ধর্মকে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করে গেলেন। সেই শাসকগোষ্ঠী ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা কখনও ধারণ করে নি, ফলে ইসলামের নামে দেশ ভাগ করলেও ধর্মপ্রাণ জনসাধারণ ইসলামের প্রতিশ্রুত সাম্য, ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছে, এক কথায় তারা ইসলাম পায় নি। উপরন্তু তারা দেখেছে ধর্ম ব্যবহার করে অপরাজনীতি, শোষণ ও ব্রিটিশ শাসনের উত্তরাধিকার সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষকে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করার নিকৃষ্ট উদাহরণ। ২৪ বছরের নিপীড়ন, শোষণ, অবিচার আর বঞ্চনার দ্বারা মানুষের হৃদয়ে যে ক্ষোভ আর ক্রোধ পুঞ্জীভূত হয়েছিল তার বহিঃপ্রকাশ ঘটল ১৯৭১ সালে। দেশের আপামর জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়ে স্বৈরাচারী শাসকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করল। আমরা একটি মানচিত্র পেলাম। কিন্তু স্বাধীনতার পর থেকে আজ পর্যন্ত আমাদের এই জনগোষ্ঠীকে রাজনৈতিক স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী ও ধর্মব্যবসায়ী শ্রেণি একদিনের জন্যও ঐক্যবদ্ধ থাকতে দেয় নি। ধর্মব্যবসায়ী শ্রেণিটি একদিকে নানা ফেরকা মাজহাব আর অপরাজনীতি করে গেছে আর অপরদিকে পাশ্চাত্য থেকে ধার করা ঐক্যবিনাশী বিভিন্ন মতবাদের উপর ভিত্তি করে গড়ে তোলা রাজনৈতিক দলগুলো একে অপরের বিরুদ্ধে সারাবছর হামলা-পাল্টা হামলা, ভোটাভুটি নিয়ে রক্তারক্তি, হরতাল, অবরোধ চালিয়ে গেছে। ফলে স্বাধীনতার কাঙ্ক্ষিত সুফল আমরা ভোগ করতে পারি নি, শান্তি আসে নি। সরকারগুলো বস্তুগত উন্নতির চেষ্টা করেছে, বিরোধীরা সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে গিয়ে প্রতিবাদের নামে জাতির সম্পদ ধ্বংস করেছে।
স্বাধীনতার পর থেকে অর্ধ-শতাব্দী পেরিয়ে গেছে। আধুনিক গতিশীলতার যুগে একটি জাতিকে পৃথিবীর বুকে সম্মানজনক আসন লাভ করতে এই অর্ধ-শতাব্দী কম সময় নয়। কিন্তু আজও আমরা দারিদ্র্যের সাথেই লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি, হাজার হাজার ডলার বৈদেশিক ঋণের বোঝা এ জাতির মাথার উপরে। দেশ স্বাধীন হওয়ার সময় এ দেশের জনসংখ্যা ছিল সাড়ে সাত কোটি, কিন্তু এখন আমরা সংখ্যায় ১৬ কোটি যাদের বিরাট একটি অংশ তরুণ, উদ্যমী, কর্মক্ষম এবং পরিশ্রমী। আমাদের মাটি অত্যন্ত উর্বর। আমাদের রয়েছে বিপুল পরিমাণ খনিজ সম্পদ, রয়েছে নদী, সমুদ্রসীমা যা উন্নয়নের বড় নিয়ামক। সব মিলিয়ে আমরা যদি নিজেরা স্বার্থ, ক্ষমতা, রাজনীতি আর ধর্ম নিয়ে হানাহানি না করে যাবতীয় সুস্পষ্ট অন্যায়ের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ শক্তিশালী একটি জাতিসত্তা গড়ে তুলতে পারতাম তাহলে এতদিন আমরা অর্থনৈতিক, সামরিক, শিক্ষা, প্রযুক্তি, কৃষি এক কথায় সর্বদিক থেকে পরাশক্তিতে পরিণত হতে পারতাম। সেখানে আমরা এখনও মধ্যম আয়ের দেশ হওয়ার জন্য কতই না চেষ্টা করছি। যাহোক, সময় ফুরিয়ে যায় নি। এখনও আমরা চাইলে অন্তর্কলহ ত্যাগ করে ঐক্যবদ্ধ হতে পারি, তাহলে চলমান বৈশ্বিক সংকট ও আঞ্চলিক সংকট থেকে নিজেদের দেশ ও জাতিকে নিরাপদ রাখতে পারব। নয়তো ইরাক, সিরিয়া, আফগানিস্তান ইত্যাদি দেশগুলো যেভাবে ধীরে ধীরে সাম্রাজ্যবাদীদের ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পড়ে ধ্বংস হয়ে গেছে আমাদেরকেও হয়তো তেমন পরিস্থিতির মুখোমুখি দাঁড়াতে হবে। এ সংকটের কারণ ও প্রতিকারকে হৃদয় দিয়ে উপলব্ধি করার আহ্বান আমরা সর্বসাধারণের কাছে তুলে ধরছি।
আল্লাহর শোকর, আলহামদুলিল্লাহ এখন দেশময় আপামর জনসাধারণ, শিক্ষক, ছাত্র, পেশাজীবী, প্রগতিশীল মানুষ, আলেম তথা সর্বশ্রেণির মানুষ বর্তমানে হেযবুত তওহীদের যাবতীয় গণসচেতনতামূলক কর্মকাণ্ড ও বক্তব্যকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন, সমর্থন করছেন। এর কারণ তারা আমাদের বক্তব্য সরাসরি আমাদের মুখ থেকে, আমাদের বই-পুস্তক, আমাদের তৈরি করা প্রামাণ্যচিত্র থেকে জানতে পারছেন, প্রশ্ন করে উত্তর জেনে নিচ্ছেন। এভাবেই মানুষ প্রকৃত সত্যের সংস্পর্শে এসে স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর উদ্দেশ্যমূলক অপপ্রচারের প্রভাব থেকে মুক্ত হচ্ছে এবং সত্যনিষ্ঠ মানুষ তথা মো’মেন হওয়ার জন্য অঙ্গীকারাবদ্ধ হচ্ছে।