মো. মোশাহিদ আলী
ইসলামে যত ফেরকা বা দল আছে প্রত্যেক দল বা ফেরকার লোকজন আল্লাহ ও তাঁর রসুলকে নিজেদের পক্ষে টানেন এবং তারা যা বলছেন ও করছেন তা আল্লাহ ও রসুলের নির্দেশ মোতাবেকই করছেন ও বলছেন বলে তারা বিশ্বাস করেন এবং মানুষকে আহ্বান করেন নিজ নিজ দলে যোগদান করাতে। প্রত্যেকেই বিশ্বাস করেন তারাই ৭৩ দলের মধ্যে একমাত্র জান্নাতি দল। এখন দেখা যাক প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ ও রসুল কোন দলে এবং তাঁরা কার পক্ষে।
পবিত্র কোর’আনে দুইটি দলের প্রমাণ পাওয়া যায়। একটি হেযবুল্লাহ আরেকটি হেযবুশ শয়তান। (সুরা মুজাদালাহ- আয়াত ১৯, ২২)। মানুষের সৃষ্টিলগ্ন থেকেই তো শয়তান তার প্রকাশ্য শত্র“। আল্লাহ যখন ফেরেস্তাদের বললেন আমি পৃথিবীতে আমার খলিফা বানাতে চাই, তারা বললো, তুমি কি সেখানে এমন কাউকে খলিফা বানাতে চাও যে সেখানে বিপর্যয়, বিশৃংখলা সৃষ্টি করবে এবং (স্বার্থের জন্যে) রক্তপাত করবে, আমরাই তো তোমার প্রশংসা সহকারে তোমার তাসবিহ পড়ছি এবং (প্রতি নিয়ত) তোমার পবিত্রতা বর্ণনা করছি; তিনি (আল্লাহ) বললেন, আমি যা জানি তোমরা তা জানো না। আল্লাহ আদমকে সৃষ্টি করলেন, ফেরেস্তাদের বললেন (সেবা প্রদানের অঙ্গিকারস্বরূপ) আদমকে সাজদা করো, তখন সব ফেরেস্তারা আদমকে সাজদা করলেন, একমাত্র ইবলিস ছাড়া। সে অহংকার দেখালো, ফলে আল্লাহ তাকে লানত করলেন এবং তাঁর নিকট থেকে চলে যেতে বললেন। ইবলিস শেষ দিবস পর্যন্ত অবকাশ চাইলো, আল্লাহ তাকে অবকাশ দিলেন। অবকাশ পেয়ে ইবলিস বললো, যে আদমের কারণে আমাকে বিতাড়িত করলে, আমি তাই এদেরকে পথভ্রষ্ট, গোমরাহ করার সব প্রচেষ্টা করবো। আমি তাদের কাছে আসবো সামনে ও পিছন থেকে, ডান ও বাম দিক থেকে। তুমি এদের অধিকাংশকেই তোমার প্রতি কৃতজ্ঞ পাবে না। আল্লাহ বললেন, (আদম সন্তানের) যারাই তোমার অনুসরণ করবে (তাদের এবং) তোমাদের সবাই কে দিয়ে নিশ্চয়-ই আমি জাহান্নাম পূর্ণ করে দেব। (সুরা বাকারা- ৩০, সুরা আরাফ- ১১-১৮)। আর তোমার (ইবলিসের) প্ররোচনা হতে যারা ফিরে আসবে আমার প্রেরিত পথ প্রদর্শকদের দেখানো (সহজ-সরল) পথে তাদের স্থান দেব চিরস্থায়ী জান্নাতে।
আল্লাহ আদমের পরে সৃষ্টি করলেন মা হাওয়াকে। শয়তান প্ররোচনা দিয়ে আদম ও হাওয়াকে আল্লাহর আদেশ অমান্য করালো। আদম ও হাওয়া জান্নাত হতে বিতাড়িত হয়ে জমিনে এলেন, আবার তাদের সাক্ষাৎ হলো। তাদের বংশ বাড়তে লাগলো। শয়তান প্ররোচনা দিয়ে আদম সন্তানদেরকে বিপথগামী করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং সে অনেক ক্ষেত্রে সফলও হচ্ছে। আল্লাহ তাঁর বান্দাদেরকে সঠিক পথে আনতে (হেদায়াহ্ সহ) নবী রসুল পাঠিয়ে সহজ সরল পথ দেখিয়েছেন। যখন যেখানে যে প্রতিনিধি প্রয়োজন সেখানে নবী বা রসুল হিসাবে প্রতিনিধি পাঠিয়েছেন। নবী রসুলরাও সফল হয়েছেন, তবে বেশিরভাগ মানুষ শয়তানের পথই অনুসরণ করেছে অধিকাংশ সময়। কারণ, শয়তানের যে অস্ত্র তা খুবই আকর্ষণীয় ও লোভনীয় এবং শয়তান প্রতিক্ষণে মানুষকে সেদিকে কুমন্ত্রণা দিতে তৎপর থাকে। আল্লাহ দেশে দেশে গোত্রে গোত্রে এক লক্ষ চব্বিশ হাজার মতান্তরে দুই লক্ষ চব্বিশ হাজার নবী রসুল পাঠালেন। সর্বশেষ পাঠালেন সমগ্র মানব জাতি ও সমস্ত সৃষ্টির জন্য মহামানব মুহাম্মদকে (সা.)। তাঁকে যে যুগে যে স্থানে পাঠালেন সে স্থান ও যুগের বর্ণনা কম বেশি সবারই জানা আছে। আল্লাহ মহানবীকে প্রেরণ করেছেন সমস্ত মানবজাতির জন্য সুস্পষ্ট হেদায়াত ও সঠিক জীবন বিধান সহকারে, যেন তিনি এ বিধানকে দুনিয়ার অন্য সব কয়টি জীবন বিধানের ওপর বিজয়ী করে দিতে পারেন। (সুরা তওবা- ৩৩, সুরা ফাতাহ- ২৮, সুরা ছফ- ০৯)। মহানবী যে ভবিষ্যদ্বাণীগুলো করে গেছেন তা আজ কীভাবে যে বাস্তবে রূপ নিয়েছে এবং ইসলামের নামে বিরাজিত ফেরকাগুলোর ধারকগণ আল্লাহ ও রসুলের দোহাই দিয়ে যে কাজগুলো করছেন তা কতটুকু আল্লাহ ও রসুলের নির্দেশ মতো হচ্ছে তা সকলের একবার ভেবে দেখা দরকার।
তারা সবাই কিন্তু আল্লাহ ও রসুলের কথাই বলছেন এবং সর্বশ্রেষ্ট ও চূড়ান্ত আল্লাহর বাণী কোর’আন ও মহানবীর সহিহ হাদীসের বর্ণনাই দিচ্ছেন। যদি তারা আল্লাহর পক্ষেই থাকেন এবং তাঁর নির্দেশ মতোই চলেন তাহলে তো আজ তাদের পৃথিবীতে শ্রেষ্ঠত্ব থাকার কথা। আল্লাহ তো ওয়াদা করেছেন পৃথিবীর কর্তৃত্ব মুমিনদের দেবেন। তাহলে কি আল্লাহ তাঁর ওয়াদা ভঙ্গ করেছেন (নাউযুবিল্লাহ)? আল্লাহ মুহাম্মদকে (সা.) পাঠালেন সমস্ত মানবজাতিকে এক জাতিতে রূপান্তরিত করতে। মহানবী তাই বিদায় হজ্জের ভাষণে বলেছেন আজ যারা অনুপস্থিত তাদেরকে আমার বাণী পৌঁছে দেবে, আমার দায়িত্ব তোমাদের উপর অর্পণ করলাম, আমার পরে তোমরা মতবিরোধে লিপ্ত হয়ো না। আমি তোমাদের নিকট দুইটি জিনিস রেখে গেলাম- একটি আল্লাহর বাণী পাক কোর’আন ও আরেকটি আমার বাণী হাদিস। যদি এই দুইটি জিনিস তোমরা আঁকড়ে ধরে থাক তাহলে পথভ্রষ্ট হবে না। (আল্লাহও বলেছেন) তোমরা সবাই মিলে আল্লাহর রশি শক্ত করে আঁকড়ে ধরো এবং কখনো পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না (সুরা আল ইমরান- ১০৩)। আল্লাহ আরো বলেছেন, (হে মুসলমানরা) তোমাদের জন্যে অবশ্যই আল্লাহর রসুলের (জীবনের) মাঝে (অনুসরণ যোগ্য) উত্তম আদর্শ রয়েছে (সুরা আহযাব- ২১)। কোর’আনের এই আয়াত সব দলই পড়েন ও বলেন, আর এই আয়াত বলেই নতুন নতুন দল সৃষ্টি করে ঐক্যের জন্য মানুষকে ডাকেন। নতুন দল সৃষ্টি করাই তো আল্লাহ ও রসুলের আদেশের পরিপন্থী। মহানবী (সা.) বলেছেন ইহুদিদের মধ্যে একাত্তরটি দল ছিল, তার মধ্যে সত্তরটি দলই জাহান্নামী – একটি দল জান্নাতি, আর নাসারাদের মধ্যে বাহাত্তরটি দল ছিল যার একাত্তরটি দলই জাহান্নামী, একটি দল জান্নাতি। আর আমার উম্মতের মধ্যে তিহাত্তরটি দল হবে তার মধ্যে বাহাত্তরটি দলই জাহান্নামী আর এক দল হবে জান্নাতি। সাহাবায়ে কেরাম প্রশ্ন করলেন ইয়া রসুলাল্লাহ! সেই জান্নাতি কারা? মহানবী (সা.) বললেন আমি ও আমার আসহাবদের অনুসারী যারা।
মহানবী (সা.) এর এই হাদিসটি এমন কোন আলেম বা ফকিহ্ নেই যারা তা জানেন না। কিন্তু একবারও উনারা এই চিন্তাটুকু করলেন না বা করেন না যে, ৭২ দলই জাহান্নামী আর একটি দলই মাত্র জান্নাতি তাহলে জান্নাতি দল যদি আমারটা না হয় তবে তো তা জাহান্নামী। মহানবী (সা.) কে পাঠানোই হলো সমস্ত মানবজাতির জন্য আর তাঁর আসহাবরা মহানবীর (সা.) ইন্তেকালের পর পৃথিবীকে শান্তির ছায়াতলে আনতে জীবন উৎসর্গ করলেন এবং তাদের জীবদ্দশাতেই (৬০/৭০ বছরে ) অর্ধ পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠা করলেন, (তাদের অধিকাংশেরই কবর বা সমাধি হয়েছে মাতৃভূমির বাহিরে) আর তাঁর আসহাবদের পরে আর কেউই তাঁদের মতো নতুন নতুন ভূখণ্ডে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারলেন না, বরং যে গুলোতে ঐ প্রাথমিক যুগের উম্মতে মোহাম্মদী শান্তি প্রতিষ্ঠা করেছিল সেগুলোও ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে গেল- তার কারণ কী? ভেবে দেখার কি প্রয়োজন নেই? যে মহামানবের আবির্ভাবই মানবজাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্যে, মানবজাতির মুক্তির জন্যে, যে রসুলের সামনে কেউ অনৈক্যের কথা বললে বা ঐক্য নষ্ট হয় এমন কথা বললে বা কোন বিষয়ে মতভেদ সৃষ্টি করলে তিনি রাগে লাল হয়ে যেতেন, তাঁর গড়া জাতি ৭৩ ভাগে বিভক্ত হয়ে গেল কেন? একদিন দুপুরে আব্দাল্লাহ বিন আমর (রা.) রসুলুল্লাহর গৃহে গিয়ে দেখেন তাঁর মূখ মোবারক ক্রোধে লাল হয়ে আছে। কারণ, তিনি দু’জন আসহাবকে কোর’আনের একটি আয়াত নিয়ে মতবিরোধ করতে দেখতে পেয়েছিলেন। তিনি (সা.) বললেন কোর’আনের আয়াতের অর্থ নিয়ে যে কোনো রকম মতভেদ কুফর। নিশ্চয়ই তোমাদের পূর্ববর্তী জাতি সমূহ তাদের কিতাব গুলির (আয়াতের) অর্থ নিয়ে মতবিরোধের জন্য ধবংস হয়ে গেছে। তারপর তিনি আরও বললেন (কোর’আনের) যে অংশ (পরিষ্কার) বুঝা যায় এবং ঐকমত্য আছে তা বল, যে গুলো বুঝা মুশকিল সেগুলোর অর্থ আল্লাহর কাছে ছেড়ে দাও (মতবিরোধ করোনা)। (হাদিস আব্দাল্লাহ্ বিন আমর (রা.) থেকে মুসলিম, মিশকাত)। তাঁর কোন আর্দশ আজ মুসলিম নামক জাতি ধরে আছে? তাঁর ব্যক্তি জীবনের দৈনন্দিন নিয়মনীতি যেমন- টুপি-পাগড়ী পড়া, দাড়ি রাখা, গোফ ছোট করা, মিছওয়াক করা, ডান কাতে শোয়া, খাবার আগে নিমক খাওয়া, খাওয়ার পর মিষ্টি খাওয়া, প্রস্রাব পায়খানার সময় মাথায় টুপি রাখা, ঢিলা কুলুখ লওয়াসহ অনেক অভ্যাসকে যথারীতি পালন করে সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনের চরিত্রকে বাদ দিয়ে মনে করছেন নবীর সুন্নাহকে ধরে আছেন, তাও আবার তাঁর ব্যক্তিগত অভ্যাসগুলো নিয়ে মতপার্থক্য করে বিভিন্ন মাযহাব দল উপদলে বিভক্ত হয়ে প্রত্যেকেই নিজেকে জান্নাতের উত্তরাধিকারী ভাবছেন।
যারা শুধু রসুলের ব্যক্তিজীবনের অভ্যাসগুলো ধরে আছেন আর সামাজিক ও জাতীয় জীবনের বিধানগুলো মানুষের তৈরি জীবন ব্যবস্থার উপর ছেড়ে দিয়ে মিথ্যার ধারকবাহকদের দিকে অর্থের জন্য হাত প্রসারিত করছেন তা কি আল্লাহ দেখেন না? নামাজ, রোজা, হজ্জ, যাকাত, আদায় করলেই কি মুসলমান হওয়া যায়? মহানবী (সা.) কে কি আল্লাহ নামাজ, রোজা, হজ্জ, যাকাত প্রতিষ্ঠা করার জন্য পাঠিয়েছেন? মহানবী (সা.) এর নবুয়তের পূর্ব থেকেই মক্কা ও আরবের লোকজন রোজা রাখত, হজ্জ করত, কোরবানি করত। তাহলে মহানবীর (সা.) আগমনের প্রয়োজন পড়ল কেন? তিনি ঐ আরবদেরকে কিসের দাওয়াত দিলেন? তিনি যখন তাদেরকে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’র প্রতি আহবান করলেন তখন আরব ও কোরাইশ নেতারা কেন বাধা দিল? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর না বুঝলে ইসলাম বোঝা যাবে না। আরবরা এই কলেমার অর্থ বুঝেই মহানবীকে (সা.) বললো তুমি এই দাওয়াত বন্ধ কর। তুমি যা চাও তা দেব। সুন্দরী নারী, টাকা, সোনা, নেতৃত্ব যা চাও তোমার হাতে এনে দেব, তবুও লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’র কথা বলোনা, আমাদেরকে অপমান করো না। তাদের ইজ্জতে আঘাত লাগে কেন, এই কলেমার অর্থ কী? বর্তমানে কলেমার অর্থ করা হয় আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নাই বা উপাসনার মালিক আর কেউ নাই। সে জন্যই উপাসনা হিসাবে নামাজ রোজাকেই মনে করা হয়। কলেমার এই অর্থ কে শেখাল?
ব্রিটিশ সরকার ২০০ বছর এই উপ-মহাদেশ শাসন করে, মাদ্রাসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠা করে নিজেরা (খ্রিষ্টানরা) ১৪৬ বছর ঐ মাদ্রাসা পরিচালনা করেছে, এমন কি অধ্যক্ষপদে থেকে তাদের নিজেদের স্বার্থে ইসলামের রাষ্ট্রীয় বিধান বর্জিত বিকৃত শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করে সরলমনা মুসলিমের মস্তিষ্কে তা ঢুকিয়ে দিয়েছে, ফলে এ শিক্ষায় শিক্ষিত লোকেরা বুঝে নিয়েছে যে, রসুলের ব্যক্তি জীবনের অভ্যাসগুলো পালন করলেই পাক্কা মুসলমান ও ইসলামের ধারক বাহক হওয়া যায়। আবার এই সাধারণ অভ্যাসগুলো পালন করতে ও কত মতপার্থক্যের সৃষ্টি হয়, তা পালন করা না করা নিয়েও কত ঝগড়া ফাসাদ করা যায়, ফজিলত ও রহমত মনে করে ঝগড়া করা দরকার এমন মানসিকতা তৈরি হয়। এদেশের মাদ্রাসা গুলোয় ব্রিটিশদের শেখানো ইসলামই এখনো পড়ানো হচ্ছে। যে জন্য মাদ্রাসা, মসজিদ ও খানকায় এত তালিম হওয়ার পরও পাশ্চাত্যের গোলামী থেকে বের হওয়া সম্ভব হচ্ছে না। মহানবীর কলেমা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ এর অর্থ হলো- আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নাই, মানে- আল্লাহ ছাড়া কোন বিধান দাতা, হুকুম দাতা আইন দাতা ও সার্বভৌমত্বের মালিক আর কেউ নাই, যে জন্য আরবের নেতারা উপলদ্ধি করেছিল যে, এই কলেমা প্রতিষ্ঠা হলে তাদের তৈরী করা জীবন ব্যবস্থা (দীন) থাকবেনা এবং তাদের কোন কর্তৃত্ব থাকবে না। তাই তাদের স্বার্থে আঘাত পড়লো এবং মুহাম্মদ (সা.) কে কলেমার দাওয়াত থেকে বিরত রাখার চেষ্ঠা করলো, যদি ও তারা সফল হলো না। এই কলেমাভিত্তিক সত্য জীবনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্যই মুহাম্মদ (সা.) সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। তাঁর আসহাবরা ও বুঝতে পেরেছিলেন এই কলেমা কি, তাই তারাও জীবন সম্পদ উৎসর্গ করে মহানবী (সা.) কে সহযোগিতা করে দীন প্রতিষ্ঠায় আত্মনিয়োগ করেছিলেন। সর্বশেষ মহানবী (সা.) আল্লাহর দেওয়া দীন (ইসলাম) প্রতিষ্ঠা করে গেছেন।
নামাজ, রোজা, হজ্ব ও যাকাত এগুলো হচ্ছে আমল যা ইসলাম (শান্তি) প্রতিষ্ঠার জন্য যে চরিত্র ও পারিপার্শ্বিকতা দরকার তা সৃষ্টি করে থাকে। আজ সারা বিশ্বে মুসলিম দেশগুলোর মসজিদে মুসল্লি বা নামাজীর কোন অভাব নেই, মসজিদের ভিতরে স্থান সংকুলান হয় না, মসজিদের বাইরেও স্থান করে দিতে হয়। রোজা, হজ্ব ও কোরবানীতেও কেউ পিছিয়ে নেই, যাকাতও সাধ্যমত দেওয়া হয়। কিন্তু সারা পৃথিবীর কোথাও রাষ্ট্র পরিচালনায় আল্লাহর সার্বভৌমত্ব নেই, সবই মানুষের তৈরী (দীন) জীবন ব্যবস্থায় পরিচালিত হচ্ছে।
(দ্বিতীয় পর্বে সমাপ্য)