হেযবুত তওহীদ:
উইকিপিডিয়ার হিসাবমতে বিশ্বের মোট সনাতন ধর্মাবলম্বীর সংখ্যা প্রায় ১১০ কোটি ১৫ লক্ষ। তাদের উদ্দেশ্যে সংক্ষেপে আমরা যা বোলতে চাই তা হোচ্ছে:
ব সমগ্র মানবজাতি একই স্রষ্টার সৃষ্টি, একই বাবা-মা আদম হাওয়ার সন্তান। সেই হিসাবে সকল মানুষ ভাই ভাই। এ বিষয়ে সকল ধর্মগ্রন্থই একমত। মানবসৃষ্টির পর থেকে যুগে যুগে লক্ষাধিক নবী-রসুল পৃথিবীতে এসেছেন, তারা সবাই একটি ধর্মই নিয়ে এসেছেন যার নাম সনাতন ধর্ম বা দীনুল কাইয়্যেমাহ। সনাতন শব্দের অর্থ হোল চিরন্তন, শাশ্বত, অপরিবর্তনীয়। এভাবে ভারতবর্ষেও বহু নবী রসুল এসেছেন, যাদের শিক্ষা থেকেই সৃষ্টি হোয়েছে প্রচলিত হিন্দু ধর্মের। আমরা সনাতন ধর্মের সেই অবতারদের নবী-রসুল বোলে বিশ্বাস কোরি এবং তাদের আনীত শিক্ষাকে অহি এবং গ্রন্থাবলীকে আল্লাহর কেতাব বোলে বিশ্বাস কোরি। সকল নবী-রসুলের প্রতি, সকল আসমানী কেতাবের প্রতি বিশ্বাস রাখা একজন মোসলেমের ঈমানের অংশ। নবী রসুল অবতারদের ধারাবাহিকতায় সবশেষে এসেছেন মোহাম্মদ (দ:)। আমরা তাঁর উপর যেমন ঈমান রাখি তেমনি এব্রাহীম (আ:), মুসা (আ:), ঈসা (আ:), রামচন্দ্র (আ:), শ্রীকৃষ্ণ (আ:), বুদ্ধ (আ:), কনফুসিয়াস (আ:) এঁদের সকলের প্রতিও সমভাবে ঈমান রাখি এবং আল্লাহর হুকুম মোতাবেক তাদের প্রতি সালাম পাঠাই (ওয়া সালামুন আলাল মুরসালীন- কোর’আন, সুরা সাফফাত ১৮১)। আমরা তাঁদের মধ্যে কোনো পার্থক্য কোরি না (লা নুফাররিকু বাইনা আহাদিম মীর রসুল- সুরা বাকারা ২৮৫)। আমরা মনে কোরি, যারা আল্লাহর প্রেরিত অবতারদের একজনকে পূজা ও শ্রদ্ধা করে আর অপর একজনকে ঘৃণা ও অবজ্ঞা করে তারা কখনোই সত্যধর্মের অনুসারী নয়। তারা কখনোই স্রষ্টার সন্তুষ্টি পাবে না, স্বর্গ বা জান্নাতলাভ তাদের সুদূর পরাহত।
ব প্রতিটি ধর্মের ধ্বজাধারী শ্রেণি আল্লাহর প্রেরিত ধর্মকে অতি বিশ্লেষণ কোরে সাধারণ মানুষের বোধগম্যতার বাইরে নিয়ে গেছে এবং সেই বিকৃত ধর্মকে পুঁজি কোরে ব্যবসা কোরে যাচ্ছে। তারাই ভিন্নধর্মের প্রতি ঘৃণা বিস্তার কোরে মানবজাতির মধ্যে ধর্মীয় বিভেদ-বিদ্বেষ সৃষ্টি কোরে রেখেছে, যা কখনো কখনো দাঙ্গায় রূপ নেয়। এই সাম্প্রদায়িকতাকে ভোটের রাজনীতিতে ব্যবহার করে অসাধু রাজনৈতিক বেনিয়া। ভারতবর্ষে এই নোংরা খেলার সূচনা করে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকরা। তাদের ষড়যন্ত্রের জালে জড়িয়ে ভাই ভাইয়ের, এক প্রতিবেশী আরেক প্রতিবেশীর চরম শত্র“তে পরিণত হোয়েছে। তাদের বাধিয়ে দেওয়া রায়টে লক্ষ কোটি হিন্দু-মুসলমান জীবন হারিয়েছে, বাসভূমি হারিয়ে উদ্বাস্তু হোয়েছে। সেই রক্তক্ষরণ আজও বন্ধ হয় নি। আমরা হেযবুত তওহীদ, এ যামানার এমাম জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নীর অনুসারীরা এই রক্তক্ষরণ বন্ধ কোরে সমস্ত মানবজাতিকে একই ঐক্যসূত্রে আবদ্ধ করার পথের সন্ধান পেয়েছি এবং সেই লক্ষ্যে কাজ কোরে যাচ্ছি।
ব আমরা মানবজাতির সামনে একটি ঐতিহাসিক সত্য তুলে ধোরেছি। সেটা হোল: মানুষের হাজার হাজার (হয়তো লক্ষ লক্ষ) বছরের ইতিহাসে মানুষ শান্তি পেয়েছে কেবলমাত্র স্রষ্টার বিধানে। আমরা রামরাজ্যকে এবং ইসলামের স্বর্ণযুগকে উদাহরণ হিসাবে নিতে পারি। আর যখনই মানুষ নিজেই নিজের জীবনব্যবস্থা রচনার ভার নিয়েছে তখনই অশান্তিতে পতিত হোয়েছে। বর্তমানে আমরা মেনে চোলছি পাশ্চাত্যের চাপিয়ে দেওয়া পুঁজিবাদী গণতন্ত্র যার পরিণামে আমরা চরম অন্যায় অশান্তিতে ডুবে আছি। এ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আমাদেরকে স্রষ্টার বিধানে ফিরে যেতে হবে। স্রষ্টার বিধান বোলতে আমরা আদিগ্রন্থ বেদ, বাইবেল, গীতা, ত্রিপিটক, জিন্দাবেস্তা, তওরাত, যবুর, কোর’আন সবগুলিকেই বোঝাচ্ছি। কোনো নির্দিষ্ট ধর্মের মাহাত্ম্য বর্ণনা কোরে কাউকে সেই ধর্মগ্রহণে অনুপ্রাণিত করা আমাদের কাজ নয়। আমাদের কথা হোচ্ছে, যার যার ধর্মে যে সত্য বর্ণিত আছে তারা সেই কথার উপরে প্রতিষ্ঠিত হোলেই শান্তি আসবে। তবে সবাইকে পাশ্চাত্য সভ্যতার চাপিয়ে দেওয়া মতবাদগুলিকে প্রত্যাখ্যান কোরতে হবে।