রাকীব আল হাসান:
—————–
ফিরে এসো এবং লক্ষ্য করো তিনি (ঈশ্বর) সূর্য সৃষ্টি করেছেন ভালো ও মন্দ, উভয়ের ওপর সমানভাবে বিকীর্ণ হওয়ার জন্য; বৃষ্টির ধারা বর্ষণের ক্ষেত্রেও নেই কোনোরূপ পক্ষপাতিত্ব। সুতরাং সবার উদ্দেশ্যেই ভালো কাজ করে যাও। (বার্নাবাসের বাইবেল- ১৮)।
এখানে আমাদের সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহ প্রকৃতির দিকে তাকাতে বললেন এবং শিক্ষা নিতে বললেন। পাহাড়ের ঝর্ণাধারা, প্রবাহিত নদী, ফলবান বৃক্ষ, আকাশের বৃষ্টি- এগুলো যখন মানব জাতিকে পুষ্ট করে, তৃপ্ত করে, তখন কে কোন রঙের, কোন বর্ণের, কোন ধর্মের, কে ধনী, কে গরীব এসব খুঁজে দেখে না। আকাশের বৃষ্টি দেখে না কার টিনের চাল, কার ইটের দেওয়াল, কার প্রাসাদ, কার কুড়েঘর। সে সব জায়গায় সমানভাবে পানি বর্ষণ করে, সতেজ করে। স্রষ্টাও কোনোকিছুতে পক্ষপাতিত্ব করেন না। প্রতিটা ধর্মের শিক্ষাও তাই পক্ষপাতহীনভাবে সকল মানুষের কল্যাণ করার শিক্ষা। মানুষের কল্যাণে কাজ করাই হলো প্রকৃত ধর্মের কাজ। কিন্তু আজ আমাদের সমাজে যে ধর্ম পালন করা হয় তা ধর্মের প্রকৃত শিক্ষা থেকে অনেক দূরে অবস্থান করছে। আমরা মুসলিম, হিন্দু, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ, ইহুদি সবাই উপাসনাসর্বস্ব এক বিকৃত ধর্ম পালন করতে গিয়ে নিজেরা নিজেরা হানাহানিতে লিপ্ত। ধর্ম যেখানে সমাজ থেকে সকল অকল্যাণ দূর করে সমগ্র সমাজের কল্যাণ প্রতিষ্ঠা করবে সেখানে আমাদের ধর্ম কেবল উপসনা ভিন্ন তেমন কিছুই আমাদেরকে দিয়ে করাতে পারে না। আমরা এক ধর্মের পোশাক পরে অন্য ধর্মের মানুষকে হত্যা করি, আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিই, বোমা মেরে উড়িয়ে দিই। অন্য ধর্মের মানুষকে বিধর্মী আখ্যা দিয়ে তাদের উপর অত্যাচার করাকে বৈধ করে নিই। আজ পৃথিবীব্যাপী যত সংঘাত চলছে তার অধিকাংশই ধর্মকেন্দ্রিক।
যে ধর্ম মানুষের মধ্যে ঐক্যের পরিবর্তে অনৈক্য সৃষ্টি করে, শান্তির পরিবর্তে অশান্তি সৃষ্টি করে, ন্যায়ের পরিবর্তে অন্যায় ঘটায় তা কি কখনো স্রষ্টার পক্ষ থেকে আসা ধর্ম হতে পারে? বরং তা বিকৃত ধর্ম। আমাদেরকে ধর্মের প্রকৃত শিক্ষার দিকে ফিরে আসতে হবে। যে যে ধর্মেরই অনুসারী হই না কেন আমাদের লক্ষ্য যদি এক হয় অর্থাৎ সবার লক্ষ্যই যদি শান্তি প্রতিষ্ঠা হয় তবে আমরা কেন বিভেদ করব, কেন আমরা একইসাথে একই লক্ষ্যের দিকে গমন করতে পারব না? আসুন আমরা বিভেদ ভুলে একই স্রষ্টার সৃষ্টি, একই বাবা-মায়ের সন্তান একই সাথে শান্তির পানে গমন করি, ধর্মব্যবসা, অপরাজনীতি, জঙ্গিবাদসহ সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখি। এই ঐক্যের আহ্বানই করছে হেযবুত তওহীদ।