সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ, মাদক, ধর্মব্যবসা, ধর্ম নিয়ে অপরাজনীতি, সাম্প্রদায়িকতা প্রভৃতির বিরুদ্ধে মানুষকে সচেতন করে একটি সত্য-সুন্দর ও ন্যায়নিষ্ঠ সমাজ গঠনের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে হেযবুত তওহীদ। কিন্তু নিজেদের হীনস্বার্থ রক্ষার্থে মানবতার কল্যাণে হেযবুত তওহীদের এ মহৎ কার্যক্রমকে যারা বাধাগ্রস্ত করে তারা দেশ ও জাতির কল্যাণ চায় না, তারা চায় নিজের স্বার্থসিদ্ধি। গত ১৯ জুলাই রাজধানীর শাহজাহানপুর রেলওয়ে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতা দানকালে এসব কথা বলেন হেযবুত তওহীদের শীর্ষ নেতা ও এমাম এবং সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ-সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী সোসাইটি জাতীয় কমিটির চেয়ারম্যান হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম।
ঢাকা মহানগর শাখা হেযবুত তওহীদ কর্তৃক আয়োজিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন আন্দোলনটির সাধারণ সম্পাদক মো. মশিউর রহমান। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. হামিদুল হক শামীম, দৈনিক বজ্রশক্তি পত্রিকার সম্পাদক এস এম সামসুল হুদা, শাহজাহানপুর রেলওয়ে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. ইস্কান্দার খান, হেযবুত তওহীদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আলী হোসেন, ঢাকা মহানগরীর সভাপতি মো. শরিফুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে সমসাময়িক বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা, মুসলিম জাতির বর্তমান অবস্থা, দেশ-জাতি ও মানবতার কল্যাণে হেযবুত তওহীদের কার্যক্রম ইত্যাদি বিষয়ে বক্তব্য রাখেন হেযবুত তওহীদের এমাম। তিনি বলেন, ‘হেযবুত তওহীদ আইন মান্যকারী সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক একটি আন্দোলন। হেযবুত তওহীদ মানবতার কল্যাণে সম্পূর্ণ নিঃস্বার্থভাবে ইসলামের প্রকৃত শিক্ষাকে মানুষের সামনে তুলে ধরার মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ, ধর্মব্যবসা, অপরাজনীতি, মাদক, নারী নির্যাতন ইত্যাদির বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ উপায়ে আদর্শিক সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই এ আন্দোলনের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে সেই শ্রেণিটি যারা ইসলামকে তাদের রুটি-রুজির মাধ্যম বানিয়ে নিয়েছে এবং যারা অপরাজনীতিতে ধর্মীয় সেন্টিমেন্টকে ব্যবহার করে এ পর্যন্ত বিভিন্ন জাতিবিনাশী কর্মকা- ঘটিয়েছে। এ শ্রেণিটি জনগণের কাছে হাজারো বিভ্রান্তিমূলক অসত্য তথ্য, গুজব, বানোয়াট বক্তব্য প্রচার করে হেযবুত তওহীদের মতো মহান একটি আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করে যাচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা একটি অঙ্গীকার নিয়ে কাজ করছি, সেটি হচ্ছে আল্লাহ রসুলের প্রকৃত আদর্শকে উদ্ভাসিত করা, সত্য প্রচার করা। কাজেই ধর্মব্যবসায়ীদের মিথ্যাচারের বিপরীতে আমরাও মিথ্যা প্রচার করতে পারি না। তাদের উস্কানির জবাবে আমরাও উস্কানি দিই না। তাদের বেআইনী কর্মকা-ের মোকাবেলায় আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকি, আইনের আশ্রয় গ্রহণ করি।’
ধর্মব্যবসায়ী শ্রেণিটির অব্যাহত অপপ্রচারের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘দুঃখজনক হলেও সত্য যে ধর্মকে ব্যবহার করে স্বার্থোদ্ধারকারী গোষ্ঠীটি মানবতার কল্যাণে আমাদের এই কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করতে উঠে-পরে লেগেছে। তারা কখনো বিবেচনা করছে না যে, হেযবুত তওহীদ যে আদর্শ ধারণ ও প্রচার করছে তা মানবজাতি মেনে নিলে সমাজে অভুতপূর্ব শান্তি-সুবিচার প্রতিষ্ঠিত হবে। বরং তারা নিজেদের ক্ষুদ্রতর হীনস্বার্থ রক্ষায় সকল নীতি-নৈতিকতার সীমা লঙ্ঘন করেছে।’
তিনি বলেন, ‘এই ধর্মব্যবসায়ী শ্রেণিটি চায় তাদের কথা সমাজে চূড়ান্তরূপে গৃহিত হোক। তাদের বিকৃত ফতোয়া সমাজের সবাই অনুরসণ করুক। বিভিন্ন মাহফিলে তারা প্রায়ই যেসব অপপ্রচার, গুজব, বানোয়াট কথা বলে সবাই তা অকপটে বিশ্বাস করুক। তারা চায় নারীরা গৃহকোণে বন্দি থাকুক। সমাজে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়–ক, জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদের বিস্তার ঘটুক, মুসলিম জাতিটি অন্য সকল জাতির হাতে যতই অপমানিত লাঞ্ছিত নির্যাতিত হোক না কেন, সমাজে ধর্ষণ, সমকামিতা, বলাৎকারের মতো জঘন্য অপরাধ বৃদ্ধি পাক না কেন- তাতে তাদের কোনো মাথাব্যথা নেই। নিজেদের কায়েমী স্বার্থ ঠিক থাকলেই তারা খুশি। কিন্তু যখনই হেযবুত তওহীদ এসব অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান করলো তখনই তারা আমাদের পথে বাধা সৃষ্টি করতে লেগে গেল।’
হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে- আইয়্যামে জাহেলিয়াতের সমাজে আবির্ভুত হয়ে মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে রসুলাল্লাহ সেই সমাজের কী অভুতপূর্ব পরিবর্তন করেছিলেন। একা একজন মেয়ে মানুষ তখন রাতের অন্ধকারে চলাফেরা করতে পারতো তার মনে কোনো ভয় উদয় হতো না। বছরের পর বছর আদালতে কোনো ফৌজদারি মামলা হতো না। যাকাত দেওয়ার জন্য অভাবগ্রস্ত মানুষ খুঁজে পাওয়া যেতো না। আল্লাহর দেওয়া জীবন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা ও প্রয়োগ করার ফলে সেই পরিবর্তন সম্ভব হয়েছিল। একইভাবে এখনও অনুরূপ পরিবর্তন সম্ভব। সেটা কীভাবে, কোন উপায়ে সম্ভব তা-ই তুলে ধরছেন হেযবুত তওহীদের এমাম।
হেযবুত তওহীদের এমাম বলেন, ‘আমি আহ্বান করবো হেযবুত তওহীদের বিষয়ে কোনো অপপ্রচার গুজবে আপনারা প্রভাবিত হবেন না। আমাদের বই-পুস্তক রয়েছে, পত্রিকা রয়েছে, ওয়েবসাইট রয়েছে, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমরা নিজেদের বক্তব্য প্রচার করছি। আপনারা আমাদের সম্পর্কে জানুন। আমাদের বিরুদ্ধে যেসব প্রপাগান্ডা প্রচলিত রয়েছে সেগুলোতে কান দিবেন না।’