‘নারী হচ্ছে জাতির মোট চালিকাশক্তির অর্ধেক। এই বিশাল জনগোষ্ঠীকে মূল ধারার বাইরে রেখে একটি জাতির উন্নতি অসম্ভব। কিন্তু বর্তমান সমাজে ধর্মব্যবসায়ীদের অপপ্রচারে সাধারণ ধর্মপ্রাণ নারীরা প্রতারিত হচ্ছেন। তাদের একটি বড় অংশ ধর্মকব্যবসায়ীদের মিথ্যা ফতোয়াবাজিতে প্রভাবিত হয়ে সমাজের মূলধারা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে জাতির অগ্রযাত্রায় কোনো ভূমিকা রাখতে পারছেন না। তাই আজ সমাজের ঐ ধর্মব্যবসায়ীদের মুখোশ উন্মোচন করে তাদের প্রতারণা থেকে নারীকে মুক্ত করে প্রকৃত ইসলামে নারীর অধিকার ও মর্যাদা সম্পর্কে তাদের সচেতন করে তুলতে হবে।’ গত ২৭ মে ২০১৪ রাজধানীর শাহবাগে গণগ্রন্থাগারের (পাবলিক লাইব্রেরি) শওকত ওসমান স্মৃতি মিলনায়তনে দৈনিক দেশেরপত্রের উদ্যোগে “ধর্মব্যবসায়ীদের অপপ্রচার নারী মুক্তির অন্তরায়” শীর্ষক আলোচনা সভায় উপস্থিত বক্তারা এসব কথা বলেন। দেশেরপত্রের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক রুফায়দাহ পন্নীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি এমপি। অনুষ্ঠানে মুখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদা বেগম। এছাড়াও সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংরক্ষিত মহিলা আসন-৯ এর সংসদ সদস্য বেগম শিরিন নাঈম পুনম ও সংরক্ষিত মহিলা আসন-২৯ এর সংসদ সদস্য এডভোকেট শামছুন নাহার বেগম (শাহানা রব্বানী), বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি সাফিয়া খাতুন, আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-সম্পাদক হেলেনা আক্তার, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী মহিলা লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাবিনা পারভীন, উত্তর আওয়ামী মহিলা লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রোখসানা মলি, গুলশান থানা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী হাসিনা বারি চৌধুরী, দেশেরপত্রের উপদেষ্টা উম্মুত তিজান মাখদুমা পন্নী প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত অ্যাডভোকেট সামসুন্নাহার বেগম এমপি (সংরক্ষিত নারী আসনে সদস্য) বলেন, ‘ইসলাম খুব সহজ একটি ধর্ম। কিন্তু আজ ধর্মব্যবসায়ীরা ইসলামকে কঠিন করে তুলেছে। তাদের অপপ্রচারের কারণে নারীরা আজ ঘরে বন্দি। কিন্তু দেশের অর্ধেক জনসংখ্যা ঘরে বন্দি থাকলে একটি জাতি কখনো উন্নতি করতে পারে না। ইসলাম ধর্ম নারীদেরকে শালীনতার সাথে সব রকমের কাজ করার অনুমতি দিয়েছে। আমাদের দেশকে উন্নত করতে হলে এই সকল ধর্মব্যবসায়ীদের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে নারীদেরকে এগিয়ে আসতে হবে। আসুন আমরা সবাই মিলে দেশেরপত্রের সাথে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ধর্মব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াই।’ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনের আরেক সদস্য বেগম শিরিন নাঈম পুনম ধর্ম নিয়ে অপ-রাজনীতি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত একটি দলবিশেষের নাম উচ্চারণ করে বলেন, ‘আজ তাদের একটি সংঘবদ্ধ নারী চক্র মানুষের ঘরে ঘরে প্রবেশ করে মানুষকে, বিশেষ করে নারী সমাজকে ভুল বোঝাচ্ছে। তারা ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করছে। আরেক শ্রেণি নারীকে তেতুলের সাথে তুলনা করছে। এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমাদেরও মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে ইসলামের প্রকৃত রূপ তুলে ধরতে হবে। প্রকৃত সত্য তাদের সামনে উপস্থাপন করতে পারলে ধর্মব্যবসায়ীদের অপপ্রচারে আমাদের কোমলমতি মা-বোনেরা বিভ্রান্ত হবে না। আসুন আমরা সবাই মিলে একে অপরের হাত ধরে কাজ করি।’
বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদা বেগম তার বক্তব্যে বলেন, “ধর্মব্যবাসায়ীদের রুখতে হলে আগে দেশের প্রত্যেকটি ঘরকে ঠিক করতে হবে। ঘরে ধর্মান্ধকে জিঁইয়ে রেখে কোনদিনও নারীদেরকে মুক্ত করা সম্ভব নয়। তাই সামাজিক ও রাজনৈতিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। আজ শুধু সেমিনার করে এই বিশাল সমস্যা থেকে মুক্ত হওয়া সম্ভব নয়। এজন্য তৃণমূল পর্যায়ে কাজ করতে হবে। তাহলেই ধর্মব্যবসায়ীদের প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।
বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি সাফিয়া খাতুন বলেন, ‘পৃথিবীতে নারীদেরকে সবচেয়ে বেশি সম্মানীত করেছেন মহানবী (স)। ইসলাম নারীকে যে মর্যাদা দিয়েছে তা ধর্মব্যবসায়ীদের অপপ্রচারে ঢাকা পড়ে যাচ্ছে। নারী মায়ের জাতি। তাই সর্বক্ষেত্রে নারীরা পরম মমতার সাথে সব কাজ করে থাকেন।’ তিনি ধর্মব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানোর জন্য দৈনিক দেশেরপত্রকে ধন্যবাদ জানান এবং এমন একটি অনুষ্ঠানের জন্য মহিলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, ‘ধর্মব্যবসায়ীরা জাতির জন্য একটি বড় সঙ্কট। এই সমস্যার সমাধানের জন্য গণমাধ্যমের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। আর দেশেরপত্র সে কাজটাই করছে। এই জন্য আমি তাদের অভিনন্দন জানাই। আজ ধর্মব্যবসায়ীরা মুখে মুখে নারীদেরকে সম্মান জানালেও প্রকৃতপক্ষে তাদেরকে কোন সম্মান দেয় না। তারা সবক্ষেত্রেই নারীকে দূরে সরিয়ে রাখতে চায়। আজ জননেত্রী শেখ হাসিনা যখন সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে সর্বক্ষেত্রে নারীর ক্ষমতায়ন করবে তখনই এক শ্রেণির ধর্মব্যবসায়ী অপপ্রচার শুরু করেছে।’ তিনি বলেন, ‘নারীরা কখনও বেকার থাকে না। তারা বাইরে কাজ না করলেও ঘরে পরিবারকে বিভিন্ন কাজে সাহায্য করে। আজ বাংলাদেশের উন্নতির পেছনে নারীদের অনেক বড় অবদান রয়েছে।’ প্রতিমন্ত্রী সবাইকে আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘নিজেদের মধ্যে হানাহানি না করে, কোন্দল না করে দেশের উন্নয়নে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে হবে। তা করতে পারলে বাংলাদেশ অবশ্যই বিশ্বের বুকে একটি পরাশক্তি হিসেবে মাথা তুলে দাঁড়াবে। এই জন্য দেশের প্রতিটি গ্রামে, প্রতিটি ঘরে প্রবেশ করে মানুষকে বিশেষ করে আমাদের নারী সমাজকে সচেতন করতে হবে।’
‘এই উপমহাদেশের রাজনীতিতে ধর্মই এখন এক নাম্বার ইস্যু। ধর্মনিরপেক্ষতা বর্তমানে শুধুমাত্র একটি শ্লোগান। আপামর জনতার মধ্যে এই শ্লোগানের ভিত্তি নেই। এই উপমহাদেশের মানুষ হাজার বছর ধরে ধর্ম দ্বারা পরিচালিত হয়ে আসছে। এদের রন্ধ্রে রন্ধ্রে, শিরা-উপশিরায় ধর্ম মিশে আছে।’ গতকাল রাজধানীর পাবলিক লাইব্রেরিতে “ধর্মব্যবসায়ীদের অপপ্রচার নারী মুক্তির অন্তরায়” শীর্ষক সেমিনারে দৈনিক দেশেরপত্রের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক রুফায়দাহ পন্নী এ কথা বলেন। তিনি বলেন- ‘এই উপমহাদেশের মানুষ ধর্মপ্রাণ বিধায় তারা ধর্ম দ্বারা সহজেই প্রভাবিত হয়। ব্রিটিশদের বয়ে আনা ধর্মনিরপেক্ষতা ও তথাকথিক গণতন্ত্র এতদঞ্চলের মানুষের সহজাত চরিত্রের সাথে সামঞ্জস্যশীল নয়। এর প্রমাণ আমরা পেলাম ভারতের সদ্য অনুষ্ঠিত লোকসভা নির্বাচনে। শত বছরের পুরনো ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী দল কংগ্রেসকে প্রত্যাখ্যান করে মানুষ বেছে নিল ধর্মাশ্রয়ী দলকে। এই একই ঘটনা যে আমাদের দেশেও ঘটবে না তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। কাজেই সরকারের জন্য এটি একটি অশনিসংকেত। ধর্মনিরপেক্ষতা দ্বারা এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা সম্ভব নয়। ধর্মব্যবসায়ীদের উত্থানকে রোধ করার একমাত্র উপায় হলো- তারা যে ধর্মব্যবসায়ী, ধর্ম নিয়ে অপরাজনীতি করে খায় তা মানুষের সামনে প্রমাণ করে দেওয়া। এটা করতে না পারলে জাতি আবশ্যম্ভাবী সঙ্কটে পতিত হবে। আর এটা একমাত্র আমরাই প্রমাণ করতে পারবো এনশা’আল্লাহ। ধর্মব্যবসায়ীদেরকে ভ্রান্ত প্রমাণ করার জন্য যে তথ্য-উপাত্ত, যুক্তি-প্রমাণ দরকার তা আল্লাহ টাঙ্গাইলের ঐতিহ্যবাহী পন্নী পরিবারের সন্তান এমামুযযামান জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নীকে দান করেছেন। আমরা প্রমাণ করে দেবো যে, বর্তমানে ধর্মব্যবসায়ীরা যে ইসলামকে নিয়ে ব্যবসা করে খাচ্ছে, রাজনীতি করছে সেটা প্রকৃত ইসলাম নয়। কিন্তু সেটা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে হবে সরকারকে। সরকারের নিজ স্বার্থেই এটা করা প্রয়োজন। আওয়ামী লীগ সরকারের সাথে কংগ্রেস সরকারের পার্থক্য হলো- কংগ্রেসের সামনে মৌলবাদীদের ধর্ম দিয়ে মোকাবিলা করার মতো উপাদান ছিল না। কিন্তু বাংলাদেশ সরকারের সামনে সেটা আছে, যা আমরা উপস্থাপন করছি। যদি সরকার সেটার গুরুত্ব দেয়।’
তিনি সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন- ধর্ম নিয়ে রাজনীতির মোকাবেলায় ধর্মের বিরোধিতা করে সফল হতে পারবেন না। বরং এটা দ্বারা আপনাদেরকে ধর্মব্যবসায়ীরা আরও নাস্তিক প্রমাণ করে দিবে। কারণ তাদের ভিত্তি সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রোথিত। জোর করে তাদের মন থেকে ধর্মের বিশ্বাস দূর করতে পারবেন না এবং সেই চেষ্টা করা হবে ভুল। আপনারা মনে করছেন রাষ্ট্র ক্ষমতা আছে তাই কোনো ভয় নেই? ভুল ধারণা। ৫ই মে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অপারেশন চালিয়ে তাদের রাস্তা থেকে উচ্ছেদ করে দিল। তারা কোথায় গেছে? তারা আসমানে চলে যায় নি, বা মাটির নিচেও যায় নি। তারা গ্রামে গ্রামে মানুষের সঙ্গে মিশে গেছে। মিশে যেয়ে গ্রামের নারীদেরকে, সরলপ্রাণ মুসলমানদেরকে বুঝিয়েছে যে এই সরকার নাস্তিক। আমাদের শেষ করে দিয়েছে, ইসলাম শেষ করে দিয়েছে, আলেমদেরকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। ফল হয়েছে এই যে, এখন যতই শক্তি প্রয়োগ করবেন ততই আপনারা ইসলামবিদ্বেষী হিসেবে প্রতীয়মান হবেন। কাজেই ধর্মের বিরোধিতা করেও নয়, শক্তি প্রয়োগ করেও নয়, ধর্মের মধ্যে থেকে সত্যের উপর দাঁড়িয়েই ধর্মব্যবসায়ীদেরকে ভ্রান্ত প্রমাণ করতে হবে। এ জন্য দরকার প্রকৃত ইসলাম, যা আমাদের কাছে আছে।
দৈনিক দেশেরপত্র সম্পর্কে রুফায়দাহ পন্নী বলেন, ‘আমাদের পত্রিকার মূল শ্লোগান আপনারা দেখতে পাচ্ছেন- মানবতার কল্যাণে সত্যের প্রকাশ। যেটা সত্য সেটা আমরা প্রকাশ করি। দৈনিক দেশেরপত্র আমাদের একটা মুখপত্র পত্রিকা। আমার বাবা এমামুযযামান জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নী টাঙ্গাইলের করটিয়ার ঐতিহ্যবাহী পন্নী পরিবারের সন্তান। তাঁর আদর্শে আমরা অনুপ্রাণিত। দৈনিক দেশেরপত্রের মাধ্যমে আমরা তাঁর মহান আদর্শকে মানুষের দ্বারে দ্বারে পৌঁছে দিচ্ছি।’
পরিশেষে উপস্থিত গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘বাস্তবতার আলোকে এই সরকারের সামনে যে সঙ্কটগুলো আসছে তা আমি তুলে ধরলাম। এর যৌক্তিক সমাধানও প্রস্তাব করলাম। এখন বাকিটা তাদের সিদ্ধান্তের বিষয়। এই সিদ্ধান্তের উপরই তাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারিত হবে যে, তারা আশু বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবে নাকি অশেষ ভোগান্তির শিকার হবে। তাদের সিদ্ধান্তের উপর আমার আর কোনো জোর নেই। কিন্তু আপনারা যারা এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত আছেন, তাদেরও যথেষ্ট দায়িত্ব রয়েছে। মনে রাখবেন, ধর্মব্যবসায়ীরা যে ইসলামকে ভর করে চলছে তা আল্লাহ-রসুলের প্রকৃত ইসলাম নয়। এটা বিকৃত ইসলাম। এই ইসলাম মানুষকে না পৃথিবীতে শান্তি দিতে পারবে, না পরকালীন মুক্তি এনে দিতে পারবে। তাই আপনাদের প্রতি নিবেদন, আপনারা ধর্মব্যবসায়ীদের পেছনে ছুটবেন না। তাদের পেছনে নামাজ, রোজা, হজ্ব, যাকাতসহ যতই এবাদত করেন তার কোনো সুফল আপনারা পাবেন না। বরং সেটা হবে আল্লাহর হুকুম অমান্য করা। যদি সত্যই আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে চান, তাহলে আমাদের আহ্বানে প্রকৃত ইসলামের ছায়াতলে ঐক্যবদ্ধ হোন।’ অডিটোরিয়ামে উপস্থিত দর্শকবৃন্দ মুহূর্মুহু করতালির মাধ্যমে তার বক্তব্যকে স্বাগত জানান।