এমামুযযামান জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নীর লেখা থেকে সম্পাদিত
আল্লাহ মানবজাতিকে যাবতীয় অন্যায়-অশান্তি-রক্তপাত থেকে পরিত্রাণের জন্য মোহাম্মদ (সা.) কে পৃথিবীতে পাঠিয়েছিলেন দুইটি জিনিস দিয়ে যথা- হেদায়াহ এবং হেদায়াহর উপর প্রতিষ্ঠিত দীনুল হক, সত্য জীবনব্যবস্থা। এই হেদায়াহ ও সত্যদীন নিয়ে বিশ্বনবীকে কী করতে হবে সেটাও আল্লাহ স্পষ্ট ভাষায় বলে দিয়েছেন। পবিত্র কোর’আনে বিশ্বনবীর জীবনের উদ্দেশ্য ঠিক করে দিয়ে আল্লাহ নির্দেশ দিলেন যে, ‘আমি তাঁকে (রসুলকে) হেদায়াহ এবং সত্যদীন দিয়ে এই কারণে পৃথিবীতে পাঠিয়েছি যেন তিনি এটাকে অন্য সমস্ত দীনের উপর বিজয়ী করেন এবং সাক্ষী হিসেবে আল্লাহই যথেষ্ট (সুরা আল ফাতাহ ২৮, তওবা ৩৩, সফ ৯)’।
ইতিহাসে পাচ্ছি, বিশ্বনবী তাঁর নবুয়্যতি জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত কাটিয়েছেন একটিমাত্র কাজেই, তা হলো- সমস্ত পৃথিবীতে এই দীনুল হককে প্রতিষ্ঠার সর্বাত্মক সংগ্রাম। যেহেতু একজীবনে এই কাজ সম্ভব নয় তাই তিনি এই বৃহৎ কাজের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে, পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে একটি জাতি সৃষ্টি করলেন। এই জাতির নামই হলো উম্মতে মোহাম্মদী, মোহাম্মদের জাতি।
এই জাতির লক্ষ্য হিসেবে তিনি স্থির করে দিলেন সংগ্রাম এবং শুধুই সংগ্রাম। সমস্ত পৃথিবীতে আল্লাহর দেওয়া জীবনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত তাদের এই সংগ্রামের কোন বিরতি নেই, কোন চ্যুতি নেই। এই কাজকেই তিনি উল্লেখ করলেন তাঁর সুন্নাহ হিসেবে এবং সেই সাথে তিনি ঘোষণা কোরলেন -‘আমার এই সুন্নাহ যে বা যারা ছেড়ে দিবে তারা আমার কেউ নয়, আমিও তাদের কেউ নই (হাদীস- বোখারী, মোসলেম, মেশকাত)’। অর্থাৎ যারা রসুলাল্লাহর দিক নির্দেশনা অনুযায়ী চলবে না তাদের সাথে তিনি সম্পর্ক ছিন্ন করলেন।
তিনি উম্মতে মোহাম্মদীকে তাঁর জীবদ্দশাতেই একটু একটু করে শিক্ষা দিলেন কিভাবে ইস্পাতের মতো ঐক্যবদ্ধ হতে হয়, পিঁপড়ার মতো শৃঙ্খলিত হতে হয় এবং মালায়েকদের মতো আনুগত্য পালন করতে হয়। অতঃপর তাঁর ওফাতের সাথে সাথেই তাঁর হাতে গড়া সেই জাতিটি তাদের দায়িত্বকে কাঁধে তুলে নিয়ে সমস্ত পৃথিবীতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ল। এটা ইতিহাস যে, তাদের এই সংগ্রামের মুখে বাধা হয়ে দাঁড়ানোর মত শক্তি পৃথিবীতে তখন একটাও ছিল না। মাত্র অল্প কিছুদিনের মধ্যে তারা তৎকালীন বিশ্বের দুইটি সুপার পাওয়ার রোম এবং পারস্যকে সামরিকভাবে পরাজিত করে অর্ধ পৃথিবীকে আল্লাহর দীনের অধীনে নিয়ে আসলেন যার ফলে সেখানে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
এরপর জাতি দুর্ভাগ্যবশত তাদের আকীদা, লক্ষ্য, উদ্দেশ্য হারিয়ে ফেলল। তারা তাদের নেতার উপর অর্পিত দায়িত্বকে ভুলে গিয়ে বিভিন্ন শ্রেণিতে বিভক্ত হয়ে একটা শ্রেণি রাজা বাদশাহদের মতো রাজত্ব করতে শুরু করল, একটা শ্রেণি দীনের চূলচেরা বিচার বিশ্লেষণ করে নতুন নতুন ফতোয়া আবিষ্কার করতে শুরু করল, আর একটা শ্রেণি হুজরায়-খানকায় বসে আত্মার ঘষামাজা শুরু করে দিল। কেউই আর শেষ ইসলামের ওয়াসাতা বা ভারসাম্যের মধ্যে থাকলেন না। তাদের কারো কাছে দীন হয়ে গেল শুধু দুনিয়াদারী আর কারো কাছে দীন হয়ে গেল শুধুই পরকালের মুক্তির পথ।
আমি এখানে আলোচনা করব সেই শ্রেণীটির সম্পর্কে যারা এই জাতির আকীদা বিকৃতির পর তাদের উপর অর্পিত দায়িত্বকে ত্যাগ করে সংগ্রাম ছেড়ে তসবিহ আর বদনা নিয়ে হুজরায়-খানকায় ঢুকল। এরাই হলো সেই সুফি-সাধকের দল যাদের আকীদা বা ধারণা হচ্ছে- আল্লাহ ইসলাম পাঠিয়েছেন শুধুই তাদের আত্মা পরিষ্কার করানোর উদ্দেশ্যে। তারা তাদের বিকৃত আকীদায় এ কথা বুঝতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হলেন যে, ইসলাম হলো একটা পূর্ণাঙ্গ এবং শ্বাশ্বত জীবনব্যবস্থা যা মানবজীবনের জাতীয় এবং ব্যক্তিগত উভয় ভাগের জন্যই প্রযোজ্য। এটার ভারসাম্য নষ্ট করে ফেললে তা আর আল্লাহর রসুলের আনীত ইসলাম থাকবে না, সেটা হয়ে যাবে অন্যান্য বিকৃত দীনের মতই নতুন একটা দীন।
ইসলামের ভারসাম্য নষ্ট করে এই সুফীর দল যাকে আদর্শ হিসাবে বেছে নিলেন তিনি বিশ্বনবী (সা.) নন, তিনি মহাসাধক ওয়ায়েস করনী (রা.), যিনি রসুলাল্লাহর (সা.) নুবয়াত পাওয়ার অনেক আগে থেকেই আত্মিক উন্নতি অর্থাৎ তাসাওয়াফের সাধনা করে অতি উচ্চস্তরে (মাকামে) অধিষ্ঠিত হয়েছিলেন। প্রশ্ন হলো- শেষ প্রেরিতের নবুয়াত পাওয়ার আগে থেকেই যিনি সাধনা করছিলেন তিনি কী প্রক্রিয়ায় সাধনা করছিলেন? নিশ্চয়ই মহানবীর (সা.) শেখানো পদ্ধতিতে নয়, হয় খ্রিস্টান বা ইহুদি বা বৌদ্ধ বা হিন্দু বা অন্য যে কোন পূর্ববর্তী ধর্মের পদ্ধতি হবে। তা সত্ত্বেও তার সাধনা যে সম্পূর্ণ সফল ছিল তার প্রমাণ তার জীবনী এবং বিশেষ করে এই যে, মহানবী (সা.) তাঁর পবিত্র জোব্বা তাকে উপহার দিয়েছিলেন। কিন্তু ওয়ায়েস করনী (রা.) বিশ্বনবীর (সা.) জীবনের কর্মপ্রবাহে যোগ দেননি, এমন কি বিশ্বনবীর (সা.) সাথে তার দেখাই হয়নি।
মহানবী (সা.) আল্লাহর কাছ থেকে যে মহাদায়িত্ব নিয়ে এসে এবং তা পালন করতে যে অবিশ্বাস্য দুঃখ, দুর্দশার সংগ্রামের জীবন অতিবাহিত করলেন, তাতে ওয়ায়েস করনী (রা.) অংশ নেন নি- মাকে ছেড়ে আসতে হয় বলে। আবু বকর (রা.) থেকে শুরু করে হাজার হাজার আসহাব তাদের শুধু মাকে ছেড়ে নয়, বাপ-মা, স্ত্রী-পুত্র, কন্যা, সম্পত্তি, বাড়ী-ঘর হেলায় ত্যাগ করে এসে মহানবীর (সা.) সঙ্গী হয়েছেন, তাঁর সঙ্গে সব রকম দুঃখ বরণ করেছেন, বছরের পর বছর ছায়াহীন উত্তপ্ত মরুভূমিতে কাটিয়েছেন, বিশ্বনবীর (সা.) দায়িত্ব পূরণের সংগ্রামে প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন।
সুফীরা ওহুদের যুদ্ধে বিশ্বনবীর (সা.) পবিত্র দাঁত ভেঙ্গে যাওয়ার খবরে ওয়ায়েস করণীর (রা.) নিজের দাঁত ভেঙ্গে ফেলাকে ভালোবাসার চূড়ান্ত পরিচয় হিসাবে পেশ করেন। আমার প্রশ্ন হলো- নিজের দাঁত ভেঙ্গে ফেলা বেশি ভালবাসার পরিচয়, না প্রিয় নেতার জীবন রক্ষার জন্য তাকে ঘিরে দাড়িয়ে শত্রুর অজস্র তীর নিজেদের শরীর দিয়ে ঠেকিয়ে তীরে তীরে সজারুর মত হয়ে যাওয়া বেশি ভালবাসার পরিচয়? শত্রুর আক্রমণ থেকে বিশ্বনবীকে (সা.) রক্ষা করতে জীবনপণ করে যুদ্ধ করে মারাত্মক আহত হয়ে প্রাণের চেয়ে প্রিয় নেতার পবিত্র পায়ের উপর মুখ থুবড়ে পড়ে মরে যাওয়া কতখানি ভালবাসার প্রমাণ?
ওহুদের যুদ্ধে রসুলাল্লাহর আনুগত্য লঙ্ঘন করার কারণে মুসলিম বাহিনীর উপর সাংঘাতিক বিপর্যয় নেমে আসে। একটি সময় মোশরেক বাহিনী রসুলাল্লাহকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেললে তিনি বললেন, “এমন কে আছ, যে আমাদের প্রতিরক্ষার জন্য জীবন কোরবানি করতে প্রস্তুত?” এ কথা শুনে পাঁচজন আনসার সাহাবী এগিয়ে এলেন এবং রসুলাল্লাহর হেফাজতের জন্য এক একজন করে লড়াই করে শহীদ হতে লাগলেন এবং রসুলাল্লাহর পায়ের কাছে লুটিয়ে পড়তে লাগলেন।
সর্বশেষ ব্যক্তি ছিলেন যিয়াদ বিন সাকানা (রা.)। তিনিও বীর বিক্রমে লড়াই করে গুরুতর আহত হলেন। ইতোমধ্যে আরও কয়েকজন মোজাহেদ সেখানে ফিরে এলেন এবং আহত সাহাবীর পক্ষে লড়াই করে শত্রুপ¶কে পর্যুদস্ত করে হটিয়ে দিল। রসুলাল্লাহ আহত যিয়াদকে (রা.) দেখিয়ে বললেন, ‘ওকে আমার কাছে আনো।” তাকে আনা হলে রসুলাল্লাহ নিজ জানুর উপর তাকে মাথা রেখে শোয়ালেন। এ অবস্থাতেই উক্ত সাহাবী শাহাদাত বরণ করেন। আর যদি দাঁতের কথাই তোলেন তবে রসুলাল্লাহর (সা.) মাথায় ঢুকে যাওয়া শিরস্ত্রাণের পেরেক পাগলের মত কামড়িয়ে টেনে তুলতে যেয়ে আবু ওবায়দার (রা.) কয়েকটা দাঁত ভেঙ্গে ফেলার কথা ভুলে যাচ্ছেন কেন? ঐ ওহুদের যুদ্ধেই।
লক্ষ লক্ষ মানুষের মধ্যে মাত্র যে দশজন লোককে আল্লাহর সম্পূর্ণ ক্ষমা ও জান্নাতের সুসংবাদ তাদের জীবিতকালেই দেয়া হলো আবু ওবায়দা (রা.) তাদের অন্যতম- ওয়ায়েস করনী (রা.) নন। রসুলাল্লাহর (সা.) নিজের ব্যবহৃত খেরকা ওয়ায়েস করনীকে (রা.) উপহার দেওয়াও এদের কাছে সর্বশ্রেষ্ঠ সম্মানের চিহ্ন হিসাবে বিবেচিত। বহু বইয়ে পড়েছি, বহু ওয়াজে এ ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ শুনেছি। কিন্তু বিদায় হজ্ব্বে মাথার চুল কামিয়ে সমস্ত পবিত্র চুলটুকু যে মহানবী (সা.) আল্লাহর তলোয়ার খালেদ বিন ওয়ালিদ (রা.) কে উপহার দিয়েছিলেন এবং খালেদ (রা.) যে সেই মহাপবিত্র চুলগুচ্ছ তার টুপির মধ্যে সেলাই করে নিয়েছিলেন এবং প্রতিটি যুদ্ধে তিনি শিরস্ত্রাণের নিচে সেই টুপি পরতেন- কই, কোন ওয়াজে, কোন বক্তৃতায় তো তা শুনি না। কাপড়ের তৈরি খেরকা উপহার দেয়া বেশি মেহেরবাণীর চিহ্ন না নিজের দেহের অংশ, মাথার চুল উপহার দেয়া বেশী স্নেহের ও প্রেমের চিহ্ন? ওয়ায়েজরা খালেদকে (রা.) রসুলাল্লাহর চুল উপহার দেবার কথা বলেন না- বলেন ওয়ায়েস করনী (রা.) কে খেরকা উপহার দেয়ার কথা কারণ খালেদ (রা.) তার সমস্ত কিছু নিজের প্রাণ আল্লাহ ও তাঁর রসুলের (সা.) জন্য উৎসর্গ করে সংগ্রাম করে গেছেন সারা জীবন।
শেষ নিশ্বাস ত্যাগের কয়েকদিন পূর্বে জনৈক ঘনিষ্ঠ বন্ধু খালিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আসে। তিনি ডান পায়ের কাপড় তুলে বন্ধুকে জিজ্ঞেস করেন, “তুমি কি আমার পায়ে এমন এক বিঘত জায়গাও দেখতে পাও যেখানে তরবারী তীর বা বর্শার আঘাত নেই?” বন্ধু খালিদের পা পরীক্ষা করে না-সূচক উত্তর দেয়। তখন খালিদ (রা.) বাম পায়ের কাপড় তুলে একই প্রশ্ন করেন এবং আবারও একই উত্তর আসে। এরপর খালিদ (রা.) প্রথমে ডান হাত ও পরে বাম হাত তুলে বন্ধুর সামনে মেলে ধরেন। বন্ধু হাত দুটি পরীক্ষা করে এবং একই অবস্থা দেখতে পায়। এবারে খালিদ (রা.) তার বিশাল বক্ষদেশ উম্মোচিত করেন। যার শক্তিশালী পেশীগুলি অসুস্থতার কারণে শিথিল হয়ে গেছে। বন্ধুটি খালিদের ক্ষত-বিক্ষত বক্ষদেশের অবস্থা দেখে বিষ্ময়ে হতবাক হয়ে যায়। একজন মানুষ বুকে এতটা আঘাত পেয়েও কিভাবে বেঁচে থাকতে পারে! এ ক্ষেত্রেও সে আঘাতহীন এক বিঘত জায়গাও খুঁজে পায় না। তখন খালেদ (রা.) কাতর কণ্ঠে বলেন, “শহীদ হওয়ার জন্য আমি এক রণাঙ্গণ থেকে আরেক রণাঙ্গণে ছুটে বেড়িয়েছি। যেখানেই দেখেছি কাফেরদের ব্যুহ সবচেয়ে শক্তিশালী ও সুগঠিত সেখানেই ঝাঁপিয়ে পড়েছি। তবু কেন আল্লাহ আমাকে শাহাদাত দিলেন না?”
এই হলো প্রকৃত উম্মতে মোহাম্মদীর জীবন। এই খালেদ (রা.), যাকে রসুলাল্লাহ “আল্লাহর তলোয়ার” উপাধিতে ভূষিত করেছিলেন তার কথা ওয়ায়েজরা উচ্চারণ করেন না, কারণ তিনি রসুলাল্লাহর যে সুন্নাহ অনুসরণ করে ‘সাইফুল্লাহ’ হয়েছিলেন তা পালন করতে গেলে বড় কষ্ট, বড় কোরবানি, বড় জানের বিপদ। ওয়ায়েসের (রা.) কথা সর্বত্র বলেন কারণ হুজরায় বসে আধ্যাত্মিক সাধনায়, নফল নামাজ, রোজায়, তসবিহ টানতে বিপদের আশংকা নেই।
সাবধান! আমি ওয়ায়েস করনীকে (রা.) ছোট করার জন্য এসব বলছি বলে কেউ মনে করবেন না। যে ভারসাম্য বিনষ্ট হয়ে, যে আকীদা বিকৃত হয়ে আজ এই জীবনব্যবস্থা পৃথিবীতে অবহেলার জিনিস হয়ে গেছে, এই জাতি আল্লাহ-রসুলের চোখে কার্যত মোশরেক ও কাফের হয়ে গেছে- সেই ভারসাম্য, সেই আকীদা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার জন্যই আমি লিখছি। আমি ওয়ায়েস করনীকে (রা.) ছোট করার জন্য লিখতে পারি না। কারণ যাকে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানব, আল্লাহর রসুল (সা.) তাঁর ব্যবহৃত কাপড় উপহার দিয়েছেন তাকে কোন রকম ছোট করা কোন মুসলিমের পক্ষে সম্ভব নয়। তাছাড়া পরবর্তীকালে এই মহাসাধক প্রকৃত উম্মতে মোহাম্মদী হবার অর্থ কী তা উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন বলেই নির্জনতা ত্যাগ করে উম্মাহর বহির্মুখী জীবনপ্রবাহে যোগ দিয়েছিলেন এবং অস্ত্র হাতে জেহাদে নেমে শহীদ হয়েছিলেন। অর্থাৎ এই ভারসাম্যযুক্ত জীবন-ব্যবস্থার দুটো দিকেই তিনি কামেলিয়াত, সিদ্ধিলাভ করলেন।
আমি যা বলতে চেষ্টা করেছি, ওয়ায়েস করনী (রা.) এর জীবন তারই দৃষ্টান্ত। কাজেই তাকে কী করে ছোট করতে পারি? তাকে ছোট করছেন ভারসাম্যহীন সুফীরা। তারাই এই জাতির কাছে তাকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে তাদের স্বার্থ হাসিল করছে।