আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষই ধর্মবিশ্বাসী, যাদের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ আল্লাহ রসুলকে বিশ্বাস করেন, পরকালীন নাজাতের জন্য অনেক আমল করেন, এমনকি ইসলামের জন্য অনেকে মৃত্যুরও পরোয়া করেন না। তাদের এই ঈমানী চেতনাকে ধর্মব্যবসায়ী শ্রেণি বারবার ভুল খাতে প্রবাহিত করে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করেছে এবং দেশে হানাহানি, দাঙ্গা, অপরাজনীতি ও জঙ্গিবাদের বিস্তার ঘটাচ্ছে। এভাবে একটি সমাজ যখন অন্যায় অশান্তিময় হয় তখন সেই সমাজকে শান্তিময় করা কেবল রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের একার পক্ষে সম্ভব হয় না, তখন নিজের স্বার্থ না ভেবে জাতির জন্য ভূমিকা রাখা সমাজের প্রতিটি মানুষের কর্তব্য হয়ে দাঁড়ায়। আল্লাহর শেষ রসুল (স.) এবং তাঁর আসহাবগণ জাহেলিয়াতে পূর্ণ পৃথিবীর যাবতীয় অন্যায় অবিচার দূর করে শান্তি প্রতিষ্ঠায় নিজেদের যাবতীয় সম্পদ ও শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত নিঃশেষ করে গেছেন। টাঙ্গাইলের কৃতি সন্তান হেযবুত তওহীদের প্রতিষ্ঠাতা, এমামুয্যামান জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নী এ লক্ষ্যেই নিজের জীবন ও সম্পদ ব্যয় করে গেছেন। কীভাবে মানবসমাজ শান্তিময় হবে, কীভাবে মানুষ চরিত্রে ও সম্পদে সমৃদ্ধ হবে সে উপায় আল্লাহর রহমে আমাদের কাছে আছে। সেটা তুলে ধরার জন্যই আমরা দেড় যুগের বেশি সময় ধরে সংগ্রাম করে যাচ্ছি। আমরা বলছি, অশান্তি থেকে মুক্তির এখন একটাই পথ- ধর্মীয়-রাজনীতিক বিভক্তি, জঙ্গিবাদ, ধর্মব্যবসাসহ সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠা।
মাননীয় এমামুয্যামান বলেছেন, মানুষের শান্তির লক্ষ্যে কাজ করাই আসল এবাদত। ইসলাম শব্দের অর্থই তাই শান্তি। রাত জেগে তাহাজ্জুদ পড়া যেমন সওয়াবের কাজ, তেমনি মানুষ যেন নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারে, নির্ভয়ে পথ চলতে পারে এমন অবস্থা সৃষ্টির জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা করাও মহত্তম এবাদত। এই এবাদত না করে যতই ব্যক্তিগত উপাসনা করা হোক সেটা আল্লাহর কাছে গৃহীত হবে না। কারণ স্বার্থপরের নামাজ নাই, সমাজ নাই, তার জন্য জান্নাতও নাই। বর্তমানে একটি শ্রেণি ধর্মের নামে অপ-রাজনীতি ও বাণিজ্য করে চলছে। অথচ ধর্মের বা এলেমের যেমন বিনিময় নেওয়া হারাম, তেমনি জনসেবার নামে স্বার্থসিদ্ধিও প্রতারণা সুতরাং হারাম। ধর্ম ও রাজনীতি উভয়ই হতে হবে শুধু মানুষের কল্যাণে। যার জ্ঞান বা সম্পদ মানবতার কল্যাণে কাজে লাগে না, সেই জ্ঞানীর জ্ঞান বা বিত্তশালীর বিত্ত মানুষের দরকার নেই, আল্লাহরও তাকে প্রয়োজন নেই।
পশ্চিমা সভ্যতার আত্মকেন্দ্রিক শিক্ষা ও সংস্কৃতির প্রভাবে এ জাতির মানুষগুলোও সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে নীরব। তাদের নীরবতা ও অনৈক্যের সুযোগে স্বার্থান্বেষীরা দেশ ও জাতির ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে। এখনো যদি ১৬ কোটি বাঙালি ন্যায়ের পক্ষে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ না হয়, তাহলে চূড়ান্ত ধ্বংস অনিবার্য। এ সত্যটি আমাদের প্রত্যেককে অনুধাবন করতে হবে। তাহলেই জাতির ক্ষতি হয় এমন কাজ কেউ করলে মানুষই তা প্রতিহত করবে। এই মহাসত্যগুলো আমরা সরকার, জনপ্রতিনিধি, জনগণ তথা সর্ব শ্রেণিপেশার মানুষের সামনে তুলে ধরছি এবং সকলের সক্রিয় অংশগ্রহণ আশা করছি যেন অতি দ্রুত আমাদের এই দেশটি স্বর্গভূমিতে পরিণত হয়।