পাবনায় হেযবুত তওহীদের কার্যালয়ে হামলাকারীদের ষড়যন্ত্র এখনো থেমে নেই। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর তারা আরো মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। হামলায় নিহত সুজনের হত্যাকারীরা আরো বড় পরিসরে হামলার হুমকি দিচ্ছে। মামলায় অভিযুক্ত আসামিদের পরিবারের পক্ষ থেকে পাল্টা হয়রানিমূলক মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলেও জানা গেছে।
গত মঙ্গলবার পাবনা শহরের ভাটামোড় এলাকায় অবস্থিত হেযবুত তওহীদের স্থানীয় কার্যালয়ে একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়। হামলায় স্থানীয় হেযবুত তওহীদের সদস্য মো. সুজন নিহত হন। এ ঘটনার পর এলাকাবাসী বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে। নিহত সুজনের জানাজায় হাজারো মানুষের ঢল নামে। ঘটনার একদিন পর এলাকাবাসী শান্ত হয়ে গেলে হামলাকারীরা আবারো সক্রিয় হতে শুরু করে। হামলার পেছনে থাকা ইন্ধনদাতারা ষড়যন্ত্র করতে শুরু করে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। হেযবুত তওহীদের স্থানীয় কার্যালয়টি বন্ধ রয়েছে। স্থানীয় নেতা-কর্মীরাও যার যার বাসায় অবস্থান করছেন। এই সুযোগে ঘটনার পর মামলার ভয়ে যারা গাঁ ঢাকা দিয়েছিল তারা ফিরে এসেছে। ফিরে এসে তারা হেযবুত তওহীদের অন্যান্য সদস্যদের নানা ধরনের হুমকি দিচ্ছে।
স্থানীয় হেযবুত তওহীদের সদস্য মো. মনির জানান, সন্ত্রাসীরা আবার এলাকায় ফিরে আসতে শুরু করছে। হামলার ষড়যন্ত্রকারীরা আরো বড় ধরনের হামলা করতে পারে বলে শুনেছি। অনেকে বলছেন, ‘তোমরা সাবধানে থেকো’। এমতাবস্থায় আমরা বড় ধরনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
এলাকাবাসীরা জানান, সুজনের মৃত্যুতে এলাকাবাসী শোকাহত। এত বড় একটা ঘটনার পর এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এমন অবস্থায় নতুন করে হামলার আশঙ্কা উঁড়িয়ে দেওয়া যায় না। তারা প্রশাসনকে নিরাপত্তা জোরদারের দাবী জানান।
হেযবুত তওহীদের জেলা সভাপতি সেলিম শেখ বলেন, বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান করা আমাদের নেতাকর্মীরা হুমকি পেতে শুরু করছেন। বাজারে, পাড়া-মহল্লায় যেখানে যাচ্ছেন সেখানেই তারা হুমকি পাচ্ছেন। অনেক শুভাকাঙ্ক্ষীও আমাদের জানাচ্ছেন, সাবধানে থাকতে। এসব কিছু বিবেচনায় আমরা বড় ধরনের ষড়যন্ত্রের আভাস পাচ্ছি। আমরা প্রশাসনকে বাকী আসামিদের দ্রুত গেফতারের দাবি জানাচ্ছি। আর যারা এ ঘটনার পেছনে থেকে কলকাঠি নাড়ছেন তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার আহ্বান জানাই।
তিনি আরো বলেন, ইতোমধ্যে শুনেছি হামলায় অভিযুক্ত মূল আসামিদের স্বজনরা পাল্টা হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তারা এলাকায় একটি অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা করছে। আমি প্রশাসনের কর্মকর্তাদের আহ্বান জানাবো এ বিষয়ে সজাগ ও সচেতন থাকতে এবং কোন ধরনের মিথ্যা ও হয়রানিমূলক তথ্যে প্রভাবিত না হতে।
এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকতা হেমায়েতপুর পুলিশ ফাড়ির উপ-পরিদর্শক সৌরভ কুমার চন্দ বলেন, আমরা নিরপেক্ষভাবে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছি। অধিকতর তদন্তের স্বার্থে আগামীকাল (রোববার) আসামীদের আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ড আবেদন করা হবে। মামলার তদন্ত কোন রাজনৈতিক মহল বা ভিন্ন কারো প্ররোচনায় প্রভাবিত হবে না বলেও আশ্বাস দেন তিনি।