রিয়াদুল হাসান
যে লক্ষ্যকে সামনে রেখে উম্মতে মোহাম্মদী নামক জাতিটি গঠন করা হয়েছিল সেটি হলো সর্বাত্মক সংগ্রাম করে আল্লাহর নাজেল করা সত্যদীন, দীনুল হককে সমগ্র পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমে মানবজীবন থেকে যাবতীয় অন্যায়, অশান্তি, যুদ্ধ রক্তপাত নির্মূল করে ন্যায়, সুবিচার, নিরাপত্তা – এক কথায় শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। এই শান্তির নামই হচ্ছে ইসলাম। রসুলাল্লাহর বিদায়ের পর একশ বছর যেতে না যেতেই এ জাতি সেই লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হয়েছে। তারা দীনের মাসলা মাসায়েল নিয়ে খুঁটিনাটি ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করে করে হাজারো ফেরকা মাজহাবে বিভক্ত হয়ে, শক্তিহীন দুর্বল হয়ে অন্য জাতির গোলামে পরিণত হয়েছে। আল্লাহর সঙ্গে মুসলিমের যে প্রাথমিক চুক্তি অর্থাৎ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ (আল্লাহ ছাড়া কারো হুকুম মানবো না), এই চুক্তিও এখন তারা মানছে না। তারা মেনে চলেছে পাশ্চাত্য বস্তুবাদী সভ্যতার তৈরি করা হুকুম, বিধান, জীবনব্যবস্থা। এভাবে তারা তওহীদ থেকে, ঈমান থেকেও বহির্গত হয়ে গেছে। যার পরিণামে আল্লাহ তাদেরকে অভিশাপ, লানত প্রদান করেছেন। আল্লাহর গজবের ফলে আজ তারা সমগ্র পৃথিবীতে নিকৃষ্ট একটি জনগোষ্ঠী হিসাবে বিবেচিত, তারা সবার দ্বারা লাঞ্ছিত, অপমানিত, নিগৃহীত। লক্ষ্য হারিয়ে বিভক্ত হয়ে এবং তওহীদ থেকে বহির্গত হয়ে এই জাতির জীবনে যে লাঞ্ছনাদায়ক আযাব নেমে এসেছে তা থেকে বাঁচার জন্য অনেকে অনেকভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছে।
ঔপনিবেশিক যুগে যখন মুসলিম নামক এই জাতি ইউরোপীয় বিভিন্ন জাতির কাছে সামরিকভাবে পরাজিত হয়ে তাদের গোলামে পরিণত হলো তখন এ জাতি তাদের আক্রমণ থেকে, তাদের নির্যাতন থেকে বাঁচার জন্য আল্লাহর হুকুম, বিধান, শরিয়াহ, ইসলামী অর্থনীতি, সমাজ নীতি সব প্রত্যাখ্যান করে সেই পাশ্চাত্য প্রভুদের তৈরি আইন, দণ্ডবিধি, সুদভিত্তিক অর্থনীতি, শিক্ষাব্যবস্থা, আমলাতন্ত্র, প্রশাসনিক ব্যবস্থা এক কথায় তাদের সার্বিক জীবনব্যবস্থা গ্রহণ করে নিয়েছে, এখনো পদে পদে তাদের অনুকরণ করে চলেছি আমরা, আদর্শ হিসাবে রসুলাল্লাহকে (সা.) বাদ দিয়ে আমরা গ্রহণ করে নিলাম আব্রাহাম লিংকন, কার্লমার্কস, লেনিন, ম্যাকিয়েভেলি, হ্যাগেল, এ্যাঙ্গেল প্রমুখ রাজনীতিক, দার্শনিক, সমাজচিন্তক মনীষীদেরকে। কিন্তু তাতে কি শেষ রক্ষা হয়েছে এ জাতির? না, হয় নি। তারা কলোনি যুগে যেভাবে একটার পর একটা দেশ দখল করেছিল, শোষণ, নির্যাতন চালিয়েছিল এখনো টার্গেট করে করে একটার পর একটা মুসলিম দেশ ধ্বংস করে দিচ্ছে। আফগানিস্তান, ইরাক, সিরিয়া, লেবানন, লিবিয়া একটার পর একটা মুসলিম দেশ বিরাণভূমিতে পরিণত করে ফেলেছে তারা। ব্যক্তিগতভাবে বাঁচার জন্য মুসলমানদের মধ্যে অনেকে ধর্ম ত্যাগ করছে, অনেকে নাস্তিক হচ্ছে, অনেকে নিজের নামটা পর্যন্ত পাল্টে ফেলছে কিন্তু কোনোভাবেই তারা আসলে বাঁচতে পারবে না। লা’নত তাদের পিছু পিছু ধাওয়া করবে।
বাংলা সাহিত্যের অন্যতম দিকপাল বঙ্কিমচন্দ্রের সৃষ্ট চরিত্র কপালকুণ্ডলা নবকুমারকে নির্জন শ্বাপদসঙ্কুল বনভূমির নিকটে নদীর তীরে বিভ্রান্ত অবস্থায় পেয়ে বলেছিল – পথিক! তুমি পথ হারাইয়াছ। আজকে আমরা হেযবুত তওহীদ সমগ্র মুসলিম জাতির উদ্দেশে সেই কথাটিই পুনরাবৃত্তি করছি – “পথিক! তুমি পথ হারাইয়াছ”। পথিক যে পথ হারিয়েছে সেটা তো অবস্থাদৃষ্টে অনেকেই অনুধাবন করতে পারছেন কিন্তু এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হলো – এই যে ধ্বংসের প্রক্রিয়া চলছে এ থেকে কি আমাদের রক্ষা পাওয়ার কোনো পথ অবশিষ্ট আছে?
হ্যাঁ, পথ আছে। তা হলো, বাঁচতে হলে আমাদেরকে মুসলিম পরিচয় নিয়েই বাঁচতে হবে, ইসলাম নিয়েই বাঁচতে হবে। তবে সেটা বর্তমানের এই বিকৃত ইসলাম নয়। সেটা কোন ইসলাম? আমাদের সবার এক আল্লাহ, এক রসুল, এক কেতাব। রসুল প্রাণান্তকর সংগ্রাম করে, পেটে পাথর বেঁধে, গাছের লতাপাতা খেয়ে, রক্ত ঝরিয়ে যে জাতি তৈরি করলেন সেটি ছিল এক ও অখণ্ড। আজ আমরা হাজার হাজার ভাগে বিভক্ত হয়েছি। এই হাজার হাজার ভাগের কোন ভাগটি সঠিক, আমরা কোনটা নেব, কোন পথে গেলে জান্নাতে যাওয়া যাবে?
একটি বড় ভাগ হচ্ছে পীরপন্থীদের। একেক পীরের এক তরিকা, একেক কর্মসূচি, একে পোশাক, একেক রকম টুপি। হাজার হাজার পীর, লক্ষ লক্ষ পীর, পাড়ায় পাড়ায় মহল্লায় মহল্লায় পীর। ঢাকার পীর মানেন না মানিকগঞ্জের পীরকে, উত্তরবঙ্গের পীর মানেন না দক্ষিণবঙ্গের পীরকে। এক পীর আরেক পীরকে কাফের বলে ফতোয়া দিচ্ছেন, ভণ্ডপীর বলে নিন্দা করছেন। কার কথা সত্য? প্রত্যেক পীর বলছেন আমার হাতে বায়াত নাও, তুমি জান্নাত যাবে। মেয়েরা সোনা, বাড়ি ঘর বিক্রি করে পীরের কাছে দিয়ে যাচ্ছে। হাশরের দিন তারা জান্নাত চলে যাবে পীরের সাহায্যে। প্রত্যেকেই যার যার পীরের প্রতি ঈমান এনেছে কিন্তু জান্নাতের পথ তো হবে একটা?
শরিয়তের সূ²াতিসূ² ব্যাখ্যা করে করে মাসলা মাসায়েল তৈরি করতে গিয়ে বহু ফেরকা মাজহাবে জাতিটিকে বিভক্ত করে ফেলেছেন। এখন এটা প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে যে, মাজহাব মানা ফরজ। এই মাজহাব মানে পথ। একটি পথ যদি সঠিক হয় অন্য পথগুলো ভুল হবে এটাই স্বাভাবিক। কারণ আল্লাহ তো এতগুলো পথ পাঠান নি। তিনি পথ দিয়েছেন একটি- সিরাতুল মোস্তাকীম, সহজ সরল পথ। দুটো বিন্দুর মধ্যে একটি এবং কেবল মাত্র একটি সরল রেখাই অঙ্কিত হতে পারে। অথচ আজকে সুন্নী বলছে শিয়া কাফের, শিয়া বলছে সুন্নী কাফের। আহলে হাদিস বলছে ওহাবি কাফের, দেওবন্দী বলছে সালাফি কাফের, সরকারি আলিয়া মাদ্রাসার আলেমরা মানেন না কওমি আলেমদেরকে, কওমি মাদ্রাসার আলেমরা মানেন না সরকারী আলিয়ার আলেমদেরকে। একেক দেশে একেক রঙের ইসলাম। ভারতে এক রকম ইসলাম, চীনে এক রকম ইসলাম, আফ্রিকায় এক রকম ইসলাম, ইয়েমেনে এক রকম ইসলাম, আরবে এক রকম ইসলাম, পাকিস্তানে একরকম ইসলাম, ইন্দোনেশিয়ায় আরেক রকম ইসলাম। এত রঙের ইসলামের মধ্যে কোন ইসলামটি আল্লাহ পাঠিয়েছেন, কোনটি সঠিক?
ইসলাম প্রতিষ্ঠার নামে বহু গণতান্ত্রিক ধারার দল রাজনীতি করছে। বামপন্থী দলগুলোর চাইতে ডানপন্থী দল, ইসলামপন্থী দলগুলোর সংখ্যা বেশি। তাদের একেক দলের একেক কর্মসূচি, একেক মনোগ্রাম, একেক ব্যানার। কেউ সরকারি দলে যাচ্ছেন, কেউ বিরোধী দলে যাচ্ছেন। কেউ জ্বালাও পোড়াও করছেন, কেউ তার বিরোধিতা করছেন। প্রত্যেকেই বলছেন, আমাদের দলে যোগ দাও, আমাদেরকে ভোট দাও, দিলে ইসলামের খেদমত করা হবে। আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে কোনটা ইসলাম, কোন ব্যালটে ভোট দিলে জান্নাত যাবে?
আরেকটা হলো জঙ্গিবাদী দল। এরাও সংখ্যায় অগণিত। বোকো হারাম, আইএস, আল-কায়েদা, তালেবান থেকে শুরু করে আমাদের দেশের জেএমজেবি, জেএমবি, আনসারুল্লাহ বাংলা টিম, হরকাতুল জিহাদ ইত্যাদি কতশত জঙ্গি দল। এদের প্রত্যেকের সাথে প্রত্যেকের আকিদাগত তফাৎ আছে। এদের কথা একটাই, এখনই সশস্ত্র যুদ্ধ শুরু করে দিতে হবে, ইসলামকে ক্ষমতায় বসাতে হবে, এ করতে গিয়ে প্রয়োজনে আত্মঘাতী হতে হবে। ভিন্নমতের অনুসারীদেরকেও যেখানে পাওয়া যাবে কতল করে ফেলতে হবে। এখন রাজনীতি না, সুফিবাদ না, এখন চলবে কেতাল। রসুল কেতাল করেছেন, সাহাবিরা কেতাল করেছেন। এখন কেতাল করতে গিয়ে মারা গেলেই শহীদ, জান্নাতের একটা সংক্ষিপ্ত সরণি তারা বের করে ফেলেছেন। তারা আত্মঘাতী হতে গিয়ে নিজেদের তিন মাসে শিশুকেও ছিন্নভিন্ন করে ফেলছেন। পৃথিবী যখন পারমাণবিক যুদ্ধের মহড়া দেখছে তখন এই জঙ্গিবাদীরা পোশাকের নিচে চাপাতি নিয়ে ঘুরছেন আর একে তাকে মুরতাদ ফতোয়া দিয়ে হত্যা করছেন।
আজকে কেউ বোমা মেরে জান্নাত যাচ্ছে, কেউ পীরের আস্তানায় টাকা দিয়ে জান্নাত যাচ্ছে, কেউ রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসাবে ধর্মকে ব্যবহার করে জান্নাত যাচ্ছে, কেউ এসব কিছুই না করে পাঁচ ওয়াক্ত মসজিদে দৌড়াচ্ছেন আর তসবিহ তাহলিল, নামাজ, রোজা, হজ্ব করে জান্নাতে চলে যাচ্ছেন। কিন্তু ইসলাম তো এতটা না। সোজা কথা হলো, মানুষের ঈমানকে হাইজ্যাক করা হয়েছে, ভুল খাতে প্রবাহিত করা হয়েছে। এখন বাঁচতে হলে এই হাজার রকমের বিকৃত ইসলাম ছেড়ে আমাদেরকে প্রকৃত ইসলাম ধারণ করতে হবে। যে পরশ পাথরের ছোঁয়ায় বর্বর আরবরা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠত্বের আসনে আসীন হয়েছিল সেই পরশ পাথর আবার খুঁজে নিতে হবে। আল্লাহর হুকুম বাদ দিয়ে যারা কয়েক শতাব্দী থেকে পশ্চিমাদের হুকুম মেনে নিয়েছেন তারা কি বাঁচতে পারছেন কোথাও? সুতরাং কেউ খ্রিষ্টান কিংবা নাস্তিক হয়েও বাঁচতে পারবেন না। এখন মুসলিমরা প্রায় সাত কোটি উদ্বাস্তু। বাড়ি নেই, ঘর নেই, বসবাসের জায়গা নেই। উদ্বাস্তু শিবিরে পলিথিন ব্যাগের ভেতর গাদাগাদি করে থাকতে হচ্ছে। মান-সম্মান, ইজ্জত সব শেষ। কাজেই মুসলিমদেরকে এখন বাঁচতে হলে একটা কথার উপরে তাদেরকে আসতে হবে তা হলো আমাদের ইসলাম নিয়ে বাঁচতে হবে, মুসলিম পরিচয়েই বাঁচতে হবে। আমাদেরকে তওবা করতে হবে, শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে যে শেরক ও কুফর আমরা করে চলেছি সেজন্য ক্ষমা চাইতে হবে। আমরা ছিলাম আল্লাহর পছন্দনীয় বান্দা। আল্লাহ আমাদেরকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠা করার জন্য। আমাদের প্রিয় নবীকে (সা.) পাঠিয়েছিলেন একটা কিতাব দিয়ে, আমরা আল্লাহর হুকুম প্রত্যাখ্যান করেছি। এখন তওবা করে মুসলিমদেরকে এই পরিচয় দিতে হবে যে, আমরা মুসলিম।
শুধু পরিচয় দিলেই তো হবে না, প্রকৃত ইসলমকে তাদের চরিত্রে ও কর্মে ধারণও করতে হবে। কিন্তু কোনটা সেই প্রকৃত ইসলাম? হাজার রকমের ইসলাম আজ আমাদের সামনে উপস্থিত। কোন ইসলাম আমাদেরকে সত্যিকার অর্থে মুক্তি দেবে? বলার অপেক্ষা রাখে না, যে বিকৃত ইসলাম বর্তমানে দুনিয়াজুড়ে প্রচলিত আছে, ফকিহ, ইমাম, মুফাসসির আর আলেম ওলামাদের কেতাবে যে ইসলাম লিখিত আছে তা দিয়ে এই জাতি কস্মিনকালেও শ্রেষ্ঠ জাতিতে পরিণত হতে পারবে না। যদি পারতো তাহলে এতদিনে সেটা হয়ে যেত। ইসলামকে উপরে তোলার জন্য বড় বড় আন্দোলন তো কম হয় নি। সেগুলো সবই এখন হতাশার অন্ধকারে বসে মৃত্যুর প্রহর গুনছে।
আমাদের প্রয়োজন এমন এক ইসলাম যা মানবজাতির মধ্যে ঐক্য সৃষ্টি করবে, আমাদের সমাজকে দারিদ্র্যমুক্ত করবে, সমৃদ্ধ করবে, মুসলমানদের অন্ধত্ব, কূপমণ্ডূকতা দূর করবে, মানুষকে চিন্তা-ভাবনায় সভ্য করবে, জ্ঞানে-বিজ্ঞানে, সামরিক শক্তিতে, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে, নৈতিক চরিত্রে, নব নব আবিষ্কারে এক কথায় সকল দিক থেকে আমাদেরকে শিক্ষকের আসনে নিয়ে যাবে। পারমাণবিক বিজ্ঞান, মহাকাশ বিজ্ঞানের এই যুগে আমাদের প্রয়োজন এমন এক ইসলাম যা একাধারে বিশ্বমানবের আত্মিক সংকটগুলোর সমাধান করবে, সামাজিক বিশৃঙ্খলাগুলো দূর করবে, পারিবারিক সমস্যাগুলো সমাধান দিবে, রাজনৈতিক সমস্যাগুলো, দ্ব›দ্বগুলো মিটিয়ে দেবে। সেই ইসলাম জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠা করলে আমরা মুসলিম হিসাবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারব। সেটা কোন্ ইসলাম? সেটা হচ্ছে সেই ইসলাম যা আল্লাহর রসুল নিয়ে এসেছিলেন। প্রশ্ন হতে পারে, সেই ইসলাম কি এখন পৃথিবীতে আছে? নবী-রসুল তো আর আসবেন না, কেতাব তো আর আসবে না। তাহলে সেই ইসলাম আমরা কোথায় পাবো?
হ্যাঁ, রসুলাল্লাহর সেই প্রকৃত ইসলামের প্রকৃত রূপটাই আবার আমাদের মাননীয় এমামুয্যামান মানবজাতির সামনে তুলে ধরেছেন। তাঁর গড়ে যাওয়া হেযবুত তওহীদ শত শত বছরের অজস্র বিকৃতির আড়ালে চাপা পড়ে থাকা সেই সহজ-সরল সত্যিকার ইসলামের দিকেই মানবজাতিকে আহ্বান করে যাচ্ছে। এই মুসলিম নামক জাতিকে বাঁচতে হলে একটাই পথ, তাদেরকে আল্লাহর তওহীদে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই প্রকৃত ইসলাম ধারণ করতে হবে। তা না হলে তারা বাঁচবে না। তারা এতদিন আত্মরক্ষার জন্য সমাজতন্ত্রী হয়েছে, গণতান্ত্রিক হয়েছে, মাওবাদী হয়েছে, লেনিনপন্থী হয়েছে, পশ্চিমাপন্থী হয়েছে কিন্তু তারা বাঁচতে পারে নি। এগুলো করে করে আমরা নিজেরা নিজেরা শত শত ভাগে বিভক্ত হয়েছি। ভূখণ্ডগতভাবে, শরীয়াগতভাবে, আধ্যাত্মিকভাবে, রাজনৈতিকভাবে, এক কথায় সর্বপ্রকারে আমরা বিভক্ত হয়েছি। যদি এভাবেই চলতে থাকে তাহলে আগামীতেও আমাদের চোখের সামনে এভাবে আরো নারী ধর্ষিতা হবে, যুবকেরা বেয়োনেটের খোঁচায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়বে, বৃদ্ধ ও শিশুদেরকেও মেশিনগান চালিয়ে হত্যা করা হবে। আমরা কিছুই করতে পারব না। আমাদের ধন-সম্পদ, ঘর-বাড়ি সমস্ত কিছু আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়া হবে, আমরা অসহায়ের মতো শুধু চেয়ে দেখব, প্রতিরোধ করতে পারব না।
[লেখক: সাহিত্য সম্পাদক হেযবুত তওহীদ]