হেযবুত তওহীদ

মানবতার কল্যাণে নিবেদিত

নোয়াখালীতে ধর্মব্যবসার বিরুদ্ধে আলোচনা সভা

Untitled-1

গতকাল নোয়াখালী মাইজদী পল্লী উন্নয়ন প্রশিক্ষণকেন্দ্রে (বি.আর.ডি.বি) হলরুমে হেযবুত তওহীদের উদ্যোগে ‘ধর্মবিশ্বাস: এক বৃহৎ সমস্যার সহজ সমাধান’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও সুধী সমাবেশে মঞ্চে উপবিষ্ট (বাম থেকে) এ্যাড. নুর আলম জিকু, এ.পি.পি. জজ কোর্ট, নোয়াখালী; এ্যাড. আলহাজ্ব ওমর ফারুক, সভাপতি, সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগ; নীলুফা মমিন, ভাইস চেয়ারম্যান (মহিলা), সদর উপজেলা পরিষদ নোয়াখালী; এ্যাড. শিহাব উদ্দিন শাহিন, চেয়ারম্যান, সদর উপজেলা পরিষদ, নোয়াখালী; রুফায়দাহ পন্নী, উপদেষ্টা দৈনিক বজ্রশক্তি ও সাবেক সম্পাদক দৈনিক দেশেরপত্র; মোঃ নিজাম উদ্দিন, আমীর, হেযবুত তওহীদ, নোয়াখালী জেলা এবং শফিকুল আলম উখবাহ্, হেযবুত তওহীদের মুখপাত্র ও নির্বাহী সম্পাদক দৈনিক বজ্রশক্তি।

স্রষ্টা পৃথিবীতে ধর্ম পাঠিয়েছেন মানবজাতিকে ঐক্য, ভ্রাতৃত্ব, শৃঙ্খলা, মানবতা, সাম্য, সৌহার্দ্য, এক কথায় শান্তিময় সমাজ উপহার দেওয়ার জন্য। কিন্তু বর্তমানে ধর্মের দোহাই দিয়ে অহরহ অকল্যাণকর কার্য সম্পাদিত হচ্ছে। মানুষের ধর্মবিশ্বাস ভ্রান্ত পথে প্রবাহিত করে একটি স্বার্থান্বেষী শ্রেণি দেশ ও জাতিকে ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখে দাঁড় করাচ্ছে। বারবার মানুষের ঈমানকে হাইজ্যাক করা হচ্ছে, ফলে মানুষ এদের কথা বিশ্বাস করে ইহকাল-পরকাল উভয়ই হারাচ্ছে। তাই যত দ্রুত সম্ভব এই স্বার্থান্বেষী শ্রেণির কবল থেকে ধর্মপ্রাণ মানুষকে রক্ষা করে ধর্মকে মানবতার কল্যাণে কাজে লাগানো প্রয়োজন। গত ১৬ এপ্রিশ, ২০১৫ তারিখে নোয়াখালী পল্লী উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (বি.আর.ডি.বি) হলরুমে “ধর্মবিশ্বাস: এক বৃহৎ সমস্যার সহজ সমাধান” শীর্ষক এক আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তারা একথা বলেন।

এমামুয্যামান জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নীর প্রতিষ্ঠিত অরাজনৈতিক আন্দোলন হেযবুত তওহীদের উদ্যোগে এবং দৈনিক বজ্রশক্তির সৌজন্যে আয়োজিত এ আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নোয়াখালী সদর উপজেলার চেয়ারম্যান এডভোকেট শিহাব উদ্দিন শাহিন। মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন দৈনিক বজ্রশক্তির উপদেষ্টা ও দৈনিক দেশেরপত্রের সাবেক সম্পাদক রুফায়দাহ পন্নী। এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন হেযবুত তওহীদের নোয়াখালী জেলা আমির মো. নিজাম উদ্দিন।

প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, হেযবুত তওহীদ আয়োজিত আজকের এই অনুষ্ঠানের বিষয়বস্তু অত্যন্ত সময়োপযোগী। ১৯৭১ সালে ধর্মব্যবসায়ীরা দেশের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে, স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছে। তারা ওয়াজের মাধ্যমে নানা কুসংস্কার ছড়িয়েছে, মানুষের ক্ষতি সাধন করেছে। মানুষের কল্যাণে কাজ করাই যে এবাদত তা আমরা জেনেছি কিন্তু ধর্মব্যবসায়ীদের কাছ থেকে এই সত্যটি কখনো জানতে পারি নি। মানুষের ধর্ম হচ্ছে মানবতা- এটাও আমরা এতদিন জানতে পারি নি। মসজিদ নির্মাণের মতোই স্কুল-কলেজ নির্মাণ ও সমাজকল্যাণমূলক সকল কাজই যে দীনের কাজ, সওয়াবের কাজ তা এই ধর্মব্যবসায়ীরা কখনো বলে না। রাজনীতিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, রাজনীতি নয়, দেশ ও জনগণ আগে। দেশ ও জনগণের জন্যই রাজনীতি করতে হবে। কারণ জনগণই যদি না থাকে তাহলে কাকে নিয়ে রাজনীতি করব।

মুখ্য আলোচক রুফায়দাহ পন্নী বলেন, আমাদের দেশের শতকরা ৯০ জন মানুষ মুসলমান। তারা আল্লাহ, আল্লাহর রসুল ও ধর্মগ্রন্থকে প্রাণের চেয়েও বেশি ভালোবাসে। কাজেই এই ধর্মপ্রাণ মানুষগুলোর ধর্মবিশ্বাসকে অবজ্ঞা করার, খাটো করে দেখার বা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। যাদেরকে ইসলামের নাম করে ধ্বংসাত্মক কাজে লিপ্ত করা হচ্ছে তারা মনে করছে ওই কাজ করলে তারা জান্নাতে যেতে পারবে, আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জিত হবে। এই মানুষগুলোকে ধর্মব্যবসায়ীদের দ্বারা ব্যবহৃত হওয়া থেকে ফেরাতে চাইলে তাদের ঈমানকে ভুল পথ থেকে সরিয়ে এনে সঠিক পথে পরিচালিত করতে হবে। সকলকে বুঝতে হবে- যে ঈমান দুনিয়াতে মানুষের কল্যাণে কাজে আসে না, সেই ঈমান পরকালেও কোনো কাজে আসবে না।

বর্তমানে যে সহিংসতা বা সন্ত্রাস করাকে একশ্রেণির মানুষ জেহাদ হিসাবে প্রচার করে থাকে- এর বিরুদ্ধে বক্তারা বলেন, এগুলি মোটেও জেহাদ নয়, বরং জেহাদ হলো সহিংসতা-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করা অর্থাৎ সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো।

এই প্রকৃত শিক্ষাগুলি সমাজের ধর্মপ্রাণ মানুষগুলোর কাছে পৌঁছে দিয়ে সকল প্রকার ধর্মব্যবসা, সহিংসতা, সন্ত্রাস ও অপরাজনীতির বিরুদ্ধে মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করার কাজে সকলকে অংশ নিতে আহ্বান জানান বক্তারা। অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে “ধর্মবিশ্বাস: এক বৃহৎ সমস্যার সহজ সমাধান”, “এক জাতি এক দেশ, ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশ” ও “নারীর মর্যাদা” শীর্ষক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

সার্চ করুন

যুক্ত হোন আমাদের ফেসবুক পেজের সাথে...