আদর্শিকভাবে পরাজিত হয়ে হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধবাদীরা অপপ্রচারের আশ্রয় নিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন হেযবুত তওহীদের এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম। গত ৩০ আগস্ট ২০১৯ বিকেল তিনটায় বাংলাদেশ শিশু একাডেমী, নরসিংদী মিলনায়তনে এক কর্মীসভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, আমাদের বিরুদ্ধবাদীরা আমাদেরকে আদর্শিকভাবে মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়ে মানুষের কাছে আমাদেরকে নেতিবাচকরূপে উপস্থাপন করার জন্য নানা ধরনের অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে। অতীতে তারা আমাদেরকে খ্রিষ্টান, জঙ্গী, ইহুদির দালাল ইত্যাদি বলে আসলেও সেগুলোতে ব্যর্থ হয়ে এখন তারা আমার ব্যক্তিগত চরিত্রহানীতে লিপ্ত হয়েছে। এ জন্য তারা অশ্লীল সিনেমাকে আমার নামে চালিয়ে দিচ্ছে। সেগুলো তারা সংঘবদ্ধ হয়ে ফেসবুক/ইউটিউবের মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করছে। আমাদের নারীদের সদস্যাদের নিয়ে যাচ্ছেতাই গালাগালি ও অপপ্রচার করছে। পাশাপাশি সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জে মসজিদের এক ইমাম কর্তৃক অপর একটি মসজিদের ইমামকে গলা কেটে হত্যা করে হেযবুত তওহীদকে জড়িয়ে সন্ত্রাসী কার্যকলাপের সাথে সংশ্লিষ্টতা প্রমাণের চেষ্টা করেছে। যদিও তারা সেই ষড়যন্ত্রে সফল হয়নি। দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঐ ইমামের ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে দিয়েছে। তবে ষড়যন্ত্রকারীদের কর্মকা- থেমে নেই। তারা সুগভীর চক্রান্ত নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু হেযবুত তওহীদ আন্দোলন আল্লাহর। তাই কারও কোনোও ষড়যন্ত্র টিকবে না। আল্লাহই এ আন্দোলনকে রক্ষা করবেন। রাজশাহীতেও একবার বোমা রেখে হেযবুত তওহীদের নাম লিখে দিয়েছিল। কিন্তু র্যাব প্রকৃত অপরাধীকে ধরতে সমর্থ হয়। এভাবেই আল্লাহ হেযবুত তওহীদকে সর্বদা রক্ষা করবেন। তবে আমাদেরকে তাদের ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।
নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ ও হবিগঞ্জ জেলার হেযবুত তওহীদ কর্মীদের নিয়ে আয়োজিত এ আন্দোলনের প্রতি ধারণা পরিষ্কার, তাদের কর্তব্য, দায়িত্ব, আন্দোলনের সাম্প্রতিক সমস্যা, আমাদের দেশ ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি তুলে ধরেন তিনি। উপস্থিত কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ষড়যন্ত্রকারীদের এসবের উদ্দেশ্য হচ্ছে হেযবুত তওহীদের নেতিবাচক ধারণা ঢুকিয়ে দিয়ে নতুন কেউ যেন এ আন্দোলনে যোগ না দেয় এবং হেযবুত তওহীদের পুরনো সদস্যদের মনে সন্দেহ ঢুকিয়ে দেওয়া, যাতে তারা এ আন্দোলন থেকে নিস্ক্রিয় হয়ে যায়। এ ষড়যন্ত্র নতুন কিছু নয়। খোদ রসুলের সময় কাফেররা এ ধরনের ষড়যন্ত্র করেছে। কিন্তু তারা সফল হয়নি। আজ চৌদ্দশত বছর পরেও রসুলের নামে এসব অপপ্রচার বিশ্বাসীরা গ্রহণ করেন না। তারা এসবের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠেন। একইভাবে হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে করা অপপ্রচারে প্রকৃত মো’মেনগণ বিন্দুমাত্র নড়চড় হবেন না। বরং, বিরুদ্ধবাদীরা যে কতটা ভিত্তিহীন ও মিথ্যাবাদী তা দেখে তাদের ঈমান আরো বৃদ্ধি হবে।
অনুষ্ঠানে দীর্ঘ সময় ধরে মাঠে-ঘাটে কাজ করা নতুন পুরাতন সদস্যদের সামনে আন্দোলনের আদর্শ কি তা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, কাজ কর্ম, প্রচার-প্রচারণা ইত্যাদি অনেক করা যাবে। কিন্তু আন্দোলনের যে আদর্শ তা যদি অন্তরে দৃঢ় না হয় তবে এসব কাজ দীর্ঘকাল করা যাবে না। এক সময় ইবলিশ মনে সন্দেহ ঢুকিয়ে দিয়ে এ পথ থেকে সরিয়ে নিয়ে যাবে। তাই, হেযবুত তওহীদের যে আদর্শ তা আত্মায় ধারণ করতে হবে। আর সেটাই আজকের এই কর্মীসভার মূল উদ্দেশ্য। আলোচনায় তিনি মানব সৃষ্টির উদ্দেশ্য, মানবজাতির কর্তব্য, আল্লাহর অভিপ্রায়, মো’মেন ও মানবজাতির কাছে আল্লাহর কি চাওয়া তা বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন। আলোচনায় আরো বক্তব্য রাখেন হেযবুত তওহীদের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রুফায়দাহ পন্নী, নারী বিষয়ক কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুলতানা রাজিয়া কনিকা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আলী হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুযযামান, হবিগঞ্জ জেলা সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর আলম, নরসিংদী জেলা সভাপতি মো. মোতালিব খান ও নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি মো. রতনসহ অন্যান্য আমীর ও সদস্যগণ।