নজরুলের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সাংস্কৃতিক সংগঠন প্রতিধ্বনির উদ্যোগে ‘হৃদয়ে বঙ্গবন্ধু চেতনায় নজরুল’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। গতকাল (৬ সেপ্টম্বর) বুধবার রাজধানীর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সংগীত ও নৃত্যকলা মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বঙ্গবন্ধু শতবর্ষ আন্তর্জাতিক পরিষদের প্রধান সমন্বয়ককারী কবি আসলাম সানীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে মূল্যবান বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দৈনিক দেশেরপত্রের সম্পাদক রুফায়দাহ পন্নী বলেন, পৃথিবীতে বসবাসকারী সকল জাতির ভিন্ন ভিন্ন ইতিহাস রয়েছে। বাংলাদেশের ইতিহাস সংগ্রামের ইতিহাস। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে আমরা নিজেদের ইতিহাস সম্পর্কে আমরা চরম অজ্ঞতায় নিমজ্জিত। ষড়যন্ত্র করে আমাদের গৌরবের ইতিহাসকে ভুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। নিজেদের সম্পর্কে একটা হীনম্মন্যতা, ইনফিরিওরিটি কমপ্লেক্স সৃষ্টি করে দেওয়া হয়েছে। যারা বাংলার ইতিহাস সম্পর্কে জানেন না তারা হয়তো বুঝতে পারবেন না বাংলাদেশের জন্য কতখানি সংগ্রাম দেশবাসী করেছে। সুজলা সফল শস্য শ্যামলা এই দেশের ইতিহাস এটা বলেনা যে বাঙালিরা কোথায় সাম্রাজ্য বিস্তার করেছে, অন্য জাতিকে দাস বানিয়েছে, লুটপাট করেছে, শোষণ করেছে। তাদের প্রয়োজন পড়েছি অন্য কোথাও যাওয়ার। কারণ পৃথিবীর বুকে এই ভূখন্ডের চেয়ে উর্বর জমি খুব কমই আছে। এর উপর দিয়ে বয়ে গেছে শত শত নদী-নালা খাল বিল। এদেশের মাটিতে বীজ ফেললে এমনিতেই ফসল ও ফল ফলাদি হয়। এদেশের সন্তানেরা মায়ের কোলকে যেমন ভালোবেসেছে, ভালোবেসেছে তার মাটিকেও। তাই বারবার এই বাংলাকে আক্রমণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমি রুফায়দাহ পন্নী। এই পাক ভারত উপমহাদেশে পন্নী পরিবারের ইতিহাস হাজার বছরের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস। আমার পূর্ব পুরুষেরা আফগান পাঠান ছিলেন। তারা ইসলাম প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে এই ভূখন্ডে এসেছিলেন হাজার বছর আগে। সেই থেকে বাংলার মাটিতে আমার পূর্বপুরুষের অস্থিমজ্জা মিশে আছে। এজন্য এই মাটি আমার কাছে পবিত্র। আর ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে আমি একজন মুসলিম। এই মাটিতে আমি সেজদা করি। এই মাটির ফল ফসল খেয়ে আমি বড় হয়েছি। এই দেশের সমৃদ্ধি ও তা রক্ষার ক্ষেত্রে আমার পূর্বপুরুষদের কী ভ‚মিকা ছিল তা আজকে কিছু বলতে হবে। কারণ সেটা আমাদের আজকের সেমিনারের বিষয়ের সঙ্গে খুবই প্রাসঙ্গিক।
তিনি বলেন, আমার বাবা-দাদারা পুরুষাণুক্রমে টাঙ্গাইলের করটিয়ার জমিদার ছিলেন। তাঁর পূর্বপুরুষেরা ছিলেন গৌড়ের স্বাধীন সুলতান। আজকে সুলতানি যুগও নেই, জমিদার প্রথা নেই। ব্রিটিশ সরকারের চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের কবলে পড়ে পুরাতন মুসলিম জমিদাররা তাদের জমিদারি হারাতে বাধ্য হন। জমিদার শব্দটি শুনলেই আজ আমাদের মনে একটি নেতিবাচক ধারণা চলে আসে। আর আসাটা অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু টাঙ্গাইলের ঐতিহ্যবাহী পন্নী জমিদাররা দীনবন্ধু মিত্রের নীলদর্পণ নাটকের জমিদারদের মত ভোগবিলাসী, নির্যাতনকারী জমিদার ছিলেন না। বাংলাদেশের স্বাধীনতার অন্যতম নায়ক, মজলুম জননেতা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু দেশে ফিরে যাঁর পা ছুঁয়ে সালাম করেছেন, সে ভাসানী সাহেব জমিদার প্রথা উৎখাতের আন্দোলন করার সময় বলেছেন, সব জমিদাররা যদি ওয়াজেদ আলী খান পন্নী ওরফে চান মিয়া সাহেবের পদাঙ্ক অনুসরণ করতেন তাহলে জমিদার প্রথা বিলোপের জন্য আন্দোলন করতাম না। (টাঙ্গাইলের হাজার বছরের ইতিহাস, এডভোকেট নুরুল ইসলাম) তিনি ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, সুলতানী আমলে ২শ বছর বাংলা স্বাধীন ছিল। এ সময় বাংলাদেশে অনেক বিদেশি পর্যটক এসেছেন। ইবনে বতুতা তাঁর ভ্রমণ কাহিনীতে বলেছেন যে, তখন সাত টাকায় আটাশ মন ধান পাওয়া যেত। আজ থেকে মাত্র সাড়ে তিনশো বছর আগে শায়েস্তা খানের আমলে ঢাকায় এক টাকায় আট মণ চাল পাওয়া যেত। আমার পূর্বপুরুষরা কররানি বংশের সুলতান ছিলেন। তাজ খান কররানি, সুলায়মান খান কররানি, বায়াজীদ খান কররানি, দাউদ খান কররানি। ১৫৬৩ থেকে ১৫৭৬ পর্যন্ত তারা পূর্বে আসাম, মেঘালয়, কামরূপ থেকে বর্তমান বিহার, উড়িষ্যা, ঝাড়খন্ড, উত্তর প্রদেশ সহ বিরাট ভূখন্ডের সুলতান ছিলেন। তাদের নামে খোতবা পাঠ হত, তাদের স্বর্ণ ও রৌপ্য মুদ্রায় একদিনে ছিল তাঁদের নাম অপর দিকে কলেমা লা ইলাহা ইল্লাল্রাহ লেখা থাকত। সেগুলো জাদুঘরে গেলে এখনও দেখতে পাবেন। আমি সুলতান সুলায়মান খান কররানির ১৫ তম বংশধর।
দাউদ খান কররানি যখন মসনদে আসীন ছিলেন তখন বাংলাকে দখল করতে দিল্লীর সম্রাট আকবর সেনাবাহিনী প্রেরণ করেন। তখন সুলতান দাউদ খান বলেছেন, আমরা মস্তক দিব, কিন্তু স্বাধীনতা দিব না। বাংলাপিডিয়া মোতাবেক তিনি ৪০,০০০ অশ্বারোহী, ৩,৬০০ হাতি, ১১,৪০,০০০ পদাতিক ও ২০,০০০ কামানের এক বাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন। কিন্তু তাঁর সভাসদের মধ্য থেকেই গাদ্দারি করা হয়েছিল। না হলে তিনিই জয়ী হতেন। বঙ্গবন্ধুর লেখা কারাগারের রোজনামচা বইতে সেই গাদ্দারির প্রসঙ্গ এসেছে। তিনি লিখেছেন, দাউদ কাররানির উজির বিক্রমাদিত্য ও সেনাপতি কাদলু লোহানী বেঈমানী করে মোগলদের দলে যোগদান করে। রাজমহলের যুদ্ধে দাউদ খান কররানিকে পরাজিত বন্দী ও হত্যা করে বাংলাদেশ মোগলদের হাতে তুলে দেয়। মোগলরা কিন্তু সরাসরি বাংলাকে শাসন করতে পারে নি। তারা এই পরিবারেরই সন্তান সাঈদ খান পন্নীকে আতিয়া পরগনার সুবেদার নিয়োগ করেন। তাঁর নির্মিত আতিয়া মসজিদের ছবি আজও আমরা দশটাকার নোটে দেখতে পাই। একসময় মোগল শাসকদের ব্যর্থতার ফল হিসেবে ব্রিটিশরা আমাদেরকে দখল করল।
এরপর তিনি বলেন, এরপর বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা স্বাধীন হওয়ার পর তিনি দেশ গঠন শুরু করে দিলেন। এক সময় তিনি কবি কাজী নজরুল ইসলামকে ভারত থেকে বাংলাদেশে নিয়ে আসলেন চিকিৎসা করানোর জন্য। আমাদের বিদ্রোহী কবি, রেনেসাঁর কবি, সা¤প্রদায়িকতার বিষ দাঁত ভাঙ্গার কবি, তিনি হিন্দু ও মুসলিম গোঁড়াপন্থীদের বিরুদ্ধে সমানতালে কলম চালিয়েছেন। এই কবি যখন অনাদরে অযত্নে ধুঁকে ধুঁকে মারা যাচ্ছিলেন তখন বঙ্গবন্ধু তাঁকে দেশে নিয়ে আসলেন, তাঁকে জাতীয় কবির মর্যাদা প্রদান করলেন। আমার বাবা তখন উপমহাদেশের প্রখ্যাত হোমিওপ্যাথ। বঙ্গবন্ধু কবি নজরুলের চিকিৎসার জন্য দেশের শীর্ষ পর্যায়ের চিকিৎসকদের নিয়ে একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করলেন এবং আমার বাবাকেও সেই বোর্ডে একমাত্র হোমিওপ্যাথ হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করলেন। কবি তখন ধানমন্ডির কবি ভবনে থাকতেন, আবার পিজি হাসপাতালেও ভর্তি ছিলেন। বাবার চিকিৎসায় কবির স্বাস্থ্যের বেশ উন্নতি হচ্ছিল। কিন্তু ভক্তদের ভিড়ের কারণে কবির পর্যাপ্ত ঘুম হচ্ছিল না। বাবা এজন্য হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বেশ উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় করেন। বাবা নজরুল ইসলামের অত্যন্ত স্নেহভাজন ছিলেন। তিনি মগবাজারে নজরুল একাডেমী প্রতিষ্ঠার সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং একাডেমীর আজীবন সদস্য ছিলেন। তিনি নিয়মিত নজরুলের গান চর্চা করতেন, আমিও চর্চা করি মাঝে মাঝে। এটিএন-এর একটি প্রতিবেদন নজরুল ইসলামের চিকিৎসায় বাবার ভ‚মিকার কথা উঠে এসেছে, নজরুলের শেষ দিনগুলো নিয়ে যারাই লিখেছেন তারাই বাবার কথা গুরুত্বসহকারে লিখেছেন। কবি নজরুল আমার গ্রামের বাড়ি করটিয়ার সাদত কলেজে গিয়েছিলেন ১৯৭৪ সালে। তিনি যে স্থানে বসে বিশ্রাম নিয়েছিলেন সেখানে নজরুল কুটির নামে একটি বিশ্রামাগার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। যখন তিনি সুস্থ ছিলেন তখনই করটিয়ার জমিদাররা কীভাবে বাংলা সাহিত্যের পৃষ্ঠপোষণ করছেন সে সম্পর্কে সম্যক জানতেন। তিনি লিখেছিলেন, আমি না দেখলেও জানি করটিয়া সাধারণ বিদ্যাপীঠ নয়। অতীতের আল-আজহার, বোগদাদের স্বপ্ন দেখছে করটিয়া।
তিনি হেযবুত তওহীদ আন্দোলন নিয়ে বলেন, আজকে আমাদের আন্দোলনের নাম শুনলে অনেকে ভয়ে আতঙ্কে আঁতকে ওঠেন। আসলে আমরা অপপ্রচারের শিকার হয়েছি। হিজবুত তাহরীর নামের একটি সংগঠনকে উগ্রবাদী কর্মকান্ডের দায়ে নিষিদ্ধ করা হয়। তাদের সঙ্গে আমাদের আন্দোলনের আংশিক মিল থাকায় আমাদেরকে অনেক হয়রানি ও অপপ্রচারের শিকার হতে হয়। ফলে আমার বাবার আজীবনের কর্মকান্ডের কোনো স্বীকৃতি মেলেনি। বাবা কাজী নজরুল ইসলামের লেখা “আল্লাহতে যার পূর্ণ ঈমান কোথা সে মুসলমান” গানটিকে আমাদের দলীয় সংগীত হিসেবে নির্বাচিত করলেন। আমাদের ঘরোয়া মিটিং হোক বা যে কোনো মিটিংয়ের শুরুতে কোরআন তেলাওয়াতের পরে আমরা এই গানটি শুনি। নজরুলকে আমরা সত্যিকারভাবেই চেতনায় ধারণ করেছি। আর সেই চেতনা হচ্ছে প্রকৃত ইসলামের চেতনা, ধর্মব্যবসা ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে চেতনা, সাম্প্রদায়িকতা ভুলে হিন্দু মুসলিম সকলে নির্বিশেষে মানুষ সমাজে সম্প্রীতি ও ঐক্যের মাঝে বসবাসের চেতনা, বিপ্লবের চেতনা, অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে লড়াই করার চেতনা। তিনি ধর্মের নামে গোঁড়ামির বিরুদ্ধে, ধর্মব্যবসার বিরুদ্ধে তুখোড় কবিতা লিখেছেন।
তিনি বঙ্গবন্ধুর উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালের ঈদে মিলাদুন্নবী অনুষ্ঠানের বক্তৃতায় বলেছিলেন, “ধর্ম নিয়ে আর ব্যবসা করা চলবে না।” দৈনিক বাংলার বাণী পত্রিকার লিড নিউজ, আমি নিয়ে এসেছি। আজ থেকে অর্ধ শতাব্দী আগের কথা। আমাদের বাবা সংগ্রাম করে গেছেন এই ধর্মব্যবসার বিরুদ্ধে। আমাদের এমাম জনাব হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম বই লিখেছেন ধর্মব্যবসার ফাঁদে। বঙ্গবন্ধুর কথা, নজরুলের কবিতা আর এই ধর্মব্যবসার ফাঁদে এই তিনটি বিষয় একসাথে মিলান। দেখুন চেতনা কার সাথে মিলল। বঙ্গবন্ধু বলেছেন বাংলার জমিতে আর ধর্মব্যবসা চলবে না, কাজী নজরুল ইসলামও একই কথা বলেছেন এবং আমার বাবা ধর্মব্যবসার বিরুদ্ধে লিখেছেন।
তিনি বলেন, ২০২৩ সালে এসে ধর্মব্যবসার বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর অবস্থান সংগ্রাম, নজরুলের চেতনা বাস্তবায়ন করার জন্য লড়াইতে নেমেছি আমরা। আমাদের মনে প্রাণে, ধ্যানে, জ্ঞানে, সাধনায় সর্বত্র নজরুলের চেতনা। কবি নজরুলের দাড়ি ছিল না, এ নিয়ে তাঁকে মোল্লাদের কটাক্ষ শুনতে হয়েছে। দাড়ি না রেখে তিনি কেন চুল রাখলেন এ নিয়ে তাঁকে এখনও বিদ্রূপ করা হয়। তিনি বোঝাতে চেয়েছে দাড়ি, টুপি, লেবাস আর টিকিই ধর্মের সার কথা নয়। ধর্ম অনেক বড় একটি ধারণা। আল্লামা ইকবালও এ কারণেই হয়ত দাড়ি রাখেন নি। তবু তাকে আল্লামা বলা হয়, তার ধর্ম সম্পর্কে শুদ্ধ জ্ঞানচর্চার কারণে। কবি নজরুল ইসলাম সম্পর্কে এত গভীর জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন, তবু তাকে কাফের ফতোয়া দেওয়া হয়েছে। আমি বলব, কাউকে যদি আল্লামা বলতে হয় তাহলে কাজী নজরুল ইসলামকে বলা উচিত। এই বলে জাতীয় কবিকে, বিদ্রোহী কবিকে আল্লামা কাজী নজরুল ইসলাম রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলে সম্বোধন করেন এই বক্তা।
তিনি বলেন, আমি একটি ডিএফপিভুক্ত বাংলা জাতীয় পত্রিকা “দৈনিক দেশেরপত্রের” সম্পাদক। যদিও আমি লেখাপড়া করেছি ইংলিশ মিডিয়ামে। আমার ফ্যামলির অধিকাংশই বিদেশে সেটলড। কিন্তু আমি বাংলাদেশের রয়েছি বাবার আদর্শকে ধারণ করে। এরপর আমি যখন নামলাম এই উগ্রবাদ সা¤প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে তখন আমি চিন্তা করলাম আমাকে কলম ধরতে হবে, কারণ আমি তো অস্ত্র নিতে পারবো না। বঙ্গবন্ধু যখন স্বাধীনতার ঘোষণা দিলেন তখন অসংখ্য নারী পুরুষ অস্ত্র হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে গেছে কিন্তু এখন তো সরকার আছে। তাই আমি অস্ত্র হাতে নেব না আমি হাতে নিব কলম। প্রথমে আমি পত্রিকার মাধ্যমে শুরু করলাম নারীদের অধিকার নিয়ে লড়াই। আমি পত্রিকায় তুলে ধরতে লাগলাম বর্তমানে নারীদেরকে কী ভাবা হয় আর ইসলাম নারীদেরকে কোন অবস্থানে নিয়ে গিয়েছিল? আল্লাহর রাসূল নারীদেরকে কী কী কাজে লাগিয়েছেন, ইসলামের সুমহান বিজয় ও সভ্যতা প্রতিষ্ঠায় তাদের অবদান কী ছিল। নজরুল বলেছেন, নারীর অবদান ছিল অর্ধেক বলেন এই বক্তা।
বঙ্গবন্ধু ভাষণ ও বিদ্রোহী কবির রচনা তুলে ধরে তিনি বলেন, মানুষ ধর্মগ্রন্থ পড়ে যেমন পরিশুদ্ধ হয়, কর্মপ্রেরণা লাভ করে তেমনি নজরুলের কবিতা পড়েও আমরা অনুপ্রাণিত হই। কখনও গতি হারিয়ে নিষ্প্রাণ হয়ে গেলে তাঁর লেখা একটি লাইন পড়লেই আবার প্রাণ ফিরে পাই। যেমন আল্লাহর বাণী, তোমরা সংগ্রাম করতে থাকো যতক্ষণ না পর্যন্ত ফেতনা দূরীভূত হয়। বঙ্গবন্ধু বলেছেন, রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরো দেব। এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব ইনশাল্লাহ্। আর নজরুল বলেছেন,
“মহা-বিদ্রোহী রণক্লান্ত, আমি সেই দিন হব শান্ত।
যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দন-রোল আকাশে-বাতাসে ধ্বনিবে না,
অত্যাচারীর খড়ুগ কৃপাণ ভীম রণভ‚মে রণিবে না-
বিদ্রোহী রণক্লান্ত আমি সেই দিন হব শান্ত।”
আল্লাহর বাণী এবং রসুলের বাণী শুনে আমরা যেভাবে অনুপ্রাণিত হই, সেভাবে নজরুলের কথা শুনেও আমরা অনুপ্রাণিত হই। কাজেই বঙ্গবন্ধু দেশ স্বাধীন করেছেন, সংগ্রাম করেছেন, আজকে বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সংগ্রাম করছেন, কবি কাজী নজরুল ইসলাম আমাদেরকে চেতনা দিয়ে গিয়েছেন। এই সমস্ত কিছুই ধ্বংস হয়ে যাবে যদি সা¤প্রদায়িকতা, ধর্মব্যবসা, ধর্মের নামে গুজব, হুজুগ, অপরাজনীতি বন্ধ করা না হয়। এগুলোর বিরুদ্ধে সবাইকে এক হয়ে সংগ্রাম করা লাগবে। নাহলে আমাদের স্বাধীনতাসহ সকল অর্জন ধ্বংস হয়ে যাবে। আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলার মাটিকে আমরা আফগানিস্তান, ইরাক, সিরিয়া হতে দেব না ইনশাল্লাহ।
বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো বক্তব্য রাখেন- ভারত থেকে আগত চুরুলিয়া দোলনচাঁপা ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক ও কাজী নজরুল ইসলামের নাতনী সোনালী কাজী, মার্কেন্টাইল ব্যাংকের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আকরাম হোসেন হুমায়ুন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক অ্যাড আবদুন নূর দুলাল, বাংলা একাডেমির উপ-পরিচালক ড. শাহাদাৎ হোসেন নিপু প্রমুখ।
অনুষ্ঠান সঞ্চলনায় ছিলেন এডভোকেট শিমুল পারভিন। কবিতা আবৃত্তি করেন ল্যাবএইড হাসপাতালের ডা. মমতাজ রহমান, আইনজীবী ও কবি নোমান রহমান, সংগীত পরিবেশন করেন বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী ফাতেমাতুজ জোহরা।
375055788_792638616197278_4147736825302777442_n
375283447_792638636197276_572719966985744007_n
375323645_792638906197249_7762642029323602067_n
375329462_792638579530615_9170802903982827061_n
375337058_792638726197267_8253636566903272623_n
375455188_792639302863876_4773917777017319108_n
375459517_792638889530584_690348714994069776_n
375562358_792638866197253_2213056364595187484_n
375564970_792638489530624_7424019952253190424_n
375588102_792638999530573_5876717309285498656_n
375599498_792639536197186_7357700924117522900_n
375655493_792639026197237_4966736797872673368_n
375663882_792638922863914_5756208262799263256_n
375668678_792639082863898_7297939018445524231_n
375671136_792638722863934_346230735027074593_n
375830076_792639252863881_7613678358587319240_n
375833141_792638792863927_1939055162128334302_n