হেযবুত তওহীদ

মানবতার কল্যাণে নিবেদিত

ধর্ম ও রাজনীতির নামে ব্যবসা শান্তির অন্তরায়- মৌলভীবাজারের রাজনগরে হেযবুত তওহীদের উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা

Untitled-45-300x155
 
আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ আল্লাহ, আল্লাহর রসুল ও ধর্মগ্রন্থকে প্রাণের চেয়েও বেশি ভালোবাসে। কাজেই এই ধর্মপ্রাণ মানুষগুলোর ধর্মবিশ্বাস অবজ্ঞা করার বা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। এই মানুষগুলোকে ধর্মব্যবসায়ীদের দ্বারা ব্যবহৃত হওয়া থেকে ফেরাতে চাইলে তাদের ঈমানকে ভুল পথ থেকে সরিয়ে এনে সঠিক পথে পরিচালিত করতে হবে। সকলকে বুঝতে হবে- যে ঈমান দুনিয়াতে মানুষের কল্যাণে কাজে আসে না, সেই ঈমান পরকালেও কোনো কাজে আসবে না। গতকাল মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার রাজনগর জেলা পরিষদ অডিটরিয়ামে হেযবুত তওহীদের উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। ‘ধর্মবিশ্বাস: এক বৃহৎ সমস্যার সহজ সমাধান’ শীর্ষক ওই আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজনগর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আছকির খান। তিনি হেযবুত তওহীদের বক্তব্যের সঙ্গে সম্পূর্ণ একাত্মতা প্রকাশ করে সংবিধানে ঘোষিত মূল চার নীতির ভিত্তিতে বাংলাদেশ গঠনের আহ্বান জানান। তিনি মানবতা প্রতিষ্ঠার উপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনাই হচ্ছে মানবতা প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমাজে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য তরুণ সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে।’ এছাড়া তিনি হেযবুত তওহীদকে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
হেযবুত তওহীদের সাহিত্য সম্পাদক রিয়াদুল হাসান মুখ্য আলোচকের বক্তব্যে বলেন, ‘মানবজাতি যখন অন্যায় জুলুম শোষণে চরম জর্জরিত হয়ে পড়ে তখন ন্যায়, সত্য ও মানবতা পুনরুদ্ধারের জন্য স্র্রষ্টার হস্তক্ষেপ অবধারিত হয়ে পড়ে। ঠিক আজ মানবজাতি চরম ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। এমতাবস্থায় সৃষ্টিকর্তার পক্ষ থেকে ন্যায়, সত্য প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত এসে গেছে। যামানার এমাম জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নীকে আল্লাহ সেই মহাসত্য বুঝিয়ে দিয়েছেন এবং পৃথিবীতে সত্য ও মিথ্যার একটি সংঘাত সূচনা হয়েছে। এখন এই মানুষ যদি সত্যের পক্ষে অবস্থান নেয়, তাহলে তারা রক্ষা পেতে পারে। অন্যথায় কেউ তাদেরকে বাঁচাতে পারবে না। আমরা সত্যের পক্ষে সংগ্রামে নিজেদের সর্বস্ব নিয়োগ করেছি। আমাদের কোনো পার্থিব স্বার্থ নেই। এই সংগ্রাম আমাদের এবাদত। সমাজে মানবতা ও শান্তি প্রতিষ্ঠার পূর্বশর্ত হলো মানবজাতিকে নিঃস্বার্থ হতে হবে। ধর্মের নামে ব্যবসা এবং রাজনীতির নামে ব্যবসা যতদিন চলবে ততদিন শান্তি আসবে না।’
এছাড়া বিশেষ অতিথি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. জামাল উদ্দীন মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি হেযবুত তওহীদের সদস্যদের প্রদত্ত সম্মান ও শ্রদ্ধাকে গভীর কৃতজ্ঞতার সঙ্গে উল্লেখ করেন এবং হেযবুত তওহীদকে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন। এরপর রাজনগর মহিলা ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ মো. ইকবাল হেযবুত তওহীদ আন্দোলনের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, ‘হেযবুত তওহীদ সত্য, ন্যায় ও মানবতার পক্ষে অবিচল থাকলে সকলের সহযোগিতা ও সমর্থন অব্যাহতভাবে পাবে।’ দারিদ্র্যমুক্ত সমাজগঠন ছাড়া একটি জঙ্গিবাদমুক্ত, অসাম্প্রদায়িক সমাজ গঠন সম্ভব নয় বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন। রাজনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ বলেন, যারা ধর্মের নামে উন্মাদনা ও জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করে তারাই ধর্মের প্রকৃত শত্র“, ইসলামের শত্র“। তারা ধর্মকে হেয় প্রতিপন্ন করছে। যারা সন্ত্রাস, রাহাজানির বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় মানুষের দুঃখ, কষ্ট, বেদনায় ব্যথিত হয় তারাই প্রকৃত ধার্মিক।
তাছাড়া বীর মুক্তিযোদ্ধা সজল কুমার চক্রবর্তী অসাম্প্রদায়িক সমাজ গঠনে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় কাজ করার জন্য সবাইকে উদ্বুদ্ধ করেন। তিনি বলেন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ এখনো সমাপ্ত হয় নি। এখনো শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয় নি। আমাদের সেই অসমাপ্ত কাজ হেযবুত তওহীদ চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।’
এরপর জনাব মিলন বখ্ত বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রকৃত ধর্ম ইসলামের স্বরূপ প্রকাশের জন্য হেযবুত তওহীদকে ধন্যবাদ জানান। ধর্মব্যবসা ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান গ্রহণের জন্য তিনি হেযবুত তওহীদের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং সকলকে সত্যের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
এছাড়া অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে জনাব মিহির কান্তি দাস (মনজু) মানবতা, অসাম্প্রদায়িকতা, শান্তি ও ন্যায়ের জন্য এ ধরণের কার্যক্রমের ব্যাপক বিস্তৃতি ঘটবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, বৃহত্তর পরিসরে এবং তৃণমূল পর্যায়ে এ ধরনের কার্যক্রম চালানোর ক্ষেত্রে হেযবুত তওহীদকে আমি আমার সাধ্যমত সহযোগিতা করব।’

সার্চ করুন

যুক্ত হোন আমাদের ফেসবুক পেজের সাথে...