শরিফুল ইসলাম
ত্যাগের আড়ালে ভোগ আল্লাহর সঙ্গে প্রতারণা ছাড়া আর কিছুই না। খেয়াল করলে দেখবেন ধর্মের সেই অংশটুকুই আজও মহা সমারোহে টিকে আছে যার সঙ্গে কারো না কারো পার্থিব স্বার্থ ও ভোগের সুবিধা জড়িত।
১. শবে বরাতের সঙ্গে গোশত রুটি হালুয়া আর মিলাদ জড়িত।
২. মিলাদের সঙ্গে মিষ্টি আর আলেম সাহেবের হাদিয়া জড়িত।
৩. ঈদের সঙ্গে তুমুল খাওয়া দাওয়া, কেনাকাটা আর ইমাম সাহেবের হাদিয়া জড়িত।
৪. কোরবানির সঙ্গে গোশত খাওয়ার মহোৎসব, মোল্লার হাদিয়া আর লিল্লাহ বোর্ডিং এ দানের চামড়া জড়িত।
৫. নামাজের সঙ্গে ইমাম সাহেবের বেতন জড়িত, আযানের সঙ্গে মোয়াজ্জেনের বেতন জড়িত।
৬. হজ্বের সঙ্গে হাজি সাহেবের সামাজিক মর্যাদার প্রমোশন আর আরবের পর্যটন ব্যাবসা জড়িত।
৭. মৃত্যুর পরে জানাজার নামাজ ও চেহলামের সঙ্গেও ইমাম সাহেবের হাদিয়া জড়িত।
৮. রোযার সঙ্গে ইফতারের বিচিত্র আয়োজন ও তুমুল খাওয়া দাওয়া জড়িত।
৯. বিয়ে শাদি ধর্মীয় কাজ এবং এখানে খাওয়ার গুরুত্ব এতটাই বেশি যে বর বধু বিয়ে করে আর আÍীয় স্বজনে বিয়ে খায়।
মো’মেন হওয়ার পূর্বশর্ত হচ্ছে নিজের জীবন ও স¤পদ কোরবানি করে মানবতার মুক্তির জন্য সংগ্রাম করা। অর্থাৎ ত্যাগের মাধ্যমেই মো’মেন হতে হয়। কিন্তু আপনিই বলুন, সমাজে এমন কোন ধর্মীয় কাজটি রয়েছে যেখানে সত্যিকার অর্থে মানুষকে ত্যাগ স্বীকার করতে হয় এবং কোনো পার্থিব বা আর্থিক লেনদেন সংঘটিত হয় না। এই স্বার্থগুলোই প্রকৃতপক্ষে ধর্মের এই অংশটিকে জীবিত রেখেছে, ঠিক যেভাবে
আর যদি এমন কোনো ধর্মীয় কাজ বা উপাসনা পাওয়াও যায়, খেয়াল করলে দেখবেন সেগুলোতেও সমাজ কল্যাণের কোনো ধারণা থাকে না। সেখানে কেবল ব্যক্তির ব্যক্তিগত আখেরাতের স্বার্থ জড়িত থাকে।
একটি বিষয় আমাদের মনে রাখতে হবে, আল্লাহ মো’মেনের জীবন ও স¤পদ জান্নাতের বিনিময়ে কিনে নিয়েছেন এই জন্য যে মো’মেন মানবতার কল্যাণে সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করবে।তাই ত্যাগস্বীকার না করে আল্লাহর কাছ থেকে জান্নাত লাভের আশা করা বৃথা।