জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে যারা নিজেদের অবস্থানকে নির্ধারণ করে নিয়েছেন তাদেরকে অবশ্যই জঙ্গিবাদ কী কী সেন্টিমেন্ট দ্বারা সৃষ্ট, পুষ্ট ও পরিচালিত হয় তা বিবেচনায় রেখেই কর্মপন্থা নির্দিষ্ট করতে হবে। যারা জাতির কর্ণধার অর্থাৎ রাষ্ট্রপরিচালনার সঙ্গে সম্পৃক্ত, তাদেরকে বুঝতে হবে যে, আমাদের উপমহাদেশের রাজনীতিতে বর্তমান সময়ে ধর্ম সবচেয়ে বড় ইস্যু, তাই মানুষের ধর্মানুভূতিকে অবজ্ঞা করার কোনো সুযোগ নেই। ইউরোপে সেক্যুলারিজমের জয়জয়কার। তারা তাদের সেই ধ্যান-ধারণাকে সবার উপরে চাপিয়ে দিতে চায়। কিন্তু ভারত উপমহাদেশের সঙ্গে ইউরোপের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট সম্পূর্ণ ভিন্ন, তাই এই দুই অঞ্চলের অধিবাসীদের মানসিক গঠনও সম্পূর্ণ ভিন্ন্।
ইউরোপের মানুষের পক্ষে ধর্মহীন জীবনব্যবস্থা নতুন কিছু নয়। ঈসা (আ.) এর আবির্ভাবের বহু আগে থেকেই ইউরোপ ছিল ধর্মবঞ্চিত। জনগণের অধিকাংশই ছিল মূর্তিপূজক প্যাগান। বর্বর রাজতন্ত্রের যাঁতাকলে নিরুপায় প্রজার নিষ্পেষণই ছিল ইউরোপের জীবনব্যবস্থা। ঈসা (আ.) এর আনীত ধর্মের পরিবর্তিত রূপটি যখন ইউরোপে প্রচারিত হলো, তখন জনগণ এটাকেই তাদের মুক্তির পথরূপে বরণ করে নিল। কিন্তু হায়! সেখানে তো সামষ্টিক জীবন পরিচালনার কোনো ব্যবস্থা ছিল না। তাই জনগণের মুক্তি মিলল না। জন্ম নিল ধর্মব্যবসায়ী শ্রেণি, তারা নিজেদের মুখের কথাকেই ধর্ম বলে জনগণের উপর চাপিয়ে দিল। তারা সৃষ্টি করল মধ্যযুগীয় বর্বরতা (Medieval barbarism) নামক মানব ইতিহাসের কালো অধ্যায়। মানুষ ধর্ম থেকে মুখ ফিরিয়ে নিল। ইউরোপীয় চিন্তানায়কদের গবেষণার ফল হিসাবে দাঁড়িয়ে গেল নতুন বস্তুবাদী জীবনব্যবস্থা, যার দ্ব্যার্থাত্মক, বিভ্রান্তিকর ও চমকপ্রদ নাম ধর্মনিরপেক্ষতা (Secularism)। এই মতবাদের চর্চায় ধর্ম কার্যত ব্যক্তিগত বিশ্বাস আর আচার-অনুষ্ঠানের মধ্যে বন্দি হলো। এই ইউরোপীয় জাতিগুলো যখন দিগ্বিজয়ে বের হলো, তারা পৃথিবীর বহু সমৃদ্ধ ও অ-সমৃদ্ধ জাতিকে তাদের গোলামে পরিণত করে ফেলল। তদানীন্তন বিশ্বের সবচেয়ে সমৃদ্ধ জাতি মুসলিমদের জন্য এই গোলামিতে অবনমিত হওয়া ছিল আল্লাহর পক্ষ থেকে আসা শাস্তিবিশেষ। মুসলিম হিসাবে তাদের উপর আল্লাহ দায়িত্ব অর্পণ করেছিলেন যে তারা সারা পৃথিবীতে আল্লাহর সত্যদীন প্রতিষ্ঠা করে মানুষকে শান্তিময় একটি জীবন উপহার দেবে। তাদের এই দায়িত্ব ত্যাগের পরিণাম কী ভয়াবহ সেটাও আল্লাহ পবিত্র কোর’আনে জানিয়ে দিয়েছিলেন যে, ‘হে মো’মেনগণ! তোমরা যদি (সত্যদীন প্রতিষ্ঠার) অভিযানে বের না হও তবে আল্লাহ তোমাদেরকে কঠিন শাস্তি দিয়ে তোমাদের উপরে অন্য জাতি চাপিয়ে দেবেন (সুরা তওবা ৩৯)। কিন্তু আল্লাহর রসুল বিদায় নেয়ার ৬০/৭০ বছর পরই তারা তারা এ দায়িত্ব ত্যাগ করেছিল। যার পরিণামে আল্লাহর পক্ষ থেকে ভয়াবহ শাস্তি হিসাবে মুসলিমরা ইউরোপীয়দের গোলামে পরিণত হয়েছিল। এ সময়ে বিশ্বের অন্যতম সমৃদ্ধ ভূখণ্ড ছিল মুসলিম দাবিদার মুঘল রাজতন্ত্রের দ্বারা শাসিত ভারত উপমহাদেশ। যদিও এখানকার জীবনব্যবস্থা প্রকৃত ইসলাম ছিল না, তবে ইসলামের বহু বিধান প্রতিষ্ঠিত ছিল। ধর্মই শান্তির একমাত্র উৎস এ কথাটি ভারতবর্ষের মানুষ হাজার হাজার বছর ধরে জেনে এসেছে, দেখে এসেছে। অতি প্রাচীনকালে বৈদিক যুগে ভারতে সনাতন শাস্ত্রের শাসন প্রতিষ্ঠিত ছিল যা মানুষকে পরম শান্তিতে জীবনযাপনের অভিজ্ঞতা দান করেছিল। এভাবেই এতদঞ্চলের মানুষের চিন্তা-চেতনায়, সংস্কৃতিতে, তাদের রক্তের কণিকায় ধর্ম এতটাই প্রভাব বিস্তার করে আছে যে, তাদের প্রতিটি সিদ্ধান্তের সঙ্গে ধর্মীয় মূল্যবোধ ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকে; সুতরাং ইউরোপের ঐ ধর্মীয় প্রভাবমুক্ত জীবনব্যবস্থা এখানে অচল। তবু যেহেতু ইংরেজরা তখন প্রভু, তাই তারা চাইল প্রভুর ধর্মই হবে দাসের ধর্ম। এ লক্ষ্যে তারা আধুনিক শিক্ষার নামে এমন একটি শিক্ষাব্যবস্থা এখানে চালু করল যার মাধ্যমে তারা এ জাতির মধ্যেও ধর্মবিদ্বেষের প্রসার ঘটাতে চাইল। তারা তাদের শিক্ষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি দ্বারা এ জাতির মননে গেড়ে দিতে চাইল যে, ধর্ম হচ্ছে মিথ্যা, কূপমণ্ডূকতা, অন্ধকার, পশ্চাৎপদতা, বর্বরতা, সকল প্রকার উন্নতি-প্রগতির অন্তরায়, মুক্তচিন্তার প্রতিবন্ধক। স্বভাবতই তাদের এই ধ্যানধারণা ধীরে ধীরে মানুষের মনের উপর প্রভাব সৃষ্টি করল। তারা বুঝল সভ্য, আধুনিক, বিশ্বমানের মানুষ হতে হলে ধর্মকে বিসর্জন দিতে হবে, নিদেনপক্ষে খ্রিষ্টান হতে হবে। ঔপনিবেশিকদের এই শিক্ষাব্যবস্থার দ্বারা তারা এদেশে একটি ধর্মবিদ্বেষী বস্তুবাদী মানসিকতাসম্পন্ন তাবেদার শ্রেণি তৈরি করতে সক্ষম হল। ইউরোপীয় জাতিগুলো নিজেরা নিজেদের মধ্যে দু দুটি বিশ্বযুদ্ধ করে নিজেদের যথেষ্ট শক্তিক্ষয় করে ফেলল এবং বিপর্যস্ত হলো। ফলে নিজেদের পুনর্গঠন করে এই বিশাল বিশাল উপনিবেশগুলো আর ধরে রাখা তাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছিল না। তাছাড়া উপনিবেশগুলোর ভেতর থেকেও স্বাধীনতার জন্য চাপ সৃষ্টি হয়েছিল। সবচেয়ে বড় কথা এ উপনিবেশগুলো থেকে আর উল্লেখযোগ্য কোনো সম্পদ আহরণ বাদ ছিল না। যেটুকু বাদ ছিল সেটুকুও পরবর্তীতে যেন শোষণ করা যায় সে পথ উন্মুক্ত রাখার জন্য তারা যখন নিজ নিজ দেশে প্রত্যাবর্তন করল তখন এই জাতির সরকার বানিয়ে দিয়ে গেল তাদের প্রদত্ত ‘আধুনিক, ধর্মনিরপেক্ষ’ শিক্ষায় শিক্ষিত সেই দাস মনোবৃত্তির অথচ উন্নাসিক শ্রেণিটি থেকে বাছাইকৃত,পরীক্ষিত সবচেয়ে বংশবদ ব্যক্তিবর্গকে। আজ আমাদের বুদ্ধিজীবী, আইনজীবী, রাজনীতিবিদ, আমলাশ্রেণিসহ রাষ্ট্রযন্ত্র নিয়ন্ত্রকদের একটা বড় অংশই মুখে ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বললেও আদতে ধর্মবিদ্বেষী। ধর্ম তাদের অধিকাংশের কাছেই অপ্রয়োজনীয় বিধায় পরিত্যাজ্য, কারো নিছক সামাজিকতার অবলম্বন, অনেকের কাছে ঘৃণ্য। কিছু ব্যতিক্রম থাকলেও সেটা তাদের একান্ত ব্যক্তিগত পর্যায়ে সীমাবদ্ধ।
সেই ১৯৪৭ সালে ইংরেজরা চলে যাওয়ার পর থেকে উপমহাদেশের রাজনীতিতে এই পাশ্চাত্যের ধর্মনিরপেক্ষ ভাবাদর্শ দাপটের সাথে অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে বহু বছর, কিন্তু ডানপন্থী শক্তিকে সদা-সর্বদা সমীহ করেই তাকে শাসনক্ষমতায় থাকতে হয়েছে। ডানপন্থী-বামপন্থী নিয়ে একটি টানাপড়েন চিরকালই ছিল, তবে হিন্দু, মুসলিম অধ্যুষিত এই অঞ্চলে ইংরেজদের বহু সাধনার ‘সেক্যুলারিজম’ সম্প্রতি একেবারে হুমকির মুখে পড়ে গেছে। গণতান্ত্রিক জীবনব্যবস্থা ও তার ধারক এই ধর্মনিরপেক্ষ শ্রেণির রাষ্ট্র পরিচালনায় ব্যর্থতা, সীমাহীন দুর্নীতি ও অন্যায় তাদের থেকে মানুষকে মুখ ফিরিয়ে নিতে বাধ্য করেছে। পৃথিবীর সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশের সবচেয়ে বড় ভোটাভোটির এই যুদ্ধে পর পর দুবার একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে সরকার গঠন করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি, বিজেপি। দলের এই সাফল্যের পেছনে কংগ্রেসের বিগত ১০ বছর শাসনামলের ব্যর্থতা ও বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদির শাসনাধীন গুজরাটের দৃষ্টান্তমূলক উন্নয়নসহ আরো কিছু ইস্যুকে চিহ্নিত করা হলেও সবচেয়ে বড় কারণ নিঃসন্দেহে মোদি ও তার দলের হিন্দুত্ববাদী ভাবমূর্তি। তিনি যেভাবেই হোক হিন্দু সাম্প্রদায়িকতার ভিত্তিতে সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের ভোটকে নিজের পক্ষে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন। গবেষক ও কথাশিল্পী আবুল হাসনাত বিজেপির এই অভূতপূর্ব বিজয় সম্পর্কে লিখেছেন, “রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ থেকে শুরু করে বজরং পরিবার কী দুর্ধর্ষ প্রচারে, সংগ্রামে, আক্রমণাত্মক ভূমিকায় তথা হিন্দুত্ববাদ ও সাম্প্রদায়িকতার তুঙ্গ-তরঙ্গে দলটিকে স্থাপন করায় যে শক্তি ও ভিত জনগণের মনে ঠাঁই করে নিয়েছে তা-ই মোদির বিজয়কে অভূতপূর্ব সাফল্যের গৌরবটিকা পরিয়েছে।” (দৈনিক যায়যায়দিন, বুধবার, মে ২৮, ২০১৪)। হিন্দুত্ববাদী দলের এ বিজয়কে ভারতের ইতিহাসের এক বিপদসঙ্কুল অধ্যায়ের সূচনা (most sinister period since independence) হিসেবে বর্ণনা করেছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকগণ (Pankaj Mishra, The Guardian, Friday 16 May 2014) কারণ ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করা হলে এর অবশ্যম্ভাবী ফল হলো ধর্মান্ধতা ও সাম্প্রদায়িকতার বিস্তার। বাস্তবেও সেটাই আমরা দেখতে পাচ্ছি। আর অস্তিত্বের সংকটে পড়ে গেছে কংগ্রেসের মতো দেশের সেক্যুলার রাজনীতিক দলগুলো।
দাদাভাই নওরোজি, মহাত্মা গান্ধী, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জনের পর নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু, ডা. বিধানচন্দ্র রায়, জওহরলাল নেহরু, লাল বাহাদুর শাস্ত্রী, সরদার বল্লভ ভাই প্যাটেল, ইন্দিরা গান্ধী থেকে রাজীব গান্ধী পর্যন্ত উপমহাদেশের কিংবদন্তী রাজনীতিবিদদের সঙ্গে যে দলটির ইতিহাস জড়িয়ে আছে সেই ১২৯ বছরের গরীয়ান রাজনীতিক দল কংগ্রেসের পক্ষে ডানপন্থী মোদির এক আঘাতে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে।
আমাদের দেশেও গণতান্ত্রিকদের সীমাহীন দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চূড়ান্ত অবনতি, ক্ষমতাবানদের খাই খাই ভাব ইত্যাদির কারণে আমজনতার কাছে গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ইত্যাদি বহুল উচ্চারিত মোহনীয় শব্দগুলো আবেদন হারিয়েছে, পশ্চিমাদের শেখানো শ্লোগানগুলো দিন দিন ভিত্তিহীন আলগা হয়ে পড়ছে। গণতান্ত্রিক জাতীয়তাবাদী দলগুলোর কর্মীরা দলবদল করছে, মামলা-হামলার শিকার হয়ে অস্তিত্বের সংকটে পড়েছে। এ সুযোগটিকে কাজে লাগাচ্ছে ধর্মব্যবসায়ী সেই শ্রেণিটি যারা মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিকে পুঁজি করে রাজনীতি করে, তারা বহুদিন বাদে প্রতিপক্ষের দুর্বল সময়ে নিজেদের অবস্থানকে পাকাপোক্ত করে নিতে চাইছে।
এটা ইতিহাস যে, সাধারণ মানুষ কখনো এই সুযোগ সন্ধানীদেরকে প্রত্যাখ্যান করেছে, পরক্ষণেই আবার আলিঙ্গন করে নিয়েছে। তবে সময়ের ব্যবধানে জনতার উপর সুযোগ সন্ধানী শ্রেণিটির প্রভাব বাড়ছে, এ সত্য অস্বীকার করার উপায় নেই। এমতাবস্থায় বৃহত্তর জনসাধারণের ধর্মবিশ্বাসকে তাচ্ছিল্য করলে কার্যত দাঙ্গা ও সংঘর্ষই বৃদ্ধি পাবে; শান্তি, সম্প্রীতি হ্রাস পাবে। কারণ হাজার হাজার বছর ধরে আল্লাহর প্রেরিত যে জীবনব্যবস্থাগুলো দ্বারা মানুষ শান্তি পেয়েছে – এটা মিথ্যা নয়, সেই স্বর্ণোজ্জ্বল ইতিহাসগুলো মানুষের হৃদয়ে বার বার নাড়া দেয়। তাছাড়া ধর্মের সঙ্গে পারলৌকিক অবিনশ্বর জীবনের শান্তি-অশান্তিও জড়িত। সর্বোপরি পাশ্চাত্য ‘সভ্যতার’ বস্তুবাদী জীবনব্যবস্থাগুলো মানুষকে শান্তি দিতে ব্যর্থ হওয়ার কারণেই মানুষ স্রষ্টার বিধানের দিকে ফিরে যেতে চায়। কিন্তু এ পথে পা বাড়ালেই বিভিন্ন ধরণের ধর্মব্যবসায়ীদের খপ্পরে তারা পড়ে ভুল পথে চালিতে হয়। এজন্য ইসলাম প্রতিষ্ঠার সঠিক পথ এবং ভুল পথ এতদুভয়ের পার্থক্য সুস্পষ্টভাবে জানা এবং জাতিকে জানানো রাষ্ট্রের কর্ণধারদের পক্ষে অতি গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু মানুষকে ধর্মহীন করার কোনো প্রয়াস নেওয়া যাবে না। সেটা বুমেরাং হয়ে দাঁড়াবে। মানুষের ঈমানের উপর আঘাত না হেনে বোঝাতে হবে যে, আকিদা সহিহ না হলে ঈমানের কোনো দাম নেই, এ বিষয়ে এ দীনের সমস্ত ফকিহগণ একমত। আকিদা হচ্ছে কোনো বস্তু বা বিষয় সম্পর্কে সঠিক ও সম্যক ধারণা। এই ধারণাটি আগে সঠিক করে নিতে হবে, তারপরে ঈমান ও আমলের প্রশ্ন। আল্লাহর দীন প্রতিষ্ঠার সঠিক পথ কী, এ বিষয়টি সম্পর্কে যদি মানুষের সঠিক আকিদা না থাকে, তাহলে এই কাজ করতে গিয়ে ভুল পথে পা বাড়ানো বিচিত্র কিছু নয়। কেউ আসল নোট না চিনলে তাকে জাল নোট ধরিয়ে দেওয়া সোজা। কাজেই যারা আল্লাহর দীন প্রতিষ্ঠা করতে চান, তারা যে এ বিষয়ে ইসলামের প্রকৃত ধারণা বা আকিদা জানতে পারে সেটা নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় ধর্মের নামে ব্যবসা, জেহাদের নামে সন্ত্রাস, হেকমতের নামে প্রতারণা, একামতে দীনের নামে অপরাজনীতি, সুন্নাতের নামে দাড়ি-টুপি-মেসওয়াক, এবাদতের নামে আনুষ্ঠানিকতা, ধর্মের নামে কুসংস্কার, ঈমানের নামে অন্ধবিশ্বাস, শরিয়তের নামে ফতোয়াবাজি চলতেই থাকবে।