হেযবুত তওহীদ

মানবতার কল্যাণে নিবেদিত

জনতার প্রশ্ন আমাদের উত্তর

সমগ্র বাংলাদেশে ব্যাপকভাবে আলোচিত আন্দোলন হেযবুত তওহীদের আকিদা ও কার্যক্রম সম্পর্কে মানুষের মনে কৌতূহল রয়েছে। সাধারণত যে সব প্রশ্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে করা হচ্ছে সেগুলোর জবাব নিয়ে এই আয়োজন। জবাব দিয়েছেন হেযবুত তওহীদের মুখপাত্র মো. মশিউর রহমান।

জনতার প্রশ্ন: বাংলাদেশে এত দল থাকতে হেযবুত তওহীদ নামে আরেকটি নতুন দল গঠনের প্রয়োজন হলো কেন?

আমাদের উত্তর: প্রথমত, হেযবুত তওহীদ ইসলামের মধ্যে বিভক্তি দলাদলির বিরুদ্ধে। অনেকে বলে থাকে, ইসলামের মধ্যে বহু দল বহু নেতা থাকতে পারে, কিন্তু মৌলিক বিশ্বাসের ক্ষেত্রে যেমন আল্লাহর প্রতি ঈমান, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, রমজানের রোজা ইত্যাদি বিষয়ে তো আমরা সবাই একমত। এই কথা বলে তারা বিভিন্ন ইস্যুভিত্তিক আন্দোলন ও নির্বাচনকালীন জোট গঠন করেন। আমরা হেযবুত তওহীদ এই কথার সঙ্গে একমত নই। আমাদের সোজা কথা- আল্লাহ এক, রসুল (সা.) এক, কোর’আন এক; সুতরাং জাতিও হবে একটি। সেই জাতির নাম উম্মতে মোহাম্মদী। সেই জাতির নেতা, ইমাম হবে একজন। সকলে তাঁর আনুগত্য করবে। ১৪০০ বছর পূর্বে আল্লাহর নবী হযরত মোহাম্মদ (সা.) তওহীদের ভিত্তিতে মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে এই জাতি গঠন করেছিলেন। তাদের কেবলা ছিল একটি, জীবনবিধান বা দীনও ছিল একটি। রসুল চলে যাওয়ার পর পুরো জাতির ইমাম বা খলিফা হয়েছেন আবু বকর (রা.), তারপরে উমর (রা.), তারপরে উসমান (রা.), তারপরে আলি (রা.)। অর্থাৎ একজন মাত্র ইমাম ছিল জাতির। তারপরে যখন জাতির মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি হয়েছে, জাতি ধীরে ধীরে পথ হারিয়েছে, ধ্বংসের দিকে গেছে। সেই বিভক্তি আমাদের উদাহরণ নয়, আমাদের উদাহরণ আল্লাহর রসুল কী শিক্ষার উপর জাতিকে রেখে গেছেন সেটা। সুতরাং ইসলামের মধ্যে একাধিক দল সৃষ্টির বিন্দুমাত্র সুযোগ নেই। কিন্তু কালের পরিক্রমায় এই জাতি ছোটখাটো বিষয় নিয়ে মতভেদ করে শত শত ফেরকা মাজহাবে বিভক্ত হয়েছে, তারা একমাত্র আল্লাহর হুকুম থেকে সরে গিয়ে মানুষের তৈরি হুকুম বিধানের অধীনে শত শত বছর পার করে দিচ্ছে। ফলে সমগ্র পৃথিবীতে আজকে মুসলিম জাতি পরাজিত, লাঞ্ছিত, অপমানিত।

শতধাবিভক্ত বিচ্ছিন্ন বিক্ষিপ্ত এই মুসলিম জনসংখ্যাকে ঐক্যবদ্ধ করার একটিমাত্র ঐক্যসূত্র আছে। তা হলো লা- ইলাহা ইল্লাল্লাহ, মোহাম্মাদুর রসুলাল্লাহ অর্থাৎ এক আল্লাহর সার্বভৌমত্বের ঘোষণা। এই ঘোষণার মানে হল, জীবনের যে কোনো অঙ্গনে যেখানে আল্লাহর কোনো কথা আছে, রসুলের কোনো আদর্শ আছে সেখানে আর কারো কোনো কথা মানি না। সকল ফেরকা, তরিকা, মাজহাবের মুসলমানদেরকে এই তওহীদের ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য আহ্বান করছে হেযবুত তওহীদ। এটি ইসলামের মধ্যে নতুন কোনো দল নয়, বরং সকল প্রকার বিভক্তির অবসান ঘটিয়ে আল্লাহর তওহীদের ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার একটি প্লাটফর্ম হচ্ছে হেযবুত তওহীদ। এই নামটি দেওয়া হয়েছে যেন সবাই আমাদেরকে আলাদা করে চিনতে পারে। হেযব শব্দের অর্থ দল বা সংগঠন ও তওহীদ হলো আল্লাহর সার্বভৌমত্ব। আল্লাহর রসুল যেভাবে মানবজাতিকে তওহীদের দিকে আহ্বান করেছেন এবং উম্মাহ গঠন করেছেন, আমরাও তাঁর পদাঙ্ক অনুসরণ করে মানুষকে তওহীদের দিকে আহ্বান করে যাচ্ছি।

ভারতের কেরালা রাজ্যের জামিদা বিবি নামক একজন মহিলা ইমাম জুমার নামাজে ইমামতি করেন। এই ছবি এডিট করে হেযবুত তওহীদের নামে চালিয়ে দিয়ে ব্যাপক অপপ্রচার করা হয়। ছবিটি দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকায় ৩০ জানুয়ারি, ২০১৮ তারিখে প্রকাশিত হয়।

জনতার প্রশ্ন: হেযবুত তওহীদে নাকি মেয়েরা ইমামতি করে আর ছেলেরা তাদের পেছনে নামাজ পড়ে?

আমাদের উত্তর: এটি একটি অপপ্রচার ও জালিয়াতি, যা হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে একটি শ্রেণির ধর্মব্যবসায়ী দ্বারা চালানো হয়েছে। তারা বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে মিথ্যা অপপ্রচার ছড়িয়ে আমাদের সম্পর্কে ভুল ধারণা তৈরি করতে চেয়েছে। যেমন, কয়েক বছর আগে একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছিল, যেখানে এক নারীর ইমামতিতে পুরুষ মুসুল্লীদের নামাজ পড়তে দেখা যায়। কিন্তু জালিয়াত চক্র ষড়যন্ত্র করে সেই ছবির মধ্যে এক মুসুল্লীর চেহারা এডিট করে হেযবুত তওহীদের এমামের চেহারা বসিয়ে দেয়। সেই ছবি ধর্মব্যবসায়ী গোষ্ঠীটি ভাইরাল করে যা দেখে অনেকেই মনে করে যে হেযবুত তওহীদে মনে হয় মেয়েদের ইমামতিতে ছেলেরা নামাজ পড়ে। এমনকি আমরা প্রশাসনে কর্মরত অনেক উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিকে দেখেছি এই অপপ্রচারে প্রভাবিত হয়ে তারা হেযবুত তওহীদ সম্পর্কে জানার আগ্রহই হারিয়ে ফেলেছেন।

প্রকৃত সত্য হল, ভারতের কেরালা রাজ্যে এমন একটি ঘটনা ঘটে। একটি জামাতে ছেলেদের সামনে একজন নারীকে ইমামতি করতে দেখা যায়। এর ভিডিওটিও অনলাইনে পাওয়া যায়। ২০১৮ সালের ৩০ জানুয়ারি যুক্তরাজ্যের বিখ্যাত সংবাদপত্র ‘দ্যা গার্ডিয়ান’- এ ঘটনাটি প্রকাশিত হয়েছিল। আমরা দেখেছি এই একই ছবি ব্যবহার করে আরো কোনো গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হয়েছে। আমরা সংবাদ সম্মেলন করে ধর্মব্যবসায়ী গোষ্ঠীর এই জালিয়াতিসহ আরো অনেক জালিয়াতির প্রমাণ গণমাধ্যমের সামনে তুলে ধরেছি। সম্প্রতি, বাংলাদেশের একটি ফ্যাক্টচেক প্রতিষ্ঠান ‘রিউমার স্ক্যানার বাংলাদেশ’ এই ঘটনা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যেখানে তারা জানিয়েছে, কেরালা রাজ্যের ঘটনা বাংলাদেশের ঘটনা হিসেবে প্রচার করা বিভ্রান্তমূলক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার।

তাই আমি বাংলাদেশের সচেতন নাগরিকদের অনুরোধ করব, আপনারা হেযবুত তওহীদ সম্পর্কে যেকোনো বিভ্রান্তিমূলক তথ্য পেলে সরাসরি আমাদের জানাবেন। আমরা তার সঠিক জবাব দেব। আমরা যদি কোনো ভুল করি, তবে অবশ্যই ক্ষমা প্রার্থনা করব। কিন্তু যেটা আমরা করি না, যেটা আমাদের কাজ নয়, যেটা আমাদের আদর্শ নয়, সেসব বিষয় আমাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া ঠিক নয় -এটা অন্যায় এবং বেআইনী। সুতরাং, যে কোনো তথ্য পেলে আগে সেটি যাচাই-বাছাই করা উচিত। [হেযবুত তওহীদের সঙ্গে যোগাযোগ: ০১৭১১০০৫০২৫, ০১৭১১৫৭১৫৮১, ০১৭১১২৩০৯৭৫]

সার্চ করুন

যুক্ত হোন আমাদের ফেসবুক পেজের সাথে...