আমার মহামান্য পিতার নাম মো: বায়াজীদ খান পন্নী। টাঙ্গাইলের ঐতিহ্যবাহী পন্নী পরিবারের নাম জানে না অত্র অঞ্চলে এমন লোক কমই ছিল। যা হোক, আমি সেদিকে যাচ্ছি না। আমি আমার ভাই-বোনদের মধ্যে সবার ছোট। বাবা আদর করে আমার নাম রেখেছেন রুফায়দাহ (মহানবীর একজন নারী সাহাবীর নাম, যিনি একটা সামরিক হাসপাতালের দায়িত্বশীল ছিলেন), নানী রেখেছেন শাহানা। আমি আমার বাবার রেখে যাওয়া আদর্শকে বুকে ধারণ করে মানবতার মুক্তির জন্য, মানবজাতির শান্তির জন্য সেই আদর্শকে মানুষের সামনে তুলে ধরার জন্যই নিজেকে নিয়োজিত করেছি। সেই সূত্রেই দৈনিক দেশেরপত্রের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। এই হল আমার ব্যাপারে দু’টি কথা। কিন্তু হতবাক করার কথা হল, এ দেশের প্রথম সারির একটি পত্রিকা দৈনিক দেশেরপত্রের বিরুদ্ধে লিখতে যেয়ে সম্প্রতি প্রকাশিত একটি বিভ্রান্তিকর প্রতিবেদনে আমার বাবার নামই পরিবর্তন করে দিয়েছে অর্থাৎ আমার বাবা নাকি হুমায়ুন খান পন্নী (হায়রে সাংবাদিকতা! হায়রে মিথ্যাচার!)। এটা কোন ধরনের সাংবাদিকতা? মিথ্যাচারের সীমা থাকে, বানোয়াট গল্পেরও একটা সীমা থাকা দরকার। মুদ্রণজনিত ভুল আমার পত্রিকাতেও হয়, আমি তার ঊর্ধ্বে নই। কিন্তু তাদের এই ধরনের সংবাদ মোটেও মুদ্রণজনিত নয়, এটা ডাহা ষড়যন্ত্র, শুধুই মানুষকে বিভ্রান্ত করা। মূলত হুমায়ুন খান পন্নী সাহেব ছিলেন জাতীয় সংসদের সাবেক ডেপুটি স্পিকার, সম্পর্কে আমার চাচা। যদিও তাদের এই ধরনের আচরণ নতুন নয়। শুধু তাই নয়, এর আগেও এক পত্রিকার প্রতিবেদনে আমার বাবার নাম ‘জুনায়েদ খান পন্নী’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল। অর্থাৎ আমার বাবার নামই পাল্টে দেয়া হয়েছিল। এসব হলুদ সংবাদিকদের দ্বারা সবই সম্ভব। যারা দিনকে রাত, তিলকে তাল করে। তাদের পক্ষে বাবাকে চাচা, চাচাকে বাবা অথবা নামই বিকৃত করে ফেলা অস্বাভাবিক কিছু নয়। আমরা সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছি, যার প্রেক্ষিতে আমার বাবা এমামুযযামান মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নী কিভাবে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ দমন করা যায় সেই ব্যাপারে পরামর্শ দিয়ে এবং সহযোগিতা দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে ২০০৯ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি প্রেরণ করেন। অথচ আমাদের নামের পিছনেই ‘জঙ্গি’ ট্যাগ লাগিয়ে মানুষের মাঝে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে চেষ্টার কোন কমতি করছে না এই শ্রেণির কিছু মিডিয়া।
যারা সত্যের ঘোর বিরোধিতা করতে দিনকে রাত এবং রাতকে দিন বানানোর জন্য সর্বান্তকরণে চেষ্টা করে যাচ্ছে, জাতির প্রতি তাদের দায়বদ্ধতা কতটুকু? এইসব তথ্যসন্ত্রাসীদের বলব, অনেক হয়েছে, এবার থামুন। কারও বিষয়ে যদি না জানেন তাহলে তার বিষয়ে লেখার আগে যথেষ্ট তথ্য সংগ্রহ করুন এবং তার পরে কলম ধরুন। শুধু এইটুকু বলতে পারি একটা কথা জেনে রাখুন, আমার পিতা যে সময় এ দেশে রাজনীতি করেছেন সেই সময়ে আজকের রাজনীতিবিদদের অনেকের জন্মও হয় নি। তিনি তখন দেশের বাইরে থেকে পত্রিকা এনে পড়তেন। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায়, জার্নালে তাঁর প্রবন্ধ নিবন্ধ প্রকাশিত হতো। সাড়া জাগানো বহু বই তিনি লিখেছেন। কোনদিন তাঁকে কারো ব্যক্তিত্ব নিয়ে একটা আঁচড় দিতে দেখিনি। এমনকি তাঁর লেখায় কোন তথ্যবিভ্রাট চোখে পড়েনি। আমরাও পারিবারিকভাবে সেই শিক্ষা পাইনি। আজকে যারা সাংবাদিকতা করে বেড়াচ্ছেন তাদেরও অনেকের তখন জন্ম হয় নাই। সুতরাং কার ব্যাপারে লিখবেন বা কি লিখছেন তা আগে হিসাব করুন। তারপর যা সত্য তাই লিখুন। আপনারা যা লিখেছেন তা তো তথ্য সন্ত্রাস। এই ধরনের তথ্য সন্ত্রাসের বেড়াজালে পড়েই সাধারণ মানুষ গণমাধ্যমের প্রতি আস্থা হারিয়েছে। কোন সংবাদ সত্য, আর কোনটা মিথ্যা এটা বোঝাই মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছে। কাজেই তাদের উচিৎ আমাদের সম্পর্কে আগে জানা তারপর লেখা।
আমি ইচ্ছে করলে এইসব অজ্ঞদের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারি। কিন্তু আজকাল আমাদের দেশে কারো যথেষ্ট ক্ষমতা না থাকলে এসকল সাংবাদিকদের কিছু করা যায় না। এজন্যই বোধহয় এরা এত বেপরোয়া। কারো মানহানি করতে এদের কলম কাঁপে না। কারণ, একটা কথা আছে যাদের নিজের ইজ্জত আছে তারাই পারে অন্যের ইজ্জত দিতে। তবে তাদের এই ধরনের বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার উদ্দেশ্য কি তা পরবর্তীতে প্রকাশ করার ইচ্ছা রইল।