হেযবুত তওহীদ

মানবতার কল্যাণে নিবেদিত

এক জাতি গড়ার চিরন্তন সূত্র

এম. আমিনুল এসলাম:
বর্তমান পৃথিবী এবং আমাদের এই জাতি স্রষ্টার দেওয়া জীবনব্যবস্থা বাদ দিয়ে পশ্চিমা বিশ্বের চাপিয়ে দেওয়া জীবনব্যবস্থা দিয়ে নিজেদের জীবন পরিচালনা কোরছে। পশ্চিমা বিশ্বের সেই মতবাদগুলির দ্বারা এই বাংলাদেশের ষোল কোটি মানুষও শত শত দলে-উপদলে বিভক্ত, খণ্ড-বিখণ্ড হোয়ে গেছে। প্রত্যেক দলই নিজেদের মতামতকে প্রতিষ্ঠিত কোরতে বদ্ধপরিকর। ফলে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব একটি স্থায়ী রূপ লাভ কোরেছে। এই দ্বন্দ্ব মেটাতে, সহিংসতা রোধ করণার্থে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গলদঘর্ম হোচ্ছে। মানবাধিকার সংস্থা, এন.জি.ও.- ইত্যাদি বহু সামাজিক প্রতিষ্ঠান সভা-সমিতি, সেমিনারের মাধ্যমে শান্তির জন্য বহু ওয়াজ নসিহত কোরছে। সুশীল সমাজের ধ্বজাধারীরাও চান শান্তি। যেসব পরাশক্তিধর রাষ্ট্রগুলি সারা পৃথিবীতে এই অশান্তির দাবানল জ্বালিয়ে রেখেছে সেসব দেশের কর্ণধারেরাও নাকি শান্তি চান। মসজিদ, মন্দির, খানকা, প্যাগোডা, গীর্জা, সিনাগগে শান্তির জন্য চোলছে বিশেষ মোনাজাত। পৃথিবীজুড়ে রব উঠেছে–শান্তি চাই, শান্তি চাই। কিন্তু এই শান্তির শুকপাখি তাদের অধরাই থেকে যাচ্ছে। এই শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য বিভিন্ন দল সরকারের কাছে নিজেদের মনগড়া দাবি-দাওয়া পেশ কোরছে। তাদের দফাওয়ারী দাবি পূরণের জন্য সভা সেমিনার মিটিং, মিছিল, অগ্নিসংযোগ, ভাংচুর, জ্বালাও- পোড়াও ইত্যাদি ধ্বংসাত্মক কার্যাবলী কোরতেও তারা দ্বিধা কোরছে না। ধর্মীয় দলগুলিও বিভিন্ন দফা দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলন কোরে যাচ্ছে যেমন ৫ দফা, কারো ৬ দফা, কারো ১০ দফা কারো বা ১৩ দফা। তারা কেউই আল্লাহর দেওয়া কর্মসূচি অনুযায়ী আন্দোলন কোরছে না, সেক্যুলার রাজনৈতিক দলগুলির মতোই তাদেরও কর্মসূচি হোচ্ছে অগ্নিসংযোগ, ভাংচুর, জ্বালাও- পোড়াও, হরতাল, অবরোধ ইত্যাদি।
শান্তির একপথ, অশান্তির বহুপথ
মহান আল্লাহ যখন আদমকে (আ:) পৃথিবীতে প্রেরণ কোরলেন খেলাফত দিলেন তখন পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য তৎকালীন মানবজাতির কাছে দফা উপস্থাপন কোরেছেন একটি- “লা এলাহা এল্লাল্লাহ আদম শফিউল্লাহ অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া কোন হুকুমদাতা নেই এবং আদম আল্লাহর প্রেরিত নিরাময়কারী”। পাপাচারে পূর্ণ পৃথিবীবাসীকে আল্লাহ যখন প্রায় সম্পূর্ণভাবে পানিতে ডুবিয়ে ধ্বংস কোরেছিলেন তখনও তাদের আল্লাহর দাবি ছিলো একটা, “লা এলাহা এল্লাল্লাহ নূহ নবীউল্লাহ”। এবরাহীমেরও (আ:) আহ্বান ছিলো, “লা এলাহা এল্লাল্লাহ এবরাহীম খলিলুল্লাহ।” আল্লাহর শেষ নবী শ্রেষ্ঠনবীকে যখন সমগ্র বিশ্বের জন্য রহমতস্বরূপ আল্লাহ প্রেরণ করেন তখনও এই বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার দফা দিয়েছেন একটি, “লা এলাহা এল্লাল্লাহ মোহাম্মাদুর রসুলাল্লাহ (দ:)।” তিনিও আহ্বান জানিয়েছেন সেই একদফার উপর মানবজাতিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার, বোলেছেন, “কুল লা এলাহা এল্লাল্লাহ, তুফলেহুন, বলো আল্লাহ ছাড়া কোন হুকুমদাতা নেই, তাহোলেই তোমরা সফল হবে।” মক্কার ১৩ বছরের জীবনে অসহনীয় অন্যায় অত্যাচার জুলুম নির্যাতন সহ্য কোরেছেন এই একদফা শান্তির বাণী প্রচারে। মদিনার ১০ বছর জীবনে তিনি নিরবচ্ছিন্ন চেষ্টা প্রচেষ্টা কোরেছেন আল্লাহর দেওয়া কর্মসূচি প্রয়োগ কোরে একদফা প্রতিষ্ঠা কোরতে এবং আরব উপদ্বীপে প্রতিষ্ঠা কোরেছেনও। এই একদফা প্রতিষ্ঠায় তিনি সমস্ত মানবজাতির বিরুদ্ধে সংগ্রামে অবতীর্ণ হোতে আল্লাহ কর্তৃক নির্দেশপ্রাপ্ত হোয়েছিলেন। তাঁর শিক্ষায় শিক্ষিত আসহাবগণ তাই তাদের সহায় সম্পত্তি, স্ত্রী পুত্র, বাড়ি ঘর, ক্ষেত খামার ইত্যাদির মায়া ত্যাগ কোরে পৃথিবীর পানে বের হোয়েছিলেন সনাতন, চিরাচরিত সেই একদফা প্রতিষ্ঠা কোরতে। এবং তারা সেটিকে অর্ধ দুনিয়ায় প্রতিষ্ঠাও কোরছিলেন।
যখনই শেষনবীর অনুসারীরা তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পরিত্যাগ কোরল এবং তাঁর আসহাবদের প্রতিষ্ঠিত অর্ধ পৃথিবীতে পরবর্তী শাসকরা রাজা বাদশাহদের মতো শান-শওকতের রাজত্ব কোরতে থাকলো। তাদের জেহাদ পরিণত হোল সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসনে এবং অন্তর্কলহে। এই জেহাদ ত্যাগের পরিণতিতে আল্লাহ তাদেরকে তাদের হাতে একদা পরাজিত খ্রিস্টান জাতিগুলির দাস বানিয়ে দিলেন। এখনও তারা সেই দাসই রোয়েছে। সেই দাসেরা এখন শত শত ফেরকায় বিভক্ত আর লক্ষ লক্ষ মাসলা মাসায়েল নিয়ে কুটতর্কে লিপ্ত। নিজেরা নিজেরা যুদ্ধ রক্তপাতে নিপতিত। অন্যায় অত্যাচার অশান্তি নিরাপত্তাহীনতা তাদের উপর চেপে বোসে রোয়েছে। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে অবস্থিত এই নির্যাতিত জাতির নারী ও শিশুরা একজন উদ্ধারকর্তার আশা আকাক্সক্ষায় ক্রন্দনরত।
যামানার এমামের মাধ্যমে সেই এক দফার পুনরাবির্ভাব
মিসরের জালেম সম্রাটের অধীনে দুর্দশাগ্রস্ত জাতি বনী এসরাইলকে উদ্ধার কোরতে মহান আল্লাহ সেই একদফা দিয়ে মুসাকে (আ:) প্রেরণ কোরছিলেন, সেই জাতি যখনই মুসার (আ:) শিক্ষার বাহ্যিক দিকটা রেখে আত্মার দিকটা হারিয়ে ফেলেছিলো তখন আল্লাহ তাদের আত্মা ফিরিয়ে দেওয়ার মানসে ঈসা (আ:) কে প্রেরণ কোরেছেন। তেমনি আইয়ামে জাহেলিয়াতের অন্ধকার থেকে মুক্তি দিয়ে আলোর দিকে নিয়ে আসার জন্য মহান আল্লাহ এই ঐতিহাসিক একদফা দিয়ে শেষ নবী মোহাম্মদকে (দ:) প্রেরণ কোরেছেন। উম্মতে মোহাম্মদীও যখন তাঁর শিক্ষাকে বাহ্যিকভাবে বই পুস্তকে সীমাবদ্ধ রেখে আত্মা হারিয়ে ফেলেছে ঠিক তেমনি মুহূর্তে মহান আল্লাহ অতীব দয়া কোরে এই জাতির উদ্ধারকর্তারূপে এই জাতিকে তাঁর নবীর শিক্ষার আত্মা ফিরিয়ে দিতে এ যামানার এমাম জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নীকে মনোনীত কোরেছেন।
তাঁর প্রতিষ্ঠা করা আন্দোলন হেযবুত তওহীদ গত ১৮ বছর ধোরে চলমান অন্যায় অত্যাচার জুলুম নির্যাতন অশান্তি ও নিরাপত্তাহীনতায় নিপতিত এই জাতিকে আল্লাহ প্রদত্ত সেই ঐতিহাসিক একদফার দিকেই আহ্বান কোরে যাচ্ছে। এই এক দফা মেনে নিলে জাতি কেমন স্বাধীনতা, শান্তি, উন্নতি, প্রগতি, সমৃদ্ধি ও নিরাপত্তায় বসবাস কোরতে পারবে তার রূপরেখাও আল্লাহ যামানার এমামকে দান কোরেছেন। সেই রূপরেখাও হেযবুত তওহীদ এ জাতির সামনে তুলে ধোরছে।
এখন আমাদের এই জাতির মুক্তির একটাই পথ, আল্লাহর নির্ধারিত সেই আদি-শাশ্বত-সনাতন একদফা অর্থাৎ “আল্লাহ ছাড়া আর কারো বিধান মানি না” এই বাক্যের উপর ঐক্যবদ্ধ হওয়া। তবেই আমরা ফিরে পাবো আমাদের হারানো গৌরব। আমরাই হোতে পারবো পৃথিবীর শ্রেষ্ঠজাতি। অশিক্ষা, কুশিক্ষা, দারিদ্রতা, হীনতা, হতাশা, নিরাশার অন্ধকার থেকে মুক্ত হোয়ে উন্নতি, প্রগতি, সমৃদ্ধির মাঝে বড় হবে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম।

লেখাটি শেয়ার করুন আপনার প্রিয়জনের সাথে

Email
Facebook
Twitter
Skype
WhatsApp
সার্চ করুন

যুক্ত হোন আমাদের ফেসবুক পেজের সাথে...