মানুষ শুধু দেহসর্বস্ব প্রাণী নয়, তার একটি আত্মাও আছে। সেই আত্মা হলো আল্লাহর রূহ। অর্থাৎ মানুষ দেহ ও আত্মার সমন্বয়ে ভারসাম্যপূর্ণ সামাজিক জীব। মানুষ নামক এই জীবের জীবনকে সুখকর, শান্তিময় ও শৃঙ্খলাপূর্ণ করার জন্য এমন একটি জীবনব্যবস্থা দরকার, যে জীবনব্যবস্থাটাও শরীয়াহ ও আধ্যাত্মিকতার সমন্বয়ে ভারসাম্যপূর্ণ হবে। যেখানে শরীয়াহগতভাবে অন্যায়ের শাস্তি যেমন থাকবে তেমনি অন্যায় না করার জন্য আত্মিক প্রশিক্ষণ তথা ন্যায়নীতিবোধ, পারলৌকিক মুক্তির চিন্তা, স্রষ্টার প্রতি পূর্ণ আনুগত্যবোধ ইত্যাদি সৃষ্টির প্রক্রিয়াও থাকতে হবে। সমগ্র মানবজাতিকে একটি জাতিতে পরিণত করার জন্য, সমস্ত পৃথিবীকে ন্যায়, সুবিচার ও শান্তিতে পরিপূর্ণ করার জন্য যে দীনটি আল্লাহ পাঠিয়েছেন, সেই দীনটি প্রাকৃতিক নিয়মের উপরে, আমাদের দেহ ও আত্মার সমন্বয়ে ভারসাম্যপূর্ণ একটি ব্যবস্থা। স্রষ্টার দেওয়া ব্যবস্থাতে উপরোক্ত দু’টি দিকই আছে, ভারসাম্যপূর্ণভাবে। ১৪০০ বছর আগে যেটা অর্ধ পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠিত হবার ফলে মানুষ দেখেছিল শান্তি ও পূর্ণ নিরাপত্তার দৃষ্টান্ত। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে যখন এই জাতির একটি বিশেষ শ্রেণি তাদের নিজ স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য এর ভারসাম্য বিনষ্ট কোরল এবং ক্রমে ক্রমে এটি প্রত্যাখ্যান কোরল তখন থেকে সমাজে সৃষ্টি হলো অন্যায়, অবিচার, শোষণ, বঞ্চনা এক কথায় চরম অশান্তি। এক পর্যায়ে মানুষ নিজেই তার জীবনব্যবস্থা তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিলো, জন্ম হলো দাজ্জালের। দাজ্জাল গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, রাজতন্ত্র, একনায়কতন্ত্র ইত্যাদির নামে এমন ভারসাম্যহীন জীবনব্যবস্থা কায়েম কোরল যেখানে মানুষের আত্মিক ভাগটা সম্পূর্ণ অনুপস্থিত। অপরাধ দমনের জন্য শাস্তির বিধান থাকলেও অপরাধ না করার জন্য যে আত্মিক প্রশিক্ষণ দরকার অর্থাৎ স্রষ্টার প্রতি ভালোবাসা, আনুগত্যবোধ, ভীতি কিছুই সেখানে রোইল না; এই ব্যবস্থাটি হলো সম্পূর্ণ স্রষ্টাহীন, আত্মাহীন, জড়বাদী, ভোগবিলাসী এক সভ্যতা যার মূলনীতিই হলো খাও-দাও ফূর্তি করো। মানুষ ধীরে ধীরে আত্মাহীন হয়ে পোড়ল। আত্মাই যখন অনুপস্থিত সুতরাং মানুষের ভেতরে আত্মা থেকে সৃষ্ট- দয়া-মায়া, সৃষ্টির প্রতি ভালোবাসা, সহমর্মিতা, পারস্পরিক সহযোগিতা, ন্যায়নীতিবোধ, সততা, সত্যবাদিতা, বিবেক, ঐক্য, শৃঙ্খলাবোধ ইত্যাদি সৎগুণাবলীও অনুপস্থিত হতে লাগলো। ফলে সমাজে সৃষ্টি হলো চরম অরাজকতা, অন্যায়, অশান্তি। তারা সম্মিলিতভাবে স্রষ্টার এই দুনিয়াটাকে সাক্ষাৎ এক নরকপূরীতে পরিণত করেছে। এখন শুধুমাত্র আইন প্রয়োগ করে, শাস্তির বিধান তৈরি করে আর সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে না। আগুনের মধ্যে লাফ দিলে আগুন আপনাকে দগ্ধ করবেই, বাঁচতে হলে আগে আগুন থেকে বের হতে হবে, আগুনের মধ্যে থেকে বাঁচার উপায় খোঁজা নিতান্তই বোকামী। তাই এখন বাঁচতে হলে স্রষ্টা আল্লাহর দেওয়া সেই নিঁখুত জীবনব্যবস্থা (দীন) গ্রহণ করা ছাড়া পথ নেই। সেই নিঁখুত ভারসাম্যপূর্ণ ব্যবস্থা কোথায় পাওয়া যাবে। হেযবুত তওহীদ আল্লাহর রহমে মানবজাতির সামনে এটা উপস্থাপন করছে।
হেযবুত তওহীদ