এনামুল হক বাপ্পা
১৮৯৭ সনে ইহুদিবাদের (Zionism) অনুসারী চক্রান্ত বিশারদ ইহুদি নেতাগণ সারা দুনিয়ায় তাদের আধিপত্য বিস্তারের উদ্দেশ্যে চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রের এক কর্মসূচি বা প্রটোকল চূড়ান্ত করে যে সম্পর্কে বিশ্বরাজনীতি-সচেতন সকলেই জানেন। এই কর্মসূচিগুলিকে একত্রে বই আকারে বলা হয় The Protocols of the Elders of Zion. একথা দৃঢ়তার সঙ্গে বলা যায় যে, পাঠকমাত্রই বইখানা পড়ে বিস্ময়ে হতবাক হতে বাধ্য হবেন এবং ঐ পুস্তকে চক্রান্তজালের যে কর্মসূচি পেশ করা হয়েছে তা পাঠ করার সময় পাঠক অনুভব করতে বাধ্য হবেন যে, তিনি নিজেও এ ষড়যন্ত্রের নাগপাশে আবদ্ধ হয়ে আছেন। গত এক শতকের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে যে, পৃথিবীতে যে কয়টি বড় ধরনের ঘটনা বা দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে, এবং মানবজাতি যেভাবে জীবনব্যবস্থা দ্বারা সৃষ্ট সঙ্কটের জটিল আবর্তে আটকে পড়েছে এর সবই প্রটোকল বইয়ে পূর্ব থেকেই ভবিষ্যদ্বাণীর মতো লিপিবদ্ধ রয়েছে।
ইহুদি শিক্ষিত জ্ঞানী ব্যক্তিরা তাদের প্রটোকলে এতই সুচতুরতা প্রকাশ করেছে যে, তারা গইমদের (অ-ইহুদিদের গইম বলে অভিহিত করা হয়) ‘নির্বোধ’ বলে অভিহিত করে। বইয়ের একটি অধ্যায়ের নামই GENTILES ARE STUPID. কমুনিস্ট আন্দোলনের মূলে যাদের মন-মগজ কাজ করছে তাদের সকলেই ইহুদি। কমুনিজমের জন্মদাতা কার্ল মার্কস মাতাপিতা উভয় দিক থেকেই ইহুদি! লেলিন এবং ট্রটস্কিও ইহুদি বংশেরই সন্তান। লেলিনের দাদা, মা এবং স্ট্যালিনের স্ত্রী ইহুদি ছিলেন।
এখন ইহুদিদের সুদূর প্রসারী শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে একটু বলি। বিশ্বব্যাপী ইহুদিবাদ যাতে করে নির্বিঘেœ পরিচালিত হতে পারে এবং তাদের এই ইহুদিবাদ তত্ত্ব যেন কেউ বুঝতে না পারে আর তাদের অজান্তেই যেন তারা একে সমর্থন করে এই সূত্র মাথায় রেখেই তারা বিশ্বব্যাপী শিক্ষা ব্যবস্থা পরিবর্তন করার জন্য পরিকল্পনা করে। তাদের প্রটোকল পুস্তকের Re-education বা “শিক্ষাব্যবস্থার নতুন রূপ” অধ্যায়ে এই বিষয়ের বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে। আমি উল্লেখযোগ্য কিছু অংশের ভাবানুবাদ তুলে ধরছি।
একমাত্র আমাদের ছাড়া দুনিয়ার যাবতীয় সমষ্টিগত শক্তি বিনষ্ট করার জন্য প্রথমেই আমরা সমষ্টির শিক্ষা যেখান থেকে আরম্ভ অর্থাৎ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে এক নবতর শিক্ষাপদ্ধতির মাধ্যমে বীর্যহীন (Emasculate) করে দেব। এ শিক্ষাগারের সকল অধ্যাপক ও কর্মচারীবৃন্দ একটা বিস্তারিত কার্যসূচী অনুসারে নতুন দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত হবেন। এবং কখনও এক চুল পরিমাণও (Iota) এদিক সেদিক নড়াচড়া করবেন না। বিশেষ সতর্কতার সঙ্গে তাদের নিয়োগ করা হবে এবং তারা সরকারের উপর পরিপূর্ণরূপে নির্ভরশীল হবে।
রাষ্ট্রের প্রচলিত আইন-কানুন ও রাজনীতি সংক্রান্ত অপরাপর প্রয়োজনীয় বিষয়াবলীকে আমরা পাঠ্য তালিকার বহির্ভূত করে দেব। গইমদের বিশ্বজোড়া শিক্ষাব্যবস্থার প্রতি লক্ষ্য করলে তোমরা বুঝতে পারবে যে, রাষ্ট্র সংক্রান্ত ব্যাপারে ভ্রান্ত ধারণার বশবর্তী বিপুল জনতা অবান্তর কল্পনা বিলাসী ও অবাঞ্ছিত নাগরিক (Utopian dreamers and bad subjects) সৃষ্টি করে মাত্র। আমরা ক্ষমতা লাভ করার পর পাঠ্যতালিকা থেকে গোলযোগ সৃষ্টিকারী সকল বিষয় (Disturbing subjects) বাদ দিয়ে দেব এবং যুবসমাজকে শাসন কর্তৃপক্ষের অনুগত সন্তানে পরিণত করবো। আমরা ইতিহাসকে পাল্টে দেব। পূর্ববর্তী শতাব্দীগুলোর যেসব ঘটনা আমাদের জন্য অবাঞ্ছিত সেগুলোর স্মৃতি মানুষের স্মৃতিপট থেকে মুছে দেব। শুধু গইম সরকারের ভুল-ভ্রান্তির ইতিহাস তাদের স্মৃতিপটে জাগ্রত করে রাখার ব্যবস্থা করবো। আমরা শিক্ষা সম্পর্কিত যাবতীয় স্বাধীনতা বিলোপ করে দেব।
এক কথায় আমরা শত শত বছরের অভিজ্ঞতা থেকে জানতে পেরেছি যে, মানুষ কোনো না কোনো খেয়াল বা হুজুগ (Ideas) দ্বারা পরিচালিত হয় ও খেয়ালের নেশায়ই জীবনযাপন করে আর এসব খেয়াল মানুষের মন-মগজে শিক্ষার মাধ্যমেই বদ্ধমূল হয়ে যায়। বিভিন্ন ধরনের বৈচিত্রময় পদ্ধতিতে আমরা মানুষের স্বাধীন চিন্তার শেষ বিন্দুটুকু পর্যন্ত তাদের নিকট থেকে ছিনিয়ে নিয়ে মানুষগুলোকে আমাদের কাজে প্রয়োগ করবো। এটা করার উদ্দেশ্য হলো, গইম সমাজকে চিন্তাশক্তিহীন অনুগত পশুর (Unthinking submissive brutes) স্তরে নামিয়ে আনা যেন তাদের চোখের সামনে কোন কিছু পেশ না করা পর্যন্ত তারা নিজস্ব চিন্তার সাহায্যে কোন ধারণাই পোষণ করতে না পারে।