বিগত তেরশত বছরে ক্রমাগত বিকৃত হোতে হোতে সে ইসলাম বর্তমানে ঠিক এর বিপরীত একটি ধর্ম-বিশ্বাসে রূপান্তরিত হোয়ে গেছে। বাহ্যিক দিক থেকে দেখতে এই ইসলাম আল্লাহ রসুলের ইসলামের মতো হোলেও চরিত্রে, আত্মায় ঠিক এর বিপরীত। শেষ রসুল আনীত প্রকৃত ইসলাম মানুষকে দিয়েছিল সর্বরকম মুক্তি ও স্বাধীনতা, নির্মূল কোরেছিল সমস্ত অন্যায়-অবিচার, সামাজিকভাবে দিয়েছিল পরম নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে দূর কোরেছিল বৈষম্য। কিন্তু বর্তমানে সে ইসলাম আর আমাদের মাঝে নেই। ধর্ম ব্যবসায়ী ও পণ্ডিতদের কবলে পড়ে ইসলাম আজ নামাজ রোজাসর্বস্ব অন্যান্য ধর্মের মতো একটি ধর্মে পরিণত হোয়ে গেছে। সর্বশেষ ব্রিটিশরা তাদের তৈরি মাদ্রাসা শিক্ষার মাধ্যমে এই জাতির মন মগজে এক মৃত ইসলাম গেঁড়ে দিয়ে গেছে। এমতাবস্থায় এই জাতিকে যদি পৃথিবীর বুকে আবার মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে হয়, সম্মান নিয়ে বাঁচতে হয়, শান্তি ও সমৃদ্ধ পৃথিবী পেতে হয় এবং মৃত্যুর পরে জান্নাতে যেতে হয় তাহোলে আল্লাহ ও রসুলের প্রকৃত ইসলাম প্রতিষ্ঠা ছাড়া তাদের সামনে আর কোন পথ অবশিষ্ট নেই। আল্লাহ দয়া কোরে সেই প্রকৃত ইসলাম যামানার এমাম, এমামুযযামান জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নীকে বুঝিয়ে দিয়েছেন। এখন মানবজাতির কর্তব্য হোচ্ছে আল্লাহর দেওয়া সত্য ইসলামটাকে মেনে নেওয়া। এ ছাড়া মানবজাতির সামনে অন্য কোন পথ অবশিষ্ট নেই। এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হোল, আল্লাহর সত্যদীন প্রতিষ্ঠার জন্য আল্লাহর দেওয়া কর্মসূচি অপরিহার্য। একটি জীবনব্যবস্থা দিলেন আল্লাহ আর সেটি প্রতিষ্ঠার কর্মসূচি তৈরি কোরবে মানুষ সেটা কখনওই হোতে পারে না। আল্লাহর রসুল এবং তাঁর উম্মাহ কি অর্ধ-পৃথিবীতে নিজেদের তৈরি কর্মসূচি দিয়ে দীন প্রতিষ্ঠা কোরেছিলেন? নিশ্চয়ই নয়। তাহোলে কোথায় সেই কর্মসূচি? মহান আল্লাহ অসীম করুণা কোরে, ভালবেসে তাঁর নিজের তৈরি করা সেই পবিত্র কর্মসূচি এ যামানার এমামকে নতুন কোরে বুঝিয়ে দিয়েছেন।
আল্লাহ বলেন, ‘আমি আমার রসুলকে সঠিক পথ প্রর্দশন (হেদায়াহ) এবং সত্যদীন দিয়ে প্রেরণ কোরলাম এই জন্যে যে তিনি যেন একে (এই হেদায়াহ ও জীবন ব্যবস্থাকে) পৃথিবীর অন্যান্য সমস্ত জীবন ব্যবস্থার উপর বিজয়ী করেন (কোর’আন-সুরা আল ফাতাহ- ২৮, সুরা আত তওবা- ৩৩ ও সুরা আস সফ- ৯)। অর্থাৎ পৃথিবীতে, মানব জাতির মধ্যে আল্লাহর রসুলকে প্রেরণের উদ্দেশ্য হোচ্ছে রসুলের মাধ্যমে হেদায়াহ, পথ প্রদর্শনসহ দীন পাঠানো এবং সেই হেদায়াহ ও দীনকে সমগ্র মানব জীবনে প্রতিষ্ঠা করা। আল্লাহ তাঁর রসুলকে এই কাজ করার নীতি ও কর্মসূচিও দান কোরলেন। সেই নীতি হোচ্ছে, সংগ্রাম, জেহাদ কোরে এই সত্যদীন প্রতিষ্ঠা কোরতে হবে। আল্লাহর রসুল বোলেছেন- আমি আদিষ্ট হোয়েছি মানব জাতির বিরুদ্ধে সংগ্রাম (কেতাল) চালিয়ে যেতে যে পর্যন্ত না সমস্ত মানুষ আল্লাহকে একমাত্র এলাহ এবং আমাকে তাঁর রসুল বোলে মেনে নেয় (হাদিস- আবদাল্লাহ বিন ওমর (রাঃ) থেকে- বোখারী, মেশকাত)। ইসলামকে পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠা কোরতে আল্লাহ যে নীতি রসুলকে দিয়েছেন সেই নীতির উপর ভিত্তি করা একটি ৫ দফা কর্মসূচি আল্লাহ তাঁর রসুলকে দান কোরলেন। এই ৫ দফা কর্মসূচি তিনি তাঁর উম্মাহর উপর অর্পণ করার সময় বোলছেন এই কর্মসূচি আল্লাহ আমাকে দিয়েছেন, (আমি সারাজীবন এই কর্মসূচি অনুযায়ী সংগ্রাম কোরেছি) এখন এটা তোমাদের হাতে অর্পণ কোরে আমি চোলে যাচ্ছি। সেগুলো হোল :
(১) ঐক্যবদ্ধ হও।
(২) (নেতার আদেশ) শোন।
(৩) (নেতার ঐ আদেশ) পালন করো।
(৪) হেজরত করো।
(৫) (এই দীনুল হক কে পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠার জন্য) আল্লাহর রাস্তায় জেহাদ করো।
যে ব্যক্তি (কর্মসূচির) এই ঐক্যবন্ধনী থেকে এক বিঘত পরিমাণও বহির্গত হোল, সে নিশ্চয় তার গলা থেকে ইসলামের রজ্জু (বন্ধন) খুলে ফেললো- যদি না সে আবার ফিরে আসে (তওবা করে) এবং যে ব্যক্তি অজ্ঞানতার যুগের (কোনও কিছুর) দিকে আহ্বান কোরল, সে নিজেকে মোসলেম বোলে বিশ্বাস কোরলেও, নামাজ পোড়লেও এবং রোজা রাখলেও নিশ্চয়ই সে জাহান্নামের জ্বালানী পাথর হবে [আল হারিস আল আশয়ারী (রাঃ) থেকে আহমদ, তিরমিযি, বাব উল এমারাত, মেশকাত]।
দুর্ভাগ্যবশতঃ বিশ্বনবীর ওফাতের ৬০/৭০ বৎসর পর এবলিস এই উম্মাহর আকিদায় বিকৃতি ঢুকিয়ে দিতে সমর্থ হোল। যার ফলে এই জাতি আল্লাহর রাস্তায় জেহাদ ও ঐ ৫ দফা কর্মসূচি দু’টোই ত্যাগ কোরে ইসলাম ও উম্মতে মোহাম্মদী দু’টো থেকেই বহি®কৃত হোয়ে গেল। সেই থেকে এই কর্মসূচি যে পরিত্যক্ত হোয়েছিলো এই তেরশ’ বছর ওটা পরিত্যক্ত হোয়েই ছিলো। হাদিসের বইগুলিতে কর্মসূচির ঐ হাদিসটি যথাস্থানেই আছে। এই তেরশ’ বছরে এটি লক্ষ-কোটিবার পড়া হোয়েছে, পোড়েছেন লক্ষ লক্ষ আলেম, ফকিহ, মোফাসসের, মোহাদ্দেস, শায়েখ, দরবেশরা, কিন্তু বোঝেন নি যে এটি এই উম্মাহর জন্য স্রষ্টার দেয়া একমাত্র কর্মসূচি-তরিকা। গত কয়েক শতাব্দীতে এই দীনকে পুনরুজ্জীবিত করার প্রচেষ্টায় বিভিন্ন মোসলেম দেশগুলিতে শত শত দল, আন্দোলন, সংগঠন করা হোয়েছে, কিন্তু আকিদার বিকৃতির কারণে আল্লাহ তাদেরকে ঐ কর্মসূচি বুঝতে দেন নি। ফলে ঐ সব সংগঠনগুলি বিভিন্ন রকমের ও বিভিন্ন দফার কর্মসূচি নিজেরা তৈরি কোরে নিয়েছে। কোথাও কেউ সাফল্য লাভ করে নি, পৃথিবীর এক ইঞ্চি জমিতেও তারা ইসলামকে প্রতিষ্ঠা কোরতে পারেন নি। কারণ সবগুলোরই কর্মসূচি মানুষের মস্তিষ্ক প্রসূত, আল্লাহর দেয়া নয়। ফলে তাদের ঐ প্রচেষ্টায় আল্লাহর কোন সাহায্য আসে নি।
প্রথম দায়িত্ব – ঐক্যবদ্ধ হওয়া।
কারণ ঐক্য ছাড়া কোন অভীষ্ট, কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব নয়। কোন জাতি বা রাষ্ট্র যদি ধনবলে, লোকবলে, সামরিক বলে যতোই শক্তিশালী হোক সেটা তার অভীষ্ট কাজে সক্ষম হবে না, তারচেয়ে অনেক দুর্বল ঐক্যবদ্ধ শত্র“র কাছেও পরাজিত হবে। যেমন বর্তমান মোসলেম নামক জনসংখ্যা। এ জন্যই আল্লাহ তাঁর কোর’আনে বারবার সুদৃঢ় ঐক্যের কথা বোলেছেন, সুরা আল এমরানের ১০৩ নং আয়াতে বোলেছেন- ঐক্যবদ্ধ হোয়ে আল্লাহর রজ্জু (হেদায়াহ, দীন) ধোরে রাখতে, বিচ্ছিন্ন না হোতে; সুরা সফ-এর ৪ নং আয়াতে আবার বোলেছেন, ‘আল্লাহ তাদেরকে কতই ভালোবাসেন যারা গলিত সীসার প্রাচীরের মত ঐক্যবদ্ধ হোয়ে আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধ করে। যে সব কাজে ও কথায় উম্মাহর ঐক্য নষ্ট হবার সম্ভাবনা আছে যেমন মতভেদ, গীবত ইত্যাদি সে সব কাজকে আল্লাহর রসুল সরাসরি কুফর বোলে আখ্যায়িত কোরেছেন। বর্তমানে ১৫০ কোটির মোসলেম নামধারী জনসংখ্যাটি বহু ভৌগোলিক রাষ্ট্রে, রাজনৈতিকভাবে বহু মতাদর্শে বিভক্ত। ধর্মীয়ভাবে বহু ফেরকা, মাজহাব, আধ্যাত্মিকভাবে শত শত তরিকায় ছিন্নভিন্ন। আজ একমাত্র হেযবুত তওহীদ এই শতধাবিচ্ছিন্ন মানবজাতিকে আল্লাহর সার্বভৌমত্বের ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ কোরে একটি মহাজাতিতে পরিণত করার সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে।
দ্বিতীয় দায়িত্ব – (নেতার আদেশ) শোনা।
সতর্কতার সাথে কোন বিষয়ে সদা, সর্বদা সচেতন হোয়ে থাকা বোঝায়। এখানে এই সচেতনতা হোচ্ছে দু’টি বিষয়ে। একটি নেতার আদেশ শোনার প্রতি সদা সর্বদা কান খাঁড়া কোরে রাখা, আমীরের কখন কি আদেশ হয় তা তৎক্ষণাৎ পালনের জন্য প্রস্তুত থাকা এবং অপরটি নিজেদের শৃঙ্খলা অটুট রাখা। মানবজাতিকে সত্যিকারভাবে শৃঙ্খলাবদ্ধ করার জন্য সর্বপ্রথম যে জিনিসটি অপরিহার্য তা হোল, তাদেরকে একক নেতৃত্বের অধীনে নিয়ে আসা, এতে কোরে সকলেই একই নিয়ম শৃঙ্খলার মধ্যে জীবন অতিবাহিত কোরতে সক্ষম হবে। সৃষ্টিজগতে যেমন বিধাতা একজন হওয়ায় কোথাও কোন বিশৃঙ্খলা নেই, তেমনি সমগ্র মানবজাতিতে যখন একজন মাত্র নেতা থাকবেন তখন মানবসমাজেও প্রতিষ্ঠিত হবে বিশ্বপ্রকৃতির ন্যায় অতুলনীয় শৃঙ্খলা, সঙ্গতি ও সমন্বয় (Discipline, order & harmony)।
তৃতীয় দায়িত্ব – (নেতার ঐ আদেশের) আনুগত্য করা।
কর্মসূচির অন্যতম প্রধান গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হোচ্ছে আনুগত্য। এই দীনে আনুগত্য হোল, আদেশ শোনামাত্র বিন্দুমাত্র ইতঃস্তত না কোরে সঙ্গে সঙ্গে সে আদেশ পালন করা। আনুগত্য হোচ্ছে একটি পরিবার, গোষ্ঠী বা জাতির মেরুদণ্ড, এটা যেখানে দুর্বল সেখানেই অক্ষমতা এবং ব্যর্থতা। এ নির্দেশ শুধু রসুলেরই নয়, এ নির্দেশ স্বয়ং আল্লাহর। তিনি কোর’আনে মো’মেন, উম্মতে মোহাম্মদীকে আদেশ কোরেছেন আল্লাহর আনুগত্য করো, তাঁর রসুলের আনুগত্য করো এবং তোমাদের মধ্য থেকে আদেশকারীর (নেতার) আনুগত্য করো (সুরা নেসা ৫৯)।
আনুগত্য হোচ্ছে শান্তির মূলমন্ত্র, আল্লাহর আনুগত্যই ইসলাম, ইসলাম মানেই শান্তি। আজকের পৃথিবীতে কোন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান যখনই তার জাতিকে কোন আদেশ বা বিধান দেন, সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় এর বিরুদ্ধাচারণ ও সমালোচনা। কিন্তু ইসলামের বেলায় আল্লাহর কোন আদেশের ব্যাপারে মতান্তর বা বিরোধিতার প্রশ্ন অবান্তর তেমনি আল্লাহর রসুলের নির্দেশ হোচ্ছে, ‘কোন ক্ষুদ্রবুদ্ধি, কান কাটা, নিগ্রো, ক্রীতদাসও যদি তোমাদের নেতা নিয়োজিত হয়, তবে তার কথা বিনা প্রশ্নে, বিনা দ্বিধায় শুনতে ও মানতে হবে।’ কারণ নেতার আদেশ প্রকারান্তরে আল্লাহরই আদেশ।
চতুর্থ দায়িত্ব – হেজরত
হেজরত শব্দের অর্থ শুধু দেশ ত্যাগ করা নয়। হেজরত শব্দের অর্থঃ- “সম্পর্কচ্ছেদ করা, দল বর্জন করা, স্বদেশ পরিত্যাগ করিয়া ভিন্নদেশে গমন করা” (সংক্ষিপ্ত ইসলামী বিশ্বকোষ, দ্বিতীয় খণ্ড, পৃঃ ৫৬০-৬১, ইসলামিক ফাউণ্ডেশন)। আল্লাহয় বিশ্বাসী অথচ মোশরেক আরবদের মধ্যে আবির্ভূত হোয়ে বিশ্বনবী যখন প্রকৃত তওহীদের ডাক দিলেন তখন যারা তাঁর সাথে যোগ দিলেন তারা আরবদের ঐ র্শেক ও কুফর থেকে হেজরত কোরলেন। তারা মোশরেক কাফেরদের সাথে ব্যবসা-বাণিজ্য, ওঠা-বসা সবই কোরতেন কিন্তু তাদের মধ্যে বাস কোরেও হৃদয়ের দিক থেকে তাদের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ কোরলেন, তাদের দল বর্জন কোরলেন, তাদের সাথে এবাদত করা ছেড়ে দিলেন এবং আল্লাহর রসুলকে কেন্দ্র কোরে তওহীদ ভিত্তিক একটি আলাদা সমাজ, আলাদা ভ্রাতৃত্ব গড়ে তুললেন। ১৩ বছর পর মক্কা থেকে মদিনায় যেয়ে তৃতীয় প্রকার হেজরত কোরলেন। মক্কা জয়ের পর এই তৃতীয় প্রকারের হেজরতের আর প্রয়োজন রোইল না, কিন্তু বাকী দুই প্রকারের হেজরতের প্রয়োজন রোয়ে গেলো এবং আজও আছে। দীন যখনই বিকৃত হোয়ে যাবে, বৃহত্তর জনসংখ্যা যখনই ঐ বিকৃত দীনের ভ্রান্ত পথে চোলবে, তখন আল্লাহ তাঁর অসীম করুণায় যাদের সেরাতাল মোস্তাকীমে হেদায়াত কোরবেন, তাদের ঐ সংখ্যাগরিষ্ঠ পথভ্রান্তদের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ ও তাদের দল বর্জন কোরতে হবে। চৌদ্দশ’ বছর আগে আল্লাহতে বিশ্বাসী আরবের মোশরেকদের মধ্যে মহানবী ও তাঁর আসহাবদের যে ভূমিকা ছিলো, আজ আল্লাহ বিশ্বাসী কিন্তু কার্যতঃ মোশরেক সমাজের মধ্যে হেযবুত তওহীদের সেই ভূমিকা। সেদিন আল্লাহর রসুল যেমন মানুষকে আল্লাহর প্রকৃত তওহীদে, সর্বব্যাপী তওহীদে আহ্বান কোরেছিলেন, সেই নবীর প্রকৃত উম্মাহ হিসাবে হেযবুত তওহীদ সেই একই আহবান কোরছে। সেদিন আল্লাহর রসুল ও তাঁর আসহাবগণ যেমন দীনের ব্যাপারে ঐ সমাজ থেকে হেজরত কোরেছিলেন, তাদের সাথে এবাদত করা ছেড়ে দিয়েছিলেন, আজ ঠিক তেমনিভাবে প্রকৃত উম্মতে মোহাম্মদী হবার প্রচেষ্টারত হেযবুত তওহীদও বর্তমান ‘মোসলেম’ কিন্তু কার্যতঃ কাফের মোশরেক সমাজ থেকে ধর্মীয় সকল এবাদতের ব্যাপারে হেজরত কোরেছে। রসুলাল্লাহর সময়ে তিনি ও তাঁর আসহাবগণ মক্কা থেকে হেজরত কোরে মদিনাতে গিয়েছিলেন, সেখানে আল্লাহর সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা কোরেছিলেন। কিন্তু বর্তমানের প্রেক্ষাপট সে সময় থেকে একটু ভিন্ন। বর্তমানে সারা পৃথিবী দাজ্জালের পদতলে। হেজরত কোরে কোথাও যাওয়ার উপায় নেই। দাজ্জালের করতলে থেকেই তার বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হোচ্ছে হেযবুত তওহীদকে।
পঞ্চম দায়িত্ব – আল্লাহর রাস্তায় জেহাদ করা।
কর্মসূচির প্রথম চারটি দায়িত্বের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যই হোল জেহাদ করা। জেহাদ বাদ দিয়ে ঐ চারটি পালন করা অর্থহীন। একটি সংবিধান (Constitution), সেটি যতো সুন্দর, নিখুঁতই হোক না কেন, সেটা একটা জনসমষ্টি বা জাতির ওপর প্রয়োগ ও কার্যকর না করা হোলে যেমন সেটা অর্থহীন, তেমনি তওহীদের ওপর ভিত্তি করা দীনুল হকের সংবিধান “কোর’আনকে” মানব জীবনের সর্বস্তরে, সর্ব অঙ্গনে কার্যকর না কোরতে পারলে তা অর্থহীন। এই সংবিধানকে প্রয়োগ ও কার্যকর করার নীতি পদ্ধতি আল্লাহ নির্দিষ্ট কোরে দিয়েছেন- জেহাদ ও কেতাল- সর্বাত্মক সংগ্রাম (সুরা বাকারা- ২১৬ ও অন্যান্য বহু আয়াত)। তাই মো’মেনদের অর্থাৎ প্রকৃত বিশ্বাসীদের সংজ্ঞাকে আল্লাহ শুধু সর্বব্যাপী তওহীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখেন নি, ঐ তওহীদকে প্রতিষ্ঠা ও কার্যকর করার জন্য জেহাদকেও অন্তর্ভুক্ত কোরে দিয়েছেন। বোলেছেন- শুধু তারাই সত্যনিষ্ঠ মো’মেন যারা আল্লাহ ও তার রসুলকে বিশ্বাস কোরেছে, তারপর আর তাতে কখনও সন্দেহ করে নি এবং তাদের জান ও সম্পদ দিয়ে আল্লাহর রাস্তায় জেহাদ কোরেছে (সুরা হুজরাত- ১৫)।
দীর্ঘ তেরশ’ বছর এই উম্মাহকে এই পবিত্র কর্মসূচি থেকে মাহরুম, বঞ্চিত রাখার পর রাহমানুর রহিম আল্লাহ তাঁর অসীম করুণায় তাঁর দেয়া কর্মসূচির পরিচয় এলহামের মাধ্যমে মাননীয় এমামুযযামানের হৃদয়ে নাযেল কোরেছেন। আল্লাহর এতবড় অনুগ্রহ থেকেই প্রমাণ হয় যে এটাই তাঁর নিজের আন্দোলন। তিনি চান এই আন্দোলনের নেতৃত্বেই পৃথিবীর সমস্ত মো’মেন, মোসলেম ও উম্মতে মোহাম্মদী ঐক্যবদ্ধ হয় এবং পৃথিবীতে আল্লাহর সত্যদীন প্রতিষ্ঠার সর্বাত্মক সংগ্রাম – জেহাদ করে।
লেখক: হেযবুত তওহীদ এর সদস্য।