যামানার এমাম জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নীর লেখা থেকে:
আজ সমগ্র পৃথিবী সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, হানাহানি, যুদ্ধ, রক্তপাত, অভাব, দারিদ্র্য, খুন, গুম, অপহরণ, ভেজাল, দুর্নীতি এক কথায় অন্যায় অবিচারে পরিপূর্ণ। সমাজের কোনো একটা ক্ষেত্র এর থেকে মুক্ত নয়, মানুষ আজ দিশেহারা, এই অবস্থার কারণ কী? এর নিশ্চয়ই কারণ আছে। সেটা জানতে হলে আমাদের একটু পেছন দিকে ফিরতে হবে।
নুহ (আ.) থেকে শেষ নবী মোহাম্মদ (সা.) পর্যন্ত নবী-রসুলগণ আখেরি যামানায় যে ভয়ঙ্কর দাজ্জালের আগমনের কথা ভবিষ্যৎ বাণী করে গেছেন, এমনকি আল্লাহর শেষ রসুল (সা.) যে ভয়ঙ্কর দাজ্জালের ফেতনা থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চেয়েছিলেন এবং হেযবুত তওহীদের প্রতিষ্ঠাতা, এমাম, এ যামানার এমাম, এমামুযযামান, The Leader of the Time জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নী দাজ্জাল সংক্রান্ত বিভিন্ন হাদিস ও বাইবেলের আলোকে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করেছেন যে পাশ্চাত্য ইহুদি-খ্রিস্টান যান্ত্রিক ‘সভ্যতা’ই আল্লাহর শেষ রসুল (সা.) এর রূপকার্থে বর্ণিত সেই একচক্ষুবিশিষ্ট ভয়ঙ্কর দানব দাজ্জাল, যে দাজ্জাল পৃথিবী থেকে আল্লাহর সার্বভৌমত্ব ছিনিয়ে নিয়ে গেছে এবং সমস্ত মানবজাতিকে তার দেয়া মানবরচিত জীবনব্যবস্থা মেনে নিতে বাধ্য করেছে। রসুলাল্লাহ (সা.) বলেছেন, “আদমের সৃষ্টি থেকে শেষদিন অর্থাৎ কেয়ামত পর্যন্ত যা কিছু ঘটেছে এবং ঘটবে তার মধ্যে দাজ্জালের চেয়ে ভয়াবহ আর কিছুই ঘটবে না (এমরান বিন হসেইন (রা.) থেকে মুসলিম)।”
এই দাজ্জালের বয়স এখন ৪৭৮ বছর। আল্লাহর রসুলের হাদিসের সত্যতা প্রমাণ করে সমস্ত পৃথিবী চামড়া দিয়ে জড়ানো বস্তুর মতো ইহুদি-খ্রিস্টান সভ্যতার করায়ত্ব হয়ে গেছে। ইহুদি-খ্রিস্টান ‘সভ্যতা’ দাজ্জালের তৈরি আত্মাহীন, নৈতিকতাবর্জিত, স্রষ্টাহীন জীবনব্যবস্থা, মতবাদগুলি ধাপে ধাপে অন্যায়, অবিচার, নিরাপত্তাহীনতা ও সীমাহীন অশান্তির জন্ম দেয়। জীবনের প্রতি অঙ্গনে সৃষ্টি হয় চরম অবিচার, অন্যায় এবং অশান্তি যা ক্রমান্বয়ে পুরো মানবজাতিকে গ্রাস করে ফেলেছে। শুধু তাই নয়, মুসলিমসহ সমগ্র মানবজাতি জাতীয় জীবনে আল্লাহর সার্বভৌমত্ব পরিত্যাগ করে মানবতার মহাশত্র“ দাজ্জালের দেখানো ধর্মনিরপেক্ষ গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র-সাম্যবাদ, ফ্যাসিবাদ, সামরিকতন্ত্র ও রাজতন্ত্রসহ মানবরচিত জীবনব্যবস্থা গ্রহণ করে কাফের-মোশরেক হয়ে গেছে। কারণ, আল্লাহ পবিত্র কোর’আনে বলেছেন, “যারা আল্লাহর নাযেলকৃত বিধান মোতাবেক শাসনকার্য-বিচার ফায়সালা করে না তারা কাফের, জালেম, ফাসেক” (সুরা মায়েদাঃ ৪৪, ৪৫, ৪৭)। আল্লাহ আরও বলেছেন, “তবে কি তোমরা কিতাবের কিছু অংশ বিশ্বাস কর আর কিছু অংশ অবিশ্বাস কর? তোমাদের মধ্যে যারা এরূপ করে তাদের প্রতিফল হলো পার্থিব জীবনে লাঞ্ছনা, অপমান এবং আখেরাতে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি” (সুরা বাকারা: ৮৫)। ফলে পৃথিবী আজ অন্যায়, অবিচার, অত্যাচার, ক্ষুধা, দারিদ্র্য, নিরাপত্তাহীনতা এককথায় সীমাহীন অশান্তির মধ্যে নিমজ্জিত।
সমস্ত রকম সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, হানাহানি সবই দাজ্জালের জীবনব্যবস্থা মেনে নেয়ারই ফসল। এভাবে দাজ্জাল আজ তার শয়তানী রূপের মাধ্যমে পৃথিবীর প্রতি ইঞ্চি মাটিকে জাহান্নামে রূপ দিয়েছে। মানবজাতির জন্য শান্তির উপায়, মুক্তির একমাত্র পথ হচ্ছে তাদের জাতীয় জীবনে আল্লাহর সার্বভৌমত্ব, তওহীদ অর্থাৎ, আখেরী নবী মোহাম্মদ (সা.) উপরে যে দীনুল হক, সত্য জীবনব্যবস্থা নাযিল হয়েছে তা মেনে নেয়া। যার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হচ্ছে ১৪০০ বছর আগে ইসলামের স্বর্ণযুগে এই দীন মানবজাতিকে এমন অতুলনীয় শান্তি দিয়েছিল যে অর্ধেক পৃথিবীর কোথাও শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী না থাকা সত্ত্বেও সমাজে বলতে গেলে কোন অপরাধই ছিল না। চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, রাহাজানি সব বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এটা ইতিহাস।
সেই অনাবিল শান্তির সমাজ যদি আমরা ফিরে পেতে চাই তাহলে ইসলামের মূল ভিত্তি তওহীদ, আল্লাহর সার্বভৌমত্ব মেনে নেয়া ছাড়া কোন পথ নেই। আল্লাহর সত্যদীন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার মাধ্যমে মানবজাতি ইনশাল্লাহ এই শ্বাসরুদ্ধকর অশান্তিময় পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পাবে। বিশ্বে থাকবে না কোন জাতি ও বর্ণের ভেদাভেদ, অর্থনৈতিক বৈষম্য, রাজনীতির নামে দলাদলি, নৈরাজ্য, সন্ত্রাস। সমস্ত আদম সন্তান একটি মাত্র জাতিতে পরিণত হবে, সকল ধর্মের লোক সমান সুবিচার ও সমান অধিকার পাবে। পৃথিবী থেকে নির্মূল হয়ে যাবে অন্যায়, অবিচার, ক্ষুধা, দারিদ্র্য, বেকারত্ব, হতাশা ও নিরাপত্তাহীনতা। রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “পৃথিবীতে এমন কোন ঘর বা তাঁবু থাকবে না যেখানে ইসলাম প্রবেশ করবে না” [হাদিস- মেকদাদ (রা.) থেকে আহমদ, মেশকাত]। আল্লাহর মনোনীত এ যামানার এমাম, The Leader of the Time মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নী ইসলামের যে রূপটি মানুষের সামনে তুলে ধরেছেন সেটা আল্লাহর রসুল (সা.) এর প্রকৃত ইসলাম তা আল্লাহ ২০০৮ সালের ২ ফেব্র“য়ারি মো’জেজা ঘটিয়ে সত্যায়ন করে দিয়েছেন এবং তিনি প্রমাণ করে দিয়েছেন তারই মনোনীত দল হেযবুত তওহীদ দিয়ে সমস্ত পৃথিবীতে এই প্রকৃত ইসলাম, দীনুল হক্ব আল্লাহ প্রতিষ্ঠা করবেন। তাছাড়া, সেই ঐতিহাসিক মো’জেজার মাধ্যমে আল্লাহ হেযবুত তওহীদের বিজয় ঘোষণা করে দিয়েছিলেন; হেযবুত তওহীদের বিজয় ঘোষণা মানে দাজ্জালের ধ্বংস। এই হাদিসের সত্যতা মোতাবেক এটাই সেই সময়। যেহেতু আল্লাহ মো’জেজার মাধ্যমে জানিয়ে দিলেন যে হেযবুত তওহীদকে আল্লাহ সারা দুনিয়ায় প্রকৃত ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য মনোনীত করেছেন সুতরাং হেযবুত তওহীদের মাধ্যমেই যে ইহুদি খ্রিস্টান সভ্যতা দাজ্জালের পতন হবে সেটাও সুস্পষ্ট হয়ে যায়। আসুন, একটি শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ পৃথিবী গড়ার লক্ষ্যে আল্লাহর সার্বভৌমত্ব মেনে নিয়ে, তওহীদ গ্রহণ করে হেযবুত তওহীদ আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধ হই।