বজ্রশক্তির সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে ‘সময় টেলিভিশনে’ ‘হেযবুত তওহীদ ও দৈনিক বজ্রশক্তি’ এর ব্যাপারে নেতিবাচকভাবে প্রচারিত একটি সংবাদ সম্পর্কে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন হেযবুত তওহীদের গাইবান্দা-রংপুর অঞ্চলের আঞ্চলিক আমীর আশেক মাহমুদ। তিনি বলেন, আমাদের দেশে একশ্রেণির ইসলামবিদ্বেষী মিডিয়া আছে, তারা বসেই থাকে ইসলামের কথা, মানবতার কথা, সত্যের কথা যারা বলবে তাদের বিরোধিতা করার জন্য। জঙ্গিবাদ, ধর্মব্যবসা, অপরাজনীতি, সন্ত্রাস, সহিংসতা ইত্যাদি যাবতীয় মিথ্যাকে চিহ্নিত করার জন্য, সর্বশ্রেণির মানুষকে এ বিষয়ে সচেতন করার লক্ষ্যে হেযবুত তওহীদ সরকার, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, মিডিয়া কর্মী, শিক্ষক, ছাত্র, বুদ্ধিজীবী, আইনজীবী, ব্যবসায়ী, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, কৃষক, শ্রমিকসহ সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে কাজ করছে। দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ নিঃস্বার্থ জনসচেতনতামূলক এই কাজকে সমর্থন করে যাচ্ছে। কিন্তু একশ্রেণির মিডিয়া যাচাই বাছাই না করে একচোখা দৃষ্টির কারণে সবগুলি আন্দোলনকে একদৃষ্টিতে দেখে। এই মিডিয়াগুলো চিন্তাধারাই এমন যে, ইসলামের কথা কেউ বললেই তাদের বিরুদ্ধে নেতিবাচকভাবে দৃষ্টি দিতে হবে, অপপ্রচার চালাতে হবে। হেযবুত তওহীদ যেহেতু ইসলামের কথা বলে এজন্য গত বিশ বছরে হাজারো মিথ্যা শব্দ হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করেছে, বহু মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়েছে পশ্চিমা ভাবধারার এই ইসলাম বিদ্বেষী মিডিয়াগুলো। এরই অংশ হিসাবে গত ২২ নভেম্বর ২০১৫ ইং তারিখে ‘সময় টেলিভিশন’- এ ‘দৈনিক বজ্রশক্তি’ ও ‘হেযবুত তওহীদ’ সম্পর্কে একটি অনাকাক্সিক্ষত প্রতিবেদন প্রচার করা হয়। প্রচারিত সংবাদটিতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হেযবুত তওহীদের সম্মান ক্ষুণœ করার অপচেষ্টা করা হয়েছে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাই।
হেযবুত তওহীদ গত ২০ বছর যাবৎ এ দেশের মানুষকে যাবতীয় সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, অপরাজনীতি, ধর্মব্যবসার বিরুদ্ধে সচেতন করার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছে। এ কাজে আমাদের কোনো পার্থিব স্বার্থ বা রাজনীতিক অভিপ্রায় নেই। গত ১৯ নভেম্বর ২০১৫ তারিখেও আমরা ঢাকা প্রেসক্লাবের ভি.আই.পি লাউঞ্জে জঙ্গিবাদ দমনে জনসম্পৃক্ততার বিকল্প নেই শীর্ষক একটি গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করেছিলাম যেখানে সকল মিডিয়ার কর্মীগণও এসেছিলেন। রাজধানী ঢাকা ও অন্যান্য জেলার মতো গাইবান্ধাতেও আমরা একই কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। এখানে বিভ্রান্তি বা গোপনীয়তার কোনো প্রশ্নই ওঠে না। আমরা যেখানে সবাইকে নিয়ে কাজ করছি সেখানে উক্ত সংবাদকর্মীর এমন একটি বিভ্রান্তিমূলক প্রতিবেদন তৈরি করার পেছনে কোনো ষড়যন্ত্র, ব্যক্তিগত বা গোষ্ঠীর স্বার্থসিদ্ধির অভিপ্রায় রয়েছে বলেই আমরা মনে করি।
# সংবাদে বলা হয়েছে যে, “কেউ রিকসা চালায় কেউ পিঠা বিক্রি করে আবার কেউ বা বিক্রি করে পত্রিকা। বিভিন্ন জেলা থেকে গাইবান্ধায় এসে এমন কার্যক্রম পরিচালনা করছে হেযবুত তওহীদের কর্মীরা।”
এ বিষয়ে আমাদের বক্তব্য হচ্ছে, বাংলাদেশের কোটি কোটি সাধারণ মানুষ কোনো না কোনো কায়িক পরিশ্রম করে জীবিকা নির্বাহ করছে। এ সকল বৈধ পদ্ধতিতে উপার্জন করাকে কটাক্ষ করার মাধ্যমে উক্ত সংবাদকর্মী প্রকারান্তরে বাংলার কোটি কোটি খেটে খাওয়া মানুষকেই হেয় করেছেন। হেযবুত তওহীদের সদস্যরা যদি কোনো অসৎ উপায়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন তাহলে তিনি তা প্রকাশ করতে পারতেন। কিন্তু এমন দাবি হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে আজ পর্যন্ত কেউ করতে পারে নি এবং পারবেও না ইনশাল্লাহ।
# সংবাদে বলা হয় যে, “নিজেকে অরাজনৈতিক সংগঠন দাবি করলেও মানুষদেরকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানায় তারা।”
এ কথাটি অসম্পূর্ণ বিধায় বিভ্রান্তিকর। ঐক্যের আহ্বান জানানো ভালো না মন্দ তা নির্ভর করে কীসের ভিত্তিতে ঐক্য গড়তে আহ্বান করা হচ্ছে সে বিষয়ের উপর। হেযবুত তওহীদ মানুষকে কীসের ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানায় তা ইচ্ছাকৃতভাবেই উল্লেখ করা হয় নি। কারণ সেটা উল্লেখ করলে হেযবুত তওহীদের বিরোধিতা করার সুযোগ থাকবে না। প্রকৃতপক্ষে হেযবুত তওহীদ বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষকে জঙ্গিবাদ, ধর্মব্যবসা ও অপরাজনীতির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে। এই আহ্বান জানাতে রাজনৈতিক দল হওয়ার কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই। কেননা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সকল পক্ষকে সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় জনসচেতনতা সৃষ্টিতে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। প্রচারিত সংবাদে হেযবুত তওহীদের এই মহৎ কাজকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা করা হয়েছে।
# সংবাদে বলা হয়েছে, “আবার বিভিন্ন লেখার মাধ্যমে নিজেদেরকে গণতন্ত্র পরিপন্থী বলেও তারা দাবী করছে। হেযবুত তওহীদের ওয়েব সাইটের বিভিন্ন লেখায় দেখা যায় তারা প্রচলিত গণতন্ত্রে বিশ্বাসী নয়।” এই কথাটিও বিকৃতভাবে উপস্থাপিত হয়েছে। হেযবুত তওহীদের বহু লেখায় এটি বলা হয়েছে যে, আমরা গণতন্ত্রের নামে হরতাল, অবরোধ, জ্বালাও-পোড়াও, ভাঙচুর, সন্ত্রাসের বিরোধিতা করি। পক্ষান্তরে আমাদের দেশের সংবিধানে চলাফেরার স্বাধীনতা, মতামত প্রচার করার স্বাধীনতা, ধর্মীয় স্বাধীনতা ইত্যাদি যে গণতান্ত্রিক অধিকারগুলোর কথা বলা হয়েছে সেটাকে আমরা সমর্থন করি।
# সংবাদে বলা হয়েছে, “তাদের এমন কার্যক্রমে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সচেতন মহলও তাদের এ সব কার্যক্রমে উদ্বিগ্ন।” এ কথাটি সর্বৈব মিথ্যা। কেউ হেযবুত তওহীদের কাজে উদ্বিগ্ন নয়, বরং সাধারণ মানুষ হেযবুত তওহীদকে দুই হাত তুলে সমর্থন করছে। পক্ষান্তরে অর্ধসত্য ও উদ্দেশ্যমূলক মিথ্যা তথ্য প্রচার করে অসাধু সংবাদকর্মী হেদায়াতুল ইসলাম বাবু (গাইবান্ধা সময় সংবাদ প্রতিনিধি) জনমনে বিভ্রান্তি ও উদ্বেগ সৃষ্টির প্রয়াস পাচ্ছেন।
# যেই সাংবাদিক এই প্রতিবেদন তৈরি করেছেন তিনি পূর্বেও প্রেসাক্লাবে আমাদের একটা সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। সেদিনও তিনি আমাদের সঙ্গে অহেতুক কিছু বিষয়ে বিতর্ক করবার চেষ্টা করেন। যেটা আমাদের সঙ্গে সম্পর্কিত না সেই বিষয়গুলি আমাদের উপর আরোপ করা হয়েছে। এই প্রতিবেদন করার সময় তারা আমার দীর্ঘ বক্তব্য নিয়েছেন তার কিছুই দেখান নি। আমি বলেছি ক্যামেরা গোপনে ধরবেন না। উপরে উঠান কিন্তু সেটাকে মিথ্যাভাবে, বিকৃতভাবে প্রচার করেছে। বলা হয়েছে আমরা নাকি মিডিয়াতে কথা বলতে চাই নি। কী জঘন্য মিথ্যাচার!