[যামানার এমাম জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নীর লেখা থেকে সম্পাদিত]
অসীম ক্ষমতাবান ও পরম করুণাময় আল্লাহ মহাবিশ্বের অতি ক্ষুদ্রতম অনু-পরমাণু থেকে শুরু করে গ্রহ-নক্ষত্র পর্যন্ত সমস্তকিছু সৃষ্টি করেছেন এটা যেমন সত্য, তেমনি সত্য এই যে, সৃষ্টিজগতের কোনোকিছুই তিনি অনর্থক, উদ্দেশ্যহীনভাবে সৃষ্টি করেন নি। প্রত্যেকটির পেছনে রয়েছে যথোপযুক্ত কারণ, যুক্তি। একইভাবে তিনি তাঁর আখেরী নবীর মাধ্যমে ইসলাম নামে যে দ্বীনটি প্রেরণ করেছেন, সেটাও উদ্দেশ্যহীনভাবে নয়, অযৌক্তিক ও অনর্থক নয়, নিশ্চয়ই এর কোনো উদ্দেশ্য আছে, এবং নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য আছে বলেই এই দ্বীনের যত আমল, এবাদত ইত্যাদির বিধান রয়েছে, সেগুলোরও প্রত্যেকটির ভিন্ন ভিন্ন উদ্দেশ্য আছে, যুক্তি আছে। এই লেখায় আমরা হজ্বের উদ্দেশ্য নিয়ে আলোকপাত করব, তবে তার আগে নামাজের উদ্দেশ্যটি জেনে নেওয়া প্রয়োজন। কারণ বিষয়টি অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। আবার নামাজের উদ্দেশ্যের সাথে মুসলিম জাতির সামগ্রিক লক্ষ্য-উদ্দেশ্যও সম্পর্কিত। কাজেই মূল আলোচনায় যাবার পূর্বে প্রাসঙ্গিক কিছু কথা বলে নেওয়া প্রয়োজন।
আজ আমরা যারা নিজেদেরকে মুসলিম বলে পরিচয় দিয়ে থাকি তাদের বাস্তব অবস্থা হচ্ছে, পৃথিবীতে তাদের কোনো ঐক্য নেই, নির্দিষ্ট লক্ষ্য নেই, একক নেতৃত্ব নেই, বিশৃঙ্খল, ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন একটি জনসংখ্যা মাত্র। কিন্তু আল্লাহ যে মুসলিম জাতি চান এবং আল্লাহর রসুল কঠোর সংগ্রাম করে যেই মুসলিম জাতি তৈরি করেছিলেন সেই জাতির ইতিহাস অন্য ছিল। তারা ছিলেন এক অখ- জাতি। তাদের নেতা (ইমাম) ছিলেন একজন (প্রথমে রসুলাল্লাহ, তারপর খলিফাগণ)। তাদের লক্ষ্য ছিল একটি (মানবজীবনে আল্লাহর সত্যদ্বীন প্রতিষ্ঠা করে শান্তি ও নিরাপত্তা আনয়ন করা)। তাদের কর্মসূচিও ছিল একটি (আল্লাহর রসুলের অনুসৃত কর্মসূচি অর্থাৎ ঐক্য, শৃঙ্খলা, আনুগত্য, হেজরত ও সংগ্রাম)। এই যে কর্মসূচির বন্ধনে একটি জাতি আবদ্ধ থাকবে, তারা ঐক্য নষ্ট করবে না, বিশৃঙ্খল জীবনযাপন করবে না, নেতার আনুগত্য করবে, পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ব বজায় রাখবে, সময়ের মূল্য বুঝবে, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকবে, ধনী-দরিদ্র, সাদা-কালো, শাসক-শাসিত ইত্যাদি নির্বিশেষে সমান অধিকার ও মর্যাদা পাবে, যাবতীয় অন্যায় ও অসত্যকে বয়কট করবে এবং আজীবন শান্তি প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম করবে, এই গুণগুলো তো জাতির সদস্যদের চরিত্রে আপনা আপনি প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাবে না, এই গুণগুলো চরিত্রে কায়েম করতে হবে, আর তার জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকতে হবে। আল্লাহর দেওয়া এই প্রশিক্ষণই হচ্ছে সালাহ (নামাজ)। মো’মেনরা যখন এক জামাতে একই দিকে মুখ ফিরিয়ে দৈনিক পাঁচবার নামাজ পড়বেন, তাদের মধ্যে ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের বোধ জাগ্রত হবে, তারা সর্বাবস্থায় নিজেদের লক্ষ্য সম্পর্কে সজাগ থাকবেন, যখন এক নেতার অধীনে রুকু সেজদা করবেন, তাদের মধ্যে আনুগত্য ও শৃঙ্খলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠিত হবে। এভাবে সালাহ’র উদ্দেশ্যগুলো, শিক্ষাগুলো জেনে বুঝে যারা নামাজ পড়বেন তাদের নামাজ কবুল হবে, তাদের নামাজ দ্বারা ব্যক্তি ও জাতি উভয়ই উপকৃত হবে।
এই জামায়াতে নামাজের সাপ্তাহিক সংস্করণ হচ্ছে জু’মা। সাত দিন স্থানীয় মসজিদে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পর মুসলিম নামক এই জাতির সদস্যরা সপ্তাহে একদিন বৃহত্তর কোনো মসজিদে একত্র হবে, তাদের স্থানীয় সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা পরামর্শ করবে, সিদ্ধান্ত নেবে, তারপর স্থানীয় ইমামের নেতৃত্বে তার সমাধান করবে। জাতির কেন্দ্রীয় নেতার পক্ষ থেকে দিক-নির্দেশনামূলক যে খুৎবা দেওয়া হবে সেটা মনোযোগ সহকারে শুনবে। আগামী সপ্তাহে সেই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করবে। এই যে ব্যক্তিগত, স্থানীয়, সামাজিক ইত্যাদি সমস্যা নিয়ে আলোচনা-পরামর্শ ও সিদ্ধান্ত নেবার প্লাটফর্ম, এরই বৈশ্বিক ও বাৎসরিক সংস্করণ হচ্ছে হজ। হজ্বের উদ্দেশ্যটা এখানেই। মুসলিম জাতির সদস্যরা যে কাজটি প্রতি ওয়াক্ত নামাজে ও সপ্তাহে একবার জুমার নামাজে মসজিদে করতেন, সেই কাজটিই বছরে একবার আরাফাতের মাঠে পৃথিবীর সমস্ত মুসলিমদের নেতৃস্থানীয়রা একত্র হয়ে করবেন। তারা জাতির রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামরিক ইত্যাদি সর্বরকম সমস্যা নিয়ে আলোচনা করবেন, পরামর্শ করবেন, সিদ্ধান্ত নেবেন। স্বভাবতই সেখানে অনেক রাষ্ট্রীয় গোপন বিষয়ে আলোচনা হবে, পরামর্শ হবে, সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে বলে ওই সময়ে মক্কা ও আরাফাতের একটি নির্দিষ্ট এলাকার মধ্যে অমুসলিম প্রবেশ পর্যন্ত নিষিদ্ধ করা হয়। একথা ইতিহাস যে, খোলাফায়ে রাশেদুন হজ্বের সময় বিভিন্ন স্থান থেকে আগত হাজীদের কাছ থেকে তাদের অবস্থা, সমস্যা ইত্যাদি নিয়ে আলাপ আলোচনা করতেন, সে সম্বন্ধে সিদ্ধান্ত নিতেন, তাদের নিজ নিজ এলাকায় শাসন কর্তারা, গভর্নররা কে কেমনভাবে শাসন করছেন সে সম্বন্ধে তাদের অভিমত ও পরামর্শ গ্রহণ করতেন। হাজীদের মাধ্যমে প্রাপ্ত সংবাদ ও তাদের সাথে পরামর্শ করে গভর্নর বদলি ও প্রশাসকদের মদিনায় তলব করে কৈফিয়ৎ চাওয়ার ঘটনাও এই জাতির ইতিহাসে রয়েছে।
দুর্ভাগ্যক্রমে এই আকিদা আজ হারিয়ে গেছে। আজ মুসলিম নামক এই জাতির সারা দেহে হাজারো সঙ্কটের মহামারী লেগে থাকলেও এবং একটার পর একটা মুসলিমপ্রধান দেশ ধ্বংস হয়ে গেলেও জাতির নেতৃস্থানীয়রা একত্রে বসে এই সমস্যার সমাধান নিয়ে আলোচনা-পরামর্শ করবে তা যেন ভাবাও যায় না। তারা কেউ ইউরোপে ছুটে যায়, কেউ আমেরিকায় ছুটে যায়, কেউ পরাশক্তিগুলোর কাছে ধর্ণা দেয়, কিন্তু আল্লাহ যে তাদের জন্য সমস্যা সমাধানের সুন্দর একটি ব্যবস্থা করে দিয়েছেন সেদিকে কারো ভ্রুক্ষেপ নেই। বরং ইসলামের আর সব কাজের মতো হজ সম্বন্ধেও এই জাতির আকিদা বিকৃত হয়ে গেছে। এই বিকৃত আকিদায় হজ আজ সম্পূর্ণরূপে একটি আধ্যাত্মিক ব্যাপার, আল্লাহর সান্নিধ্য অর্জন করার পথ। যেহেতু কেবলই আধ্যাত্মিক বিষয়, কাজেই হজ্বে দুনিয়াবী কথা চলতে পারে না! অন্যান্য ধর্মের মানুষরা যেমন বছরের নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট স্থানে তীর্থভ্রমণে যান, ইসলামের হজকেও তেমন মনে করা হয়। যারা হজকে নিছক আধ্যাত্মিক বিষয় বলে মনে করেন তাদের কাছে প্রথম প্রশ্ন হচ্ছে- আল্লাহ সর্বত্র আছেন, সৃষ্টির প্রতি অণু-পরামাণুতে আছেন, তবে তাঁকে ডাকতে, তাঁর সান্নিধ্যের জন্য এত কষ্ট করে দূরে যেতে হবে কেন? নিশ্চয় সুনির্দিষ্ট কারণ রয়েছে, উদ্দেশ্য রয়েছে। তার নিজের আত্মা তিনি মানুষের দেহের মধ্যে ফুঁকে দিয়েছেন (সুরা আল-হিজর ২৯)। অর্থাৎ প্রতিটি মানুষের মধ্যে তিনি রয়েছেন। শুধু তাই নয়, তিনি বলেছেন-নিশ্চয়ই আমি তোমাদের অতি সন্নিকটে (সুরা বাকারা ১৮৬, সুরা সাবা ৫০, সুরা ওয়াকেয়াহ ৮৫)। তারপর আরও এগিয়ে গিয়ে বলছেন- আমি (মানুষের) গলার রগের (রক্তবাহী ধমনীর) চেয়েও সন্নিকটে (সুরা কাফ ১৬)। যিনি শুধু অতি সন্নিকটেই নন, একবারে গলার রগের চেয়েও নিকটে তাঁকে ডাকতে, তাঁর সান্নিধ্যের আশায় এত দূরে এত কষ্ট করে আল্লাহ যেতে বলেছেন কেন সেটা আমাদেরকে পরিষ্কার বুঝে নিতে হবে। যদি তর্ক করেন যে আল্লাহ চান যে আমরা তাঁর ঘরে যাই, তবে জবাব হচ্ছে প্রথমতঃ ঘরের মালিকই যখন সঙ্গে আছেন তখন বহু দূরে তাঁর পাথরের ঘরে যাবার কী প্রয়োজন আছে? দ্বিতীয়ত, আসল হজ হয় আরাফাতের ময়দানে, আল্লাহর ঘর কা’বায় নয়। তাঁর ঘর দেখানোই যদি উদ্দেশ্য হয়ে থাকে তবে কা’বাকে হজ্বের আসল কেন্দ্র না করে কা’বা থেকে অনেক দূরে এক খোলা মাঠকে কেন্দ্র করলেন কেন? তৃতীয় প্রশ্ন হচ্ছে- ধরে নিলাম আল্লাহ আরাফাতের ময়দানেই আছেন। সেখানে যেয়ে তাঁর সামনে আমাদের উপস্থিত হবার জন্য তিনি বছরের একটা নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করে দিয়েছেন কেন? আমাদের সঙ্গে না থেকে তিনি যদি আরাফাতের মাঠেই থেকে থাকেন তবে যে যখন পারে তখন সেখানে যেয়ে তো তাঁর সামনে লাব্বায়েক বলে হাজিরা দিতে পারে। তা না করে তিনি আদেশ দিয়েছেন বছরের একটা বিশেষ মাসে, একটা বিশেষ তারিখে তার সামনে হাজির হবার। একা একা যেয়ে তাঁকে ভালোভাবে ডাকা যায়, নাকি সম্পূর্ণ অপরিচিত জায়গায়, অপরিচিত পরিবেশে, লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রচণ্ড ভিড়ের ধাক্কাধাক্কির মধ্যে দাঁড়িয়ে তাঁকে ভালোভাবে, মন নিবিষ্ট করে ডাকা যায়? কিন্তু অবশ্য কর্তব্য ফরদ করে দিয়েছেন একা একান্তে তাঁকে ডাকা নয়, ঐ বিশেষ তারিখে লক্ষ লোকের ভীড়ের মধ্যে। অবশ্যই এর জাগতিক উদ্দেশ্য রয়েছে, যে উদ্দেশ্যের কথা পেছনে বলে এসেছি।
তবে কি হজ কেবলই জাগতিক বিষয়? এর মধ্যে আধ্যাত্মিকতার কিছু নাই? পাঠক, আমাদের বক্তব্য কিন্তু সেটা নয়। ইসলামের অন্যান্য বিষয়ের মত হজও দেহ-আত্মা, দুনিয়া-আখেরাতের নিখুঁত ভারসাম্যের উপর প্রতিষ্ঠিত বিধান। মুসলিমের ইহজীবন ও পরজীবনের, দেহের ও আত্মার কোনো বিভক্তি থাকতে পারে না। কারণ দেহ থেকে আত্মার পৃথকীকরণ বা আত্মা থেকে দেহ পৃথকীকরণের একটাই মাত্র পরিণতি-মৃত্যু। যেহেতু মুসলিমের দীন ও দুনিয়া এক, কাজেই এই মহাসম্মেলনের রাজনৈতিক, সামাজিক আইনগত অর্থাৎ জাতীয় দিকটার সঙ্গে মুসলিমের ব্যক্তিগত আত্মার দিক অবিচ্ছিন্নভাবে জড়িত। তাই মুসলিম হজ্বে যেয়ে যেমন উম্মাহর জাতীয় সমস্যার সমস্যার সমাধানে অংশ নেবে, তেমনি আরাফাতের ময়দানকে হাশরের ময়দান মনে করে নিজেকে আল্লাহর সামনে উপস্থিত বলে মনে করবে। মনে করবে মুসলিম হিসাবে, উম্মতে মোহাম্মদী হিসাবে তার উপর যে দায়িত্ব অর্পিত ছিল তার কতটুকু সে পূরণ করতে পেরেছে সে হিসাব তাকে আজ দিতে হবে। প্রাক-ইসলামী অজ্ঞানতার যুগে (আইয়ামে জাহেলিয়াতে) মোশরেকরা উলঙ্গ হয়ে হজ করত কারণ হাশরের ময়দানে সমস্ত নারী-পুরুষ উলঙ্গ থাকবে। ইসলাম শুধু দু’টুকরো সেলাইহীন কাপড় দিয়ে সেটাকে শালীন করেছে। হজের নির্দিষ্ট স্থানে গিয়ে বলতে হয় লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক। অর্থ আমি হাজির হে আল্লাহ। এই দোয়াটার তাৎপর্য হচ্ছে বান্দা যেন হাশরের দিন আল্লাহর সামনে হাজির হচ্ছে। ঐ হাজির হওয়ার সময় তার কোনো পিছুটান থাকবে না, কোনো আশা আকাক্সক্ষা থাকবে না। কোনো জৈবিক চাহিদা ও ভোগবিলাসের মোহ তার থাকবে না। হিংসা, ঈর্ষা, লোভ কিছুই থাকবে না। সেজন্য একটা পাখি হত্যা করাও নিষিদ্ধ এখানে। এটা যেন হাশরের দিন আল্লাহর সামনে নিঃস্ব, রিক্ত, আত্মসমর্পিত অবস্থায় কেবল কৃতকর্ম হাতে নিয়ে দাঁড়ানোর মহড়া। গায়ে রংহীন সেলাইহীন একপ্রস্থ সাদা কাপড়, মাথায়ও কোনো কাপড় দেওয়া যাবে না, গায়ে খুসবুও লাগানো যাবে না, এগুলো সবই হচ্ছে সেই চূড়ান্ত বৈরাগ্যের প্রশিক্ষণ। এ যেন আখেরাতের মহড়া, এটা স্মরণ করিয়ে দেওয়া যে সবাই আল্লাহর কাছে ফেরত যাবে। এর চাইতে বড় আধ্যাত্মিকতা আর কী হতে পারে?
দুনিয়া-আখেরাতের ভারসাম্যপূর্ণ ও আল্লাহ-রসুলের দেখানো প্রক্রিয়ায় একটি হজই আমাদের জাতির সামগ্রিক চেহারা পাল্টো দিতে পারত। আমাদের সমস্যা সমাধানের জন্য অন্য কোথাও যেতে হত না। আজ আমরা মুসলিম নামক এই জাতি যদি একজন সত্যনিষ্ঠ এমামের (নেতা) নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ থাকতাম, তাহলে পৃথিবীর কোনো জাতির সাধ্য ছিল না আমাদের উপর কোনো অন্যায় করার, আমাদের কোনো সদস্যের উপর নির্যাতন চালানোর। যদি কোনো অঞ্চলে মুসলিমরা বিশেষ কোনো সমস্যায় পড়তও তবে তা দীর্ঘদিন ধরে চলতে পারত না কারণ হজ্বের সময় নিশ্চয় এই সমস্যা নিয়ে আলোচনা হতো এবং তার সমাধানও হয়ে যেত। অথচ বছরে বছরে আমরা হজ করছি কিন্তু ফিলিস্তিনি মুসলমানদের উপর নির্যাতন বন্ধ হচ্ছে না, উইঘুর মুসলমানদের দুর্দশা ঘোঁচানো যাচ্ছে না, রোহিঙ্গাদের আবাসভূমি ফিরিয়ে দিতে পারছি না, একটার পর একটা দেশকে গণকবর বানিয়ে ফেলা হচ্ছে আমরা সেই অবিচার বন্ধ করতে পারছি না। পৃথিবীর কোনো একটি সমস্যার সমাধানও হজ্বের ময়দান থেকে করা যাচ্ছে না। উদ্দেশ্যহীন, লক্ষ্যহীন ও ভারসাম্যহীন এই হজ কি আল্লাহ কবুল করবেন?
[সম্পাদনা: মোহাম্মদ আসাদ আলী, যুগ্ম সাহিত্য সম্পাদক, হেযবুত তওহীদ। ফোন: ০১৬৭০-১৭৪৬৪৩, ০১৬৭০-১৭৪৬৫১]