রাকিব আল হাসান:
‘স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে স্মার্ট গ্রাম বিনির্মাণের বিকল্প নেই’ শীষর্ক এক মতবিনিময় ও কর্মপরিকল্পনা সভা করেছে হেযবুত তওহীদ। আজ সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার চাষীরহাটে শহীদী জামে মসজিদের তৃতীয় তলার কনফারেন্স হলে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন হেযবুত তওহীদের সর্বোচ্চ নেতা, হেযবুত তওহীদের এমাম জনাব হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম। অনুষ্ঠানের অন্যতম বিশেষ আলোচক হিসাবে বক্তব্য রাখেন হেযবুত তওহীদ আন্দোলনের সমন্বয়কারী মো. নিজাম উদ্দীন ও ঢাকা বিভাগের সভাপতি ডা. মাহবুব আলম মাহফুজ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন হেযবুত তওহীদ আন্দোলনের শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ বিষয়ক উপ-সম্পাদক, চাষীরহাট নুরুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রাকীব আল হাসান। অনুষ্ঠান উপস্থিত ছিলেন হেযবুত তওহীদের বিভিন্ন বিভাগীয় আমির, কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদকবৃন্দ, জেলা আমির এবং ঢাকা মহানগর বিভাগের সদস্য-সদস্যাগণ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন হেযবুত তওহীদের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এনামুল হক বাপ্পা।
হেযবুত তওহীদের সর্বোচ্চ নেতা বলেন, ‘হাজার হাজার গ্রাম ও শত শত শহর নিয়ে গঠিত হয় একটি দেশ। বিভিন্ন কারণে শহরগুলো কিছুটা উন্নত হলেও আমাদের মতো তৃতীয় বিশে^র রাষ্ট্রগুলোতে গ্রাম থেকে যায় অবহেলিত, নানা ধরনের নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত। এর ফলে বৃহত্তর জনসংখ্যা যথযথ শিক্ষা, চিকিৎসা, বাণিজ্য, যোগাযোগ ইত্যাদি সুবিধা ভোগ করতে পারে না। দেশ রয়ে যায় অনুন্নত। এ সকল সুবিধার অভাবে দেশের এই বৃহত্তর গ্রামীণ জনগণ দেশ গঠনের কাজে, দেশকে স্মার্ট হিসাবে গড়ে তোলার কাজে বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারে না। এজন্য স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে স্মার্ট গ্রাম বিনির্মাণের বিকল্প নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘গ্রামাঞ্চলে ঠিকমতো বিদ্যুৎ থাকে না, যোগাযোগ ব্যবস্থা তেমন ভালো নয়, ইন্টারনেট সুবিধা নামে মাত্র পাওয়া যায়, দক্ষ জনশক্তি পাওয়া যায় না- এ ধরনের নানা প্রতিবন্ধকতা থাকার কারণে কেউ উদ্যোগী হয়ে গ্রামে কোনো শিল্প-কলকারখানা গড়ে তুলতে আগ্রহী হয় না। অর্থ-বিত্তশালী মানুষগুলো, ব্যবসায়ী চিন্তাধারার মানুষগুলো চলে যায় শহরে। আর নাগরিক সুবিধার অভাবে উচ্চশিক্ষিত ও শিক্ষাসচেতন মানুষগুলোও চলে যায় শহরে, কেউ বা চলে যায় বিদেশে। গ্রাম নিয়ে আর কেউ ভাবে না। তাহলে গ্রামকে স্মার্ট করবে কে?’
তিনি বলেন, ‘আমরা অর্থাৎ হেযবুত তওহীদ চেষ্টা করছে একটি আদর্শ গ্রাম, একটি স্মার্ট গ্রাম তৈরি করতে। উতোমধ্যে এই কাজে অনেকটা সফল আমরা। আমরা প্রথমত আমার নিজের গ্রাম পোরকরা, নিজের ইউনিয়ন চাষীরহাটকে মডেল গ্রাম, স্মার্ট গ্রাম বানানোর চেষ্টা করছি। এখানে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাণিজ্য, কৃষি, মৎস্য, ক্ষুদ্র শিল্প ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের অর্ধশতাধীক উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিয়েছি। ইতোমধ্যেই অধিকাংশ প্রকল্প সফলতার আলো ছড়াচ্ছে তবে আমরা টার্গেট অনেক বড়। আমি বিশ^বাসীর কাছে এই মডেল তুলে ধরতে চাই। এজন্যই আপনাদেরকে আজ এখানে ডেকেছি। আমরা সবাই মিলে পরিকল্পনা করব, কীভাবে এই মডেল গ্রাম, স্মার্ট গ্রামের আদলে বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রামকে গড়ে তোলা যায়, কীভাবে বিশ^বাসীর কাছে এটা তুলে ধরা যায়।’
তিনি বলেন, ‘মুসলিম জাতি কখনো অনুন্নত, পশ্চাৎপদ, আনস্মার্ট হতে পারে না। আমাদের প্রিয় নবি মোহাম্মাদুর রসুলাল্লাহ (সা.) ছিলেন একজন স্মার্ট ব্যক্তিত্ব, তিনি তদানীন্তনকালের সবচেয়ে স্মার্ট জাতি গঠন করেছিলেন, যে জাতি বিশ^কে লিড দিয়েছে। আর এই কাজে সর্ব প্রথম তিনি মদিনা নামক ছোট্ট একটি স্মার্ট গ্রাম বিনির্মাণ করেছেন। আমরাও তাঁর আদর্শ বুকে ধারণ করে, তাঁর অনুসরণ করার চেষ্টা করছি, স্মার্ট একটি জাতি, স্মার্ট একটি দেশ গঠনের চেষ্টা করছি। ইনশাল্লাহ একদিন এই বাঙালি জাতিই বিশ^কে লিড দেবে, বিশ^বাসীর কাছে শিক্ষকের জাতি হিসাবে আত্মপ্রকাশ করবে।’
হেযবুত তওহীদের ঢাকা বিভাগীয় সভাপতি ডা. মাহফুজ আলম মাহফুজ বলেন, ‘এখন থেকে আপনারা প্রতিটা কাজ করার সময় চিন্তা করবেন যে, এই কাজটি বিশ^বাসীর সামনে তুলে ধরতে হবে, কাজেই কাজটি যেন নিখুঁৎ হয়, স্মার্ট হয়। শাখার উদ্যোগে যখন খেলাধুলার আয়োজন করবেন, কৃষি প্রকল্প চালাবেন, মৎস্য চাষ করবেন বা কোনো সভা-সেমিনার করবেন সেটা যেন অত্যন্ত সুশৃঙ্খল, সুন্দর, স্মার্ট হয়।’
অনুষ্ঠানের পর পবিত্র জুমা অনুষ্ঠিত হয়। মসজিদের নিকটেই চলছে ‘চাষীরহাট উন্নয়ন প্রকল্প’ কর্তৃক আয়োজিত ৭দিনব্যাপী চাষীরহাট উন্নয়ন মেলা। জুমার পর সকলে মেলা পরিদর্শন করেন এবং কেনাকাটা করেন। হেযবুত তওহীদের এমাম মেলা পরিদর্শনকালে স্মার্ট গ্রাম নিয়ে তাঁর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা জানান।
No Images.
Please upload images in images manager section. Click on Manage Images button on the right side of the gallery settings.
Please make sure that you didn't enabled option: Images of the Current Gallery. Option should have Show value to show images.