এম আর হাসান:
হেযবুত তওহীদের বিরোধিতায় যে ধর্মব্যবসায়ী গোষ্ঠীটি ব্যস্ত রয়েছে তারা এই আন্দোলনের মূল আহ্বানের বিষয়ে কথাই বলেন না। তাদের আলোচনা শাখা প্রশাখা নিয়ে। সে আলোচনার উদ্দেশ্য মানুষকে হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তোলা। কী বললে মানুষ ক্ষিপ্ত হবে এটা তারা ভালো জানে, এ খেলায় তাদের বিরাট অভিজ্ঞতা রয়েছে। ধর্মের নামে শত শত বছর থেকে বহু কিছু চালু হয়ে আছে যেগুলো আদৌ ধর্মের মূল শিক্ষা নয়। ধর্মব্যবসায়ীরা সেগুলোকে টিকিয়ে রেখেছেন নিজেদের জীবিকা আর সামাজিক অবস্থান ধরে রাখার জন্য। হেযবুত তওহীদ যখন এসব ভ্রান্ত সংস্কারের অনুসরণ না করে ইসলামের মূল বিষয়গুলো তুলে ধরছে তখন তারা হেযবুত তওহীদকে ইসলামের শত্রু, ইসলাম মানছে না বলে অপপ্রচার চালাচ্ছে। অভ্যস্ত বিশ্বাসে মানুষ এতটাই যুক্তিহীন ও অন্ধ থাকে যে কোনো অলৌকিক ঘটনা দেখিয়েও তাদেরকে সেই প্রচলিত বিশ্বাস থেকে খুব একটা বের করে আনা যায় না। তাদের কাছে “বাপ-দাদার আমল থেকে দেখে আসছি, সব আলেম ওলামারা কি তাহলে ভুল” ইত্যাদি বুলি কোর’আন হাদিসের চাইতেও শক্তিশালী দলিল।
যেমন একটি বদ্ধমূল ধারণা হচ্ছে মুসলিম মানেই তার মুখে দাড়ি থাকতে হবে, মাথায় টুপি থাকতে হবে। এটা মুসলমানিত্বের চিহ্ন। যার দাড়ি-টুপি নেই সে কোর’আন থেকে দেখিয়ে দিলেও তার কথা নেওয়া যাবে না। এভাবে প্রচলিত ধ্যানধারণার নিচে চাপা পড়ে যায় সত্য। অথচ ইসলামের মহাগ্রন্থ আল কোর’আনে না আছে দাড়ি রাখার নির্দেশ আর না আছে টুপি বা পাগড়ি পরার নির্দেশ। ওগুলো যদি এতই গুরুত্বপূর্ণ হত তিনি কি একটা আয়াতে এর নির্দেশ দিতে পারতেন না, যেখানে আল্লাহ বলেছেন, তিনি এই কেতাবে মানুষের ইহকাল ও পরকালের জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় এমন কিছুই বাদ দেন নি (সুরা আনআম ৩৮), বলেছেন এই দীন পূর্ণাঙ্গ? তিনি যেটা একবারও বলেন নি সেটাকেই সুন্নত বলে চালিয়ে দিয়ে কার্যত ওয়াজিব বানিয়ে ফেলা হয়েছে। অথচ দাড়ি, টুপি, পাগড়ি নব্যুয়তের সঙ্গে জড়িতই নয়, ওগুলা হচ্ছে ব্যক্তিগত অভ্যাস, অনভ্যাস (আদত) যা রসুলাল্লাহ নবী হওয়ার আগেও ছিল। সেই যুগে আরবের সব মানুষই ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে পাগড়ি বাঁধত, দাড়িও রাখত। বস্তুত এগুলো মুসলিম-অমুসলিম বা ধার্মিকতার চিহ্ন নয়। আল্লাহর রসুল সেটাও সুস্পষ্ট করে দিয়েছেন এই বলে যে, “আল্লাহ কারো বাহিরের চেহারা, বেশভূষা ও সম্পদ দেখেন না, তিনি দেখেন তোমাদের অন্তর ও তোমাদের কাজ (আবু হোরায়রা রা. থেকে মুসলিম, ইবনে মাজাহ, আহমদ)। অথচ যার দাড়ি নেই তাকে ফাসেক বলে ফতোয়া দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু আল্লাহ বলেন, যারা আল্লাহর নাজিলকৃত বিধান দিয়ে শাসনকার্য করে না তারা হল কাফের, জালেম ও ফাসেক (সুরা মায়েদা ৪৪, ৪৫, ৪৭)। আমাদের সমাজে কি আল্লাহর বিধান দিয়ে শাসন করা হয়? হেযবুত তওহীদ এই সত্যগুলো তুলে ধরছে, কিন্তু এ বিষয়ে ধর্মব্যবসায়ী গোষ্ঠী নিশ্চুপ।
জেহাদ বিষয়ে আল্লাহ কোর’আনে ছয় শতাধিক আয়াতে উল্লেখ করেছেন, “কুতিবা আলাইকুমুল কিতাল” বলে ন্যায়ের জন্য যুদ্ধ করাকে বাধ্যতামূলক করে দিয়েছেন (সুরা বাকারা ২১৬), সেই ফরজ কাজের কোনো গুরুত্ব ধর্মব্যবসায়ীদের কাছে নেই। যে একটি মাত্র কাজকে তিনি মো’মেনের সংজ্ঞার মধ্যে অঙ্গীভূত করে দিয়েছেন অর্থাৎ জেহাদ (মো’মেন শুধুমাত্র তারাই, যারা আল্লাহ ও রসুলের প্রতি ঈমান আনে, অতঃপর এসে কোনোরূপ সন্দেহ পোষণ করে না এবং সম্পদ ও জীবন দ্বারা আল্লাহর রাস্তায় জেহাদ, সংগ্রাম করে।- সুরা হুজরাত ১৫), সেই জেহাদের কোনো গুরুত্বই তাদের কাছে নেই। কারণ আর কিছু নয়, জেহাদ খুব কঠিন পথ, এই পথে বিপদ আছে, জীবন-জীবিকার উপর আঘাত আসে। এজন্য তারা নিরাপদ সব আমলের ওয়াজ করেন, বিশেষ করে যেগুলো করলে তাদের কিছু আয়-রোজগার হয় সেগুলো করতে বলেন। যেমন মিলাদের ফজিলত, আলেমদের ফজিলত, তারাবির ফজিলত, মসজিদ মাদ্রাসায় দানের ফজিলত ইত্যাদি। তাদের কাছে আল্লাহর হুকুম কায়েম করার কোনো দাম নেই, তারা কেবল নামাজ কায়েম করার কথা বলেন। দীন কায়েমের কথা বলেন না। হ্যাঁ, আল্লাহ নামাজ ফরজ করেছেন। কিন্তু মানবজাতিকে নামাজি বানানোর জন্যই কি রসুল এসেছিলেন? নামাজই কি মানবজাতিকে সকল অন্যায় অবিচার থেকে মুক্তি দিতে পারে? নামাজ পড়লেই কি একজন মানুষ জান্নাতে চলে যাবে? নামাজ গুরুত্বপূর্ণ আমল, কিন্তু তার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কেন নামাজ পড়তে হবে সেটা জানা। এই প্রশ্নগুলোর উত্তর হেযবুত তওহীদ দিচ্ছে আর ধর্মব্যবসায়ীরা সেগুলোকে ধামাচাপা দিতে চেষ্টা করছে যাতে করে তাদের তৈরি করা তওহীদ ও জেহাদবিহীন ‘ইসলাম’টা টিকে থাকে।
কিন্তু না। এ সত্য বলতেই হবে যে মানবজাতিকে কেবল ‘নামাজি’ বানাতে রসুলাল্লাহ আসেন নি। নবুয়্যাতের দ্বাদশ বর্ষে মেরাজে গিয়ে রসুলাল্লাহ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের হুকুম লাভ করেন। এর আগে তাঁরা কী করেছেন? নামাজ যদি ইসলামের মূল কাজ হতো তাহলে নবুয়্যাতের বারো বছর পরে কেন তার হুকুম এলো? তাহলে গুরুত্বের বিচারে ইসলামের প্রথম বিষয় সালাত নয়। প্রথম বিষয় হচ্ছে তওহীদ। এই তওহীদই হচ্ছে দীনের ভিত্তি। এই উত্তরটি আমরা নিজেরাই একটু চিন্তা করলে বুঝে নিতে পারি এবং এর সমর্থনেও বহু হাদিস উপস্থাপন করা যায়। নবী করিম (সা.)-কে প্রশ্ন করা হলো কোন আমল অধিক উত্তম। তিনি বললেন, আল্লাহ ও রসুলের প্রতি ঈমান আনা। প্রশ্ন করা হলো, এরপর কোনটি? জবাব দিলেন আল্লাহর পথে জেহাদ করা। পুনরায় প্রশ্ন করা হলো, এরপর কোনটি? উত্তর দিলেন, মকবুল হজ। (আবু হোরায়রা রা. থেকে বর্ণিত বোখারি ও মুসলিম)। সুতরাং গুরুত্বের ধারাবাহিকতায় সবার আগে নামাজ নয়, রোজা নয়, হজ্ব নয়। সবার আগে তওহীদ, তারপরে জেহাদ। তওহীদের এই অপরিসীম গুরুত্ব উপলব্ধি করেই এ আন্দোলনের নাম দেওয়া হয়েছে হেযবুত তওহীদ। অথচ এর বিরোধীরা সুকৌশলে আন্দোলনের মূল আহ্বান তওহীদকে পাশ কাটিয়ে কলহ বিবাদ সৃষ্টির জন্য ছুতানাতা খুঁজে বের করছেন। যারা মনে মনে ভাবছেন, আমরা তো তওহীদে আছিই, তারা পরবর্তী অংশটুকু আরো মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
মানুষের সমাজ কেবল দুইভাবে চলতে পারে। আল্লাহর তৈরি বিধান দিয়ে অথবা মানুষের তৈরি বিধান দিয়ে। একটি সমাজে যার সিদ্ধান্ত ও হুকুম চূড়ান্ত তিনিই ঐ সমাজে সার্বভৌম কর্তৃপক্ষ। যদি একটি সমাজ মানুষের হুকুমে চলে তাহলে সেখানে অন্যায় অশান্তি বিস্তার লাভ করবে, মানুষে মানুষে বৈষম্য হবে, যুদ্ধ রক্তপাত হবে। আর যদি সমাজ আল্লাহর হুকুমে চলে তাহলে সমাজে শান্তি, ন্যায়, সুবিচার প্রতিষ্ঠিত থাকবে। একটি সমাজ কার হুকুমে চলবে সেই সিদ্ধান্ত নিবে ঐ সমাজের মানুষ। আল্লাহর রসুল নবুয়ত পেয়ে মক্কাবাসীকে আল্লাহর হুকুমে সমাজ পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রস্তাব করলেন। তিনি বললেন আল্লাহকে একমাত্র এলাহ বা হুকুমদাতা হিসাবে এবং তাঁকে আল্লাহর রসুল হিসাবে মেনে নেওয়ার জন্য। এটুকু মেনে নিলে তিনি গোটা সমাজের ব্যবস্থা পরিবর্তন করে দিবেন এবং সমগ্র পৃথিবী তাদের পায়ে লুটিয়ে পড়বে। তাঁর এই একটি কথা মেনে নিলে তিনি এত বড় কাজ করে দেখাবেন। কিন্তু মক্কার নেতারা বুঝল, এই প্রস্তাব মেনে নিলে সমাজের নেতৃত্ব চলে যাবে আল্লাহর রসুল হিসাবে মোহাম্মদ (সা.) এর হাতে। তাদের কায়েমী স্বার্থ নষ্ট হয়ে যাবে। তাই তারা রসুলাল্লাহর বিরুদ্ধাচারণ শুরু করল। তিনি যদি তাদেরকে নামাজ পড়ার জন্য উপদেশ দিতেন বা আহ্বান করতেন তাহলে আদৌ এই দ্বন্দ্ব হতো কি? সমাজে কর্তৃত্ব করবে কে, হুকুম চলবে কার এ প্রশ্ন তোলার জন্যই দক্ষযজ্ঞ বেধে গেল। প্রথম বারো বছর তিনি তো তাঁর অনুসারীদেরকে নিয়ে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজই পড়েননি, নামাজের বর্তমান পদ্ধতিই আসেনি। এ সময়ের মধ্যেই তো সুমাইয়া, ইয়াসিরের (রা.) মত সাহাবিরা শহীদও হয়ে গেছেন। নামাজই যদি জান্নাতের চাবি হয় তাহলে তাঁদের কী হবে? এর জবাব হলো, জান্নাতের একমাত্র শর্ত আল্লাহ ও রসুলের প্রতি ঈমান তথা তওহীদের স্বীকৃতি। বর্তমানে এটা কেবল আল্লাহর অস্তিত্বে বিশ্বাসের মধ্যে সীমাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। আল্লাহর অস্তিত্বে মক্কার কাফের মোশরেকদেরও ছিল, ইবলিসেরও আছে। কিন্তু সেটা ঈমানের দাবি নয়। প্রকৃতপক্ষে ঈমান আনার অর্থ- আল্লাহ ছাড়া আর সকল বিধানদাতা, হুকুমদাতাকে অস্বীকার করা। এটাই সকল আমলের পূর্বশর্ত। তওহীদে না এসে হাজারো নামাজ, রোজা ও অন্যান্য আমল কোনো নেকি লেখাবে না আমলনামায়।
হেযবুত তওহীদ বলছে, মুসলিম জাতি এই তওহীদে নেই, পক্ষান্তরে নামাজকেই দীনের মূল কাজ বানিয়ে নিয়েছে। আল্লাহ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আদেশ দিয়েছেন মো’মেনদেরকে, অপর কাউকে নয়। আর মো’মেন হতে হলে তওহীদের অঙ্গীকারে সত্যবাদী হতে হবে এবং আল্লাহ প্রদত্ত সংজ্ঞানুসারে মো’মেন হতে হবে। বংশপরম্পরায় কেউ মো’মেন হতে পারে না। অথচ আজকের এই মুসলিম দাবিদার এই জাতি তওহীদের অঙ্গীকার মূলত কী সেটাও যেমন জানে না, তেমনি মো’মেনের সংজ্ঞা কী তাও জানে না, কীভাবে আল্লাহর হুকুমগুলো পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠা করতে হবে সেটা সম্পর্কেও তাদের স্পষ্ট ধারণা নেই। তারা ইসলাম বলতে বোঝে পরকালীন সুখের আশায় আমল করে যাওয়া। আর ইহকালে তারা আল্লাহর হুকুমের পরিবর্তে মানছে পাশ্চাত্যের বস্তুবাদী ইহুদি খ্রিষ্টান সভ্যতা দাজ্জালের তৈরি করা জীবনব্যবস্থা বা দীন, তাদের অর্থনীতি, সংস্কৃতি, বিচারব্যবস্থা, আইন-কানুন, দণ্ডবিধি। কোর’আনে বর্ণিত সামষ্টিক জীবনের সকল বিধানকেই অস্বীকার করে পাশ্চাত্যের প্রবর্তন করা বিধানগুলোকে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। কোর’আন বাদ দিয়ে মুসলিম থাকা যায় না এই বোধ তাদের মগজ থেকে লুপ্ত হয়ে গেছে বা লুপ্ত করে দেওয়া হয়েছে। এভাবে তারা আল্লাহর পরিবর্তে এলাহ বা হুকুমদাতা হিসাবে মেনে চলছে পাশ্চাত্যের সভ্যতাকে যা শেরক। কারণ তওহীদের বিপরীতটাই হলো শেরক (অংশীবাদ) আর তওহীদের অঙ্গীকার, “কেবল আল্লাহ ছাড়া আর কোনো হুকুমদাতা নেই”। আজকে আল্লাহর সার্বভৌমত্বের পরিবর্তে মানুষের সার্বভৌমত্ব কায়েম করা হয়েছে। হুকুম রচনা করছে মানুষ। আল্লাহর কোনো হুকুমই জাতীয় জীবনে কার্যকর নেই, তাঁকে ক্ষমতাহীন উপাস্য বানিয়ে রাখা হয়েছে, উপাসনালয়ের বাইরে তাঁর আনুগত্য লাভের অধিকারকেই অস্বীকার করা হয়েছে। এই শেরক ও কুফর করার ফলে এই মুসলিম দাবিদার জাতি কার্যত মোশরেক ও কাফেরে পরিণত হয়েছে। এমতাবস্থায় তাদের আমল পাহাড় সমান হলেও তার মূল্য নেই – কারণ মোশরেকের জন্য জান্নাত হারাম (সুরা মায়েদা ৭২)। আর শেরক ক্ষমা না করতে আল্লাহ অঙ্গীকারাবদ্ধ (সুরা নিসা ৪৮, ১১৬)।
ইসলামের এই মুখ্য (Vital) বিষয়গুলো হেযবুত তওহীদ আবার তুলে ধরছে। কিন্তু শত শত বছর থেকে ইসলামের ধ্বজাধারী ধর্মীয় পেশাজীবী একটি বিরাট শ্রেণি গজিয়ে উঠেছে যাদের অর্থ ও সম্মানের উৎস এই ইসলাম। ইসলাম তাদের কুক্ষিগত হয়ে পড়েছে। পরিস্থিতি ঠিক ১৪শ’ বছর আগের অনুরূপ যখন অজ্ঞতার অন্ধকারে নিমজ্জিত আরব সমাজে এসে কাবাকেন্দ্রিক ধর্মব্যবসা ও মানুষের মনগড়া শাসনব্যবস্থার উপর আঘাত হেনেছিলেন আল্লাহর রসুল, যার প্রতিক্রিয়ায় তাঁকে ধর্মব্যবসায়ী ও গোত্রীয় নেতৃত্বের চরম বিরোধিতার মুখে পড়তে হয়েছিল। অপপ্রচার আর নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছিল সত্যগ্রহণকারী মো’মেনদের। আজও অনুরূপভাবে বর্তমানের অন্যায় অবিচারপূর্ণ শাসনব্যবস্থা, সমাজব্যবস্থা, বিশ্বব্যবস্থাকে এবং সেই সঙ্গে ইসলামের নামে প্রচলিত বিকৃত বিপরীতমুখী ধর্মকে চ্যালেঞ্জ করেছে হেযবুত তওহীদ। তারই পরিণামে সত্য ও মিথ্যার চিরন্তন দ্বন্দ্ব ফিরে এসেছে আল্লাহর জমিনে।
হেযবুত তওহীদ যখন ইসলামের মৌলিক ও অতি-গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো তুলে ধরছে তখন ধর্মব্যবসায়ী একটি শ্রেণি যারা আল্লাহর নাযিল করা ইসলামকে ব্যক্তি স্বার্থে, গোষ্ঠী স্বার্থে এবং রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করে তারা আমাদের বিরুদ্ধে আদাজল খেয়ে নেমেছে। তারা ওয়াজ মাহফিলের মত জনসমাগমে, মসজিদের মিম্বরে বসে, রাস্তাঘাটে, হাটেবাজারে ঘুরে ঘুরে সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষদের মধ্যে হেযবুত তওহীদ সম্পর্কে ভুল বুঝাচ্ছে, মিথ্যা ধারণা দিচ্ছে, প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। তাদের এসব ফতোয়াবাজির ফলে আন্দোলনের নির্দোষ নিরপরাধ সদস্যরা নানা জায়গায় আক্রান্ত হচ্ছে। আমাদের মূল বক্তব্যকে আড়াল করার জন্য এরা নানান অপ্রয়োজনীয় অনর্থক বিষয়গুলো সামনে আনছে। সরল ধর্মপ্রাণ মানুষকে ধোঁকা দেওয়ার জন্য আমরা যা বলি নাই, করি নাই, যা আমাদের আকিদা নয়, বিশ্বাস নয়, যে কথা আমাদের কোনো প্রকাশনায় লেখা নেই সেগুলো আমাদের নামে বানিয়ে বানিয়ে বলে বেড়াচ্ছে। কিন্তু আলহামদুলিল্লাহ, সাধারণ মানুষ আমাদের বক্তব্যও এখন জানতে পারছে। ফলে তাদের অপপ্রচার আর আগের মত হালে পানি পাচ্ছে না। যারা আমাদের সদস্যদের উপর হামলা করছে তারা আইনের আওতায় আসছে, মুচলেকা দিয়ে ক্ষমাপ্রার্থনা করছে। ক্রমে ধর্মব্যবসায়ী গোষ্ঠীর উপর থেকে ধর্মবিশ্বাসী মানুষের অন্ধবিশ্বাস চলে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে ঝুঁকিতে পড়েছে ধর্মব্যবসা।
[লেখক: সাংবাদিক ও গবেষক; যোগাযোগ: ০১৬৭০১৭৪৬৪৩, ০১৭১১০০৫০২৫, ০১৭১১৫৭১৫৮১]