ঢাকার পাবলিক লাইব্রেরীর ভিআইপি সেমিনার কক্ষে দৈনিক দেশেরপত্রের উদ্যোগে আয়োজিত ‘মানবতার কল্যাণে সত্যের প্রকাশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় মঞ্চে উপবিষ্ট আছেন (বা থেকে) মসীহ উর রহমান, উপদেষ্টা দৈনিক দেশেরপত্র; অভি চৌধুরী, সভাপতি, ঢাকা মিডিয়া ক্লাব; রুফায়দাহ পন্নী, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, দৈনিক দেশেরপত্র; কে জি মোস্তাফা, বিশিষ্ট গীতিকার, কবি, কলামিষ্ট ও সাংবাদিক; কাজী রওনক হোসেন, সিনিয়র সহ-সভাপতি জাতীয় প্রেসক্লাব; সাহিত্যিক ও কবি জাকির আবু জাফর।
আমিনুল ইসলাম:
গতকাল ২০ জুলাই ২০১৩ ঈসায়ী শনিবার সকাল সাড়ে এগারটায় ঢাকার পাবলিক লাইব্রেরী ভিআইপি সেমিনার কক্ষে ‘দৈনিক দেশেরপত্র’-এর উদ্যোগে ‘মানবতার কল্যাণে সত্যের প্রকাশ’ শীর্ষক একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। দৈনিক দেশেরপত্রের ভারপ্রাপ্ত সম্পদক রুফায়দাহ পন্নী’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট গীতিকার, কবি, কলামিস্ট ও সাংবাদিক কে জি মোস্তফা। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি কাজী রওনক হোসেন, দৈনিক দেশেরপত্রের উপদেষ্টা মসীহউর রহমান, পত্রিকাটির প্রধান বার্তা সম্পাদক এস.এম. সামসুল হুদা, দৈনিক নিউজের সম্পাদক হুমায়ূন কবির, সাহিত্যিক ও কবি জাকির আবু জাফর, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব আলমগীর হোসেন, ঢাকা মিডিয়া ক্লাবের সভাপতি অভি চৌধুরী প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন ফাহমিদা পান্না এবং জাহিদুল ইসলাম মামুন।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধনীতে দৈনিক দেশেরপত্রের দেশব্যাপী ক্যাম্পেইন কার্যক্রমের উপরে একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি কে.জি. মোস্তফা দেশেরপত্রের এই অভিযাত্রাকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “শিক্ষিত হওয়া মানেই জ্ঞানী নয়, নিজের দোষ ত্র“টির দিকে দৃষ্টিপাত করে সত্য প্রকাশে এগিয়ে যাওয়া দরকার।” রওনক হোসেন বলেন, “আজকের সমাজে নৈতিকতার চরম অবক্ষয় ঘটেছে, অবস্থানভেদে একজন মানুষের চেয়ে কুকুরের জীবনের মূল্য বেশি। এর থেকে মুক্ত হতে হলে সত্যের প্রকাশ ঘটাতেই হবে আর এই সত্যের প্রকাশ ঘটাতে হবে পরিবার থেকে, সবার আগে নিজের মনটাকে স্বচ্ছ করতে হবে।” কবি জাকির আবু জাফর বলেন, “সত্যই সুন্দর, সুন্দরই সত্য। আজকের পৃথিবীর মানুষ সত্যকে লুকাতে চায়, আড়াল করতে চায়। গোটা বিশ্বকে শাসন করে মিডিয়া কিন্তু এই মিডিয়াই সামান্য কিছু অর্থের বিনিময়ে ঘটনার আড়ালের সত্যকে গোপন রাখে। আমাদেরকে এই অবস্থা থেকে বের হতে হবে। সত্যের আগমনেই মিথ্যা দূরীভূত হবে।”
প্রধান অতিথিসহ সকল অতিথি এবং আলোচকবৃন্দ তাদের বক্তব্যে যে বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়েছেন তা হলো, বর্তমানে আমরা এক ভয়াবহ দুঃসময় অতিক্রম করছি। সামাজিক অন্যায়, নেতৃত্বের অসততা, অঙ্গীকারভঙ্গ, রাজনৈতিক অস্থিরতা, ঘুষ, দুর্নীতি, অর্থনৈতিক অবিচার, পারস্পরিক অবিশ্বাস ইতাদির মধ্যে মানবজাতি নিমজ্জিত হয়ে আছে। এই অবস্থাটি সৃষ্টির পেছনে কোন একক ব্যক্তি বা দল দায়ী নয়, দায়ী হচ্ছে আমাদের সিস্টেম বা জীবনব্যবস্থা। বর্তমানে আমরা যে সিস্টেমের মধ্যে বাস করছি তা একজন সৎ মানুষকে অসৎ হতে বাধ্য করে, একজন ব্যাবসায়ীকে প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকার জন্য পণ্যে ভেজাল দিতে বাধ্য করে, একজন চাকুরীজীবিকে নিত্য নতুন খরচের সঙ্গে পাল্লা দিতে গিয়ে ঘুষ বাণিজ্যে জড়িত হতে বাধ্য করে, সমাজ সেবার মানসিকতার একজন রাজনীতিককে দুর্নীতি ও জনগণের সম্পদ লুট করতে বাধ্য করে, একজন ছাত্রকে লেখাপড়া বাদ দিয়ে সন্ত্রাসী হতে বাধ্য করে। ধর্মীয় ক্ষেত্রেও পরিস্থিতি অত্যন্ত নাজুক পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, এই সিস্টেম একজন ব্যক্তিকে একাধারে ধর্মহীন এবং ধর্মব্যবসায়ী হতে বাধ্য করে। তাই সবাই একমত যে, এই পরিস্থিতি থেকে নি®কৃতি পেতে হলে, অন্যায় অরাজকতা হিংসা হানাহানী ইত্যাদি থেকে সমাজকে মুক্ত করে সমাজে শান্তির ধারা অব্যাহত রাখতে হলে এই সিস্টেমের পরিবর্তন আবশ্যক।