শাকিলা আলম
ষোল কোটি মানুষের মাতৃভূমি বাংলাদেশের প্রায় ৯০ ভাগ মানুষ মুসলমান। তারা আল্লাহ, আল্লাহর রসুল ও ইসলামকে প্রাণের চেয়ে বেশি ভালোবাসে। এ অঞ্চলের মানুষের ধর্মের প্রতি টান হাজার বছরের পুরানো। এটা তাদের রক্ত-মাংসের সাথে মিশে আছে। একে জীবন থেকে কোনোভাবেই আলাদা করা সম্ভব নয়। এই শুভ চেতনাকে ভুল পথে পরিচালিত করার প্রবণতাই আজ বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়িয়েছে আমাদের দেশের জন্য। মধ্যপ্রাচ্যের জঙ্গিগোষ্ঠী আই এস, আল কায়েদা ইত্যাদি সারা বিশ্বের জঙ্গি ও জঙ্গিসমর্থকদের আদর্শিক ‘হিরো’তে পরিণত হয়েছে। ইউরোপ-আমেরিকাসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে ধর্মপ্রাণ মানুষ কথিত জেহাদের নেশায় ছুটে গেছে ইরাক-সিরিয়ায়। তারা আন্তরিকভাবে চায় যে আল্লাহর আইন-বিধান প্রতিষ্ঠিত হোক। কোর’আনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য তারা এমনভাবে অনুপ্রাণিত (Motivated) ও সংকল্পবদ্ধ (Determined) যে আল্লাহর রাস্তায় নিজেদেরকে সম্পূর্ণভাবে উৎসর্গ করে দিয়েছে। কোনো পার্থিব স্বার্থে নয়, আল্লাহ ও আল্লাহর রসুলকে ভালোবেসেই তারা এ পথ বেছে নিয়েছে। তারা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করে যে, ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য জীবন উৎসর্গ করতে পারলেই চূড়ান্ত সফলতা আসবে, এর বিনিময়ে আখেরাতে জান্নাতে যেতে পারবে। এজন্য শরীরে বাঁধা বোমা ফাটিয়ে প্রাণ বিসর্জন দিতেও তারা কুণ্ঠিত হচ্ছে না, এবং এমন লোকের সংখ্যা ক্রমাগত বেড়েই চলছে। ‘জেহাদী তামান্না’ বাংলাদেশের মানুষের মধ্যেও আছে। বাংলাদেশে গত দুই বছরে বহু আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণ, জঙ্গি আস্তানা ঘেরাও করে অভিযান ইত্যাদি ঘটনা ঘটে গেছে। হলি আর্টিজানে সারা রাত ২০ জন দেশী বিদেশী নাগরিকদের জবাই করা হয়েছে আল্লাহু আকবার ধ্বনি উচ্চারণ করে। বাংলাদেশ থেকে আইএসে যোগদানের উদ্দেশ্যে ইরাক যাবার পথে বিমানবন্দর থেকে কয়েকজনকে আটক করার ঘটনা ঘটেছে। বাংলাদেশি বংশদ্ভূত অনেকে আইএস- এর পক্ষে যুদ্ধ করতে গিয়ে নিহত হয়েছে। আবার স¤প্রতি ব্রিটেনে বসবাসকারী বাংলাদেশি বংশদ্ভূত ১৩ সদস্যের একটি পরিবার আইএসে পাড়ি জমিয়েছে। কিছুদিন পরে প্রকাশিত একটি ভিডিওতে তারা দাবি করে যে, সেখানে তারা এতটা শান্তি ও নিরাপত্তায় আছে যা অতীতে কোথাও পায় নি।
আমরা জানি গণতান্ত্রিক পুঁজিবাদী ব্যবস্থার নিষ্পেষণ থেকে মানুষের মুক্তির জন্য যখন সমাজতন্ত্রের আবিষ্কার হলো, তখন সমাজতন্ত্রের মধ্যে মুক্তি আছে মনে করে পঙ্গপালের মতো লক্ষ লক্ষ মানুষ সমাজতন্ত্রের শিখায় ঝাঁপ দিল। কিন্তু কিছুদিন পরেই তাদের স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল। এখন বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশের গণতান্ত্রিক হানাহানির বীভৎসতা থেকে মানুষ মুক্তি চাচ্ছে। এটাও চাচ্ছে কয়েক যুগ থেকে। স¤প্রতি আইএস মহানবীর ভবিষ্যদ্বাণীকৃত হাদিস (যদিও অনেক হাদিসের বিশুদ্ধতা নিয়ে খোদ হাদিসবেত্তাদেরই প্রচুর মতভেদ রয়েছে, হাদিসের নামে বহু দয়ীফ, জাল বা ভুয়া হাদিস প্রচলিত আছে) মিলিয়ে মিলিয়ে ইসলামী খেলাফতের নামে এমন একটি কৃত্রিম কাঠামো দাঁড় করিয়ে ফেলছে যে, ধর্মবিশ্বাসী মানুষদের মধ্যে একটি বড় অংশ মনে করছে আইএস-এর মাধ্যমেই ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যেই এই ধ্যানধারণা দ্বারা উদ্বুদ্ধ পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ধর্মপ্রাণ মানুষ ছুটছে ইরাক-সিরিয়ার পথে। আধুনিক পৃথিবীতে ধনে-সম্পদে, জ্ঞানে-বিজ্ঞানে, শিল্প-সাহিত্যে, সামরিক শক্তিতে অর্থাৎ পার্থিব বিচারে সর্বাধিক উন্নত ইউরোপ থেকেও যখন দলে দলে ধর্মপ্রাণ মানুষ সমস্ত বাধার প্রাচীর ডিঙ্গিয়ে, প্রাণের মায়া ত্যাগ করে সিরিয়া-ইরাকে ছুটছে তখন আমাদের দেশের দারিদ্র্য-কষ্টে জর্জরিত সরলপ্রাণ ধর্মবিশ্বাসী মানুষগুলোর ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবার সময় এসেছে। অতীতের কথা ভুললে চলবে না যে, এমনই এক প্রেক্ষাপট অর্থাৎ আফগানিস্তানে সোভিয়েত বাহিনীর বিরুদ্ধে কথিত জেহাদ থেকেই এক সময় বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটেছিল।
মানুষের জেহাদী তামান্না কাজে লাগিয়ে সম্পূর্ণ উদ্দেশ্য-প্রণোদিতভাবে উন্মাদনা সৃষ্টি করা হয় বাংলাদেশেও , যা বার বার আমরা দেখেছি। মানুষের ধর্মীয় সেন্টিমেন্টকে কাজে লাগিয়ে এক শ্রেণির ধর্মব্যবসায়ী অর্থনৈতিক স্বার্থ আদায় করছে। অপরদিকে ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনীতিক উদ্দেশ্য হাসিল করার ঘটনাও অহরহ ঘটে। তার উপর আছে আন্তর্জাতিক জঙ্গিবাদের অশুভ ছায়া। দেশব্যাপী একযোগে জঙ্গি হামলার ঘটনা কেউ ভুলে যায় নি। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যাপক দমন-পীড়নের মাধ্যমে সেটাকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছে বটে, কিন্তু ঝুঁকি রয়েই গেছে। প্রায় প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও জঙ্গি সম্পৃক্ততার অভিযোগে গ্রেফতার হচ্ছে অনেকে। স¤প্রতি ক্রমাগত ব্লগার হত্যাকাণ্ডের পেছনে জঙ্গি সংগঠনগুলোকেই দায়ী মনে করছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বস্তুত অতি শক্তি সম্পন্ন গ্যাস বোতলে ঢুকিয়ে দিয়ে যেমন ছিপি দিয়ে আটকিয়ে রাখার চেষ্টা করা হয়, জঙ্গিদেরকে ঠিক সেভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। ফলে সাময়িক উপশম হয়েছে, কিন্তু নির্মূল হয়ে যায় নি। ধর্মের বিবিধ অপব্যবহারের সংস্কৃতি এবং আন্তর্জাতিক গতিপ্রকৃতি বিশ্লেষণ করে এ কথা বলায় দোষের কিছু থাকে না যে, বাংলাদেশ ভয়াবহ বিপদের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে।
শুধু শক্তি প্রয়োগে জঙ্গিবাদ নির্মূল সম্ভব নয়:
জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে কয়েক দশক ধরে সশস্ত্র যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেনসহ পরাশক্তিধর রাষ্ট্রগুলো। কিন্তু বাস্তবতা হলো- সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কথিত যুদ্ধ যতই বিস্তার লাভ করেছে, জঙ্গিবাদও ততই তার ডাল-পালা বিস্তৃত করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের মতো পরাশক্তি তালেবান-আল কায়েদার মোকাবেলায় ব্যর্থ হয়ে আফগানিস্তান থেকে ফিরে গেছে এবং নিজেদের অসফলতার কথা পুনঃ পুনঃ স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে। বারাক ওবামা নিজে বলেছেন, “বুলেট-বোমা দিয়ে জঙ্গিবাদ মোকাবেলা করা যাবে না, বিকল্প পন্থা খুঁজতে হবে।” তালেবান ও আল কায়েদার বিরুদ্ধে প্রায় এক যুগ লড়াই করার পর ঈঙ্গ-মার্কিন শক্তির এসব অসহায় স্বীকারোক্তি কী বার্তা বহন করে? এর মাঝে তারা কী পরিমাণ শক্তি প্রয়োগ করেছে, কী অঢেল অর্থব্যয় করেছে তা বিজ্ঞ মানুষমাত্রই জানেন। বছর কয়েক আগের ইউরোপ-আমেরিকায় সংঘটিত বিরাট অর্থনীতিক মন্দার পেছনে অন্যতম কারণ ছিল এই সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর অকল্পনীয় অর্থব্যয়। অথচ এত এত অর্থব্যয়ের পর, সামরিক শক্তিতে অপ্রতিরোধ্য বলে কথিত পরাশক্তিগুলো ব্যর্থতার গ্লানি বরণ করছে। সামরিক শক্তি, অর্থবল ও মিডিয়ায় সমৃদ্ধ বিশ্বের পরাশক্তি রাষ্ট্রগুলোই যদি শুধুমাত্র শক্তি প্রয়োগ করে জঙ্গিবাদ নির্মূল করতে ব্যর্থ হয় তাহলে আমাদের মতো তৃতীয় বিশ্বের দরিদ্র দেশের সরকার যে ব্যর্থ হবে তা বোঝাই যায়। প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে বিকল্প পন্থা খোঁজার ঘোষণা দিয়েছেন ২০০৯ সালে (ইইঈ, ঞযব ঝঞঅজ, ৩ অঢ়ৎরষ, ২০০৯), কিন্তু বিকল্প কোনো পন্থা না পাওয়ায় তারা আজও প্রচলিত শক্তি প্রয়োগের পন্থার উপরই নির্ভর করছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রীও পূর্বোল্লিখিত ভাষণে স্বীকার করেছেন যে, জঙ্গিরা নতুন নতুন কৌশল ধারণ করছে, সে ক্ষেত্রে শুধুমাত্র শক্তি প্রয়োগের পন্থাতেই কি সরকার সীমাবদ্ধ থাকবে? নাকি শক্তি প্রয়োগের পাশাপাশি নতুন কোনো সমাধানের খোঁজ করবে?
বর্তমানে ইসলামের নাম করে যে দীনটি প্রচলিত আছে তা বাহ্যিক দৃষ্টিতে প্রকৃত ইসলামের মতো মনে হলেও, আত্মায় ও চরিত্রে আল্লাহর রসুলের ইসলামের সম্পূর্ণ বিপরীত। যেটাকে আইএস, বোকো হারাম, আল কায়েদা, ইখওয়ান, তালেবানরা ইসলাম মনে করছে এবং ভাবছে সেটাকে প্রতিষ্ঠা করে স্বর্ণযুগ ফিরিয়ে আনবে সেটা বিগত ১৩০০ বছরের ধারাবাহিক বিকৃতির ফল, প্রকৃত ইসলামের ছিটে ফোটাও এর মধ্যে নেই। দীন নিয়ে অতি বিশ্লেষণকারী আলেম, মুফতি, মোফাস্সের, মোহাদ্দেস, সুফি, দরবেশ ও পীর-মাশায়েখদের অপ্রয়োজনীয় তর্ক-বিতর্ক, বাহাস, মতভেদ ও চুলচেরা বিশ্লেষণের পরিণামে দীনের ভারসাম্য হারিয়ে গেছে অনেক আগেই, সেই ভারসাম্যহীন দীনের ভিন্ন ভিন্ন ভাগকে আঁকড়ে ধরে ছিল ভিন্ন ভিন্ন ফেরকা-মাজহাব, দল-উপদল। এর মধ্যে ইসলাম পারস্যে প্রবেশ করলে সেখানকার পূর্ব থেকে বিরাজিত বিকৃত আধ্যাত্মবাদ ইসলামে প্রবেশ করল। বিকৃত সুফীবাদী ধ্যান-ধারণার প্রভাবে এক সময়ের প্রগতিশীল, অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে সংগ্রামী, বহির্মুখী, প্রগতিশীল, উদার, যুক্তিপূর্ণ ইসলাম অন্তর্মুখী, গতিহীন, অযৌক্তিক, পলায়নপর সাধু-সন্ন্যাসের ধর্মে পরিণত হলো। তারপর আসল ব্রিটিশরা। তারা এই জাতির কফিনে শেষ পেরেকটা ঠুকল। আগের শিক্ষাব্যবস্থাকে উপড়ে ফেলে নিজেরা মাদ্রাসা তৈরি করে সেই মাদ্রাসায় ব্রিটিশরা তাদের নিজেদের সুবিধামতো একটি বিকৃত ইসলাম এই জাতিকে শিক্ষা দিল। ব্রিটিশদের শেখানো এই বিকৃত ইসলামের আদর্শ থেকেই সারা বিশ্বে জঙ্গিবাদ বিস্তৃত হয়েছে, যার ফলাফল, শান্তি প্রতিষ্ঠার নামে জ্বলছে অশান্তির লেলিহান শিখা।
উম্মতে মোহাম্মদী হওয়া এবং শান্তি ও নিরাপত্তা লাভের আশায় বিকৃত ধর্মীয় আদর্শের শিক্ষায় শিক্ষিত যে মানুষগুলো পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে জঙ্গিবাদের পথে পা বাড়াচ্ছে তারা যতদিন এ কথা বুঝছে না যে, এই বিকৃত ইসলাম তাদেরকে শান্তি ও নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হবে এবং এ পথে সংগ্রাম করলে উম্মতে মোহাম্মদীর মর্যাদা লাভ তো পরের কথা, বরং দুনিয়া ও আখেরাত উভয়ই হারাতে হবে ততদিন শুধু শক্তি প্রয়োগ করে বড়জোর তাদের কার্যক্রমকে কিছু সময়ের জন্য স্তিমিত করা যেতে পারে, বন্ধ করা যাবে না।
সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষের মধ্যেও ইসলামের প্রকৃত ব্যাখ্যা প্রদান করে ব্যাপক গণজাগরণ তৈরি করতে হবে। সাধারণ মানুষের ঈমান বা ধর্মবিশ্বাস যতদিন না কল্যাণের পথে ব্যবহার করা যাচ্ছে, ধর্মব্যবসায়ী ও জঙ্গিবাদী গোষ্ঠী ততদিন তাকে অকল্যাণের পথে ব্যবহার করতেই থাকবে। ঈমান আছে মানেই, ধর্মবিশ্বাস আছে মানেই তা ব্যবহৃত হবেই। তাই চেষ্টা চালাতে হবে অকল্যাণের পথে ব্যবহৃত না হয়ে মানুষের ঈমানী শক্তিকে জাতির কল্যাণের পথে ব্যয় করার।
হেযবুত তওহীদের প্রতিষ্ঠাতা মাননীয় এমামুয্যামান জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নী ২০০৯ সনেই এ বিষয়টি অনুধাবন করে সরকারকে শক্তি প্রয়োগের পাশাপাশি আদর্শিক লড়াইয়ের কৌশল প্রস্তাব করেছিলেন। তিনি লিখেছিলেন, জঙ্গিরা পার্থিব স্বার্থে তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালিত করছে না, এই পথকে তারা পরকালীন মুক্তির পথ বলে বিশ্বাস করেন। তাই জঙ্গিবাদের নির্মূল চাইলে সর্বাগ্রে তাদের এই বিশ্বাসকেই ভুল প্রমাণ করতে হবে। সরকারের হাতে আছে শক্তি, অর্থ, আর হেযবুত তওহীদের কাছে আছে সঠিক আদর্শ। কাজেই উভয়ের যৌথ প্রচেষ্টাতেই একমাত্র সম্পূর্ণভাবে জঙ্গিবাদ নির্মূল সম্ভব হবে। আমরা এতদিন আমাদের ক্ষুদ্র সাধ্যের সবটুকু উজাড় করে দিয়ে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে এসেছি, এখনও তা অব্যাহত আছে। গত চার বছরে আমরা এক লক্ষেরও অধিক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠান, সভা, সেমিনার, বই, হ্যান্ডবিল, পত্রিকা প্রকাশ করে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে আদর্শিক লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি। এতে আমাদের কোনো অর্থনৈতিক স্বার্থ নেই, রাজনীতিক অভিপ্রায়ও নেই। আমরা এমামুয্যামানের উপস্থাপিত অকাট্য, অখণ্ডনীয় মহাসত্যের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে ধর্মীয় ও সামাজিক দায়িত্ববোধ থেকে মানবতার কল্যাণে কাজ করছি। একটি শান্তিপূর্ণ প্রগতিশীল সমাজ নির্মাণ করতে পারলেই আমাদের জীবন সার্থক হবে। কিন্তু এই সীমিত পরিসরে প্রচেষ্টা চালিয়ে আসন্ন জাতীয় সঙ্কট মোকাবেলা করা সম্ভব নয়। আমরা দৃঢ়ভাবে বলতে চাই, সরকার যদি একে আরও বৃহত্তর আঙ্গিকে ছড়িয়ে দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করেন, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে আমাদের প্রচারিত তথ্য-উপাত্ত ও যুক্তি-প্রমাণকে সমস্ত মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেন তাহলে বাংলাদেশ জঙ্গিবাদ থেকে মুক্ত হতে পারে।