হেযবুত তওহীদ

মানবতার কল্যাণে নিবেদিত

দাজ্জালের জান্নাত-জাহান্নাম এবং কমিউনিজমের স্বর্গ-নরক

মুস্তাফিজ শিহাব

আল্লাহর রসুল বলেছেন, “দাজ্জালের সঙ্গে জান্নাত ও জাহান্নামের মতো দুইটি জিনিস থাকবে। সে যেটাকে জান্নাত বলবে সেটা আসলে হবে জাহান্নাম, আর সে যেটাকে জাহান্নাম বলবে সেটা আসলে হবে জান্নাত। তোমরা যদি তার সময় পাও তবে দাজ্জাল যেটাকে জাহান্নাম বলবে তাতে পতিত হইয়ো, সেটা তোমাদের জন্য জান্নাত হবে (আবু হোরায়রা (রা.) এবং আবু হোযায়ফা (রা.) থেকে বুখারী ও মুসলিম)।”

আল্লাহর রসুল শেষ যামানায় তাঁর উম্মাহকে দাজ্জালের কোপানল থেকে রক্ষার জন্য যে সকল ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন সেগুলোর মধ্যে উপর্যুক্ত হাদিসটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমান সময়ের ইহুদি খ্রিষ্টান যান্ত্রিক বস্তুবাদী ‘সভ্যতা’ যে দাজ্জাল তা এই একটি হাদিস থেকেই পরিষ্কার হয়ে যায়। ইউরোপে, রাজা অষ্টম হেনরির রাজত্বকালে যখন ধর্মনিরপেক্ষতার জন্ম হলো তখনই জন্ম হলো দাজ্জালের। স্রষ্টা প্রদত্ত জীবনব্যবস্থাকে বাদ দিয়ে এই প্রথমবার মানুষ নিজের তৈরি জীবনব্যবস্থা দ্বারা নিজেদের সমাজজীবন ও রাষ্ট্রীয়জীবন পরিচালনা শুরু করলো। বলা হলো, স্রষ্টার তৈরি জীবনবিধান প্রাচীন, সেকেলে। বর্তমান আধুনিক যুগে সেই বিধান চলে না। মানুষের তৈরি বিধানই বর্তমান যুগের জন্য উপযোগী, আধুনিক ও সর্বশ্রেষ্ঠ। এই ব্যবস্থা মেনে নিলেই স্বর্গসুখ লাভ হবে। আর যদি এই ব্যবস্থা গ্রহণ না করো তবে দরিদ্রতা, ক্ষুধা ও অশিক্ষায় জর্জরীত হয়ে জাহান্নামের কষ্ট ভোগ করবে।

পাশ্চাত্যের এ ঘোষণা মেনে নিয়ে বিভিন্ন দেশ দাজ্জালের তৈরি তন্ত্র-মন্ত্র (গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, একনায়কতন্ত্র, সাম্যবাদ) গ্রহণ করল স্বর্গসুখ লাভের আশায়। কিন্তু আদৌ কী তারা স্বর্গসুখ লাভ করেছিল? মানুষের তৈরি এই সকল বিধান স্বর্গসুখ দিতে পারেনি কারণ দাজ্জালীয় বিধানে যেখানে জান্নাতের সুসংবাদ দেয়া হবে সেটা হবে জাহান্নাম যা রসুল (স.) বহু আগেই ভবিষ্যদ্বানী করে গিয়েছেন। আল্লাহর রসুলের ভবিষ্যদ্বানী যাচাই করার জন্য আমরা সাম্যবাদ (Communism) কে বিবেচনায় নিতে পারি। তবে গণতন্ত্র থেকে ধাপে ধাপে সাম্যবাদের দিকে এগিয়ে গেলেও পুরোটাই ইহুদি খ্রিষ্টান ‘সভ্যতা’ অর্থাৎ দাজ্জালের অংশ। গণতন্ত্র থেকে সাম্যবাদকে দাজ্জালের মৃদু থেকে উগ্রতম রূপ হিসেবে বলা যেতে পারে।

সাম্যবাদ আদর্শের কথা বললে সবার প্রথমে আমাদের সামনে যে দুটি দেশের নাম ভেসে উঠে সে দুটি হচ্ছে সোভিয়েন ইউনিয়ন বর্তমানে রাশিয়া ও চীন। দাজ্জালের জান্নাতে যারা প্রবেশ করেছে তারা যে প্রতারিত হয়েছে তা এই দুইটি দেশের তৎকালীন অবস্থা পর্যালোচনা করলেই প্রমাণ হয়ে যায়। সোভিয়েত ইউনিয়ন ও চীনে সাম্যবাদ প্রতিষ্ঠার পর তাদের রেডিও, টেলিভিশনে-এ কথা লক্ষ কোটি বার বলা হয়েছে যে সাম্যবাদী সমাজে, দেশে থাকা স্বর্গের সুখে থাকার সমান। এখানে লক্ষণীয় যে, তারা তাদের সমাজটাকে সর্বদাই স্বর্গ (Paradise) বলে বাকি পৃথিবীকে সাম্যবাদ গ্রহণ করে স্বর্গে প্রবেশের আমন্ত্রণ জানিয়েছে এবং বিশ্বনবী ঠিক ঐ জান্নাত অর্থাৎ চধৎধফরংব শব্দটিই ব্যবহার করেছেন। দাজ্জালের স্বর্গ Paradise যদি সত্যই স্বর্গ হয়ে থাকে তবে যারা সেখানে প্রবেশ করবে তারা নিশ্চয়ই আর কখনই সেখান থেকে বের হয়ে আসার চিন্তা করবে না, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে কী হয়েছে? কমিউনিস্ট ব্যবস্থা গ্রহণ ও কার্যকর করার কিছু পরেই সোভিয়েত ইউনিয়ন নিজেকে বাকি পৃথিবী থেকে সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছিল। এই বিচ্ছিন্নতা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে বাকি দুনিয়ার কাছে এর নাম হয়ে গেল Iron Curtain, লোহার পর্দা। এই পর্দা এতটাই দুর্ভেদ্য যে সেই সকল দেশে ঘটে যাওয়া দূর্ঘটনাগুলোও বাইরের বিশ্বের মানুষের কাছে পৌঁছায়নি। অপরদিকে চীনও সেই একই জীবনব্যবস্থা গ্রহণ করে নাম ধারণ করল Bamboo Curtain, বাঁশের পর্দা।

এখন প্রশ্ন হলো যদি সত্যিই সেখানে স্বর্গ হয় তবে পর্দা দিয়ে বাইরের বিশ্বের সামনে ঢেকে রাখার কী প্রয়োজন ছিল? তাহলে তো উচিত ছিল সেই স্বর্গ দেখিয়ে সকলকে সেই স্বর্গের ব্যবস্থা গ্রহণ করার ব্যাপারে আকৃষ্ট করা। উচিত ছিল সোভিয়েত ইউনিয়নের জনগণের পাসপোর্ট প্রথা তুলে দেয়া, ভিসা উঠিয়ে দেয়া এবং তাদের বলা যাও তোমরা মুক্ত, ইচ্ছা হলে এই স্বর্গ থেকে বের হয়ে যেতে পার, আমরা বাঁধা দিব না। বিশ্বের অন্যান্য মানুষদের বলা তোমরা আসো, দেখো আমাদের স্বর্গ। কিন্তু কোনো তথ্যাভিজ্ঞ (Informed) মানুষই অস্বীকার করতে পারবেন না, ঐতিহাসিক সত্য, যে স্নায়ুযুদ্ধ (Cold War) অবসান পর্যন্ত কমিউনিস্ট দেশগুলো নিজেদের বাকি পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছিল। শুধু তাদের দেশের ওপরের তলার শাসকদের বাইরের দুনিয়ার সাথে যোগাযোগ ছিল।

কিন্তু সত্য হচ্ছে জনগণ এই স্বর্গে প্রবেশের পর বুঝতে পেরেছে যে এটা স্বর্গ নয়, সাক্ষাত নরক। কিন্তু ততদিনে দেরি হয়ে গেছে। এ স্বর্গ থেকে বের হলে তাদের কাছে যাওয়ার মতো আর কোনো জায়গা অবশিষ্ট ছিল না কারণ নিজেদের দেশ, মাতৃভূমি চিরদিনের মতো ত্যাগ করে তারা কোথায় যেত? একটি অপরিচিত দেশে গিয়ে বসবাস করা অতটা সহজ বিষয় নয়। কিন্তু ইতিহাস হচ্ছে তারা সেই স্বর্গ থেকে পলায়ন করার জন্য নিরবচ্ছিন্ন চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছে। এই চেষ্টায় অনেকের প্রাণনাশ হয়েছে, অনেকের পরিবার ধ্বংস হয়েছে, সহায় সম্পদ বিসর্জন করতে হয়েছে। কমিউনিস্ট পূর্ব বার্লিন থেকে পশ্চিম বার্লিনে লোক পালিয়ে যাওয়া বন্ধ করতে রাশিয়ানরা বিখ্যাত বা কুখ্যাত বার্লিন দেয়াল তৈরি করল। মানুষ পালানো যখন বন্ধ করতে পারলো না তখন ৫০ গজ অন্তর অন্তর স্তম্ভ (Watch tower) তৈরি করে সেখানে মেশিনগান বসানো হলো। হুকুম দেয়া হলো কেউ দেয়াল টপকানোর চেষ্টা করলেই যাতে গুলি করা হয়। এছাড়ও পরিখা খোড়া হলো, কঁাঁটাতারের বেড়া দেয়া হলো ও নানা রকম বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি বসানো হলো তবুও জনগণকে আটকে রাখা গেল না। শেষে স্বর্গ থেকে পালানোর জন্য মারিয়া হয়ে বেলুনে চড়ে রাশিয়ার সীমান্ত পার হলো, পরিখা সাঁতরে পার হলো। দু’টি পরিবার এক অভিনব পন্থায় পূর্ব জার্মানি থেকে পশ্চিম জার্মানিতে পালিয়ে এসে সারা পৃথিবীতে সাড়া জাগিয়েছিল। পূর্ব ও পশ্চিম ভাগ হয়ে পূর্ব জার্মানি সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রভাবাধীন একটি কমিউনিস্ট দেশে পরিণত হওয়ার পর রেল লাইনগুলোকে নতুন সীমান্তে দেয়াল দিয়ে বন্ধ করে দেয়া হয়েছিলে। ঐ দু’টি পরিবার অতি কৌশল ও চেষ্টায় একটি রেলওয়ে ইঞ্জিন যোগাড় করে। তারপর ঐ দুই পরিবারের নারী ও শিশুদের তাতে উঠিয়ে পুরুষরা তীব্রগতিতে ঐ ইঞ্জিনটি দিয়ে ধাক্কা দিয়ে দেয়াল ভেঙ্গে পশ্চিম জার্মানীতে চলে আসে। ১৯৪৯ সন থেকে ১৯৬১ সন পর্যন্ত ২৭ লাখ নর-নারী, শিশু কমিউনিস্ট স্বর্গ থেকে পালিয়ে যেতে সমর্থ হয় এবং ঐ সংখ্যার চেয়ে বহুগুণ ঐ পালাবার চেষ্টায় নিহত হয়, বন্দী হয়।

চীনেও ঠিক একই ঘটনা ঘটেছে। মূল চীন ভূখণ্ড থেকে সমুদ্র প্রণালী সাঁতরে পার হয়ে ব্রিটিশ শাসিত হংকং-এ পালিয়ে যাবার চেষ্টায় বহু চীনা ডুবে মারা গিয়েছে। ভিয়েতনাম যুদ্ধে আমেরিকা হেরে যাবার পর সম্পূর্ণ ভিয়েতনাম কমিউনিস্টদের হাতে চলে যায় এবং এরপর সেখান থেকে মানুষ পালানোর যে হিড়িক পড়ে গিয়েছিল তা বহুবছর পর্যন্ত চলেছে এবং এই কথা জানা নেই এমন লোক পৃথিবীতে বিরল। ছোট ছোট নৌকাযোগে সমুদ্রে পালাবার সময় অনেকে মানুষ মারা গিয়েছে, জলদস্যুরা (Pirates) আক্রমণ করে নারীদের ধর্ষণ করেছে, লুটপাট চালিয়েছে তবুও তারা সেই ‘স্বর্গে’ থাকতে চায়নি। এত সংখ্যায় এত বার এই পালানোর চেষ্টা হয়েছে যে এদের জন্য একটা আলাদা শব্দই সৃষ্টি হয়েছে-The Boat people-নৌকার মানুষ।

দাজ্জালেল ঘোষিত এই জান্নাত যে প্রকৃতপক্ষে জাহান্নাম তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ হিসেবে কোরিয়ার যুদ্ধের একটি ঘটনা উল্লেখ করছি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর কোরিয়া দেশটি দু’টি ভাগে ভাগ হয়ে যায়। উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়া এবং এ ভাগ আজও আছে। দু’টোই দাজ্জালের পূজারী। শুধু তফাৎ হচ্ছে এই যে দক্ষিণ কোরিয়া দাজ্জালের পূর্বতন পর্যায়ের গণতান্ত্রিক-ধনতান্ত্রিক ব্যবস্থার অধীনে আর উত্তর কোরিয়া দাজ্জালের উগ্রতর পর্যায়ের সাম্যবাদী একনায়কতান্ত্রিক অর্থাৎ কমিউনিস্ট ব্যবস্থার অধীনে। ১৯৫২ সালে এই দুই কোরিয়ার মধ্যে যুদ্ধ বেধে গেল। উত্তর কোরিয়ার সাহায্যে এগিয়ে এল কমিউনিস্ট সোভিয়েত ইউনিয়ন ও চীন আর দক্ষিণ কোরিয়ার সাহায্যে এগিয়ে এল জাতিসংঘের (United Nations) অধীনে যুক্তরাষ্ট্র, বৃটেন, ফ্রান্স ইত্যাদি অনেকগুলো অ-কমিউনিস্ট দেশ। যুদ্ধ চলল তিন বছর। তারপর সন্ধি হলো। সন্ধির অনেকগুলো শর্তের মধ্যে একটি শর্ত হলো যুদ্ধবন্দী বিনিময়। এ বিনিময়ের শর্তের মধ্যে একটি শর্ত হলো এই যে, কোনো পক্ষই যুদ্ধবন্দীদের তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে ফেরত পাঠাতে পারবে না, যারা নিজেদের ইচ্ছায় তাদের দেশে ফিরে যেতে চাইবে শুধু তাদেরই ফেরত পাঠানো যাবে। যুদ্ধবন্দী বিনিময় হয়ে যাবার পর দেখা গেল যে, সোভিয়েত ইউনিয়ন, চীন ও উত্তর কোরিয়ার অর্থাৎ কমিউনিস্টদের হাতে অ-কমিউনিস্টদের অর্থাৎ আমেরিকান ও অন্যান্য দেশের ১২,৭৬০ (বার হাজার সাতশ’ ষাট) জন যুদ্ধবন্দীর মধ্যে ৩৪৭ (তিনশ’ সাতচল্লিশ) জন ফিরে আসতে অস্বীকার করল, অর্থাৎ তারা কমিউনিস্ট দেশেই থেকে গেল। এদের মধ্যে ২১ (একুশ) জন আমেরিকানও ছিল।

অপরদিকে জাতিসংঘের অধীনে দেশগুলোর অর্থাৎ অ-কমিউনিস্টদের হাতে কমিউনিস্টদের ৭৫,৭৯৭ (পঁচাত্তর হাজার সাতশ’ সাতানব্বই) জন যুদ্ধবন্দীদের মধ্যে থেকে নিজেদের দেশে ফিরে যেতে অস্বীকার করল ৪৮,৮১৪ (আটচল্লিশ হাজার আটশ’ চৌদ্দ) জন। এত বিপুল সংখ্যক যুদ্ধবন্দী তাদের নিজ দেশে ফেরত না যাওয়ায় জাতিসংঘ এক সমস্যার সম্মুখীন হয়ে পড়েছিল। পরে এদের ফিলিপাইনে, ফরমোসা ও অন্যান্য স্থানে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে দেয়া হয়। যাদের মনে এই সংখ্যা সম্বন্ধে সন্দেহ বা অবিশ্বাস আসবে তারা কোরিয়ান যুদ্ধের ইতিহাস, ব্রিটিশ বিশ্বজ্ঞান কোষ (Encyclopedia Britannica) দেখে নিতে পারেন বা সরাসরি জাতিসংঘে চিঠি লিখে জেনে নিতে পারেন।

এই ঘটনার পর আর কোনো সন্দেহ কি থাকতে পারে যে কমিউনিস্টদের বহু ঘোষিত ‘স্বর্গ’ (Paradise) প্রকৃতপক্ষে সেটার অধিবাসীদের জন্য নরক? ওটা যদি নরক নাও হয়ে শুধু বাইরের দুনিয়ার অর্থাৎ অ-কমিউনিস্ট দেশ ও জাতিগুলোর অবস্থার মত হতো তবে ঐ হাজার হাজার যুদ্ধবন্দীরা সকলেই অবশ্যই তাদের নিজেদের দেশে ফিরে যেত। কারণ উভয় স্থানের অবস্থা সমান বা মোটামুটি সমান হলেও একদিকের পাল্লায় রয়েছে তাদের প্রিয় দেশ, জন্মভূমি, বাবা-মা, ভাই-বোন, স্ত্রী-ছেলেমেয়ে, বন্ধু-বান্ধব, শৈশবের স্মৃতি জড়ানো বাসস্থান। ঐ সমস্ত বিসর্জন দিয়ে যদি হাজার হাজার মানুষ অজানা দেশের অনিশ্চিত ভবিষ্যতের ঝুঁকির সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে নিশ্চিতই বলা যায় যে, ঐ লোকগুলো তাদের দেশকে জাহান্নাম বা নরক বলে বিশ্বাস করে। ফেরত না যাওয়া ঐ সংখ্যা থেকেই নিশ্চিতভাবে বলা যায় যে, যে ২৬,৯৮৩ (প্রায় সাতাশ হাজার) যুদ্ধবন্দী নিজেদের কমিউনিস্ট দেশে ফিরে গেল তারা ফিরে গেছে দাজ্জালের স্বর্গের জন্য নয়, গেছে তাদের স্ত্রী, পুত্র-কন্যা, বাপ-মা’র, বন্ধু-বান্ধবের, আত্মার সাথে জড়ানো, মায়া মমতায় ঘেরা জন্মভূমিকে চিরদিনের জন্য ত্যাগ করতে না পেরে। ঐগুলোর মায়া ত্যাগ করতে না পেরে তারা জেনে-শুনেই নরকই বেছে নিয়েছে। সন্ধির শর্তের মধ্যে যদি এই শর্তও যোগ করা হতো যে, যেসব যুদ্ধবন্দী স্বেচ্ছায় নিজেদের দেশে ফিরে যাবে না তাদের পরিবারকেও এনে তাদের কাছে দেয়া হবে তবে এ সাতাশ হাজারের মধ্যে সাতশ’ জনও ফিরে যেত কিনা সন্দেহ আছে।

এই বন্দী বিনিময় অংকের হিসাব স্পষ্টভাবে মহানবীর সেই ভবিষ্যদ্বানীর সত্যতা প্রমান করে। অতএব বর্তমান ইহুদি খ্রিষ্টান যান্ত্রিক ‘সভ্যতা’ই যে দাজ্জাল সে ব্যপারে আর কোনো সন্দেহই থাকে না। আজ সমগ্র পৃথিবী এই দাজ্জালের করতলগত হয়ে দাজ্জালের হুকুম মেনে নিয়েছে এবং আমরা মুসলিমরাও দাজ্জালকে চিনতে না পেরে ঠিক একই কাজ করছি। কাজেই এখন আমাদের এই দাজ্জালের হুকুম থেকে বের হয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে স্রষ্টাপ্রদত্ত হুকুম অনুযায়ী আমাদের সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবন পরিচালনা করতে হবে। তবেই আমরা সত্যিকারের স্বর্গসুখ লাভ করতে পারব।

লেখাটি শেয়ার করুন আপনার প্রিয়জনের সাথে

Email
Facebook
Twitter
Skype
WhatsApp
সার্চ করুন

যুক্ত হোন আমাদের ফেসবুক পেজের সাথে...